তনুশ্রী চক্রবর্তী
অর্থনৈতিক মন্দার সময় ‘Bank Failure’ কোনো নতুন ঘটনা নয়। US- এর ক্ষেত্রে 1819 সালের প্রথম আর্থিক আতঙ্ক থেকে COVID-19 এর মহামারী পর্যন্ত বেশ কয়েকটি বড় অর্থনৈতিক ঘটনা ব্যাংক গুলিকে উচ্চ হারে ব্যর্থ করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাংক ব্যর্থতার ইতিহাস স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র স্বাক্ষরিত হওয়ার মাত্র ৪০ বছর পর শুরু হয়। 1819 সালে নেপোলিয়নিক যুদ্ধের পর বিশ্বব্যাপী বাজারের সমন্বয় ঘটায়। এবং এই সমন্বয়ের পর থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক সংকটের সূত্রপাত ঘটে। এই আর্থিক সংকটকে একত্রিত করলে যে নামগুলি উল্লেখ করা যায় সেগুলি হল-
- The Panic of 1819
- The Panic of 1837
- The Panic of 1873
- The Panic of 1907
- The Great Depression
- Saving and Loan crisis of the 1980’s and 1990’s
- The Great Recession in 2008
- COVID-19 pandemic of 2020
- Bank failure in 2023
একটি বিষয় স্পষ্ট যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক সংকট কোন আকস্মিক (Stray) ঘটনা নয় । আসলে অর্থনীতিতে কোন ঘটনাই আকস্মিক নয়। সব ঘটনারই কার্যকারণ এবং ফলাফল থাকে। তবে ‘Everything is Political’ তাই অর্থনৈতিকভাবে পদ্ধতিগত (Systematic) বিষয়কে আকস্মিক ঘটনা বলে আখ্যায়িত করার প্রবণতা দক্ষিণপন্থী পপুলিস্ট ভাবধারার মজ্জাগত বিষয় ।
Bank Failure-এর সম্ভাব্য কারণ ব্যাখ্যা করার আগে বিশ্বায়ন, পুঁজিবাদ এবং সাম্রাজ্যবাদের ইতিহাস সংক্ষেপে উল্লেখ করা দরকার । কারণ এই ইতিহাস ব্যতিরেক অর্থনৈতিক সংকটের কারণ জানা বা বোঝা সম্ভব নয় ।
আজকের পুঁজিবাদী বিশ্বায়ন বুঝতে গেলে আমাদের কার্ল মার্কস এর ধ্রুপদী তত্ত্বের দ্বারস্থ হতে হবে, যেখানে তিনি বিশ্বায়নের চালিকাশক্তি বিশ্লেষণ ও ব্যাখ্যা করেছেন । 1848 সালে প্রকাশিত ‘ম্যানিফেস্টো অফ্ দা কমিউনিস্ট পার্টি’ গ্রন্থে বলেছেন, “উৎপাদিত দ্রব্যের জন্য কেন্দ্রীয় ভাবে প্রসারিত বাজারের প্রয়োজন বুর্জোয়াদেরকে বিশ্বব্যাপী তাড়া করে বেড়ায় । পুঁজি প্রত্যেকটি জায়গায় ঘর বাঁধতে চায়, স্থায়ীভাবে থাকতে চায়, যোগাযোগ স্থাপন করতে চায়”।
