ওয়েবডেস্ক প্রতিবেদন
মূল প্রবন্ধটি পিপলস ডেমোক্র্যাসি পত্রিকায় "Finance Capital And The World Economy" শিরোনামে ইকোনমিক নোটস হিসাবে প্রকাশিত। রাজ্য ওয়েবডেস্কের পক্ষে সেই প্রবন্ধের সম্পূর্ণ বাংলা অনুবাদ প্রকাশ করা হল।
প্রভাত পট্টনায়েক
লগ্নী পুঁজি এবং বিশ্ব অর্থনীতি
নয়া উদারবাদী অর্থনীতির জমানায় গত কয়েক দশকে বিভিন্ন দেশ সহ গোটা পৃথিবীতেই উত্তরোত্তর অর্থনৈতিক উদ্বৃত্তের বৃদ্ধি ঘটেছে, সমানুপাতে মুনাফা অর্জনও বেড়েছে। পণ্য এবং পরিষেবা সংক্রান্ত অভ্যন্তরীণ বাজারকে মুক্ত বাণিজ্য নীতির আওতায় বিশ্ব বাজারের সামনে উন্মুক্ত করে দেবার ফলে অর্থনৈতিক উৎপাদন ব্যবস্থায় এমনসব বিবিধ ( প্রযুক্তি এবং কাঠামোগত ) পরিবর্তন ঘটানো হয়েছে যাতে উৎপাদন প্রক্রিয়াকে ক্রমাগত মানবীয় শ্রম থেকে বিযুক্ত করে দেওয়া হয়। এরই ফলে একদিকে কর্মসংস্থানের হার ক্রমশ কমেছে (এমনকি স্বাভাবিক হারের চাইতেও নিচে নেমে গেছে), আরেকদিকে কাজ না পাওয়া কিংবা কর্মচ্যুত হয়ে ক্রমবর্ধমান বেকার বাহিনীর চাপকে কাজে লাগিয়ে কর্মরত শ্রমিকদের প্রকৃত মজুরি (Real Income) হ্রাস পেয়েছে। আগের চাইতে কম শ্রমিক নিযুক্ত করেই উৎপাদন হার বাড়ানো হয়েছে ( শ্রমের উৎপাদনশীলতা – অর্থাৎ মাথা পিছ কাজের পরিমান বেড়েছে ) এবং সমানুপাতে বেড়েছে উদ্বৃত্ত মূল্য নির্মাণ দ্বারা মুনাফার পরিমান।
এভাবেই অর্থনীতির মূল প্রবনতা ক্রমশ মজুরি থেকে সরে এসেছে উদ্বৃত্তের দিকে – জনগণের মাথাপিছু ক্রয়ক্ষমতা কমেছে, সামগ্রিক চাহিদায় ভাঁটা দেখা দিয়েছে। অতি উৎপাদন জনিত সংকটের দিকে এগিয়েছে নয়া উদারবাদী বন্দোবস্ত। লগ্নী পূঁজির আবদার মেনে নিয়ে সরকারি ব্যয়বরাদ্দ যত কমানো হয়েছে ততই বাড়তে থেকেছে সম্পদের মূল্য সম্পর্কিত ফাটকাবাজি (Speculation) নির্ভর বাণিজ্য এবং দেশের সম্পদ – সম্পত্তিকে বেসরকারি মালিকানার হাতে জলের দরে বিক্রি করে দেবার প্রবনতা। ফাটকা বাণিজ্য এবং জাতীয় সম্পদের লুট হল নয়া – উদারবাদের একটি অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট। এর ফলে চাহিদার বাজারে যে অস্থায়ী তেজি দেখা দেয় তার প্রভাবও সুদূরপ্রসারী হয়। সাময়িক ভাবে এধরণের চাহিদা বৃদ্ধিতে কিছুদিনের জন্য অতি উৎপাদনের সংকটকে ঠেকিয়ে রাখা গেলেও বারে বারে সেই সংকট আগের আরও ভয়ানক চেহারা নিয়ে হাজির হয়।
২০০৮ সালে আমেরিকায় গৃহ নির্মাণে ঋণ সংক্রান্ত ফাটকার ব্যবসা যখন ধসে পড়ল বিশ্ব অর্থনীতিতেও তার প্রভাব পড়েছিল। সাম্প্রতিক মহামারি শুরু হবার অনেক আগে থেকেই (২০০৯-২০১৯ সাল অবধি দশ বছর) গোটা পৃথিবী জূড়ে এক দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক সংকট জারী ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী পৃথিবীতে মন্দার (উন্নয়নের গড় সূচকে ধস নামা) এমন ভয়ানক কবলে বিশ্ব বাজার কখনো পড়েনি।
