Lenin 154

বিপ্লবী পথপ্রদর্শক লেনিন

শ্রীদীপ ভট্টাচার্য

রাশিয়ায় তখনও জারের শাসন। সেদেশের বিপ্লবী আন্দোলনে মার্কসীয় সমাজতন্ত্রের ধারণা ক্রমশ দানা বাঁধছে। কৈশোর বয়স থেকেই নিজেকে জারের অপশাসনের বিরুদ্ধে প্রস্তুত করতে শুরু করেছিলেন ভ্লাদিমির ইলিচ উলিয়ানভ- লেনিনের প্রকৃত নাম। মার্কসবাদ পড়তে শুরু করেন ছাত্রাবস্থা থেকেই, ক্রমশ সেই অধ্যয়ন গুরুতর চর্চায় পরিণত হল- আত্মস্থ করলেন বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের বিপ্লবী শিক্ষা।

মার্কসীয় দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে রাশিয়ার তথা বিশ্ব-পুঁজিবাদের বিকাশধারাকে অনুশীলন করেছিলেন লেনিন। বিপ্লবী সমাজ পরিবর্তনের লক্ষ্যে জরুরী কাজ হিসাবে চিহ্নিত করেছিলেন শ্রমজীবী মানুষের সুসংহত, সংগ্রামী ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। সেই থেকেই তিনি নিজেকে একদিকে মার্কসবাদের প্রয়োগে সুতীক্ষ্ণ মেধার চর্চায় আরেকদিকে বিপ্লবী সংগঠকের ভূমিকা রচনায় ব্যস্ত হন। রাশিয়ায় সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক লেবর পার্টি (আরএসডিএলপি) প্রতিষ্ঠিত হল। এই পার্টিই পরে কমিউনিস্ট পার্টিতে পরিণতি পায়।

এবছর ভি আই লেনিনের ১৫৪তম জন্মদিবস পালিত হল।

১৯১৭ সালে নভেম্বর বিপ্লব ঘটে। এই ঘটনা শুধু ঐতিহাসিক নয়, এই বিপ্লবের অভিঘাতে বিশ্ব ইতিহাসের নতুন গতিপথ সুচিত হয়। রাশিয়ার বিপ্লব গড়ে তুলল সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েত ইউনিয়ন, প্রমাণ করল শ্রমজীবীদের রাষ্ট্র গঠন করা সম্ভব- যে দেশে শোষণ নেই।  পুঁজিবাদ-সাম্রাজ্যবাদকে পরাস্থ করা যায়, নিপীড়িত মানুষের স্বার্থরক্ষায় কিভাবে নির্মিত হয় একটা গোটা রাষ্ট্রব্যবস্থা- একথা আর ভাবতে হল না, মানবসমাজের বাস্তব অভিজ্ঞতায় সঞ্জাত হল। সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সেই লড়াই আজও জারী রয়েছে, জারী থাকবে।

বিপ্লব বিজয়ী হলেও দুনিয়াজুড়ে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি একে উৎখাত করার ভয়ানক ষড়যন্ত্র করেছিল, তাতে যুক্ত হয়েছিল রাশিয়ার প্রতিক্রিয়াশীল শক্তিগুলিও। সেই প্রতিবিপ্লবের বিরুদ্ধেও লড়াই করতে হয়েছিল লেনিন’কে। মাত্র ৫৪ বছর বয়সেই তার মৃত্যু হয়। আরও কিছুদিন তিনি বেঁচে থাকলে আগামী পৃথিবী সমাজতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা নির্মাণের লক্ষ্যে আরও কিছু শেখার সুযোগ পেত- তবু একথা নিশ্চিত করেই বলা যায় তার বিপ্লবী জীবন ও কর্মকাণ্ড সারা দুনিয়ার সর্বহারাদের দুচোখে যে স্বপ্ন এঁকে দিয়ে গেছে তাকে আত্মস্থ করেই শ্রমিকশ্রেণির লড়াই ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে চলবে।

