Spanish Civil War

স্পেনের গৃহযুদ্ধ- ফিরে দেখা

ওয়েবডেস্ক প্রতিবেদন

যুদ্ধের প্রেক্ষাপট কখনও একদিনে তৈরি হয় না, গৃহযুদ্ধ তো নয়ই। দীর্ঘ দিনের রাজনৈতিক টানাপোড়েন, সামাজিক অব্যবস্থা, অর্থনৈতিক স্থবিরতা, সাংস্কৃতিক বিপন্নতা এবং এমনই অনেক ছোট ছোট কারণ একে অপরের সাথে মিলে তার সামগ্রিক বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। তিন বছরব্যাপী যে গৃহযুদ্ধ স্পেনে হয়েছিল তখনও এর ব্যতিক্রম ঘটে নি।

ষোড়শ শতকের শুরুর দিকে স্পেনে সর্বতভাবে রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত ছিল, রাজার আসনে তখন দ্বিতীয় ফিলিপ (১৫২৭-১৫৯৮)।  ১৫৮৮ সালে স্প্যানিশ আর্মাডার পতনের পর দীর্ঘ সময় ধরে স্পেন আর কোন ঘটনাবহুল ইতিহাসের সাক্ষী ছিল না। ব্রিটিশ সেনানায়ক ফ্রান্সিস ড্রেক বাহিনীর কাছে পরাজয়ে ইওরোপের মাটিতে স্পেনের আধিপত্য উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়। এই পরাজয় কেবল আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেই নয় ক্রমশ সেদেশের জাতীয় আর্থসামাজিক ব্যবস্থাকেও প্রভাবিত করতে শুরু করে। স্পেনে রাজতন্ত্রের ভিত দুর্বল হতে থাকে তখন থেকেই।

১৮৩৩ সালে রাণী দ্বিতীয় ইসাবেলের সময় থেকে রাজার শাসন ভেঙে পড়তে শুরু করে। ১৮৭০ সালে আমাদেউস রাজার আসনে বসেন। তৎকালীন স্পেনে চার্চের গুরুত্ব ছিল অপরিসীম, সামাজিক ও অর্থনৈতিক উভয় ক্ষেত্রেই শাসনব্যবস্থা চার্চের উপরে নির্ভরশীল ছিল। রাজনীতিতে চার্চের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার ফলে সনাতনপন্থী কিছু আইন প্রণয়ন হয় এবং জনমানসে অসন্তোষ দেখা দেয়। এরই সাথে বাড়তে থাকে জনসাধারণের দারিদ্র। ১৮৭৩ সালে রাজা আমাদেউস অপহৃত হন এবং স্পেনে প্রথম সাধারণতান্ত্রিক সরকারের প্রতিষ্ঠা হয়। এই সরকার প্রণীত কিছু আইন-কানুন দেশের জনগণের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। দু’ বছরের বেশী প্রথম সাধারণতান্ত্রিক সরকার টেকেনি। ১৮৭৫ সালে রাজার শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠিৎ হয়।

রাজা ত্রয়োদশ আলফনসো (১৮৮৬-১৯৩১) সংসদের অধীনে ছিলেন। এই সময় স্পেনে একের পর এক অভ্যন্তরীণ সমস্যা বাড়তে থাকে। শাসনব্যবস্থা টিকিয়ে রাখতে উঠতে বসতে সেনাবাহিনীকে কাজে লাগানো শুরু হয়। জনরোষ বাড়তে থাকে। ইতিমধ্যে কাতালুনিয়ায় বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন শুরু হলে সরকার আরও বেসামাল হয়ে পড়ে। অকেজো সরকারের জনপ্রিয়তা কমতে শুরু করে। সাম্যবাদীরা নিজেদের জমি শক্ত করতে শুরু করে। রীফ উপজাতির হাতে বেশ কয়েক হাজার স্পেনীয় সৈন্য নিহত হয়। ফলত দেশে জনবিক্ষোভ প্রবল আকার ধারণ করে। সেই সুযোগ কাজে লাগালেন তৎকালীন সেনাপতি প্রাইমো-দ্য-রিভেরা। ১৯২৩ সালে আচমকা সেনা অভ্যুত্থান ঘটিয়ে নিজস্ব একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। রাজার শাসনকে খর্ব করে ফ্যাসিবাদ মাথা চাড়া দিতে শুরু করে। স্বৈরাচারী রিভেরা’র শাসনে স্পেনে প্রবল জনরোষ তৈরি হয় এবং রিভেরা পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। ১৯৩১ সালে বিপুল জনসমর্থনে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয় রিপাবলিক সরকার। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন নিকেটো আল্কালা জামোরা। কমিউনিস্টরা সেই সরকারকে সমর্থন জানায়।

