Satyaki Roy

এই বাজেটকে নিস্ফলাই বলতে হবে - সাত্যকি রায়

ওয়েবডেস্ক সাক্ষাৎকার

) ২০২২-২৩ সালের বাজেট পেশ হয়েছে এই বাজেটের প্রেক্ষিত কি?

সকলেই বুঝছেন, দেশের পরিস্থিতি অস্বাভাবিক ছিল। যেকোনো সংকটই সবচাইতে বেশি প্রভাব ফেলে অরক্ষিত মানুষ, গরীব মানুষদের উপরে। জরুরী অবস্থায় সঞ্চয়, বাসস্থান, উপযুক্ত স্বাস্থ্য পরিষেবা ইত্যাদি ক্ষেত্রে তাদের গুরুতর অভাব থাকে, এগুলির কারণেই তাদের উপরে সংকট সর্ব্বোচ প্রভাব ফেলে। বহু মানুষ এই সময়কালে কাজ হারিয়েছেন, আরো অনেকের কাজ থাকলেও প্রকৃত আয় কমে গেছে। সংঘটিত ক্ষেত্রের নিয়মিত কর্মী এমন মানুষেরও কাজ চলে গেছে। তাই সকলেরই প্রত্যাশা ছিল মানুষের আয় কমে যাওয়ার কারণে যেভাবে চাহিদার সংকট দেখা দিয়েছে তার থেকে পরিত্রাণের রাস্তা দেখাবে এবারের বাজেট। জনগণের সেই প্রত্যাশাই এই বাজেটের প্রেক্ষিত।

) বাজেটে.% হারে বৃদ্ধি সম্পর্কিত ঘোষণা করা হয়েছে এই দাবির বাস্তবিক ভিত্তি কি?

বাজেটের আগে ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিকাল অফিস (NSO) এর তরফে আগাম অনুমান (অ্যাডভান্সড এস্টিমেট) জানানো হয়। সেই অনুযায়ী সরকার বলছে চলতি আর্থিক বছরে অর্থাৎ ২০২১-২২' এ আমাদের দেশের বৃদ্ধির হারকে ৯.২ শতাংশ হবে বলে এস্টিমেট করা হয়েছে। প্রতি বছর বাজেটের আগে চলতি অর্থ বর্ষে আর্থিক গতিপ্রকৃতি সম্পর্কিত আলোচনা আর্থিক সমীক্ষা রিপোর্ট (ইকোনমিক সার্ভে) প্রকাশিত হয়, সেই প্রতিবেদনে আগামী অর্থ বর্ষে অর্থাৎ ২০২২-২৩ এ প্রকৃত বৃদ্ধির হারকে ৮% থেকে ৮.৫% ধরা হয়েছে। বাজেটে আগামী বছরের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ( জি ডি পি) সম্পর্কিত গণনাও থাকে। সরকারের হিসাব অনুযায়ী আগামি বছরে জি ডি পি দাঁড়াবে ২৫৮ লক্ষ কোটি টাকা যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ১১.৫% হারে বৃদ্ধি হচ্ছে বলা যাবে। অর্থাৎ বৃদ্ধির প্রকৃত হার হল ৮% থেকে ৮.৫% (এক্ষেত্রে মূল্যবৃদ্ধি বা ইনফ্লেশন কে বিবেচনায় রাখা হয়) এবং নমিনাল হারে বৃদ্ধি (যে হিসাবে মূল্যবৃদ্ধি বিবেচনায় রাখা হয় না) টা হল ১১.১%। প্রথমেই বলবো এই সমস্ত সংখ্যাগুলি সবই আগাম অনুমান বা এস্টিমেট, প্রতি বার এমন দুটি আগাম অনুমান (অ্যাডভান্স এস্টিমেট), তারপরে প্রভিশনাল এস্টিমেট এবং শেষে রিভাইজড এস্টিমেট প্রকাশিত হয়। এভাবে বলা যায় মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (জি ডি পি) সম্পর্কে পাঁচবার এধরনের অনুমান (এস্টিমেট) করা হয়। ৯.২ শতাংশ হারে বৃদ্ধি সম্পর্কে ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিকাল অফিস (NSO) যা জানিয়েছে সেটি হল প্রথম আগাম অনুমান (অ্যাডভান্স এস্টিমেট)। তারই ভিত্তিতে সরকার আগামী বছরে বৃদ্ধির হার (গ্রোথ রেট)- কে ৮% থেকে ৮.৫% ধরেছে। একথা ঠিক যে আই এম এফ এবং বিশ্ব ব্যাংক আমাদের দেশের সম্ভাব্য বৃদ্ধির হারকে আরো বেশি দেখিয়েছে। আবার একথাও মনে রাখতে হবে ২০১৮-১৯ সাল থেকে দেখা যাচ্ছে যে ইকোনমিক সার্ভে তে সরকার আর্থিক বছরের শুরুতে যে বৃদ্ধির অনুমান রেখেছে বছরের শেষের গণনা তার চাইতে কম হয়েছে। চলতি অর্থবছরের (২০২১-২২) শুরুর দিকে ইকোনমিক সার্ভের প্রজেকশন ছিল বৃদ্ধির হার হবে ১১%, কিন্তু সরকারের স্ট্যাটিসটিকাল অফিস প্রথম আগাম অনুমান (অ্যাডভান্সড এস্টিমেট) প্রকাশ করলে সেই বৃদ্ধির হার কমে হয়েছে ৯.২%। সুতরাং বৃদ্ধির হার থেকে অর্থনীতির এগোনো কিংবা পিছিয়ে আসা সম্পর্কে ধারণা করা গেলেও তা অর্থনীতির বর্তমান সময়ের একটি নিশ্চিত অবস্থা তুলে ধরে এবং এই সংখ্যাগুলি প্রশ্নাতীত এমনটা একেবারেই নয়।

৩) অতিমারী অবস্থা থেকে আমরা বেরিয়ে এসেছি বলে মনে করা হচ্ছে। অর্থনীতির অবস্থা বর্তমানে কেমন?

গত বছরে আমাদের দেশে ৭.৩% হারে অর্থনৈতিক সংকোচন হয়, এবছর বৃদ্ধির হার ৯.২% এবং সামনের বছর সেই বৃদ্ধির হার ৮% - ৮.৫% হবে ধরা হচ্ছে। ধারণা হতে পারে গতবছরের সংকোচন ( -৭.৩%) থেকে এবছর ৯.২% হারের বৃদ্ধি কতটা বাস্তবিক। এটা সহজেই বোঝা যায় যে যে কোনো বৃদ্ধি যদি একটি সংকুচিত ভিত্তির নিরিখে গণনা করা হয় তবে বৃদ্ধীর হার বেশি হবে। ২০১১-১২ এর মূল্যসূচক অনুযায়ী ২০১৯-২০ সালের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (জি ডি পি) এর তুলনায় ২০২১-২২ সালে মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (জি ডি পি) বেড়েছে মাত্র ১%। কিন্তু ২০০২০-২১ এর নিরিখে বৃদ্ধির হার দেখা যাবে ৯.২। এই কারণেই সরকার বলছে আমাদের চলতি অর্থবছরে মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (জি ডি পি) মহামারী পূর্ব অর্থনীতির জায়গায় পৌঁছান গেছে। শিল্পক্ষেত্রে (ইন্ডাস্ট্রি) মহামারী পূর্ব অবস্থার তুলনায় ৪% হারে বৃদ্ধি হয়েছে। নির্মাণ শিল্প (কনস্ট্রাকশন) - এ বৃদ্ধি মাত্র ১%, উৎপাদন (ম্যানুফ্যাকচারিং) ক্ষেত্রে এহেন বৃদ্ধি ৪% হারে, পরিষেবা (সার্ভিসেস) ক্ষেত্রে এখনও মহামারীর আগের অবস্থায় পৌঁছানো যায় নি, প্রায় ৮% পিছিয়ে রয়েছে। সুতরাং রিকভারি হচ্ছে বলা গেলেও তার গতি খুবই ধীর।

খরচের দিক থেকেও মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (জি ডি পি) - কে পরিমাপ করা যায়। আমাদের দেশে মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (জি ডি পি) - এর প্রায় ৫৫% আসে প্রাইভেট ফাইনাল কন্সাপমশন এক্সপেন্ডিচার থেকে। অর্থাৎ মানুষ কত কিনছেন, আরেকটি অংশ হল গ্রস ফিক্সড ক্যাপিটাল ফর্মেশন ( জি ডি পির ৩৩%)  - যার সাহায্যে কার্যকরী বিনিয়োগ পরিমাপ করা যায়। এই দুটি ক্ষেত্র বিচার করলে দেখা যাবে প্রাইভেট ফাইনাল কন্সাপমশন এক্সপেন্ডিচারে আমরা এখনো মহামারীর আগের অবস্থায় পৌঁছাতে পারিনি। অর্থাৎ এখনও মহামারীর আগের অবস্থার মতো জনসাধারণের ক্রয়ক্ষমতা নেই।  গ্রস ফিক্সড ক্যাপিটাল ফর্মেশন ক্ষেত্রটি মহামারীর আগের অবস্থার চাইতে সবে ৩% অতিক্রম করেছে।

আমাদের দেশে ক্যাপিটাল গুডস (মেশিন ইত্যাদি) এবং কনজিউমার ড্যুরেবলস ( রেফ্রিজারেটর, এসি মেশিন, গাড়ি ইত্যাদি) - যার চাহিদার উপরে মূলত কারখানার উৎপাদন নির্ভর করে সেইসব জিনিসের চাহিদা এখনও যথেষ্ট কম। এখনও মানুষের হাতে জিনিসপত্র কেনার মতো অর্থ নেই, এরই প্রতিফলন ঘটেছে রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার কনজিউমার্স সেন্টিমেন্ট সার্ভের ডিসেম্বর মাসের প্রতিবেদনে। সেই সার্ভে চলাকালীন ৭১% উত্তরদাতা জানিয়েছেন আগের চাইতে অর্থনৈতিক অবস্থা তাদের খারাপ হয়েছে, ৩৯% উত্তরদাতা মনে করেন এই অবস্থা ভবিষ্যতে আরো খারাপ হতে পারে। সরকারের ঘোষনায় চলতি অর্থবছরের শেষ পর্বে (ডিসেম্বর - মার্চ) বিনিয়োগে বৃদ্ধির হার হবে ৬.১%। এই অনুমানেও সন্দেহের অবকাশ রয়েছে  কারণ আমাদের দেশের শিল্পে মাত্র ৬০% ক্যাপাসিটি ব্যবহৃত হচ্ছে, অর্থাৎ মোট উৎপাদন ক্ষমতার ৬০% ই কাজে লাগছে। এমন অবস্থায় উৎপাদন ক্ষেত্রে অবিক্রীত মজুত (ইনভেন্টরি) থাকছে, বিক্রির তুলনায় সেই মজুতের পরিমাণ এখনও অনেকটাই বেশি। সুতরাং আমাদের দেশে চাহিদার সংকট অত্যন্ত গভীরে চলে যাচ্ছে, এর মোকাবিলা করাই বাজেটের প্রধান বিষয় হত্তয়া উচিত ছিল। কিন্তু ঘোষিত বাজেটে সেরকম কিছু দেখা গেল না।

৪) এই বাজেটে সরকারের মূল ভাবনাটি কি?