মার্কসীয় মতবাদকে শক্তিশালী করলেন লেনিন

মার্কসীয় মতবাদ, মার্কসবাদের তিনটি উৎস ও তিনটি অঙ্গকে চিহ্নিত করেছিলেন তিনি। সর্বহারা বিপ্লবী চেতনার জন্য বিপ্লবী মতবাদ চর্চার গুরুত্ব তিনিই প্রমাণ করেন। মার্কসের শিক্ষাকে শুধু চর্চাই করেননি, তাকে সময়োপযোগীও করেছিলেন লেনিন। দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদের আলোকে প্রকৃতি বিজ্ঞানের নিত্যনতুন আবিষ্কারের পর্যালোচনা করলেন তিনি। তার আগে ফ্রেডেরিক এঙ্গেলস এই কাজ করেছিলেন। এঙ্গেলসের রচনা প্রকৃতির দ্বান্দিকতা (ডায়ালেক্টিক্স অফ নেচার) ও অ্যান্টি ড্যুরিং তৎকালীন সময়ে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের ধারণাকে পুষ্ট করেছিল। দর্শনের জগতে বিবিধ বিকৃতির বিরুদ্ধে লেনিনকেও কলম ধরতে হয়েছিল। বিজ্ঞানের জটিলতর রুপকে বিকৃত করে বস্তুবাদী দর্শনকে আক্রমণ করা চলছিল। এর বিরুদ্ধেই লেনিন রচনা করলেন ‘বস্তুবাদ ও প্রত্যক্ষ বিচারবাদ’ (মেটিরিয়ালিজম অ্যান্ড ইম্পিরিও ক্রিটিসিজম)- এই লেখায় বস্তুবাদী দর্শন পুনরায় সময়োপযোগী হল, দর্শনের জগতে দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আরও একবার শক্তিশালী মতবাদ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হল। এই বই ও ‘ফিলজফিক্যাল নোটবুকস’ মার্কসীয় দর্শনের দুটি আকর গ্রন্থ। আজও মার্কসবাদীদের চর্চায় বইদুটির গুরুত্ব অপরিসীম।

বিশ্বপুঁজিবাদের ব্যখা সহ সাম্রাজ্যবাদের চরিত্র নির্ধারণ

কার্ল মার্কসের মৃত্যু হয়েছিল ১৮৮৩-তে। ১৮৯৫ সালে ফ্রেডেরিক এঙ্গেলসের মৃত্যু। মার্কসের জীবনকালে পুঁজির প্রথম খন্ডটিই প্রকাশিত হয়। পরে এঙ্গেলসের পরিশ্রমে বাকি দুটি খণ্ড প্রকাশ হয়। এই বইতে মার্কস পুঁজির উদ্ভব, উদ্বৃত্ত মূল্যের উৎপত্তি ও তাকে আত্মসাৎ এবং সঞ্চয়ের বিষয়ে বিশদে আলোচনা করেছিলেন। একচেটিয়া পুঁজির যুগকে তুলে ধরলেন লেনিন। কার্যত পুঁজিবাদের অভ্যন্তরীণ গতিকে যথাযথরূপে ব্যখ্যা করেই সুত্রায়ন করলেন ‘সাম্রাজ্যবাদঃ পুঁজিবাদের সর্বোচ্চ পর্যায়’। সাম্রাজ্যবাদের যুগে পুঁজিবাদের চরিত্র পর্যালোচনা করেন তিনি। সাম্রাজ্যবাদকে বুঝতে চারটি বৈশিষ্টের উল্লেখ করেছিলেন। আধুনিক পুঁজিবাদের ভাষায় যাকে নয়া-উদারবাদ বলে তার উৎস সন্ধানেও লেনিনের সেই সুত্রায়নই মূলত সহায়। এর আগেও রাশিয়ায় পুঁজিবাদী ব্যবস্থা বিকশিত হওয়ার লক্ষণগুলি অসাধারণভাবে চিহ্নিত করেছিলেন- তখন নারদনিকদের যুক্তির অসারতা প্রমাণে (তারা বলত রাশিয়ায় পুঁজিবাদ নেই, তাই শ্রমিক শ্রেণির বদলে কৃষকরাই হবেন বিপ্লবের প্রধান বাহিনী) সেই কাজ শুরু করেছিলেন। ‘ডেভেলপমেন্ট অফ ক্যাপিটালিজম ইন রাশিয়া’ বইটিও মার্কসীয় অর্থনীতির ভাণ্ডারে এক অনবদ্য সংযোজন।

