Site icon CPI(M)

Property Rights and Pandemic Deaths

মুল প্রবন্ধটি ইংরেজিতে পিপলস ডেমোক্র্যাসি পত্রিকায় ১৩ই জুলাই তারিখে প্রকাশিত। সেই প্রবন্ধেরই সম্পূর্ণ বাংলা অনুবাদ ওয়েবডেস্কের পক্ষে প্রকাশ করা হল।

সম্পত্তির অধিকার এবং মহামারীতে মৃত্যু

প্রভাত পট্টনায়েক

কালোকে সোজাসুজি কালোই বলতে হয়। মানবতা ধ্বংসের কাজে আজকের দিনে করোনা ভাইরাসের সবচেয়ে বড় সহযোগী হল সম্পত্তির অধিকার সম্পর্কে পুঁজিবাদী ব্যবস্থা। বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাসের প্রকোপে মৃত্যুর সংখ্যা সম্পর্কে সরকারী ঘোষণা হল তিন মিলিয়ন। অর্থনীতিবিদদের মতে প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা দশ মিলিয়নেরও বেশি অথচ ভাইরাসের ধ্বংসলীলা দূরীকরণের কাজ এখনো বহু দূর। এখন আই এম এফ’ও স্বীকার করে নিয়েছে পৃথিবীজুড়ে সর্বজনীন টিকাকরনই হল এই মহামারী রোধে একমাত্র পথ। এই সংক্রমণ আরও অনেক লক্ষ মানুষের প্রাণহানির কারন হবার আগেই যা করতে হবে তা হল বহুগুণে টিকা উৎপাদন বাড়ানো। এই লক্ষ্যে পৌঁছাতে একমাত্র বাধা হল ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি রাইটস (মেধাসমৃদ্ধ সম্পত্তিরক্ষার অধিকার)। এই আইনের বলে বলিয়ান হয়ে টিকা প্রস্তুতকারী কতিপয় বড় ঔষধ নির্মাতা সংস্থা টিকা প্রস্তুতির কাজে নিজেদের একচ্ছত্র অবস্থান হারাতে নারাজ। অথচ এই সংস্থগুলির পক্ষ থেকে টিকা নির্মাণ সংক্রান্ত গবেষণার কাজে যে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয়েছে তা জনগণের টাকা (পাবলিক মানি)। মানুষের জীবনের বিনিময়ে বিরাট মুনাফা লুটের যে ব্যবসা তারা ফেঁদেছে সেই মুনাফার ভাগ- বাঁটোয়ারা করতে দিতে না চাওয়াই তাদের পবিত্র অধিকার।

সম্প্রতি আমেরিকার রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন টিকার ক্ষেত্রে পেটেন্টের অধিকার সম্পর্কিত নিষেধাজ্ঞা শিথিলের ঘোষণা করেছেন। এই সিদ্ধান্ত কিছুটা স্বস্তিদায়ক হলেও যতক্ষণ না ডব্ল্যু টি ও (ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশন)-র সাথে এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট চুক্তি সম্পাদিত যা হচ্ছে এহেন সিদ্ধান্ত কার্যকরী হবে না। ইউরোপের পুঁজিবাদী দেশসমুহের সরকারগুলি নিজেদের দেশীয় সংস্থাগুলির মুনাফা সম্পর্কিত স্বার্থরক্ষায় তৎপর হয়ে পেটেন্ট নিষেধাজ্ঞা শিথিলের বিরোধিতা করছে। সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে গবেষণা বলছে পৃথিবীজুড়ে টিকা উৎপাদনের উপযুক্ত সবকটি ক্ষেত্রকে কাজে লাগানো যায় তবে চলতি বছর শেষ হবার আগেই দুনিয়ার ষাট শতাংশ মানুষকে টিকাকরনের আওতায় আনা যাবে, অর্থাৎ ভাইরাসের সংক্রমণে অসহায়ের ন্যায় মানুষের মৃত্যু আটকে দেওয়া যাবে। কিন্তু ডব্ল্যু টি ও (ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশন)-র বৈঠকে যেভাবে পেটেন্ট আইন সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা শিথিলের বিষয়ে বিরোধিতা চলছে তাতে টিকা উপাদনের প্রক্রিয়া শুরু হতেই আরও কয়েকমাস অহেতুক দেরি হবে, এই বছরটাই শেষ হয়ে যেতে পারে। ব্রিটিশ আসন্ন জি-৭ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ২০২২ সালের মধ্যে পৃথিবীর সবাইকে টিকা দেবার কাজ শেষ করার প্রস্তাব দেবেন বলে পরিকল্পনা করেছেন। কিন্তু জি-৭ বৈঠকে এমন সদর্থক সিদ্ধান্ত হবার আগেই আরও কয়েক মিলিয়ন মানুষ সংক্রমণে মারা যাবেন। বর্তমান পরিস্থিতির দাবী অনুযায়ী এখনই ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি রাইটস (মেধাসমৃদ্ধ সম্পত্তিরক্ষার অধিকার)-কে অগ্রাহ্য করে টিকা প্রস্তুতির কাজ শুরু করতে হবে।