দেশের আর্থিক পরিস্থিতিতে যা প্রয়োজন ছিল সেরকম কোনো উদ্যোগ সরকারের তরফে দেখা গেল না। সমস্ত দেশেই মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ( জি ডি পি) - এর ভিত্তিতে আর্থিক ঘাটতি (ফিসক্যাল ডেফিজিট) বেড়েছে, কারণ সব দেশেই (ধনী, শক্তিশালী এবং উন্নয়নমুখী দেশ সকলেই) সরকারি ব্যয় বাড়ানো হয়েছে। মানুষের হাতে অর্থ না থাকলে বাজারে চাহিদা তৈরি হবে না, শিল্প - কৃষি কোনো ক্ষেত্রই তার আগের অবস্থায় ফিরে আসতে পারবে না বা এগোতে পারবে না। আমাদের দেশেও সরকার বলছে ব্যয় বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে, পরম মানে সরকারি ব্যয় বাড়লেও জিডিপি এর ভিত্তিতে গত বছর সরকারের মোট খরচ ছিল ১৬.২৪% এই বছরের বাজেটে সেই খরচ ধরা হয়েছে ১৫.৩%। অর্থাৎ জি ডি পি - এর ভিত্তিতে সরকারি ব্যয় কমে গেল।  আমাদের দেশে কর (ট্যাক্স রেভিনিউ) আদায় বেড়েছে, কর্পোরেশন ট্যাক্স আদায় বৃদ্ধি পেয়েছে। মহামারীর সময়েও কর্পোরেটদের মুনাফা কমেনি। জি এস টি বাবদ আদায়, পেট্রোলিয়াম জাত পণ্যের দাম বাড়ানো হয়েছে ফলে সরকার বাড়তি পরোক্ষ কর আদায় করেছে। গত বছরের তুলনায় প্রায় ৯.৬% হারে সরকারি কর আদায় বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু বাজেটে মোট খরচের বৃদ্ধির হার ধরা হল ৪.৬%। অর্থাৎ যে হারে আয় বাড়লো, সেই হারে খরচ বাড়লো না। অন্যান্য দেশে যখন সরকারি ব্যয় বরাদ্দ বাড়িয়ে চাহিদার সংকট মোকাবিলা করার পথে চলছে তখন আমাদের দেশের বাজেটে সেই অভিমুখ দেখতে পাওয়া গেল না। সরকার বলছে তারা ক্যাপিটাল এক্সপেন্ডিচার বাড়িয়েছে (সরকারি হিসাবে ৩৫.৪% বৃদ্ধি হয়েছে)। কিন্তু চলতি বছরের মূলধনী খাতে খরচের অংশ এয়ার ইন্ডিয়ার বেসরকারিকরণের l গ্যারান্টিড সেটেলমেন্ট বাবদ সেই টাকা খরচ করা হয়েছে। অর্থাত মূলধনী খাতে প্রকৃত অর্থে কত খরচ হবে তা বলা মুশকিল। এই বছরের বাজেট ঘোষণা অনুযায়ী গত বছরের রিভাইজড এস্টিমেটের তুলনায় সরকারের রেভিনিউ এক্সপেন্ডিচার (যার সাহায্যে বেতন ইত্যাদি খরচ মেটানো হয়) বাড়বে মাত্র ১%। অর্থাৎ মোটের উপর সরকার পুরানো পদ্ধতিতেই আর্থিক ঘাটতি নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে। এ থেকেই বোঝা যায় মানুষের প্রয়োজনের চাইতে ফাইন্যান্সিয়াল  ক্ষেত্রে রেটিং নির্ধারক সংস্থাগুলির গুরুত্ব তাদের কাছে বেশী। কিছুদিন আগে আমাদের রপ্তানি মোট আমদানির তুলনায় বেশি ছিল, আমাদের বিদেশী মুদ্রার রিজার্ভ ও ছিল বেশি, কর আদায় ও বেড়েছে। এই অবস্থায় সরকারি ব্যয় বরাদ্দ বাড়ানোই যেত, কিন্তু সরকার সেই পথে যায় নি।

) কর্মসংস্থানের প্রশ্নে এই বাজেটকে কিভাবে দেখা যাবে?