রিভেরা’র শাসনকালে স্পেনের কৃষক ও মজুরেরা প্রবলভাবে শোষিত হন। কাজের শেষে সামান্য মজুরি তাদের বিপন্ন করে তোলে, কাজের সুরক্ষা বলে কিছুই ছিল না। বেকারত্বের হার বাড়ছিল মাত্রা ছাড়িয়ে। নতুন রিপাবলিক সরকার প্রতিষ্ঠা হলে সাধারণ মানুষ আশার আলো দেখেছিল। সেই নতুন সরকার জনস্বার্থে একাধিক আইন প্রণয়ন করে।

তৎকালীন সাম্যবাদী আন্দোলনের কর্মী আরতিসো হুদিয়ান এর কথায় – “গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা শ্রমিকশ্রেণীর মধ্যে আশার সঞ্চার করে, নিজেদের আশা-আকাঙ্খা এবার পূর্ণতা পাবে হবে মনে করতে শুরু করে তারা। শ্রমিকশ্রেণী ও কৃষকদের মধ্যে এই নিয়ে ছিল প্রবল উন্মাদনা”। কৃষকরা জমির অধিকার পেতে অধৈর্য হয়ে ওঠে, শ্রমের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা ও ন্যায্য মজুরির দাবীতে ইউনিয়ন তৈরি করতে উৎসুক হয়ে ওঠে শ্রমিকেরা। জমির মালিকদের সাথে কৃষিমজুরদের সংঘাত ক্রমশ চরম আকার নেয়। নতুন সরকারের আমলে ভূমি সংস্কারের পরিকল্পনা করার আগেই ভূমিহীন কৃষকরা চাষের জমি কেড়ে নিতে তৎপর হয়ে ওঠে। এরই পাশাপাশি দাবী উঠতে শুরু করে রাজনীতিতে চার্চ এবং সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ রোধ করতে হবে।

এরই মধ্যে সিন্ডিক্যালিসম-র জন্ম হয়। দাবী ছিল ভূমিহীন কৃষকদের হাতে জমির মালিকানা এবং শ্রমিকদের হাতে কল-কারখানার মালিকানা তুলে দেবার। যে কোন বেসরকারী প্রতিষ্ঠানেরই বিরোধিতা শুরু হয়। জনসমর্থন পেতে সিন্ডিক্যালিস্টদের খুব বেশি পরিশ্রম করতে হয় নি। স্পেন জুড়ে বিক্ষোভ চরম আকার ধারণ করলে সরকার বেসামাল হতে শুরু করে। জনগণের মধ্যে নতুন সরকারের প্রতি অনাস্থা গড়ে ওঠে। ১৯৩১ সালে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা হয়।

এরই মধ্যে কাতালানরা স্পেন থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার সংগ্রাম শুরু করে। কাতালান বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন এরেকবার শক্তিশালী হতে থাকে। স্পেনীয়দের বহির্ভূত আখ্যা দিয়ে স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবী জানাতে শুরু করে তারা।