উৎপাদিত টিকার একটি বড়সড় অংশকেই উন্নত ধনতান্ত্রিক দেশগুলি নিজেদের কব্জায় রেখে দিয়েছে এবং অনুন্নত – দুর্বল তৃতীয় বিশ্বের দেশসমূহে মানুষের কল্যানের উদ্দেশ্যে অল্প কিছু টিকার সংস্থান দয়ার দান হিসাবে দিয়েছে, অনেকেই এহেন অবস্থাকে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে “টিকা সংক্রান্ত জাতিবিদ্বেষ” বলে উল্লেখ করেছেন। এহেন বৈষম্যের জলজ্যান্ত উদাহরণ হিসাবে বলা যায় চলতি বছরের এপ্রিল মাস নাগাদ আমেরিকার চল্লিশ শতাংশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিজেদের দেশে কূড়ি শতাংশ মানুষকে টিকার অন্তত একটি ডোজ দিতে পারলেও ঐ একই সময়কালে আফ্রিকায় টিকাকরনের হার মাত্র দুই শতাংশ। ভারতে এখনও অবধি জনগণের মাত্র তিন শতাংশকেই টিকার দুটি ডোজ দেওয়া সম্ভব হয়েছে। উন্নত দেশগুলি কেবলমাত্র নিজেদের বর্তমান এবং ভবিষ্যত সুরক্ষিত রাখতে বিরাট পরিমানে টিকা উৎপাদন বজায় রেখেছে। তারা টিকার বাজারে বড় আকারের ফরমায়েশ করে রেখেছে, এই ‘অর্ডার’ শুধু নিজেদের প্রয়োজনেই নয়, বরং ভবিষ্যতে সওদার উদ্দেশ্যে মজুতদারির কথা ভেবেই করা হয়েছে।

টিকাকে কেন্দ্র করে এহেন জাতিবিদ্বেষের দুটি চারিত্রিক বৈশিষ্ট রয়েছে। দুটিই মহানগরকেন্দ্রিক পুঁজিবাদী প্রকৃতির। প্রথমটি হল পেটেন্ট আইনকে কাজে লাগিয়ে উৎপাদনে ঘাটতি বজায় রাখা যাতে উন্নত ধনতান্ত্রিক দেশগুলি উৎপাদিত টিকার বহুলাংশ নিজেদের কব্জায় রাখতে পারে। একেই সম্পত্তির অধিকার বলে ইতিপূর্বে ব্যখ্যা করা হয়েছে। দ্বিতীয়টি হল পুঁজিবাদী দেশগুলির তলনায় তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলিতে টিকাকরণের কাজে সরকারী ব্য্যবরাদ্দে জরুরী পূঁজির বিনিয়োগে বাধা দেওয়া। এহেন দ্বিবিধ চারিত্রিক বৈশিষ্ট অন্তত কিছুদিনের জন্য পৃথিবীজূড়ে বজায় রাখা হয়ঃ উন্নত দেশের সরকারগুলি যেখানে রাজকোষীয় খরচের অন্তত ২০ শতাংশ জনগণের জন্য খরচ করেছে সেখানে বেশিরভাগ তৃতীয় বিশ্বের দেশে সরকারী ব্যায়বরাদ্দের পরিমাণ ছিল বাজেটের মাত্র দুই শতাংশ অথবা আরও কম। টিকাকরনের কাজে ভর্তুকি দিতেও একই প্রভাব বজায় রয়েছে, এর তৃতীয় বিশ্বের গরিব জনতা চড়া দামে টিকা খরিদ করতে ব্যর্থ হয়েছে।