সর্বহারার রাষ্ট্র গঠন

মার্কস-এঙ্গেলসের সময়ে গড়ে উঠেছিল প্যারি কমিউন। সেই ঘটনা ইতিহাসের পাতায় শ্রমিক শ্রেণির লড়াইয়ের অসামান্য বীরগাথা লিখে যায়। প্যারির পতন ঘটলে মার্কস-এঙ্গেলস উভয়েই ব্যর্থ হওয়ার কারণ অনুসন্ধান করেছিলেন। লেনিন সেই শিক্ষাকে আত্মস্থ করেছিলেন। বুর্জোয়া রাষ্ট্রকে দখল করলেই সর্বহারা বিপ্লব জয়ী হবে না, নতুন রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। রাশিয়ায় নভেম্বর বিপ্লব সফল হওয়ার পরেই লেনিন সর্বহারা রাষ্ট্র গঠনে মনযোগী হন। সেই সময় রাশিয়াকে ইউরোপের পিছনের উঠোন (ব্যাকইয়ার্ড অফ ইউরোপ) বলা হত। পশ্চাৎপদ দেশে সমাজতন্ত্র নির্মাণের পরিকল্পনা গৃহীত হল, কার্যকরও হল। একদিকে সাম্রাজ্যবাদের সাথে লড়াই, অভ্যন্তরীণ প্রতিবিপ্লবী শক্তির সাথে লড়াই আরেকদিকে নতুন দেশ, নতুন সমাজ, নতুন মানুষ গড়ে তোলার সংগ্রাম। একদিকে যুদ্ধ আরেকদিকে নির্মাণ। দ্বিবিধ কাজকেই পরিণতির দিকে এগিয়ে নিয়ে জান লেনিন ও বলশেভিকরা। এই কাজ সহজ ছিল না। কমিউনিস্ট বিপ্লবী পার্টি সংগঠনের যে চেহারা আজ দেখতে পাওয়া যায় তার পরিকল্পনাকার ভি আই লেনিন নিজেই। শ্রমিকশ্রেণিকে সংগঠিত করা, তাকে বিপ্লবী চেতনায় সঞ্জাত করে বিপ্লবী আন্দোলন পরিচালনা আবার একইসাথে শ্রমিক-কৃষক মৈত্রী নির্মাণের মধ্যে দিয়ে দেশের শ্রমজীবী জনগণের বৃহত্তম সংগ্রামী ঐক্য গড়ে তোলাই ছিল প্রধান চ্যালেঞ্জ। শুধুমাত্র বিপ্লবী পরিস্থিতির জোরেই বিপ্লব বিজয়ী হয় না, রাশিয়াতেও তেমন কিছু হয়নি। বিপ্লবী পরিস্থিতির সুযোগকে ব্যবহার করার জন্য উপযুক্ত বিপ্লবী সংগঠন চাই- লেনিনের নেতৃত্বেই সেই সংগঠন, সেই পার্টি গড়ে উঠেছিল। এই পরিকল্পনা যেমন বৈপ্লবিক তেমনই বিজ্ঞানের ধারনায় সম্পৃক্ত। বিপ্লব বিজয়ী হওয়ার বিষয়গত কারণ (অবজেক্টিভ ফ্যাক্টর- পরিস্থিতি) এবং বিষয়ীগত কারণ (সাবজেক্টিভ ফ্যাক্টর- সংগঠন) এই দুয়ের সম্মিলনেই নভেম্বর বিপ্লব সফল হয়। এর পরেই রাষ্ট্রের সমাজতান্ত্রিক ভিত্তি নির্মাণের জন্য গৃহীত হয়েছিল নয়া অর্থনৈতিক নীতি (নিউ ইকনোমিক পলিসি বা নেপ) সহ একাধিক রাজনৈতিক-সামাজিক পরিকল্পনা। ইউরোপের উন্নত পুঁজিবাদী দেশগুলির তুলনায় একসময় অনেকটাই পেছিয়ে থাকা দেশ রাশিয়াই পরে সোভিয়েত ইউনয়ন গড়ে তোলে- খাদ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ইত্যাদি বিষয়গুলি মানুষের অধিকারে পরিণত হল। বিজ্ঞান-প্রযুক্তি, শিল্প-কলকারখানা সবকটি ক্ষেত্রেই দুনিয়ায় অন্যতম শক্তিশালী দেশ হয়ে ওঠে সোভিয়েত ইউনিয়ন। এরই জোরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে প্রবল শক্তিধর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইতে প্রভুত ক্ষতিস্বীকার করেও বিজয়ী হয় লেনিনের দেশ। মানুষের মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসে আজও সেই লড়াই অন্যতম উজ্জ্বল এক দৃষ্টান্ত।