এহেন পরিস্থিতিতে দারিদ্র চরম আকার নিতে শুরু করলে স্পেন জুড়ে মানুষের বিক্ষোভ ক্রমশ হিংসাত্মক হয়ে ওঠে। গ্রামবাসীদের উপর পুলিশের অত্যাচার নামিয়ে আনা হয়, বহু গ্রামবাসী পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারায়। এমন ঘটনায় দায়ী হয় রিপাবলিক সরকার। কমিউনিস্টরা সরকার থেকে নিজেদের সমর্থন প্রত্যাহার করে। বামপন্থীরা একযোগে সংসদীয় ব্যবস্থায় অনাস্থা প্রকাশ করলে ১৯৩৩ সালে আবার নতুন করে নির্বাচনের ঘোষণা করা হয়।

বামপন্থী দলগুলির সাথে রিপাবলিক সরকারের অন্যান্য দলগুলির পার্থক্য স্পষ্ট হলে দক্ষিনপন্থীরা সুবিধাজনক অবস্থায় চলে আসে। এ অবস্থায় ফ্যাসিস্ট ও সনাতনপন্থীরা নতুন উদ্যমে তাদের ঘুঁটি সাজানোর কাজ শুরু করে। ফ্যাসিস্ট দল ‘থেটা’ ছিল জার্মানির নাৎসিদের দ্বারা অনুপ্রাণিত। ১৯৩৩ সালে নভেম্বর মাসে তারা একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সংসদীয় নির্বাচনে জয়লাভ করে। দেশ পুনর্গঠনের যে কাজ রিপাবলিক সরকার শুরু করেছিল তা রুদ্ধ হয়। চরম দক্ষিনপন্থী ‘থেটা’ সরকার একের পর এক জনমুখি আইন বাতিল করতে শুরু করে। সরকারের জনবিরোধী কাজের বিরুদ্ধে ব্যাপক সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে ফ্যাসিস্ট সরকারকে সিংহাসনচ্যূত করার অঙ্গীকার ঘোষণা করে বামপন্থীরা। এস্টোরিয়াতে খনিশ্রমিকরা সমস্ত খনি বন্ধ করে বিপ্লবের ডাক দিলে নয়া ‘থেটা’ সরকার পূর্ণ শক্তি সেনা পাঠিয়ে আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেয়। এস্টোরিয়া ধংসস্তুপে পরিণত হয়। সংগ্রাম দমনে দুহাজার মানুষকে খুন করা হয়।

এই সময়েই সেনাবাহিনীর জেনারেল ‘ফ্র্যাঙ্কো’কে সরকারের হয়ে প্রচারের দায়িত্ব দেওয়া হয়। বামপন্থী দলের নেতা-নেতৃদের একের পর এক গ্রেপ্তার করা শুরু হয়। ১৯৩৬ সালে নির্বাচনের আগে সমস্ত বামপন্থী দল একত্রিত হয়ে ‘পপ্যুলার ফ্রন্ট’ গঠন করে। জেলবন্দীদের মুক্ত করার উদ্দেশ্যে নৈরাজ্যবাদীরা পপুলার ফ্রন্টে যোগ না দিলেও বাইরে থেকে সমর্থন জানায়। ১৯৩৬ সালের নির্বাচনে বামপন্থীদের উল্লেখযোগ্য ফলাফল হয়। জেলে আটক বামপন্থীরা বন্দীদশা থেকে মুক্ত হন। জনগণের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার হয়। যাবতীয় ধর্মঘট প্রত্যাহৃত হয়। কৃষিজমি দখলমুক্ত করা হয়। ফ্যাসিস্টদের নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সেনাপতি রিভেরাকে বন্দী করা হয়।

