সাধ্যমতো সমাজে এভাবেই ইতিবাচক হস্তক্ষেপ করতে হয়। কিন্তু শুধু সেবামূলক কাজেই আটকে থাকা উদ্দেশ্য নয়, বৈপ্লবিক পরিবর্তনই হল লক্ষ্য। মিশনারি থেকে রেভলিউশনারি হয়ে ওঠাই তরুণ কমরেডদের চর্চা করতে হবে। কাকাবাবুর স্মরণে সেটাই হবে প্রকৃত উত্তরাধিকার বহন।

সাধ্যমতো সমাজে এভাবেই ইতিবাচক হস্তক্ষেপ করতে হয়। কিন্তু শুধু সেবামূলক কাজেই আটকে থাকা উদ্দেশ্য নয়, বৈপ্লবিক পরিবর্তনই হল লক্ষ্য। মিশনারি থেকে রেভলিউশনারি হয়ে ওঠাই তরুণ কমরেডদের চর্চা করতে হবে। কাকাবাবুর স্মরণে সেটাই হবে প্রকৃত উত্তরাধিকার বহন।
একটি কথা বলা প্রয়োজন। পার্টি, আন্দোলন, মতাদর্শ ও বিপ্লবের স্বার্থে তিনি ছিলেন বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রশ্নের খুবই কঠোর। বাইরের কারোর সঙ্গে বন্ধুত্ব তাকে পার্টির আদর্শ থেকে কোনদিন বিচ্যুত করতে পারেনি। এমনকি পার্টির অভ্যন্তরে যখন আদর্শগত সংগ্রাম হয়েছে তখনও তিনি বলতেন, “বন্ধুর থেকে পার্টি ও তার আদর্শ বড়”। “মার্কসবাদী-লেনিনবাদী আদর্শ রক্ষার ক্ষেত্রে কারোর বন্ধুত্ব যেন অন্তরায় হয়ে না দাঁড়ায়”। শোষক শ্রেণী ও শাসকগোষ্ঠীর প্রতি তাঁর ছিল অসীম ঘৃণা। মার্কসবাদ বিরোধী তত্ত্বের ও ক্রিয়া-কলাপ এর বিরুদ্ধে তার সংগ্রাম ছিল গৌরবোজ্জ্বল।
নিজের লেখা বইতে বিজয় গোখলে সংশ্লিষ্ট চুক্তির প্রশ্নে বামেদের বিরুদ্ধে যেসমস্ত অভিযোগ করেছেন তা ভিত্তিহীন। সম্ভবত তার জানা নেই, এই চুক্তি সম্পাদিত হবার সময় প্রধান বিরোধী দল ছিল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এবং তারাও এই চুক্তি প্রসঙ্গে সংসদের আলোচনায় বিরোধিতাই জানিয়েছিল।
একথা সত্য, কোনও আন্তর্জাতিক দায়িত্ব পালনের আগে যে কোনও সরকারেই নিজের দেশের নাগরিকদের জীবনকে অগ্রাধিকার দেবে। কিন্তু উন্নত দেশগুলির সরকারগুলির সামনে নিজেদের নাগরিকের জীবন বনাম অন্য দেশের নাগরিকদের জীবন সংক্রান্ত তুলনার প্রশ্ন কার্যত অহেতুক; সামগ্রিকভাবে ভ্যাকসিনের ঘাটতির কারণে একদল মানুষের জীবনযাত্রার ঝুঁকির মুখোমুখি হচ্ছে যা আসলে ব্যক্তিগত সম্পত্তি-অধিকার রক্ষার প্রয়োজনে সৃষ্ট একটি কৃত্রিম ঘাটতি। এহেন সুরক্ষার পরিকল্পনাই আসলে টিকার উৎপাদন বৃদ্ধি রুদ্ধ করে রেখেছে। সংক্ষেপে বললে এসব এক দেশের লোক বনাম আরেক দেশের লোকের প্রশ্নই নয়, এ হল লাভ বনাম মানুষের জীবনের মধ্যে যে কোন একটিকে বেছে নেবার প্রশ্ন।
তথ্যপ্রযুক্তি সংক্রান্ত যাবতীয় আধুনিকতার যেরকম ভয়াবহ প্রচার ভারতে আজকের প্রজন্ম ইতিমধ্যেই দেখেছে বা দেখছে তার কারন কোন “ডিজিটাল ইন্ডিয়া” নয়, বিশ্ববাংলা তো নয়ই! এর পিছনের কারন বুঝতে হলে আমাদের ফিন্যান্স পুঁজি, পুঁজিবাদী আধুনিক অর্থনীতি এবং আজকের পৃথিবীতে সাম্রাজ্যবাদের সমবেত মিথস্ক্রিয়া বুঝতে হবে। সেই উদ্দেশ্যেই এই নিবন্ধের সুত্রপাত। স্মার্টফোনে স্পাইওয়্যার পাঠিয়ে নাগরিকদের চলাফেরায় আড়ি পাতছে দেশের সরকার – এ আর জেমস বন্ডের আষাঢ়ে গপ্পো নয়! জর্জ অরয়েল বেঁচে থাকলে আরেকবার 1984 লিখতে বসতেন কিনা জানার সুযোগ নেই, সোশ্যালিজম আদৌ পেরেছিল কিনা কেউ জানেনা কিন্তু পুঁজিবাদ তার সেই কষ্টকল্পনাকে সত্যি প্রমান করেই ছাড়ল; এখন বলতেই হচ্ছে বিগ ব্রাদার ইজ ওয়াচিং আস!