প্রকৃত অর্থে কর্মসংস্থান প্রসঙ্গে এই বাজেটে কিছুই বলা হয় নি। মহামারীর সময় বিভিন্ন দেশের সাথে ভারতেও কর্মসংস্থানের হার পরিমাপ করা হয়েছে। বিশ্ব ব্যাংকের একটি হিসাব অনুযায়ী সারা পৃথিবীতে এই পরিমাপের গড় ছিল ৫৮%, আমাদের দেশে মহামারীর সময়ে গড় কর্মসংস্থানের হার ছিল ৪৩%। চীন, পাকিস্তান কিংবা বাংলাদেশের তুলনায় আমরা নীচে ছিলাম। কিছু উত্তর আফ্রিকার দেশ এবং মধ্য প্রাচ্যের কিছু দেশের তুলনায় আমরা এগিয়ে ছিলাম। এই সময়কালে মূলত কম বয়সী এবং মহিলাদের কর্মসংস্থানের বিষয়টি বেশি করে সংকটগ্রস্থ হয়েছে। এই মহামারীতে অন্যান্য ক্ষেত্রের তুলনায় কৃষিক্ষেত্রে ক্ষতির পরিমাণ কম। প্রয়োজন ছিল যতদিন না স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসছে ততদিনে MGNREGP - এর মত প্রকল্পগুলির পরিসর বাড়ানোর। গ্রামাঞ্চল ব্যতিরেকে শহর এলাকাতেও কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে (অন্তত অতীত দিনের অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে) নির্দিষ্ট পরিকল্পনার দরকার ছিল। বামপন্থীরা এই দাবি অনেক আগে থেকেই করে এসেছে। অথচ এবারের বাজেটে MGNREGP প্রকল্পের ২৫% বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়া হল। বলা হচ্ছে চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দ বাড়ানো হবে, একথা আগেও বলা হত। এমন একটা সময়ে এই প্রকল্পের বরাদ্দ ছাঁটাই করা হল যখন সারা দেশে কর্মসংস্থান ভয়াবহ সংকটে রয়েছে।

) প্রশ্ন: এই বাজেটের মানুষের দৈনন্দিন জীবনের কি সুরাহা হবে?

এখনও আমাদের দেশের ৭০% পূর্নবয়স্ক মানুষ টিকার দুটি ডোজ পান নি, এর সাথে কম বয়সিদের মধ্যে মাত্র ৫০% ই টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছে।মূল্যবৃদ্ধির প্রসঙ্গকে মাথায় রাখলে এবারের বাজেটে সাস্থ্য খাতে প্রকৃত বরাদ্দ কমেছে। এখনও আমরা মহামারীর প্রভাব থেকে মুক্ত নই, কেউ বলতে পারবে না নতুন করে কেমন পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।

খাদ্যে ভর্তুকির বিষয়ে দেখা যাবে এবারের বাজেটে ২৮% বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। অধিকাংশ গরীব মানুষ এখনও তাদের পুরনো আয়ে ফিরে যেতে পারেনি। এ অবস্থায় খাদ্যে ভর্তুকি কমানো দারিদ্র্য ও অনাহারের মাত্রা বাড়াবে। শিক্ষা ক্ষেত্রে ১৬.৩ হাজার কোটি টাকার মোট বরাদ্দ বাড়লেও জি ডি পি - এর হিসাবেই খরচ প্রায় একই জায়গায় রয়েছে। যেটা লক্ষ্যনীয় তা হল  পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হচ্ছে,  স্কুল - কলেজ খুলতে শুরু করা সত্বেও এই বাজেটে ই - কন্টেন্ট, ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, ভার্চুয়াল ল্যাব এবং সাপ্লিমেন্টারি এডুকেশনের কথা বলা হল। মনে হচ্ছে শিক্ষা ব্যবস্থায় পাকাপাকি ভাবে অনলাইন বন্দোবস্তের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া সত্বেও এহেন পদক্ষেপ ইঙ্গিতবাহী।

মোটের উপর বলা যায় অর্থনীতির দ্রুত পুনরুজ্জীবন করতে হলে চাহিদার সংকোচন মোকাবিলা করতে হবে, গরীব নিম্নবিত্ত মানুষের জন্য ন্যূনতম আয়ের বন্দোবস্ত করতে হবে। ক্রয়ক্ষমতা না বাড়ালে বিনিয়োগও গতি পাবে না। সামগ্রিক পরিস্থিতির মোকাবিলায় যা করা যেত, সেই লক্ষ্যে এই বাজেটকে নিস্ফলাই বলতে হবে।

ছবিঃ সোশ্যাল মিডিয়া

ওয়েবডেস্কের পক্ষে সাক্ষাতকারেঃ সৌভিক ঘোষ


শেয়ার করুন

উত্তর দিন