এই প্রসঙ্গেই মনে রাখতে হবে পুরানো এবং উদ্ভুত পরিস্থিতিতে নতুন ঋণ সংক্রান্ত কোন জরুরী চুক্তির বিষয়ে তারা তখনই গুরুত্ব দেবে যদি সরকার নিজেদের রাজকোষীয় নীতিতে কঠোরভাবে মিত্যবায়িতা বজায় রাখে এই বলে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলিকে আই এম এফ চাপ দিয়েছিল। করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারী ব্যাবরাদ্দে টিকাকরনের কাজ আটকে দিয়ে সর্বত্র ফিন্যান্স পূঁজি এবং তার মুনাফার কর্তৃত্ব বজায় রাখতেই সরকারের একান্ত নিজস্ব প্রয়োজন ব্যাতিত অন্য কোনকিছুতে ব্যায়সংকোচনের জন্য এহেন চাপ দেওয়া হয়েছিল। ভারতে যদিও আই এম এফ প্রণীত কোন চাপ কার্যকরী ছিল না, তা সত্বেও এদেশে মোদী সরকাররের নিষ্ঠুর মনোভাবই জনগণের জন্য বিনামূল্যে টিকাকরনের কাজ বন্ধ রাখতে যথেষ্ট হয়।

বিজ্ঞানসম্মত অনুমান এই যে, সার্বজনীন টিকাদানের জন্য ৫০ বিলিয়ন ডলারের বেশি ব্যয় হবে না। এহেন খরচের দায় উন্নত পুঁজিবাদী বিশ্ব সহজেই বহন করতে পারে। তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলির জন্য অপরিশোধনযোগ্য ঋণ হিসাবেও এই অর্থ সহজেই প্রযোজ্য হতে পারে। “প্রত্যেকে নিরাপদ না হওয়া পর্যন্ত কেউই নিরাপদ নয়” আউড়ে চলেছে সকলেই কিন্তু সেই কাজে সাহায্যের জন্য জরুরী বিনিয়োগের কার্যকরী কোনও উদ্যোগ দিকদিগন্ত জূড়ে কোথাও নেই; অত্যন্ত হাস্যকর হলেও একথা সত্যি।

যদি পেটেন্ট সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা তাত্ক্ষণিকভাবে শিথিল করা সম্ভব নাও হয়, তাহলেও এই পরিস্থিতিতে বাধ্যতামূলক লাইসেন্সিংয়ের মাধ্যমেও ভ্যাকসিনের উত্পাদন বাড়ানো যেতে পারে। “জরুরি অবস্থা” জারী করে এই কাজ সম্ভব এবং সেক্ষেত্রে ডব্লিউটিও(ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশন)-র নিজস্ব বিধানও রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি নিশ্চিতভাবেই “জরুরি অবস্থা” হিসাবে চিহ্নিত হবার যোগ্যতা অর্জন করে। ভারতীয় পেটেন্টস অ্যাক্টের দ্বাদশ অধ্যায় অনুযায়ী “ট্রিপসের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ” আইনটি সংশোধন করা হয়েছিল এহেন পরিস্থিতিতে ‘বাধ্যতামূলক লাইসেন্স’র উদ্দেশ্যেই।

বাধ্যতামূলক লাইসেন্সিংয়ের পক্ষে যে যুক্তি, পেটেন্ট নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার জন্যও ঠিক একই যুক্তি প্রযোজ্য হয়।  “জরুরি অবস্থা”-র মধ্যে যখন ভ্যাকসিন উৎপাদন দ্রুত প্রসারিত করা দরকার, সেইসময় উৎপাদনের জন্য মূল পেটেন্টিগুলির অধিকারীদের মনমুগ্ধকর মুনাফা লুটের স্বার্থের কথা ভেবে অপেক্ষা করা চলে না। ঔষধ উৎপাদনের বহুজাতিক সংস্থাগুলি এবং উন্নত পুঁজিবাদী দেশগুলির সরকারগুলি তা সত্বেও বাধ্যতামূলক লাইসেন্সিং সমর্থন করছে না, যদিও সাময়িকভাবে পেটেন্ট সংক্রান্ত নিসেধাজ্ঞা শিথিল করার কাজে বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যক্তিসহ এরা প্রায় সকলেই রাজী। মজার হলেও সত্যি দক্ষিণ আফ্রিকার সরকারের মতোই যে ভারত সরকার ইতিমধ্যে পেটেন্ট সংক্রান্ত বিধিনিষেধ শিথিল করার জন্য অনুরোধ করেছিল তারাই বাধ্যতামূলক লাইসেন্স দেওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করেছে। এই সরকারের তথাকথিত “থিঙ্ক ট্যাঙ্ক” নীতি আয়োগ প্রকাশ্যে বাধ্যতামূলক লাইসেন্সের ধারণাটিকে ভেটো দিয়ে খারিজ করে।