সাম্রাজ্যবাদী নীতির লক্ষ্য পুঁজিবাদী রাষ্ট্রগুলির অর্থনৈতিক পরিকাঠামোর পুনর্গঠন যাতে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি টিকে থাকে। নব্য-উদারী রাষ্ট্রগুলির প্রধান কাজ হল বিশ্বব্যাপী পুঁজির পুঞ্জিভবন ঘটানো এবং শ্রম শক্তির হ্রাস ঘটিয়ে ধনতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সাহায্য করা। এই ভূমিকার দিকে লক্ষ্য রেখে, রাষ্ট্রগুলি সরকারি ক্ষেত্রের হ্রাস ঘটানো, বিকেন্দ্রীকরণ চালু করা এবং তথ্যপ্রযুক্তিগত পরিকাঠামো ও আধুনিক উপকরণের সাহায্যে আধুনিকীকরণ করার কাজকে ত্বরান্বিত করছে। এই সমস্ত পদ্ধতি লাভ করার ফলে রাষ্ট্রগুলি তাদের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনভাবে নীতি নির্ধারণ করার ক্ষমতা পুঁজিবাদের কাছে দ্রুত সমর্পণ করছে এবং পাশাপাশি সাম্রাজ্যবাদী স্বার্থ, বিশেষত মার্কিন পুঁজিবাদের স্বার্থ আরো শক্তিশালী হচ্ছে।
বিশ্বব্যাপী ফিনান্স মুজির স্বার্থে তৈরি হওয়া নয়া উদারনৈতিক পুঁজিবাদ 2008-এর আর্থিক সংকটের সময় থেকেই এক ব্যবস্থাগত সংকটের মধ্যে রয়েছে । 2008 সালের আর্থিক সংকটের মোকাবিলা করার জন্য মার্কিন সরকার যে তিন লক্ষ কোটি ডলারের প্যাকেজ ঘোষণা করেছিল তার তিন ভাগের দু’ভাগ গেছে কর্পোরেট ও ব্যাংক গুলির কাছে ও মাত্র এক ভাগ পেয়েছিল ছোট ব্যবসা ও শ্রমজীবী মানুষ । ফলে ‘দ্য ইকোনমিস্ট’ উবাচ, “বার্তা স্পষ্ট ওয়াল স্ট্রিট ছুটছে ও মেন স্ট্রিট ধুঁকছে”। বছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক, অর্থাৎ এপ্রিল-জুন 2020-তে সিটি ব্যাংক, গোল্ড ম্যান স্যাক্স, জেপি মরগ্যানের আয় 2008 সাল থেকে সর্বাধিক ছিল। অন্যদিকে সপ্তাহে 600 ডলার বেকার ভাতা তিন মাসের জন্য দেওয়া হয়েছিল, তা কমিয়ে করা হয়েছিল 200 ডলার ।
2008 সালের বিশ্ব আর্থিক সংকট ছিল আর্থিকীকরণের প্রক্রিয়া বা 1980 দশকে শুরু হওয়া বৃহৎ কাল্পনিক মিথ্যা আর্থিক সম্পদের সৃষ্টি এবং স্বনিয়ন্ত্রিত ও দক্ষ বাজারের উপর ভিত্তি করে তৈরি এক প্রতিক্রিয়াশীল মতাদর্শের আধিপত্যের ফলস্বরূপ মাত্র। Laissez Faire পুঁজিবাদ অভ্যন্তরীণভাবে অত্যন্ত অস্থির তা একটি প্রতিষ্ঠিত সত্য। তবুও 1929 সালের স্টক মার্কেটের বিপর্যয় এবং 1930 সালের মহামন্দা থেকে প্রাপ্য শিক্ষা থেকে তৈরি তত্ত্ব এবং প্রাতিষ্ঠানিক নিয়ম রূপান্তরিত হয়েছিল পুঁজিবাদের গৌরবময় 30 বছরে এবং যা 2008-এর মতো গভীর আর্থিক সংকটকে এড়াতে পেরেছিল। এটি হয়নি মূলত উপস্বত্বজীবী বা ‘ভাড়াটিয়া’ অর্থনীতিবিদদের জোট আধিপত্য অর্জন করেছিল এই সময়ে যা বিদ্যমান আর্থিক ক্রিয়া-কলাপকে নিয়ন্ত্রণ মুক্ত করার সময় আর্থিক উদ্ভাবন গুলিকে নিয়ন্ত্রিত করতে অস্বীকার করেছিল যা এই বাজারকে আরো ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছিল।
