করোনা সংক্রমণ সম্পর্কে মিথ্যাপ্রচার থেকে দূরে থাকুন

২৫ মার্চ, ২০২০

করোনা ভাইরাসের আক্রমন সারা পৃথিবীতে ছড়িয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) একে মহামারী ঘোষণা করেছে। এই পরিস্থিতিতে সমস্ত দেশকেই একে অন্যের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিতে হবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে এই নিয়ে যাবতীয় রিপোর্ট দিয়ে চলেছে। এই সময় একমাত্র হু'র রিপোর্টকেই ভরসা করা উচিত।

সারা পৃথিবীতে আক্রান্ত, মৃত অথবা সুস্থ হওয়া মানুষের খবর জানতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)'র ওয়েবসাইট ক্লিক করুন। লিংক নিচে দেওয়া হল -

World Health Organisation



আমাদের দেশে মানুষের মধ্যে এই সংক্রমণ সম্পর্কে যথাযথ ওয়াকিবহাল না থাকার সুযোগ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে এবং অন্যান্য নানা পন্থায় মানুষের মনে বিভিন্ন অসত্য, অপবিজ্ঞানমূলক প্রচার চলছে। কেউ না জেনে-বুঝেই এই মিথ্যাপ্রচারের শিকার হয়ে পড়ছেন, অন্যদের মধ্যেও সেই অযাচিত আতঙ্ক ছড়িয়ে দিচ্ছেন। যারা সব জেনে-বুঝেই এই কাজ করছেন তাদের কায়েমি স্বার্থের ঐতিহাসিক যোগসূত্র রয়েছে।

জনমানসে চীন অথবা সমাজতান্ত্রিক ব্যাবস্থা সম্পর্কে ঘৃণা ছড়ানোর উদ্দেশ্য নিয়ে নানাভাবে প্রচার করা হচ্ছে। এই অবস্থায় সঠিক তথ্যকে মানুষের কাছে পৌঁছে দেবার সামাজিক দায় সবারই। বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী শক্তি উঠতে-বসতে সব কিছুতে কমিউনিস্টদের সম্পর্কে কুৎসা করে দুঃখবিলাস উদযাপন করে। আমাদের দেশেও এরকম কিছু ব্যাক্তি, রাজনৈতিক স্বার্থে জনগণকে ভুল পথে ঠেলে দিতে চাইছেন - সেই সব কুৎসার জবাবে দিতে এই নিবন্ধে চোখ বুলিয়ে নিন।

নিচের পিডিএফ ফাইলে তথ্যসহ বিস্তারিত জানানো হয়েছে কিভাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাথে একযোগে চীন এই ভাইরাসের আক্রমণকে প্রতিরোধ করেছে। এই ক্ষেত্রে চীনের অভিজ্ঞতা সারা পৃথিবীর অন্যান্য দেশগুলিরও জানার দরকার - কোনোরকম অপপ্রচার থেকে দূরে থাকতে মানুষের মধ্যে এই সংক্রান্ত সঠিক সচেতনতার প্রসার প্রয়োজন।



সমাজতান্ত্রিক চীন সম্পর্কে মিথ্যাপ্রচারের শুরু হয়েছে (যেখান থেকে ধার করে এদেশের কুৎসা প্রচারের বাহিনীরা মিথ্যাপ্রচার করছে) আসলে কল্পকাহিনী (Horror Fiction) লেখার একটি ব্লগ সাইট থেকে যার নাম No Sleep ... এই ব্লগ সাইটে কল্পকাহিনী (Horror Fiction) লিখে শেয়ার করা হয় এবং প্রচারের কায়দা বাধ্যতামূলক এমন করা হয় যাতে পাঠকের মনে হয় এই কাহিনীগুলি বাস্তব। এই কাজে অসংখ্য ভুয়ো ছবি, ভিডিও এবং লিংক ব্যাবহার করতে হয় লেখকদের। এই ব্লগসাইটের পাঠকদেরকেও বাধ্যতামূলক কিছু শর্ত মেনে চলতে হয় - এই শর্তগুলি এরকমঃ

১. পাঠকদের ভেবে নিতে হয় তারা কোন কল্পকাহিনী (Horror Fiction) পড়ছেন না, বাস্তব জগতের অভিজ্ঞতা অনুভব করছেন। ( Readers are to act as though everything is true and treat it as such in the comments. )

