Surjya MIshra States

State Secretary States: West Bengal Now

সিপিআই(এম) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদকের বিবৃতি

১৭ মে, ২০২১

আজ ১৭ই মে রাজ্যের ২ জন মন্ত্রীসহ তৃণমূল কংগ্রেসের তিন নেতা ও কলকাতার প্রাক্তন মেয়রকে ‘নারদা’ কান্ডে নিজাম প্যালেসের সি বি আই দপ্তরে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। করােনা মহামারীতে যখন সারা দেশের মানুষের জীবন, জীবিকা অভূতপূর্ব বিপর্যয়ের সম্মুখীন তখনই সরকারের সীমাহীন অপদার্থতা চাপা দিতে মানুষের নজর অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্যই এই সময়টা বেছে নেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণােদিতভাবেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে দেশ ও রাজ্যব্যাপী করােনা মহামরীর ভয়ংকর আক্রমণের সময়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্থা সি বি আই-র এই পদক্ষেপের আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। বিজেপি পরিস্থিতিকে ঘােরালাে করেছে এবং তৃণমূল কংগ্রেস এই পরিস্থিতির সুযােগ গ্রহণ করতে তৎপর হয়ে উঠেছে। মহামারী আইন সংক্রান্ত সরকারী নির্দেশ ও সার্কুলারকে অমান্য করে নিজাম প্যালেসসহ রাজ্যের সর্বত্র সরকারী দলের পক্ষ থেকে অবৈধ জমায়েত করা হচ্ছে।

আমরা দীর্ঘ ১০ বছর ধরে চিটফান্ড কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত সকল অপরাধীদের বিচার ও লুন্ঠিত মানুষের টাকা ফেরত দেওয়ার দাবী নিয়ে লড়াই করছি। বহু গরীব ও সাধারণ মানুষ এই আর্থিক প্রতারনার শিকার হয়েছেন এবং অনেকেরই দুখঃজনক মৃত্যু হয়েছে। নারদা টেপ নিয়েও অপরাধীদের শাস্তি দেওয়ার জন্য বিজেপি সরকার এবং তাদের পরিচালিত সংস্থাসমুহ সাত বছরে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। সংসদে এল কে আদবানির নেতৃত্বে গঠিত ‘এথিক্স কমিটি’-কে অকেজো করে রাখা হয়েছিল। এখনও পর্যন্ত সংসদে স্পিকার ও পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল পরস্পর বিরােধী অবস্থান নিয়ে চলেছেন। কেন্দ্রীয় সরকার দু-মুখাে নীতি নিয়ে চলছে। রাজনৈতিক ফায়দা তােলার জন্য দর কষাকষি ও দল ভাঙানাের লক্ষ্যে এই কেলেঙ্কারিগুলাে চাপা দিয়ে এই সব কেলেঙ্কারির সাথে যুক্ত অন্যান্য আসামীদের রক্ষাকবচ দিতে নিজের দলের নেতা বানিয়েছে।

এখন করােনা মহামারী মােকাবিলাই প্রধান কাজ। কেন্দ্রীয় সরকারের সার্বিক ব্যর্থতা দেশের জনগণকে এক ভয়ংকর বিপদের মধ্যে নিক্ষেপ করেছে। বিজেপি-র মনে রাখা উচিত সদ্য রাজ্যের মানুষ যে তাঁদের সরকারে চায় না, স্পষ্টভাবে সেই রায় দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীরও মনে রাখা উচিত যে এই রায় বিজেপি-র বিরুদ্ধে হলেও তৃণমূল কংগ্রেসের দুর্নীতি ও স্বৈরশাসনের পক্ষে ইতিবাচক রায় নয়। দুর্নীতির সঙ্গে আপােষ করে, দুর্নীতিবাজদের সঙ্গে নিয়ে বিজেপি-র মতাে ভয়ংকর শক্তিকে যে মােকাবিলা করা যায় না এই শিক্ষা তৃণমূল কংগ্রেসেরও গ্রহণ করা উচিত। সংঘ পরিবার ও বিজেপি-র ফ্যাসিবাদী কায়দায় শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই চালাতে হলে নিজেদের দলের অভ্যন্তরে দুর্নীতি ও স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই চালাতে হয়।

Spread the word

Leave a Reply