ভারতের নবীন শিক্ষিত সম্প্রদায়কে এ-ক্ষেত্রে সমবেত হতে হবে। চাষী আর মজরদের মধ্যে জীবনের বাণী প্রচার করা আর তাদের সত্যকারের জীবনের সন্ধান দেওয়াই নবীন শিক্ষিত সমাজের একমাত্র কাজ। চাষী আর মজুরদের বলতে হবে, তোমরা অজানা ভবিষ্যতের লাভের আশায়, বর্তমানের শ্রমলব্ধ ধন পরের পায়ে বিলিয়ে দিয়ে বসে আছ, কিন্তু জানো না তোমরা, বিয়োগের ভিতর দিয়ে লাভ কখনো হতে পারে না। লাভের জন্য যে যোগ চাই-ই চাই। তাদের বোঝাতে হবে, তাদের শ্রমের ধনে তাদের ভোগের অধিকার ষোল আনা রয়েছে, সে -অধিকার ত্যাগ করে তারা পৌরুষের পরিচয় না দিয়ে কাপুরুষতার পরিচয়ই দিচ্ছে, মনুষ্যত্ব হতে তারা বহু দূরে সরে পড়েছে। এককথায়, জীবনে খাওয়া-পরার তীব্র আকাঙ্ক্ষা যতদিন না আমাদের দেশের কৃষক ও শ্রমিকগণের প্রাণে জাগবে ততদিন আমাদের অবস্থার পরিবর্তন কিছুতেই হবে না। পরিবর্তনের প্রয়োজনের সৃষ্টি না হলে পরিবর্তন কেনই বা হবে?
Author: Souvik Ghosh
মার্কসীয় প্রজ্ঞা আজকের মতো প্রাসঙ্গিক কখনো ছিল না
আমাদের জীবদ্দশাতেই পুঁজিবাদের ধ্বংস প্রত্যক্ষ করা সম্ভব হবে – এখনই হয়ত একথা বলার সময় আসেনি কিন্তু নয়া উদারবাদের ভিতরে এমন পাঁচটি সাধারন বৈশিষ্ট দেখা যাচ্ছে যা পৃথিবীজূড়েই জনগনের দুর্দশার মূল কারন। ক্রমান্বয়ী আর্থিক অবনমন, বাজারের উপরে কতিপয় ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর একচেটিয়া রাজত্ব, জনজীবনে প্রয়োজনীয় পণ্য ব্যবহারে গুরুতর অভাব, সার্বিক দুর্নীতি এবং দুনিয়াজূড়ে নৈরাজ্যের প্রতিষ্ঠা এগুলিই হল সেই পাঁচ বৈশিষ্ট। লাগামহীন মুনাফা কিংবা বাজারের উপরে মানবিক নিয়ন্ত্রন কায়েম করতে পারে এমন একটিও প্রতিষ্ঠান বাকি নেই যা পুঁজিবাদ ধ্বংস করেনি। আমার বক্তব্য হল এর ফলে আগামিদিনে এমন অনেক ঘটনা ঘটতে চলেছে যা অভূতপূর্ব – ‘জেলখানার নোটবুক’-এ এমন কিছুরই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন আন্তনিও গ্রামশি।”
সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেস বিবৃতি
কেন্দ্রীয় কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে পার্টি ভারতের স্বাধীনতার ৭৫তম বার্ষিকী পালন করবে স্বাধীনতা সংগ্রামে কমিউনিস্টদের ভূমিকা তুলে ধরে। আধুনিক ভারত গঠনের ভাবনা (আইডিয়া অব ইন্ডিয়া)-কে একীভূত করতে কমিউনিস্ট পার্টির অবদান; স্বাধীনতা সংগ্রামে ব্রিটিশদের সাথে আরএসএসের সহযোগিতা; এবং বর্তমান ভারতে সাংবিধানিক ধর্মনিরপেক্ষ-গণতান্ত্রিক-সাধারণতন্ত্রের যেভাবে ভয়াবহ অবমাননা চলছে সেই বিষয়গুলিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে।
মিশনারি থেকে রেভলিউশনারি হয়ে ওঠার চর্চা করতে হবেঃ কাকাবাবুর জন্মদিবসে বার্তা
সাধ্যমতো সমাজে এভাবেই ইতিবাচক হস্তক্ষেপ করতে হয়। কিন্তু শুধু সেবামূলক কাজেই আটকে থাকা উদ্দেশ্য নয়, বৈপ্লবিক পরিবর্তনই হল লক্ষ্য। মিশনারি থেকে রেভলিউশনারি হয়ে ওঠাই তরুণ কমরেডদের চর্চা করতে হবে। কাকাবাবুর স্মরণে সেটাই হবে প্রকৃত উত্তরাধিকার বহন।
মানুষের মুক্তির সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সংকল্প গ্রহণ করতে হবে
কমরেড মুজফফর আহমদের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে একজন আদর্শ কমিউনিস্ট নেতার বহুবিধ গুণাবলিকে অনুসরণ করে আমাদের পার্টিকে প্রকৃত বিপ্লবী পার্টি হিসেবে গড়ে তোলার সংকল্প গ্রহণ করতে হবে। জাতীয় জীবনের বিভিন্ন দিকের ক্রমবর্ধমান সংকটের মোকাবিলা করে – শ্রমিক, কৃষক ও শোষিত নিপীড়িত মানুষের মুক্তির সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সংকল্প গ্রহণ করতে হবে।