মহামারী এবং তার সাথে লকডাউন – এই দুয়ের মিলিত প্রভাবে সারা পৃথিবী জুড়ে উৎপাদন থমকে গেছে। এই পর্বে বিভিন্ন দেশে সরকারি বদান্যতায় জনগণের জন্য ঘোষিত কোভিড রিলিফ প্যাকেজের উপরেই উৎপাদন ব্যবস্থাকে নির্ভর করতে হয়েছে। কোভিড পরিস্থিতিতে (২০২০) আমেরিকায় মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন হ্রাসের হার ছিল ৩.৫ শতাংশ, সেই দেশের সরকার ঘোষিত কোভিড সংক্রান্ত রিলিফ অ্যান্ড রেসকিউ প্যাকেজের পরিমান ছিল জিডিপি’র প্রায় ১০ শতাংশ। ২০২০-২১ পর্বে ভারতে জিডিপি হ্রাস ছিল ৭.৩ শতাংশ অথচ মোদী সরকার ঘোষিত রিলিফ প্যাকেজের পরিমান ছিল জিডিপি’র ২ শতাংশেরও কম। যা উল্লেখযোগ্য তা হল এই পর্বে উন্নত দেশগুলি দীর্ঘ চার দশকের নয়া – উদার অর্থনৈতিক প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে গিয়ে রাজকোষীয় খরচ বাড়িয়েছে (সরকারি ব্যবরাদ্দ বেড়েছে) – ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন নিজেদের জিডিপির অনুপাতে রাজকোষ ঘাটতি সংক্রান্ত সিলিং (ঊর্ধ্বসীমা)–এর যাবতীয় বিধিনিষেধ অগ্রাহ্য করে সংশ্লিষ্ট রিলিফের কাজ করেছে।
কোভিড আবার আগের মত মারণক্ষমতায় ফিরবে না এই অনুমানের উপর ভিত্তি করে বর্তমানের স্থিতাবস্থায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নটি হল অর্থনৈতিক বন্দোবস্ত কি পুনরায় নয়া-উদারবাদী অবস্থায় ফিরবে? আমেরিকার নতুন রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন অন্তত নিজেদের দেশে এমন দাবির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। যদিও পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সাথে বানিজ্যিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কেও তারা এই একই অবস্থান নেবেন কিনা সেই নিয়ে কোনো স্পষ্ট ঘোষণা তারা করেন নি। আমেরিকায় পূর্ববর্তী রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়ে ঘোষিত ২ ট্রিলিয়ন ডলার আর্থিক মূল্যের রিলিফ প্যাকেজের উপরে আরো ২ ট্রিলিয়ন ডলারের রিলিফ ঘোষণা করেছেন রাষ্ট্রপতি বাইডেন। আগামী দিনে দেশের পরিকাঠামো খাতে একই কায়দায় সরকারি ব্যয়বরাদ্দের পরিকল্পনাও ঘোষণা করেছেন তিনি।
নীতিগত দিক থেকে সার্বিকরূপে নয়া-উদার অর্থনীতিকে সরাসরি বাতিল করা ব্যাতিরেকে (জো বাইডেন এখনও এতদূর এগোন নি) আমাদের সামনে চলার আরও দুটি পথ রয়েছে। যদি কেউ নয়া-উদারবাদে ফেরত যেতে চায় তবে অবিলম্বে সরকারি ব্যায়বরাদ্দ কমাতে হবে, বেসরকারি পূঁজির কল্যানে সুদের হারকে নিয়ে যেতে হবে শ্যূন্যের কাছাকাছি, সমস্ত রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্থাকে বাতিল করে দিয়ে উদ্বৃত্তের পরিমানে ব্যাপকহারে মজুরির অংশকে ক্রমশ কমাতে হবে, সোজা কথায় শ্রমিকের যাবতীয় অধিকারের উপরে আক্রমন চালাতে হবে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সমর্থনের জোরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই ব্যবস্থাই চলে – যদিও ইদানিং পরিস্থিতির চাপে তা কিছুটা থমকে রয়েছে।
তত্ত্বগতভাবে ভিন্নতর কিছু না হলেও অন্তত খাতায় কলমে আইএমএফ আরেকরকম অবস্থান নিয়ে চলে। উন্নত দেশের ক্ষেত্রে তারা রাজকোষীয় খরচে সায় দিলেও তথাকথিত তৃতীয় বিশ্বের দেশসমুহে তারাই সরকারি ব্যায়বরাদ্দে ব্যাপক ছাঁটাইয়ের পক্ষে মত দেয়। উদাহরন হিসাবে বলা যায় মহামারী মোকাবিলায় তারা তৃতীয় বিশ্বের যেসকল দেশগুলিতে আর্থিক সাহায্য পাঠিয়েছে সেইসব জায়গাতেই এমন সাহায্যের প্রতিদানে সরকারি ব্যায়বরাদ্দ হ্রাসকে অন্যতম শর্ত হিসাবে চাপিয়ে দিয়েছে।