দীর্ঘদিন রাজার শাসনে পরিচালিত সেনাবাহিনীর বেশিরভাগ অংশেই সনাতনী চিন্তাভাবনার প্রাধান্য ছিল। নতুন নির্বাচিত সরকারের মনে সেনাবাহিনীর সম্পর্কে আশঙ্কা ছিল। সনাতনপন্থী সেনাপ্রধানদের চিহ্নিত করে রাজধানী থেকে দূরবর্তী বিভিন্ন অঞ্চলে বদলি করা শুরু হয়। জেনারেল ফ্র্যাঙ্কোও সেই বদলীর তালিকা থেকে বাদ পড়েন নি। সেনাবাহিনীর মধ্যে ক্ষোভ তৈরি করা হয়। কমিউনিস্টদের উত্থান জেনারেল ফ্র্যাঙ্কোকে চিন্তিত করে তোলে। স্পেন জুড়ে বামপন্থী সরকারের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী একজোট হতে শুরু করে। চার্চ বরাবরই প্রতিক্রিয়াশীল শিবিরে ছিল। ফ্যাসিস্ট শক্তি, রাজার দল, সৈন্যবাহিনীর এক বিরাট অংশ ও চার্চ একজোট হয়।

মাদ্রিদে সরকারের সমর্থনকারী এক পুলিশ আধিকারিক দক্ষিণপন্থীদের আক্রমণে খুন হন। বামপন্থীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়। এর পরেই দক্ষিণপন্থী নেতা হোসে কালভো পুলিশের হাতে মারা যান। ইতিমধ্যে জেনারেল ফ্র্যাঙ্কোর নেতৃত্বে স্পেন অধ্যুষিত মরক্কোতে সেনা অভ্যুত্থান ঘটলে স্পেনে গৃহযুদ্ধের সূচনা হয়। দেশের বিভিন্ন অংশে সরকারের সমর্থনকারী জনসাধারণ বিদ্রোহী সেনাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পুলিশকে সাহায্য করতে হাতে অস্ত্র তুলে নেয়। শ্রমিকরা সশস্ত্র হয়ে সেনাবাহিনীকে প্রতিহত করার চেষ্টা করতে থাকে। সাম্যবাদে বিশ্বাসী সেনাবাহিনীর কিছু অংশ প্রগতিশীল সরকারের পক্ষে লড়াইতে যুক্ত হয়। দুপক্ষের সেই লড়াই ক্রমশ তীব্র হতে থাকে। ক্রমশ বোঝা যায় এই লড়াই পরিণত হবে এক দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধে।

স্পেনের গৃহযুদ্ধ তাদের অভ্যন্তরীণ সমস্যা হলেও সেদেশে সাম্যবাদের উত্থান চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায় ইউরোপের অন্যান্য দেশের ফ্যাসিস্ট শক্তিগুলির কাছে, কারণ ইতিমধ্যেই ইউরোপ বলশেভিক বিপ্লবের অভিজ্ঞতা থেকে বুঝেছে জনগণের ক্ষমতা কেমন হয়। জার্মানি ও ইতালি ফ্র্যাঙ্কোর সেনাকে সমর্থন জানায় ও তাদের হাত শক্ত করার জন্য সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। স্পেনে নিজেদের সেনাবাহিনী সহ বায়ুসেনাকেও ব্যবহার করে জার্মানি। পর্তুগালও সক্রিয় সমর্থন জানিয়েছিল ফ্র্যাঙ্কো বাহিনীকে। ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের কাছে নাৎসি জার্মানির থেকে বড় বিপদ ছিল স্পেনে আন্তর্জাতিক শক্তি হিসাবে কমিউনিজমের উত্থান। তাই তারা নিরপেক্ষ ভূমিকা গ্রহণ করে। সোভিয়েত ইউনিয়ন স্পেনে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আশঙ্কায় পপুলার ফ্রন্ট চালিত সরকারকে সামরিক পরামর্শদাতা ও দক্ষ কারিগর পাঠিয়ে সাহায্য করে। অন্যান্য কমিউনিস্ট দেশ, পপুলার ফ্রন্টের সমর্থনে যৌথ সেনাবাহিনী তৈরি করে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রাক মুহূর্তে জার্মানি ও ইতালি নিজেদের সামরিক শক্তি পরীক্ষানিরীক্ষার স্থান হিসাবে বেছে নেয় অশান্ত স্পেনকে। স্পেন প্রথম বিশ্বযুদ্ধে নিরপেক্ষ ভূমিকা নিয়েছিল। ইউরোপের ভিতরে ভৌগোলিক অবস্থানের সুবিধার জন্য হিটলার ও মুসোলিনি স্পেনকে ইংরেজ ও ফরাসি বিরোধী লড়াইয়ের ঘাঁটি হিসাবে ব্যবহার করার সুযোগ নিলেন। নিজের সামরিক শক্তি বৃদ্ধির জন্য স্পেনের খনিজ সম্পদ হস্তগত করাই ছিল হিটলারের উদ্দেশ্য। অপরদিকে সরাসরি পঞ্চাশ হাজার সৈনিক পাঠিয়ে সবার সামনে ফ্যাসিস্ত সেনাবাহিনীর সামরিক শক্তি প্রদর্শন করতে চেয়েছিলেন মুসোলিনি। এছাড়া জার্মানি, ইতালি ও স্পেন- তিন দেশেই একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে সোভিয়েত ইউনিয়নকে চাপে রাখাও ছিল হিটলার ও মুসোলিনির রাজনৈতিক লক্ষ্য। অভ্যন্তরীণ সমস্যা থেকে শুরু হলেও স্পেনের গৃহযুদ্ধ পরিণত হয় অন্তঃরাষ্ট্রীয় যুদ্ধে। ঐতিহাসিকরা স্পেনের গৃহযুদ্ধকে “ক্ষুদে বিশ্বযুদ্ধ” বলেন।