2008 সালের Global Recession -এর কারণ খুঁজতে গেলে যা সব থেকে বেশি করে মাথায় আসে তা হল নিরবিচ্ছিন্ন ‘লোভ’ দ্বারা পরিচালিত শক্তির নিশ্চিত ভূমিকা । আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপকদের ‘লোভ’ যা সহজ ঋণের দিকে আর্থিক ব্যবস্থাকে পরিচালিত করে । বাড়ির মালিকদের ‘লোভ’ তাদের সামর্থ্যহীন বাড়ি কেনার দিকে পরিচালিত করেছিল । যে ‘লোভ’ Mortgage Backed Securities এবং Credit Default Swap (অদল বদল এর) মতো চতুর নতুন আর্থিক উপকরণ তৈরির দিকে পরিচালিত করেছিল । উপভোক্তা (Consumer)-দের লোভ যা ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহারকে মাত্র অতিরিক্ত করেছিল । কোম্পানিগুলির লোভ যা Offshoring এবং বেশি মূল্যের দেশীয় শ্রম কে কম দামের বৈদেশিক শ্রমের প্রতিস্থাপনের দিকে নিয়ে গিয়েছিল । আসলে ‘লোভ’ বিষয়টি অত্যন্ত সুচারুভাবে জনসাধারণের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে সক্ষম দক্ষিণপন্থী পপুলিস্ট ভাবধারা, ডানপন্থী পপুলিজম, গণতান্ত্রিক পরিকাঠামো থেকে বিচ্যুত একক অস্তিত্বসম্পন্ন বিচ্ছিন্ন এবং জনগণকে একটি বিকল্প দৃষ্টিভঙ্গি যা সহজেই বোধগম্য এবং ব্যক্তিগতভাবে সন্তোষজনকতা প্রদান করে।
ডানপন্থী পপুলিজম খুব সহজেই মানুষকে ‘লোভ’ যে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির একটি প্রাথমিক উপায় তা বোঝাতে সক্ষম হয়। ডানপন্থী পপুলিজম প্রদত্ত ধারণা গুলি এতটাই উদ্দেশ্যমূলক এবং কর্তৃত্বমূলকভাবে ব্যাখ্যা করা হয় রাষ্ট্রের দ্বারা, যাতে মনে হয় ব্যক্তির স্বার্থকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে । ফলে ব্যক্তির নিজস্ব ভাবনা বোধ এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা থাকে না । ব্যক্তি কর্তৃত্ব মূলক দিক নির্দেশনা মেনে নেয়। ডানপন্থী পপুলিজমের মূল উদ্দেশ্য হল, জনসাধারণ তাদের নেতৃত্বের কর্তৃত্ব মূলক নির্দেশকে আত্তীকরণ করুক এবং সেই বিশ্বাসকে অন্যান্যদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হোক । ডানপন্থী পপুলিজম, বিশ্বায়ন ও উদারীকরণের যে ভয় বা নিরাপত্তাহীনতা তার জনগণের ভাবনা মাত্র, তার বেশি কিছু নয় বলে বর্ণনা করে । এবং এই সংঘাতময় বিশ্বে ব্যক্তির নিরাপত্তাহীন এবং দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হওয়ার অধিকারকে বাস্তবসম্মত রূপ দিতে সক্ষম হয় ।
যারা লেখাটি পড়ছেন তারা কি নিজেদের এবং অন্যদের বর্তমান অবস্থার সাথে এর সাদৃশ্য খুঁজে পাচ্ছেন না ??
