General Secretary States

ভারত হারলে কেউই জিতবে না - সীতারাম ইয়েচুরি

বিজেপি’র মুখপাত্র নুপুর শর্মা’র প্রসঙ্গে বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্ট কড়া শব্দ ব্যবহার করেছে। ‘দেশে আজ যা কিছু ঘটছে তার জন্য একমাত্র নূপুর শর্মাই দায়ী’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে ‘গোটা দেশের সমীপে তার ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিত’। রায়ে বলা হয়েছে ‘কোন একটি রাজনৈতিক দলের মুখপাত্র হওয়া এবং তদনুযায়ী সমর্থনের সুবাদে দেশের আইনকে অগ্রাহ্য করে যা ইচ্ছা তাই মন্তব্য করা যেতে পারে বলে তিনি ধরে নিয়েছেন’। অভিযোগ করা হয়েছে নূপুর শর্মা একা নন, তার পিছনে রয়েছে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহারকারী বিজেপি’র বিভাজনকামী রাজনীতি। সেই রাজনীতির নিজস্ব বাহিনী রয়েছে যারা নিরবিচ্ছিন্ন কায়দায় ঘৃণার প্রচার করে চলেছে। এরই প্রভাবে দেশের বুকে গভীর সংকট তৈরি হয়েছে। ভারত-বিরোধিতা, দেশাত্মবোধ-বিরোধী এবং বিভাজনকামী রাজনীতি না করে বিজেপি’রও ক্ষমা চাওয়া উচিত।          

ঘৃণাপ্রচার সম্পর্কে নিজের সাম্প্রতিক কৃতকর্মের জন্য নূপুর শর্মা আইনানুগ শাস্তি পাবেন, আমরা সুপ্রিম কোর্টের উপরে সেই আস্থা বহাল রাখছি। বিবিধ আন্তর্জাতিক চাপের কারনে আপাতত তাকে নিজের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার ঘোষণা করেছে বিজেপি। কিন্তু যদি তার বা তার মতো বিজেপি’র অন্যান্য নেতৃবৃন্দের এহেন কাজের যথাবিহিত শাস্তিবিধান না হয় তবে বিভাজনের রাজনীতির আগুনে ভারত ক্ষতিগ্রস্থ হবে, জনমানসেও ভুল বার্তা যাবে। টিভির পর্দায় আয়োজিত বিবিধ বিতর্কমূলক অনুষ্ঠানে তখন আরএসএস/বিজেপি’র ঘৃণার ভাষ্যে শিক্ষিত অনেককেই ক্রমাগত মুখ খুলতে দেখা যাবে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত একটি কৌতুকের বিরুদ্ধে যখন অভিযোগকারী নিজেই নিজের অভিযোগ সংক্রান্ত পোস্ট মুছে দিয়েছেন অথচ সেই নাটকীয় অভিযোগের ভিত্তিতেই বিভিন্ন সংবাদের তথ্য যাচাইকারী মহম্মদ জুবেইর’কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট এই বিষয়টিও একই বিবেচনায় বিচার করবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি। আসলে মহম্মদ জুবেইর নূপুর শর্মার ঘৃণাভাষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন বলেই বিজেপি’র অধীনে থাকা পুলিশ তাকে অপরাধী সাজাতে চাইছে। সমাজজীবনে বিজেপি/আরএসএস যেমন বিভাজনের এক চিরস্থায়ী ফাটল গেঁথে দিতে চায় তার বিরুদ্ধে মিথ্যা-ভুল সংবাদের তথ্য যাচাইকারী হিসাবে জুবেইর’দের মতো মানুষকে আরও বেশি করে কাজ চালিয়ে যাওয়ার উৎসাহ দেওয়া উচিত অথচ এদের জেলে পাঠানো হচ্ছে।    সেইসবকিছু যা মানুষকে মানুষের শত্রু করে তুলতে চায় তার বিরুদ্ধে সকলে একজোট হন, সোচ্চার হন – আমরা সবার উদ্দেশ্যে সেই আহবান জানাই। রাজনৈতিক দল এবং নাগরিক হিসাবে সমাজে ন্যায়বিচার সুনিশ্চিত করাই আমাদের প্রধান কর্তব্য বলে মনে করি আমরা। সাম্প্রদায়িক রাজনীতির হাতে বলি হয়ে আর একটিও জীবন যেন না হারায়। ভারতের বুকে বিভাজন যদি সম্প্রসারিত হলে কাররই জয় হবে না।


শেয়ার করুন

উত্তর দিন