যে আদর্শবোধ এবং নিষ্ঠার কোন বিকল্প নেই
দোকানের নাম দেওয়া হলো ন্যাশনাল বুক এজেন্সি। সারা ভারতের মার্কসীয় ও প্রগতির সাহিত্যের পরিবেশক হওয়ার স্বপ্ন সেদিন আমরা দেখেছিলেম। ওই অর্থেই আমাদের নামের গোড়ায় ন্যাশনাল কথাটা বসেছিল। কেউ কেউ ভুল ধারণা করেন অন্তত অতীতে করেছেন যে আমরা ন্যাশনালিস্ট সাহিত্যের প্রকাশক ও পরিবেশক। ন্যাশনালিস্ট সাহিত্য আমাদের নিকটে পরিত্যাজ্য নয় ,কিন্তু তার জন্য অনেক দোকান আছে। তাই আমাদের ভবিষ্যতে যাতে কোনো বিচ্যুতি ঘটতে না পারে সে কথা মনে রেখে ১৯৪৩ সালে ন্যাশনাল বুক এজেন্সি প্রাইভেট কোম্পানি হিসেবে রেজিস্ট্রি করার সময় আমরা তার মেমোরেন্ডাম অব এসোসিয়েশন এর নির্ধারণ করে দিয়েছি যে আমাদের কোম্পানি শুধু মার্কসীয় ও প্রগতি সাহিত্যের প্রকাশক ও পরিবেশক । মেমোরেন্ডাম এর কোনো পরিবর্তন হয় না।
"বন্ধুর থেকে পার্টি ও তার আদর্শ বড়" - কাকাবাবুর শিক্ষা
একটি কথা বলা প্রয়োজন। পার্টি, আন্দোলন, মতাদর্শ ও বিপ্লবের স্বার্থে তিনি ছিলেন বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রশ্নের খুবই কঠোর। বাইরের কারোর সঙ্গে বন্ধুত্ব তাকে পার্টির আদর্শ থেকে কোনদিন বিচ্যুত করতে পারেনি। এমনকি পার্টির অভ্যন্তরে যখন আদর্শগত সংগ্রাম হয়েছে তখনও তিনি বলতেন, “বন্ধুর থেকে পার্টি ও তার আদর্শ বড়”। “মার্কসবাদী-লেনিনবাদী আদর্শ রক্ষার ক্ষেত্রে কারোর বন্ধুত্ব যেন অন্তরায় হয়ে না দাঁড়ায়”। শোষক শ্রেণী ও শাসকগোষ্ঠীর প্রতি তাঁর ছিল অসীম ঘৃণা। মার্কসবাদ বিরোধী তত্ত্বের ও ক্রিয়া-কলাপ এর বিরুদ্ধে তার সংগ্রাম ছিল গৌরবোজ্জ্বল।
গোখলের হয়ত প্রকৃত সত্য জানা নেই
নিজের লেখা বইতে বিজয় গোখলে সংশ্লিষ্ট চুক্তির প্রশ্নে বামেদের বিরুদ্ধে যেসমস্ত অভিযোগ করেছেন তা ভিত্তিহীন। সম্ভবত তার জানা নেই, এই চুক্তি সম্পাদিত হবার সময় প্রধান বিরোধী দল ছিল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এবং তারাও এই চুক্তি প্রসঙ্গে সংসদের আলোচনায় বিরোধিতাই জানিয়েছিল।
কমরেড সুদর্শন রায় চৌধুরী লাল সেলাম
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও বাংলায় এম এ পাশ শেষে ১৯৭১ সালে শ্রীরামপুর কলেজে অধ্যাপনায় নিযুক্ত হন। তিনি ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারন সম্পাদক । শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে দুবার (১৯৮৯ ও ১৯৯১ )সাংসদ নির্বাচিত হন সুদর্শন রায় চৌধুরী । ২০০৬ সালে জাঙ্গিপাডা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হয়ে রাজ্যের বামফ্রন্ট সরকারের উচ্চ শিক্ষা মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন ২০১১ সাল অবধি।
কোভিড মহামারী, মৃত্যুমিছিল এবং সম্পত্তিরক্ষার পবিত্র অধিকার প্রসঙ্গে
একথা সত্য, কোনও আন্তর্জাতিক দায়িত্ব পালনের আগে যে কোনও সরকারেই নিজের দেশের নাগরিকদের জীবনকে অগ্রাধিকার দেবে। কিন্তু উন্নত দেশগুলির সরকারগুলির সামনে নিজেদের নাগরিকের জীবন বনাম অন্য দেশের নাগরিকদের জীবন সংক্রান্ত তুলনার প্রশ্ন কার্যত অহেতুক; সামগ্রিকভাবে ভ্যাকসিনের ঘাটতির কারণে একদল মানুষের জীবনযাত্রার ঝুঁকির মুখোমুখি হচ্ছে যা আসলে ব্যক্তিগত সম্পত্তি-অধিকার রক্ষার প্রয়োজনে সৃষ্ট একটি কৃত্রিম ঘাটতি। এহেন সুরক্ষার পরিকল্পনাই আসলে টিকার উৎপাদন বৃদ্ধি রুদ্ধ করে রেখেছে। সংক্ষেপে বললে এসব এক দেশের লোক বনাম আরেক দেশের লোকের প্রশ্নই নয়, এ হল লাভ বনাম মানুষের জীবনের মধ্যে যে কোন একটিকে বেছে নেবার প্রশ্ন।