যার জন্য লেখার শুরুতেই বলেছিলাম আজকের ‘Bank Failure’ বুঝতে গেলে বিশ্বায়ন, উদারনীতি, সাম্রাজ্যবাদ এবং এই তিনের সংমিশ্রনে তৈরি ডানপন্থী পপুলিজমের আসল চেহারাকে চিনতে হবে।
গত সপ্তাহে আমেরিকার সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক ও সিগনেচার ব্যাংক বন্ধের পর যে আশঙ্কা ছড়িয়েছিল, তা আরো বৃদ্ধি পায় গত বুধবার সুইজারল্যান্ডের ব্যাংক ক্রেডিট সুইসের আর্থিক হাল খারাপ হওয়ার খবরে । ট্রাম্প আমলের বিপদজনক নিয়ন্ত্রণমুক্ত ব্যাংক ব্যবস্থার পরিবর্তন আবশ্যিক হয়ে পড়েছে। যার মধ্যে রয়েছে নিয়মিত ‘Stress’ পরীক্ষা এবং ঝুঁকির পরিমাণ পরীক্ষা করার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ।
ব্যাংকের ব্যর্থতার জন্য যেমন দুর্বল Risk Management (ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা) পছন্দের কারণ রয়েছে ঠিক তেমনি সীমাবদ্ধ আর্থিক নীতি (Monetary Policy) –এর থেকে উদ্ভূত Macro financial Challenges (সার্বিক আর্থিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা) রয়েছে যা আর্থিক লেনদেনের সীমাকে সংকুচিত করেছে । বন্ড ও ইক্যুইটির থেকে নেতিবাচক আদায় সম্পদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। পরিমাণগত আর্থিক সংকোচন নীতি অর্থনীতিকে সংকুচিত অর্থ সরবরাহের দিকে পরিচালিত করেছে যা আমানতের ক্ষেত্রে বৃহত্তর প্রতিযোগিতা তৈরি করেছে কারণ ব্যাংকের ঋণ দেওয়ার ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে । খুব সহজে বললে বলা যায়, অর্থনীতিতে অর্থের যোগান হ্রাস পেলে ভারসাম্যের জন্য অর্থের চাহিদা কমাতে হয় । আর তার জন্য সুদের হার বৃদ্ধি করতে হয় । ফলে বিনিয়োগ আরো কমে যায় কারণ Borrowing Power হ্রাস পায়।
SVB স্টার্ট আপগুলির কাছ থেকে বিপুল আমানত গ্রহণ করেছিল যা তাদের Venture Capital তহবিল সমবেত করেছিল ।
ঋণ আদায় নিশ্চিত করার জন্য অতিরিক্ত জামানতের জন্য Start-up গুলিতে Related Party Equity ব্যবহার করেছিল এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দীর্ঘমেয়াদী Mortgage Backed Securities-এ অতিরিক্ত তহবিল বিনিয়োগ করেছিল।
মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রাস্ফীতি মোকাবিলার জন্য দ্রুত সুদের হার বৃদ্ধি Start-up আমানতকারীদের অর্থনৈতিক কাঠিন্য তৈরি করে। ফলে তারা আমানত প্রত্যাহার শুরু করে, যা ব্যাংকের আমানত তহবিলকে তলানিতে পৌঁছে দেয় ।
এখন আলোচ্য বিষয় হল এই মুদ্রাস্ফীতি কিভাবে আটকানো যায়?
বর্ধিত সুদের হার মানুষের ধার নেওয়ার ক্ষমতাকে সংকুচিত করে এবং খরচ করার ক্ষমতাকেও সংকুচিত করে । কিন্তু এই আর্থিক নীতি তখনই কার্যকরী হয়, যখন মুদ্রাস্ফীতির কারণ অতিরিক্ত খরচ করার প্রবণতা থেকে তৈরি হয় । কিন্তু তথ্য বলছে মুদ্রাস্ফীতির মূল কারণ হলো Price Gouging (দামের ক্ষেত্রে প্রতারণা) এবং Profit Price (দাম থেকে প্রাপ্ত মুনাফা) বৃহৎ কোম্পানিগুলি শ্রম, শক্তি এবং কাঁচামালের বৃদ্ধির অজুহাতে দাম বৃদ্ধি করছে । কিন্তু মজুরি 2022 সালে বৃদ্ধি পেয়েছে মাত্র 5% যা মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য যেমন জ্বালানি, তেলের দাম বৃদ্ধির (41%) ধারে কাছেও নেই ।