২. সত্য প্রকাশ করা, অবিশ্বাস দেখানো কিংবা কোনোরকম সমালোচনা চলে না। (No debunking, disbelief, or criticism (constructive or otherwise)

৩. কোনোরকম তথ্য-প্রমানের দাবি করা যায় না। (Do not ask for proof, or tl;dr's/summaries)

৪. লেখক এবং অন্যান্যদের মান্য করতে হয়। ( Be respectful to one another )

৫. কাহিনী পড়ার পরে মন্তব্য এমনভাবেই করতে হয় যাতে তা গল্পের কাহিনিকেই সত্য বলে প্রতিপন্ন করে। (Comments must contribute to the discussion )

৬. এই নিয়মাবলি না মানলে পাঠকদের আটকানো হয়। ( Report all comments that violate these rules )

এই ব্লগ সাইটেই প্রথম প্রকাশিত হয় এইধরনের একটি কল্পকাহিনী (Horror Fiction) যাতে বলা হয় করোনা ভাইরাস আসলে একটি জৈব-মারনাস্ত্র যা চীন আমেরিকার হাতে তুলে দিতে চেয়েছিল, প্রাথমিকভাবে হং-কং'র প্রতিবাদিদের উপরে ব্যাবহার করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল এবং শেষে আচমকাই ( accidentally ) চীনের উহান প্রদেশের একটি বাজার এলাকায় সেটি ছড়িয়ে পড়ে।

নিচের ছবিগুলি No Sleep ব্লগসাইটের থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া। দেখে নিন কিভাবে কাল্পনিক ছবি ব্যাবহার করে মিথ্যা কল্পকাহিনী (Horror Fiction) লিখে মানুষের মনে ভয়াবহতা প্রচার করা হয়েছে।

Pic Source: boomlive.in


Pic Source: boomlive.in


Pic Source: boomlive.in


এই সাইটে প্রচারিত এই গাঁজাখুরি গল্পটিকে ভিত্তি করেই এদেশে জনগণের মধ্যে চীন সম্পর্কে লাগাতার মিথ্যাপ্রচার চালাচ্ছে স্বার্থান্বেষী-রাজনৈতিক শক্তির ভাড়াটে বাহিনী। বুমলাইভ.ইন এই চক্রান্তের পর্দাফাঁস করে নিজেদের ওয়েবসাইটে বিস্তারিত জানিয়েছে।

এই ভাইরাসের উৎপত্তি সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানতে নিচের পিডিএফ ফাইলটি ব্যবহার করুন। ফাইলটিতে কোভিড-১৯'র উৎপত্তি সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হয়েছে। এই অবস্থায় সঠিক তথ্যকে মানুষের কাছে পৌঁছে দেবার সামাজিক দায় সবারই। নিজে সঠিক জানুন - অন্যদেরকেও সঠিক জানতে ও বুঝতে সাহায্য করুন।



এই বিশ্বব্যাপী মহামারীর সময়ে সারা পৃথিবীর মানুষকে একযোগে এই বিপদের মুখোমুখি হতে হবে - লড়তে হবে - জিততে হবে। মিথ্যাপ্রচার, গুজব, কুসংস্কার এইসবের প্রচার করে যারা মানুষের মধ্যে বিভেদের প্রাচীর তুলতে চাইছেন তারা আগাগোড়া মানবতার বিরুদ্ধেই কাজ করেছেন - এখনও করছেন।

শেষ পাওয়া আপডেট অনুযায়ী এই মুহূর্তে আমেরিকা এই মহামারীর নতুন প্রধানকেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে বলে জানা গেছে। সেই খবর জানতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন - গুজব থেকে দূরে থাকুন, আপনার কাছে সবসময় সঠিক তথ্য-প্রমান না থাকার সুযোগে কেউ যেন আপনাকে ভুল পথে চালিত না করে সেই বিষয়ে সজাগ থাকুন। এই অবস্থায় একজনের ভুল- অসতর্ক থাকা অন্যের জন্যে ক্ষতিকর হয়ে উঠবে।

রয়টার্স নিউজ



জনমানসে ছড়িয়ে পড়া অপপ্রচারের জবাবে এই রিপোর্টগুলিতে উল্লিখিত একটি কথা আমাদের খেয়াল রাখতেই হবে - " Our analysis clearly show that SARS-COV-2 is not a laboratory construct or a purposefully manipulated virus."

Pic Source: Google Images

শেয়ার করুন

উত্তর দিন