আইএমএফ’র এহেন অবস্থান অনেকটাই সাম্রাজ্যবাদী স্বার্থের সাথে মিলে যায়। তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলিতে সরকারি ব্যায়বরাদ্দ কম থাকায় সেইসব দেশে চাহিদার বাজারে ব্যাপক ঘাটতি তৈরি হবে যার ফলে জীবনধারণের প্রাথমিক প্রয়োজনে ব্যবহার হয় এমন সকল পণ্য (যা ঐসব দেশগুলিতে উৎপাদন করা হয়) মুদ্রাস্ফীতির সম্ভাবনাকে এড়িয়ে গিয়ে খুব সহজেই উন্নত দেশের বাজারে চালান করানো যাবে। লগ্নী পূঁজি উন্নত দেশে উৎপাদনের কাজে মুনাফা অর্জনে মুদ্রাস্ফীতি জনিত বাধাকে অজুহাত হিসাবে তুলে ধরে, সেই সমস্যার সমাধান করতেই তারা তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলিতে সরকারি ব্যায়বরাদ্দ কম রাখতে বাধ্য করে – ফলে একদিকে মজুরিখাতে খরচ হয় অনেক কম আরেকদিকে উৎপাদিত পণ্য বিদেশের বাজারে চালান করে বিপুল মুনাফা করে নিতে আর কোন বাধাই থাকে না। এই বন্দোবস্ত উপনিবেশের সময়ে চলা ঐতিহাসিক লুটের পর্বকেই আরেকবার মনে করতে বাধ্য করে। যদিও একথাও মনে রাখতে হয় কলোনিকৃত দেশসমুহ থেকে উন্নত দেশগুলিতে চালান হয়ে যাওয়া সম্পদ মুদ্রাস্ফীতির বাধা এড়িয়ে যাওয়া ছাড়াও কার্যত মুফতেও সম্পদের লুট চলেছিল – সেক্ষেত্রে একপয়সা মজুরিও খরচ হয় নি।
যদি বিশ্ব অর্থনীতি আরেকবার নয়া-উদারবাদের পথ নেয় তবে আগামিদিন কেমন হতে চলেছে সেই নিয়ে ইউএনসিটিএডি (UNCTAD) ২০২১ সালে মহামারীর প্রভাব সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন (Trade and Development Report 2021) প্রকাশ করেছে। এই সমীক্ষায় তারা ধরে নিয়েছেঃ ১) রাজকোষীয় ঘাটতি জিডিপি’র ৩ শতাংশের নিচে থাকবে, ২) শ্রমের বাজার আরও বেশি বিনিয়ন্ত্রিত হবে, ৩)সরকারি ব্যাঙ্কগুলি থেকে আরও বেশি অর্থ বের করে এনে সেই দিয়ে বেসরকারি লোকসানের ক্ষতিপুরন করা চলবে, এবং ৪) পূঁজির বাজার আরও আরও বেশি মুক্ত হতে থাকবে। মহামারীর প্রকোপ শুরু হবার আগে বিশ্ব বাজারে এই প্রবনতাগুলিই বৃদ্ধি পাচ্ছিল। যদি পুনরায় একই রাস্তায় চলা হয় তবে ২০১০-২০১৯ পর্বে বিশ্ব-বাজারে যেটুকু তেজির ভাব বজায় ছিল আগামি ২০২৩-২০৩০ সাল নাগাদ সেইটুকুও থাকবে না। এই সমীক্ষা জানাচ্ছে ২০১০-২০১৯ পর্বে বিশ্ব অর্থনীতিতে বৃদ্ধির বার্ষিক হার ছিল ৩.১৩ শতাংশ, ২০২৩-২০৩০ পর্বে তা হয়ে দাঁড়াবে ২.৫৪ শতাংশ। সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে ঐ একই পর্বে দক্ষিন এশিয়ায় বার্ষিক বৃদ্ধির হার হবে ৩.৬৪ শতাংশ, আগে যা ছিল ৫.৮৯ শতাংশ (নির্দিষ্ট করে ভারতের অবস্থার আলাদা কোন উল্লেখ সেই প্রতিবেদনে নেই)।
জিডিপি বৃদ্ধির হার কমলেও একই পর্বে শ্রমের উৎপাদনশীলতার হার বাড়তেই থাকবে – কারন নয়া-উদারবাদী অর্থনীতিতে বিভিন্ন দেশসমুহের মধ্যে উৎপাদন খরচ কমানর এক অভিন্ন প্রতিযোগিতা চলে যার ফলে সব দেশই চাইবে পূর্বের চাইতে অপেক্ষাকৃত কম শ্রম নিবিড় (প্রযুক্তিগত উন্নতিসাধনকে কাজে লাগিয়ে মাথাপিছু কাজ বাড়ানো হবে - কর্মসংস্থান কমতে থাকবে, অথচ উৎপাদন বাড়বে) কায়দায় উৎপাদন চালাতে, নিজেদের দেশের বাজারকে লগ্নী পূঁজির জন্য আরও বেশি উন্মুক্ত করে দিতে। জিডিপি বৃদ্ধির হার থেকে শ্রমের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির হারকে বাদ দিয়ে কর্মসংস্থানের হার মাপা হয় - শ্রমের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির হার বাড়তে থাকায় কর্মসংস্থান অভূতপূর্ব কায়দায় কমতেই থাকবে। যদি উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির আপাত হার একই জায়গায় থাকে তাহলেও জিডিপি বৃদ্ধির হারের ক্রমাবনমন আগের অবস্থার তুলনায় কর্মসংস্থানের হারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এমনও হতে পারে যে কর্মসংস্থানের হার ঋণাত্মক (Negetive) অবস্থায় পৌঁছে যাবে।
নয়া উদারবাদী জমানা যখন এতটা সংকটে পড়েনি (প্রথমে ডট কম সংক্রান্ত ফাটকা এবং পরে গৃহ ঋণ সংক্রান্ত ফাটকার দ্বারা বাজারে কিছুটা স্থিতাবস্থা বজায় রেখেছিল) তখনি ভারতের বাজারে শ্রমের উৎপাদনশীলতার হারের চাইতে কর্মসংস্থানের হার অনেকটাই নিচে নেমে যায়। এর ফলে ভারতের কর্মক্ষম জনতার এক বিরাট অংশকেই আক্ষরিক অর্থে চরম দারিদ্র্যের কবলে পড়তে হয়েছে – ক্রমশ তাদের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে, এমনকি দুবেলার আহারে যতটুকু ক্যালরির ন্যুনতম প্রয়োজন রয়েছে সেটুকুও তাদের জোটেনি। মহামারীর অনেক আগে থেকেই আমাদের দেশে এমন অবস্থা জারী রয়েছে। উন্নত দেশগুলির মত ভারতে সরকার মহামারীর সময়েও নয়া-উদারবাদের পন্থা পরিত্যাগ করেনি, সহজেই বোঝা যায় এখন যদি পুনরায় সার্বিক অর্থনৈতিক কর্মকান্ড শুরু হয়ও তাহলেও দেশের গরীব জনগনের অবস্থা কিছুতেই আগের অবস্থাটুকুতেও পৌঁছাতে পারবে না।
মোদি সরকার নয়া-উদারবাদী পথে চলতে নরকে যেতেও রাজি আছে। অর্থনীতিতে শ্রমজীবীদের কল্যানের উদ্দেশ্যে যেটুকু সংস্থান রয়েছে নির্লজ্জের মত সেইসবকিছু জলাঞ্জলি দিয়ে আন্তর্জাতিক লগ্নী-পুঁজির নির্দেশ পালনেই তাদের একমাত্র আগ্রহ। সরকারি ব্যায়বরাদ্দ এবং রাজস্বঘাটতিকে ক্রমাগত কমিয়ে দেবার পাশাপাশি শ্রমজীবীদের যাবতীয় অধিকারের উপরে একের পর এক আক্রমন নামিয়ে আনছে তারা। এই সরকারের স্পষ্ট অর্থনীতি হল উদ্বৃত্তে ক্রমশ মজুরির অংশ কমিয়ে দিয়ে মুনাফার হার বাড়ানোর কাজে পুঁজিপতিদের সহায়তা যুগিয়ে যাওয়া। শ্রমজীবী জনতার পকেট কেটে আগামিদিনে আরও উচ্চহারে টোল আদায় করবে তারা।
অথচ পরিস্থিতির মোকাবিলায় সময়ের দাবি হল শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ জনগনের সুবিধার্থে সমস্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় বিষয়ে সরকারি খরচ বাড়ানো। এই লক্ষ্যে কর্পোরেট কর সহ যাবতীয় সম্পদের উপরে ধার্য কর বাড়িয়ে (সোজা কথায় ধনীদের উপরে বাড়তি কর চাপিয়ে) সেই অর্থের সংস্থান করাই মহামারী পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রধান উপায় হওয়া উচিত ছিল। ধনীদের কর না বাড়িয়ে শুধু রাজকোষ ঘাটতি বাড়ানোর জোরে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব না, পরিস্থিতি আরও ভয়ানক আকার নেওয়া প্রতিহত করতে বড়জোর কিছুদিনের জন্য বাড়তি সময় মিলতে পারে। তবে আইএমএফ’র দেখানো পথে মহামারী সত্বেও রাজকোষীয় খরচ কম রাখার মতো অমানবিক পন্থার চাইতে অন্তত এই পথ অবশ্যই শ্রেয়তর।