US-এর পূর্বশ্রমিক নেতা Robert Reich বলেছেন, কেন মুদি (Grocery) দ্রব্যের দাম লাগাম ছাড়া হয়েছে। দেশের 85% মাংস ও খামারজাত দ্রব্যের ক্ষমতা চার’টি বড় কোম্পানির দখলে রয়েছে। এইমাত্র কোম্পানি বীজ জাত দ্রব্যের দাম নির্ধারণ করে। দুটি বৃহৎ কোম্পানি ভোক্তাদের ব্যবহৃত পণ্যদ্রব্যের দাম নির্ধারণ করে।
আসলে রাষ্ট্র ব্যবস্থা যখন মুষ্টিমেয় ধনীর দখলে থাকে, সেখানে এই ধরনের আর্থিক সংকট যে অত্যন্ত স্বাভাবিক বিষয় তা নিয়ে সন্দেহ নেই । আর এর ভয়ংকর অর্থনৈতিক ফলাফলের ভাগীদার যে কেবল সাধারণ মানুষ তা প্রমাণ করার প্রয়াস বাতুলতা ছাড়া আর কিছু নয়।
লেনিন তাঁর ‘সাম্রাজ্যবাদ’ গ্রন্থে ‘উৎপাদনের একত্রীকরণ এবং একচেটিয়া কারবার’ বিষয়ে বিশ্লেষণ করেছেন এবং পুঁজিবাদের একচেটিয়া পর্যায় বা সর্বোচ্চ পর্যায়কে ‘সাম্রাজ্যবাদ’ বলেছেন।
যেভাবে আর্থিক ব্যবস্থা চলছে, তাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র Bank Failure বা আর্থিক মন্দা ধারাবাহিক বিষয় । কারণ আগেই বলেছি অর্থনীতিতে কোন কিছুই আকস্মিক নয় । আর রাজনৈতিক পদক্ষেপ যা অর্থনৈতিক পদ্ধতিকে চালনা করছে তা পুঁজির একত্রীভবণকে আরো ত্বরান্বিত করবে যা আর্থিক ব্যবস্থাকে ভঙ্গুর করে দেবে । শ্রমজীবী মানুষের ভাতা ও জীবনমানের উপর নিত্যনতুন আক্রমণ লক্ষ্য করা যাবে।
ঠিক 2008 -এর সংকটের মতো সরকার আরোপিত ব্যক্তি সংকোচের নীতির আড়ালে সংকুচিত হবে ভাতা, কমানো বা বন্ধ করা হবে। পেনশন ও অন্যান্য সামাজিক সুরক্ষা ও সুবিধা এগুলি হবে, এমন এক পরিস্থিতিতে যখন বহু মানুষ তাদের কাজ হারিয়েছেন এবং নতুন কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা ও কম । মুনাফা সর্বোচ্চ করার ‘লোভ’ থেকে পুঁজিপতির শ্রম শক্তি কমিয়ে তার জায়গায় আরো বেশি প্রযুক্তি ব্যবহারের চেষ্টা করবে।
এক কথায় বলা যায় পুঁজিবাদী ব্যবস্থা “তোমার চোখে দেখেছিলেম আমার সর্বনাশ”। ভারতবর্ষের বাজারে এই US Bank Failure-এর কী কী ফলাফল হতে পারে তা সময় বলবে। তবে সময় নষ্ট না করে, বলা যায় ভারতের রপ্তানি কমছে আর ঘোরসংকটে পড়ছে শিল্প । যার প্রথম আঘাত আসবে শ্রমিক শ্রেণীর ওপর ছাঁটাইয়ের মাধ্যমে, আর ভারতবর্ষের আর্থিক নীতি US কে অনুকরণ করছে তা না বোঝার কারণ নেই । কিন্তু প্রশ্ন একটাই – এবার কি মোদি সরকারের মেকিং ইন্ডিয়া নীতি ভারতের আর্থিক বাজার বা ব্যাংক ব্যবস্থার ব্যর্থতার ব্যবস্থাকে আরো দৃঢ় করবে ?? সময় নেই সাধারণ মানুষের ভাবার। সময় একমাত্র রাস্তায় নেমে প্রতিরোধের দেওয়াল শক্ত করার । যাতে বিজেপি ও আরএসএস -এর মত দেশদ্রোহীরা সাধারণ মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে।