এই প্রথম শ্রমিকশ্রেণি সমস্ত শিল্পে তার শক্তিশালী হাতিয়ার ধর্মঘটকে ব্যবহার করল একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের জন্য এবং দেখালো সাধারণ মানুষকে জড়ো করতে পারার দক্ষতা

এই প্রথম শ্রমিকশ্রেণি সমস্ত শিল্পে তার শক্তিশালী হাতিয়ার ধর্মঘটকে ব্যবহার করল একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের জন্য এবং দেখালো সাধারণ মানুষকে জড়ো করতে পারার দক্ষতা
অতিমারিকালীন পরিস্থিতির সময় শ্রম আইন অকার্যকারি করার নেতৃত্ব দিয়েছিল বিজেপি পরিচালিত রাজস্থান সরকার। বিজেপি পরিচালিত উত্তর প্রদেশ সরকার বলেছিল শ্রম আইন স্থগিত রাখো তিন বছরের জন্য। মধ্যপ্রদেশের সরকার বলেছিল চুলোয় যাক শ্রম আইন ১০০০ দিনের জন্য। বিজেপির গুজরাট সরকার বলেছিল চাপা রাখো শ্রম আইন ১২০০ দিনের জন্য।
মে দিবস শুধু একটি ঘটনা নয়, ভবিষ্যতের দিক নির্দেশক। আন্দোলন একই পদ্ধতিতে চলবে মনে করার কোন কারণ নেই। সব লড়াইয়ে শ্রমিক শ্রেণী জিতবে এটাও ভাবার কোন কারণ নেই। মানুষ তৈরির প্রতিষ্ঠান ট্রেড ইউনিয়ন। সেই ট্রেড ইউনিয়নের কাজই হবে শ্রমিককে তার নির্দিষ্ট শ্রেণীতে প্রতিষ্ঠা করা ও যোগ্যতার সঙ্গে উত্তীর্ণ হওয়া।
মানবসভ্যতা প্রতিদিন একটু একটু করে এগিয়ে যায় শ্রমিকের রক্ত জল করা ঘামে।এই সভ্যতা তৈরিই হয়েছে শ্রমের বিনিময়ে। তাই এই সভ্যতার ইতিহাসে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে আছে শ্রমিক শ্রেণি। শিল্প বিপ্লবের পর বিশ্বের নানান প্রান্তে শ্রমঘন এলাকা তৈরি হয়েছে, যেখানে বিপুল পরিমাণ শ্রমিক একটি কারখানা বা শিল্পকে কেন্দ্র করে একত্র হয়েছে।
যে বিধ্বংসী এবং অধৈর্য্য মনোভাবে জুলাই-বিক্ষোভের বিরোধিতা করেছিলেন, ঠিক সেভাবেই অবিলম্বে সোভিয়েতের হাতে সমস্ত ক্ষমতা তুলে নেওয়ার আহ্বান জানালেন লেনিন। বিপ্লব সম্পর্কে ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির কারনে কামেনেভ এবং জিনোভিয়েভের মতো নিজের সবচেয়ে পুরানো এবং সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ কমরেডদের সঙ্গে দীর্ঘদিন যাবত সম্পর্ক ছিন্ন করেছিলেন।
কমরেড লেনিনের ১৫৩ তম জন্মদিবসে বিশ্ব সর্বহারার এই অসাধারণ নেতাকে শ্রদ্ধা জানানোর সাথে সাথে আমাদের অঙ্গীকার গ্রহণ করতে হবে। বিশ্বের অন্যান্য পুঁজিবাদী দেশগুলির সাথে সাথে আমাদের ভারতেও মার্কসবাদ-লেনিনবাদের মতাদর্শর তরবারির সাহাজ্যে দক্ষিণপন্থার ভ্রান্ত ও বিকৃত মতাদর্শর বিরুদ্ধে আক্রমণ পরিচালনা করবে সর্বহারার বিপ্লবী আন্দোলন। সন্ত্রাস, হিংসা, প্রতিক্রিয়ার আক্রমণ মোকাবিলায় সক্ষম এমন ভাবে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)-কে গড়ে তুলতে হবে। তরুণ প্রজন্মসহ মেহনতী জনগণের সমস্ত অংশের সাথে নিবিড় সম্পর্কই পার্টিকে অপরাজেয় শক্তিতে পরিণত করবে। কমরেড লেনিনের দেখানো পথ ও তার শিক্ষাকে অবলম্বন করেই আমরা অগ্রসর হবো।
দুনিয়াজুড়ে পুঁজিবাদ যখন মানুষকে কিছুজনের সুখে থাকার বিনিময়ে বহুজনের দুর্দশার পক্ষে শর্তাধীন করে তুলতে চাইছে ঠিক তখনই মানুষ সোচ্চারে ঘোষণা করছেন ভরসাযোগ্য বিকল্প সম্ভব, বিকল্প আছে, তার লক্ষ্যে সংগ্রামও রয়েছে। এই ভরসারই মর্যাদা রক্ষা করেছিলেন লেনিন।
সারা পৃথিবীতেই দক্ষিণপন্থার আক্রমণের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আন্দোলন-সংগ্রামের ঐতিহ্য রক্ষা করা বামপন্থীদের জন্য অন্যতম কর্তব্য। মনে রাখতেই হবে দক্ষিণপন্থী রাজনীতি সর্বদা মানুষের স্মৃতিকে দুর্বল করে দিতে চায় – তাকে রিক্ত করতে চায়। ঠিক যেমন স্মার্ট ফোন থেকে মেমোরি মুছে ফেলা যায়।
গত দশ বছর ধরে এটাই এরাজ্যের চিত্র। বামপন্থীদের উপর লাগাতার আক্রমণ হয়েছে। এখন শুধু বামপন্থীদের উপরই নয়, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, ব্যক্তিও আক্রান্ত হচ্ছেন। আজ নির্বাচনী মিছিলে পুলিশি হামলা হয়েছে, ১১জন গ্রেপ্তার হয়েছেন।
পতাকা উত্তোলন ও শহীদ বেদীতে মাল্যদানের মধ্য দিয়ে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য ২৬ তম সম্মেলনের সূচনা হল। পতাকা উত্তোলন করলেন পলিট ব্যুরো সদস্য বিমান বসু।