দেশের রাষ্ট্রপতি হিসাবে বিচারাধীন বন্দীর এহেন মৃত্যুর ঘটনায় যারা স্ট্যান স্বামীকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেয়, গুরুতর অসুস্থ হওয়া সত্বেও মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে বারংবার তার জামিনের বিরোধিতা করে এবং জেলের ভিতরে তার সাথে চরম অমানবিক আচরণ করে সেইসব দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে কেন্দ্রীয় সরকার যার কার্যকারিতা আপনার অনুমতিস্বাপেক্ষ, তাকে আপনি অবিলম্বে নির্দেশ দিন – এই আমাদের আবেদন। তাদের কৃতকর্মের উপযুক্ত বিচার হওয়া প্রয়োজন। ভীমা কোরেগাঁও এবং অন্যান্য মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে দেশদ্রোহিতা এবং ইউ এ পি এ’র ন্যায় দানবীয় আইনের অন্যায্য প্রয়োগের জোরে আটক থাকা প্রত্যেক রাজনৈতিক বন্দীকেই এখনই মুক্তি দিতে হবে।
পুঁজিবাদকে উৎখাত করতে হয়। উপড়ে ফেলার সেই কাজ মূলত নির্ভর করে পূঁজির শাসনের বিরুদ্ধে শ্রমজীবী মানুষদের নেতৃত্বে সংগঠিত আন্দোলনসমূহের উপরে যা ক্রমাগত চলতি সমাজে শ্রেণিসংগ্রামের তীব্রতা বস্তুগতভাবে বাড়িয়ে চলে। আন্দোলনের বস্তুগত সামর্থ্যলাভ আসলে সমাজ বদলের লড়াইতে ‘বিষয়ীগত উপকরন’ যোগান দেয় এবং সেই সামর্থ্য অর্জনের জন্যই নিরন্তর সংগ্রাম একান্ত প্রয়োজন। সংকটকালীন পরিস্থিতি, যা হল সমাজ বদলের লড়াইয়ে ‘বিষয়গত উপাদান’ তা যতই তীব্র আকার নিক না কেন যদি পূঁজির শোষণ উচ্ছেদের লক্ষ্যে পূর্বোক্ত ‘বিষয়ীগত উপকরন’ যথাযথরুপে প্রস্তুত না থাকে তবে সমাজ বদলের সংগ্রাম সমাজবিপ্লবের স্তরে উন্নীত হতে পারে না।
শান্তিপূর্ণ বৈদেশিক নীতি, প্রতিবেশী রাষ্ট্রসমূহের সাথে সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা এবং দক্ষিণ এশিয়াসহ গোটা পৃথিবীতে শান্তি ও স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে গণসাধারণতন্ত্রী চীনের সাফল্য সম্পর্কে দুনিয়াজূড়ে মানুষজন প্রত্যাশায় বুক বেঁধেছেন।
বামদলগুলির পক্ষে সমস্ত রাজ্য ইউনিটগুলির উদ্দেশ্যে আহ্বান জানানো হচ্ছে যাতে কোভিড পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সমস্ত প্রয়োজনীয় সতর্কতা এবং বাধ্যবাধকতা মেনে এবং নিজেদের রাজ্যের নির্দিষ্ট পরিস্থিতি বিচার করেই উপরোক্ত বিষয়গুলিতে একপক্ষকাল ব্যাপি যথোপযুক্ত প্রতিবাদ আন্দোলন কর্মসূচি পালন করেন।
বিগত দু’ বছর ধরে এ দেশের মানুষ এবং আমাদের সাংবিধানিক প্রজাতন্ত্র এক ভয়াবহ সময় অতিবাহিত করছে। আজ সময় আগত যে সকল মানুষ ভারতের সাংবিধানিক প্রজাতন্ত্র, তার মানুষের জীবন, জীবিকা, জীবনযাত্রার মান রক্ষা করতে ইচ্ছুক, মানুষের অলঙ্ঘনীয় সাংবিধানিক সমানাধিকার এবং অন্যান্য অধিকারসমূহকে, ব্যাক্তিস্বাধীনতা কে রক্ষা করতে ইচ্ছুক, যারা সাংবিধানিক সকল মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, তাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে প্রতিরোধ গ’ড়ে তুলে ভারতের সাধারণতন্ত্র এবং ভারতীয় মানুষের উপর এই আক্রমণ কে প্রতিহত করতে হবে।