তত্ব ও প্রয়োগের সংহতি

মার্কসীয় মতবাদের প্রসঙ্গে লেনিন অবশ্যই একজন অসামান্য তাত্বিক। কিন্তু লেনিন শুধুই একজন তাত্ত্বিক নন। একজন সফল বিপ্লবীর কর্তব্য হল বিপ্লবী তত্ত্বের সাথে বিপ্লবী কর্মকাণ্ডের, বিপ্লবী কর্মসূচির সফল সংযুক্তি, সফল সংহতি স্থাপন। লেনিন সেই কাজেও সফল হয়েছিলেন। কার্যত তার গোটা জীবনই হল বিপ্লবী তত্ত্ব ও তার প্রয়োগের বাস্তব উদাহরণ। লেনিন যেমন নিজেকে বিপ্লবী মতবাদ, মতাদর্শ প্রতিষ্ঠায় অসামান্য মেধার সর্বোচ্চ চর্চায় নিয়োজিত করেছিলেন তেমনই সেই মতাদর্শের প্রয়োগে উপযুক্ত বিপ্লবী সংগঠন গড়ে তোলা ও বিপ্লবী কর্মসূচির সফল রুপায়নেও সফল হয়েছিলেন। এই কারনেই তার জীবন আজও নিজেই এক শিক্ষাক্রম। এই কাজ করতে গিয়ে বারে বারে বাধাপ্রাপ্ত হয়েছেন, গ্রেফতার হয়েছেন, নির্বাসিত হতে হয়েছে- আত্মগোপন করেছেন, জেল খেটেছেন। তবু নিজের বিপ্লবী লক্ষ্য থেকে একচুল সরে আসেননি- এখানেই তার স্বার্থকতা। একজন প্রকৃত মার্কসবাদী কেমন হবেন সেই আলোচনা লেনিন’কে বাদ রেখে হয় না, হবে না।

আমাদের কর্তব্য

আমাদের লেনিন স্মরণ কোনও আনুষ্ঠানিকতা নয়- এ হল বিপ্লবী কর্তব্যবোধের অনুশীলন। নিজেদের দেশের মাটিতে সমাজতন্ত্র নির্মাণের সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজে লেনিনের শিক্ষার সফল প্রয়োগই আমাদের কাজ।

আজকের ভারতে দ্বিতীয়বারের জন্য ক্ষমতাসীন হয়েছে বিজেপির সরকার। এই সরকার আসলে কর্পোরেট-সাম্প্রদায়িক আঁতাতের ফলাফল। নরেন্দ্র মোদীর শাসনে ভারতের জনগণের জীবন-জীবিকা বিপন্ন। বেকারি পোঁছে গেছে অভূতপূর্ব পর্যায়ে, একইসাথে বেড়ে চলেছে বুভুক্ষা। জনজীবনের প্রকৃত সমস্যাগুলিকে এড়িয়ে যেতে এই সরকার হিন্দুত্ববাদের নামে চরম সাম্প্রদায়িক কর্মসূচি রুপায়িত করে চলেছে। ভারতের ধারণার মর্মবস্তুকেই এরা অস্বীকার করে চলেছে, তাকেই খারিজ করে দিতে চাইছে।

স্বাধীন ভারত বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যের ধারণাকে বুকে নিয়েই গড়ে ওঠে। খাদ্যভ্যাস, পরিধান, ভাষা, রুচি-সংস্কৃতির পার্থক্য সত্বেও সকলে মিলেই ভারত গড়ে তোলা হয়। আমাদের দেশের সংবিধানও সেই বৈশিষ্টকেই (ধর্মনিরপেক্ষ, সার্বভৌম ও সাধারণতন্ত্র) মর্যাদা দিয়েই রচিত হয়, নাগরিক অধিকার নির্ধারিত হয়। আরএসএস সেই কাঠামোই ধ্বংস করতে চাইছে। এই অপশাসনের বিরুদ্ধে দেশের জনসাধারণকে ঐক্যবদ্ধ করে আমাদের পার্টি লড়াই-সংগ্রামে রয়েছে। সেই লড়াইকে আরও মজবুত করাই আমাদের অন্যতম কর্তব্য।

আমাদের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গেও এক চরম অগণতান্ত্রিক, স্বৈরাচারী রাজনৈতিক শক্তি ক্ষমতায় রয়েছে। নীতি-নৈতিকতা বিবর্জিত, চরম দুর্নীতিগ্রস্থ এই সরকারের আমলে প্রতিদিন বাংলার রাজনীতিকে কলুষিত করে চলেছে। কার্যত এক নৈরাজ্যের অন্ধকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এর অবসান চাই।

আমরা স্লোগান দিয়েছি দেশ বাঁচাতে বিজেপি’কে পরাস্ত কর, বাংলার জনগণের স্বার্থে তৃণমূলকে হঠাও।

এই লড়াইতে আমাদের শক্তির উৎস মার্কসবাদ-লেনিনবাদ।

ভি আই লেনিনের জীবন ও তার দেখানো পথই আমাদের এগিয়ে চলার দিশারী।

লেনিনের জন্মদিবস পালনের এই হল স্বার্থকতা।


শেয়ার করুন

উত্তর দিন