কমরেড জ্যোতি বসুর ১০৭ তম জন্মদিবসে প্রমোদ দাসগুপ্ত ভবনে রক্তদান শিবির...

৮ জুলাই, ২০২০ বুধবার
ওয়েবডেস্কের নিবেদন:

প্রয়াত জননেতা ও রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমরেড জ্যোতি বসু'র ১০৭ তম জন্মদিন রাজ্যজুড়ে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করলেন সাধারণ মানুষ। কলকাতা, দক্ষিণ ২৪ পরগণা, বর্ধমান, জলপাইগুড়ি সহ জেলায় জেলায় পার্টি ও বিভিন্ন গণ সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত নানা আলোচনায় উঠে এল জ্যোতি বসুর সুদূর প্রসারী চিন্তাধারা ও বর্তমানের সামাজিক - রাজনৈতিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিত।একইসাথে বিভিন্ন স্থানে দিন আনা,দিন খাওয়া মানুষদের ত্রাণ বিতরণ, রক্তদান শিবির ,আলোচনা সভা ইত্যাদি।

গণতান্ত্রিক আন্দোলনে , লড়াই সংগ্রামের পাশাপাশি সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে এবং ধর্মনিরপেক্ষতা রক্ষার প্রশ্নে জ্যোতি বসুর সাহসী ভূমিকা ও পদক্ষেপ আজ অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। একদিকে গণতন্ত্র রক্ষায় দাঙ্গাবাজদের কঠোর ভাবে দমন ,আরএসএস রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের আগ্রাসনকে রুখে দেওয়া।অন্যদিকে সাধারণ দলমত ধর্ম নির্বিশেষে প্রতিটি মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়া, আদিবাসী সংখ্যালঘু মানুষের কল্যাণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেওয়া- এই দুই কাজে তিনি তাঁর জীবনের অঙ্গ হিসাবে গ্রহণ করেছিলেন।এই কথাগুলি নেতৃত্বে আলোচনায় উঠে আসে।

এখন মানুষকে বিভাজন করে ধর্মীয় মেরুকরণ করা হচ্ছে পুঁজিপতিদের স্বার্থে। আর জলাঞ্জলি দেওয়া হচ্ছে শ্রমিক কৃষকদের স্বার্থকে। জ্যোতি বসু আজীবন এর বিরোধীতা করে এসেছেন। তিনি আরএসএস 'কে বর্বরের দল বলতেও পিছপা হননি আবার এ রাজ্যের তৃণমূল প্রসঙ্গে বলেছিলেন এরা খাল কেটে কুমির নিয়ে আসছে। তিনি বলেছিলেন , তৃণমূলই এরাজ্যের বিজেপি - আরএসএস কে আহ্বান করে নিয়ে আসছে। এটাই ওদের সবথেকে বড় অপরাধ। বর্তমান পরিস্থিতিতে সব দিক বিচার বিবেচনা করে দেখা যাচ্ছে তার সেই সমস্ত কথা সুদূর প্রসারী চিন্তা ভাবনার ফসল ছিল। তিনি শুধুমাত্র একটা অঙ্গরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন না, বিরোধীদের প্রধান স্তম্ভ ছিলেন। গতদেশের কাছেই বামপন্থীদের মর্যাদা বাড়িয়ে তুলেছিলেন। বুধবার ভয়াবহ এই করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কমরেড জ্যোতি বসুকে স্মরণ করে সারা রাজ্য জুড়ে তার জন্মদিবস পালনের মধ্যদিয়ে নেতৃত্বের থেকে এই কথাগুলি উঠে এসেছে।

এদিন সিপিআই(এম) কলকাতা জেলা দপ্তরে 'প্রমোদ দাসগুপ্ত মেমোরিয়াল ট্রাস্টের উদ্যোগে প্রয়াত জননেতা কমরেড জ্যোতি বসুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁর প্রতিকৃতিতে ফুল ও মালা দেন পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য ও বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু, মালাদের পার্টির রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র, শ্রদ্ধা জানান মহ.মহম্মদ সেলিম সহ নেতৃবৃন্দ। ট্রাস্টের পক্ষ থেকে ২০১৪ সাল থেকে এই একই দিনে রক্তদান কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। বিমান বসু রক্তদান শিবির উদ্বোধন এর পরে সংক্ষিপ্ত ভাষণে বলেন ,কমরেড জ্যোতি বসু'র সাধারণ মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা উল্লেখ করে বলেন, করোনা ভাইরাসের ভয়াবহ সংক্রমণ হয়েই চলেছে কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে।এই ভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য প্লাজমা খুব বেশি জরুরী। এই পরিস্থিতিতে রক্তদানের মত সমাজ কল্যাণকর কর্মসূচি কে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে উৎসাহিত করা প্রয়োজন, তারা তা না করে অনীহা দেখাচ্ছে। অনেক জায়গায় বামপন্থীরা সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যের প্রয়োজনের কথা চিন্তা করে রক্তদান শিবির আয়োজন করলে শাসক দল বাধা দিচ্ছে। তিনি বলেন , মানুষ ধর্ম বর্ন সম্প্রদায় এবং ভাষা নির্বিশেষে ভাইরাস সংক্রমণ জনিত কারণে বিপদাপন্ন। তাঁদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে সরকারকে বড় দায়িত্ব পালন করতে হবে। এদিনের রক্তদান কর্মসূচিতে আর জি কর, ও এনআরএস হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংক থেকে মোট ৮ টি শয্যায় ১৪০ জন নারী - পুরুষ রক্তদাতা এই শিবিরে রক্তদান করেন।


শেয়ার করুন

উত্তর দিন