তিন বছর দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী লড়াইতে বামপন্থী জোট পরাজিত হলে স্পেনে জেনারেল ফ্রাংকোর নেতৃত্বে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। এর ফলে হিটলার ও মুসোলিনির শক্তি বৃদ্ধি হলে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের কাছে এইবার নতুন বিশ্বপরিস্থিতি হয়ে ওঠে চিন্তার বিষয়। এরই প্রতিফলন ঘটে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে।

কমিউনিজমকে আটকাতে যেমন ফ্যাসিস্ট শক্তি আইন-কানুনের কোন গণ্ডিই মানে না ঠিক তেমনই ফ্যাসিস্ট শক্তির সামনে কখনো মাথা নত করে না বামপন্থীরা। স্পেনের গৃহযুদ্ধ তাই পৃথিবীর জনসাধারণের লড়াইয়ের ইতিহাসে এক অনন্য নজীর লিখে যায়। প্রবল পরাক্রমী শত্রুর সামনে মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও মানুষের ব্যারিকেড গড়ে তোলেন স্পেনের জনসাধারণ। রাইফেল হাতে সেই ব্যারিকেডে যেমন কবি লোরকা দাঁড়িয়েছিলেন, তেমনই সারা দুনিয়া থেকে ফ্যাসিস্তদের রুখতে হাজির হয়েছিলেন বিপ্লবী ছাত্র-যুবরা। ব্রিটিশ নাগরিক ক্রিস্টোফার কডওয়েল সেই যুদ্ধেই শহীদ হন।   

মানুষের মুক্ত থাকার অধিকার বুটের তলায় মাড়িয়ে দিতে চাওয়া যুদ্ধবাজ ফ্যাসিস্ট হিটলারের জার্মান বিমানই শুধু স্পেনের আকাশে ওড়েনি সেদিন, লড়াইয়ের বন্ধু হিসাবে বিদেশ থেকে উড়ে আসা বিমান থেকেও আরেক লিফলেট ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। স্পেনের অলিতে-গলিতে, বড় রাস্তার দেওয়ালের মতোই আকাশ থেকে উড়ে আসা সেইসব লিফলেটে সাক্ষর ছিল ‘নো পাসারান’।

ওয়েবডেস্কের পক্ষেঃ কৃষ্ণায়ন ঘোষ


শেয়ার করুন

উত্তর দিন