তেতাল্লিশের দুর্ভিক্ষের কালে বর্ধমানে নারী আত্মরক্ষা সমিতির কর্মীদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বর্ধমান শহরে লঙ্গরখানা পরিচালনা করেছিলেন সুফিয়া কামাল। চারের দশকে বর্ধমানে জাত- ধর্মের বেড়া কে অতিক্রম করবার যে কর্মকান্ডের সূচনা এই লঙ্গরখানার ভিতর দিয়ে সুফিয়া কামাল করে গিয়েছিলেন, তা পরবর্তী সময়ে , গোটা রাঢ় বাংলায় প্রগতিশীল সামাজিক, রাজনৈতিক আন্দোলনকে প্রসারিত করবার ক্ষেত্রে একটা উল্লেখযোগ্য ভিত্তিভূমি হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
ধর্মান্ধ সাম্প্রদায়িক শক্তি আর প্রতিযোগিতামূলক সাম্প্রদায়িক শক্তির সাঁড়াশি আক্রমণে গোটা উদ্ধাস্তু সমাজ আজ বিভ্রান্ত। সেই বিভ্রান্তির সুযোগ নিয়ে কায়েমী শক্তি যাতে ঘোলা জলে মাছ ধরতে না পারে- সেইদিকটা দেখা এখন একটা বড় রাজনৈতিক কাজ।
আর্কাইভে যে তথ্য পাই, সবসময়ই সেগুলিকে নির্বিচারে গ্রহন করা উচিৎ নয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এখানে রাষ্ট্রশক্তির দৃষ্টিতে ও রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় নথিগুলিই সংরক্ষণ করা হয়। তাই এক্ষেত্রে সমালোচনার চশমা পরে লেখ্যাগারের নথিতে অতীতের পদচিহ্ন খোঁজা বিশেষ করে প্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে।
মুক্তির লড়াইতে সফল হয় ভিয়েতনাম। জেনিভা শান্তি সম্মেলনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তখনকার মতো ভিয়েতনামের দক্ষিণ অংশ সাম্রাজ্যবাদী শক্তির দখলে রয়ে যায়, স্বাধীনতা পায় উত্তর ভিয়েতনাম। সেই উত্তর ভিয়েতনামের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন হো চি মিন। ১৯৫০ সালে মাও সে তুং'ই সবার প্রথমে ভিয়েতনামকে স্বাধীন দেশের স্বীকৃতি দেন।
আমাদের মনে রাখতে হবে যার প্রভাবে মূল্যবোধ নির্মিত হয়, চেতনা প্রশ্ন করতে শেখে –আলোকোজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে চলতে অনুপ্রাণিত হয় নতুন প্রজন্ম তিনিই আদর্শ শিক্ষক।
কিছু কিছু জীবন মহাজীবনে উত্তির্ন হবার জন্য কোন সুপারিশ অথবা সরকারি পারিতোষিকের মুখাপেক্ষি হয় না কখনো। স্যর চার্লস স্পেন্সার চ্যাপলিন এমনই এক মহাজীবনের নাম।
"হিন্দু কোড বিল"-এর মাধ্যমে ডঃ বাবাসাহেব আম্বেদকর ভারতের মেয়েদের ভবিষ্যৎ রক্ষা করেছেন হিন্দুত্ববাদী শক্তির হাত থেকে । এই হিন্দুত্ববাদীরা সেই সময়ে ৬৬ টি সভা করে হিন্দু কোড বিল পুড়িয়েছিল। নেতৃত্বে ছিল আরএসএস, জনসঙ্ঘ। এদেরই নেতা ছিলেন শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী এবং তাঁর দাদা বিশ্ব হিন্দু পরিষদ নেতা রমাপ্রসাদ মুখার্জী।
আজকের দিনে অনেকেই নানা ভ্রান্ত তথ্যের শিকার (এইসব ভ্রান্তি অনেক ক্ষেত্রেই ইচ্ছাকৃত প্রচারিত) হয়ে ১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহ এবং সিপাহি মঙ্গল পান্ডের সম্পর্কে যথাযথ মূল্যায়ন করতে পারেন না। তাদের সেই ভ্রন্তির সুযোগ নিয়ে প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি মানুষের মগজে আক্রমণ নামিয়ে আনে, যাতে মানুষে মানুষে বিভেদ তৈরি করে নিজেদের কায়েমি স্বার্থ চরিতার্থ হয়। সবারই মনে রাখা উচিত কার্ল মার্কসই প্রথম ব্যাক্তি যিনি এই বিদ্রোহকে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম বলে উল্লেখ করেছিলেন। সেই ঐতিহাসিক মূল্যায়ন সকলেরই পড়া উচিত
১৯৩১ সালের ২৩শে মার্চ সন্ধ্যা সাতটার সময় লাহোর জেলে ভগৎ সিং, শুখদেও থাপার এবং শিবরাম রাজগুরুর ফাঁসি কার্যকর হয়। ব্রিটিশ সরকার এই কাজের ফলাফল সম্পর্কে ভীত ছিল, তাই নির্ধারিৎ তারিখের আগেই তারা ভগৎ সিং, শুখদেও থাপার এবং শিবরাম রাজগুরুকে ফাঁসি দেয়। ফাঁসির আগে ভগৎ সিংকে ব্রিটিশ সরকারের কাছে ক্ষমা চাইতে অনুরোধ করা হয়, ভগৎ সিং সেই প্রস্তাব সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেন। ফাঁসির মঞ্চে মুখ ঢাকার কাপড় ব্যবহার করতেও তিনি অস্বীকার করেছিলেন।
একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যের দিকে এগোনোর কাজে এমন কেউ নেই যিনি অজাতশত্রু। মার্কস এমনই কতিপয় শত্রুকে পৃথিবীতে ছেড়ে গেলেন। তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড তাকে ইউরোপের এমন একজনে পরিণত করেছে যার নামে সবচেয়ে বেশি ঘৃণা এবং কুৎসা প্রচার করা হয়েছে। কদাচিৎ কখনো কেউ তার নামে অপবাদ দেবার সাহস দেখিয়েছে। মৃত্যুর পূর্বে সেইসব অপবাদের সম্মুখে তিনি দেখে গেছেন পৃথিবী জূড়ে তাঁর লক্ষ লক্ষ সমর্থকদের - সাইবেরিয়ার খনি থেকে ইউরোপ এবং আমেরিকার কারখানা অবধি যাদের বিস্তৃতি, ব্যাপ্তি। তিনি নিশ্চিত হয়েছেন পৃথিবীজূড়ে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় তাঁর আবিষ্কৃত অর্থনৈতিক তত্ত্বই হবে বুনিয়াদি শক্তি। অত্যন্ত জোর দিয়েই বলা যায় তার মতের বিরোধী অনেকেই ছিলেন কিন্তু তার ব্যাক্তিগত শত্রু একজনও নেই