মোদী সরকারের এহেন আচরণ রহস্যে ঘেরা। উন্নত দেশসমূহের সরকারগুলির স্পষ্ট পৃষ্ঠপোষকতায় টিকা প্রস্তুতকারী বহুজাতিক সংস্থাগুলির একচেটিয়া মনোভাবের বিরুদ্ধে লড়াই চালানো সংক্রান্ত ভয়কেই কর্তব্য পালনে মোদী সরকারের বর্তমান অনীহার কারন হিসাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। কারন যাই হোক এহেন ভয় কিংবা অনীহার পরিনামে আরও হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি হবে। বড় কর্পোরেটদের স্বার্থরক্ষায় মোদী সরকারের ভীরুতা  বিশেষভাবে লক্ষ্যনীয় কারণ রাজধানী দিল্লিতে ভ্যাকসিন স্টকগুলি চলতি মাসে দু’সপ্তাহ ধরে হ্রাস পাচ্ছে (জুন মাসের ৭ তারিখের হিসাব)।

পেটেন্ট সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞার সাময়িক রদ কিংবা বাধ্যতামূলক লাইসেন্স দেওয়ার জন্য দুনিয়াজূড়ে জোরালো দাবি না ওঠা অবধি টিকাকরনের কাজে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বা সর্বজনীন টিকা দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে কোথাও কোন আশ্বাস বাণীই কার্যকরী হবে না। প্রশ্নটি আসলে একটি নীতির – কোনও ভারতীয় বা আফ্রিকান অথবা লাতিন আমেরিকানের জীবনের মূল্য কি ইউরোপীয় বা আমেরিকানের জীবনের চাইতে চেয়ে কম? আন্তর্জাতিক স্তরের যে কোন সহযোগিতা করার মূল ধারনাটিই হল সমস্ত মানুষের জীবনের মূল্যই সমান, সেই ধারনাকে নস্যাৎ করে যে কোন সাহায্যের অঙ্গীকার আসলে এক বিরাট ভাঁওতা।  

একথা সত্য, কোনও আন্তর্জাতিক দায়িত্ব পালনের আগে যে কোনও সরকারেই নিজের দেশের নাগরিকদের জীবনকে অগ্রাধিকার দেবে। কিন্তু উন্নত দেশগুলির সরকারগুলির সামনে নিজেদের নাগরিকের জীবন বনাম অন্য দেশের নাগরিকদের জীবন সংক্রান্ত তুলনার প্রশ্ন কার্যত অহেতুক; সামগ্রিকভাবে ভ্যাকসিনের ঘাটতির কারণে একদল মানুষের জীবনযাত্রার ঝুঁকির মুখোমুখি হচ্ছে যা আসলে ব্যক্তিগত সম্পত্তি-অধিকার রক্ষার প্রয়োজনে সৃষ্ট একটি কৃত্রিম ঘাটতি। এহেন সুরক্ষার পরিকল্পনাই আসলে টিকার উৎপাদন বৃদ্ধি রুদ্ধ করে রেখেছে। সংক্ষেপে বললে এসব এক দেশের লোক বনাম আরেক দেশের লোকের প্রশ্নই নয়, এ হল লাভ বনাম মানুষের জীবনের মধ্যে যে কোন একটিকে বেছে নেবার প্রশ্ন।

এক্ষেত্রে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হ’ল উন্নত দেশগুলির জনগণ এই পূঁজির স্বার্থ সম্পর্কিত এই সত্য উপলব্ধি করেছেন। তারা অনেকেই টিকার ক্ষেত্রে পেটেন্ট সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞার অস্থায়ী শিথিল করার পক্ষে মত দিয়েছেন। বিভিন্ন সরকারগুলি, বিশেষত ইউরোপের, যারা এহেন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিরোধিতা করছে, আসলে তারা  শ্রেণি স্বার্থ এবং তারই সাথে সংযুক্ত সম্পত্তির অধিকারগুলি রক্ষায় উদ্বিগ্ন। আবার এরাই হল সেইসব ব্যক্তি যারা আন্তর্জাতিক সংহতির নামে ঢাক পিটিয়ে চলেছে।

ওয়েবডস্কের পক্ষে অনুবাদ – সৌভিক ঘোষ

শেয়ার করুন