PB Statement

পলিট ব্যুরো বিবৃতি

ইন্ডিয়া ব্লক

পলিট ব্যুরো ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক চরিত্র, সংবিধান, গণতন্ত্র এবং জনগণের মৌলিক অধিকার এবং নাগরিক স্বাধীনতা রক্ষার প্রচেষ্টাকে শক্তিশালী করার জন্য ইন্ডিয়া ব্লকের আরও জোটবদ্ধতা এবং সম্প্রসারণের জন্য কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই লক্ষ্য পূরণের জন্য বিজেপিকে কেন্দ্র ও রাজ্যের ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করার থেকে দূরে রাখতে হবে। পলিট ব্যুরো এই প্রয়াসকে আরও জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পলিট ব্যুরো পাটনা, বেঙ্গালুরু এবং মুম্বাইতে ভারত ব্লকের শেষ তিনটি সভায় সিপিআই(এম) এর অবস্থানকে সমর্থন করছে যেখানে দেশ জুড়ে লাগাতার জনসভার আয়োজন করার এবং আসন্ন নির্বাচনগুলিতে বিজেপির পরাজয় নিশ্চিত করতে জনগণকে একত্রিত করার বিষয়ে পার্টি মতামত প্রকাশ করেছে। ভারত ব্লককে আরও প্রসারিত করার এবং এই প্রচেষ্টায় গণআন্দোলনের উল্লেখযোগ্য অংশগুলিকে আকৃষ্ট করার জন্য প্রচেষ্টাকে কেন্দ্রীভূত করা উচিত। যদিও এই ব্লকের সমস্ত সিদ্ধান্ত ব্লকের অন্তর্ভূক্ত দলগুলির নেতৃত্বরাই নেবেন,কিন্তু এমন কোনও সাংগঠনিক কাঠামো থাকা উচিত নয় যা এই জাতীয় সিদ্ধান্তের জন্য বাধা হয়ে দাঁড়াবে।

এক দেশ এক নির্বাচন

এটি আমাদের সংবিধানে বর্ণিত সংসদীয় গণতন্ত্র এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর উপর জোড়া আক্রমণ নামিয়ে আনবে।মোদি সরকার ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে একটি ৮-সদস্যের কমিটি নিযুক্ত করেছে যারা লোকসভা এবং রাজ্য বিধানসভাগুলির একযোগে নির্বাচন বাস্তবায়নের জন্য কীভাবে পদক্ষেপ নেওয়া যায় তা সুপারিশ করবে। সংবিধানের গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনী ছাড়াও, এই জাতীয় প্রস্তাবে লোকসভা নির্বাচনের সাথে সমন্বয় করার জন্য রাজ্য বিধানসভাগুলির আয়ু কমাতে বা বাড়াতে হবে। যখন কোন সরকার আইনসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায়, তখন সেই সরকারের ক্ষমতায় থেকে যাওয়া অবৈধ। জনগণকে সরকার নির্বাচনের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে যদি কেন্দ্রীয় শাসন জারি করা হয়, তবে তা গণতন্ত্রবিরোধী। সিপিআই(এম) এই প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করে।

আদানি প্রসঙ্গ

আদানি গোষ্ঠীর কোম্পানির স্টক মূল্যের হেরফের সম্পর্কে যে নতুন প্রমাণগুলি বেরিয়েছে তাতে গোটা বিষয়টায় সবিস্তারে তদন্তের প্রয়োজনে এবং সুপ্রিম কোর্টকে নিশ্চিত করতে হবে যে কোনও কিছু আড়াল করা হবে না। দ্য ফিনান্সিয়াল টাইমস এবং দ্য গার্ডিয়ান, অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্টের থেকে প্রাপ্ত খতিয়ানের উপর ভিত্তি করে প্রকাশ করেছে যে কীভাবে বিনোদ আদানির দুই ঘনিষ্ঠ সহযোগী বারমুডায় একটি বিনিয়োগ তহবিল ব্যবহার করেছিল এবং আদানির মিলিয়ন ডলারের শেয়ার কেনার জন্য শেল কোম্পানিগুলি বানিয়েছিল টাকা নয়ছয় করতে । এইটা সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে করা হয়েছে।  আরো  যা জানা যায় যে সেবি ২০১৪ সালে আদানির সংস্থাগুলির বিদেশি তহবিলের বিষয়টি খতিয়ে দেখছিল কিন্তু পরে তদন্তগুলি বন্ধ করে দিয়েছিল।এইটা সম্পূর্ণ আইনবিরোধী।

নির্বাচন কমিশন সংক্রান্ত বিল

মোদি সরকার নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে একটি খসড়া বিল এনেছে।এই বিলটি সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চের রায়কে খন্ডন করে । মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এবং বাকি নির্বাচন কমিশনারদের প্রধানমন্ত্রী, লোকসভার বিরোধী দলনেতা এবং ভারতের প্রধান বিচারপতির মিলিত  একটি নির্বাচন কমিটি দ্বারা নিয়োগ করা উচিত। কিন্তু প্রস্তাবিত বিলে ভারতের প্রধান বিচারপতির বদলে, প্রধানমন্ত্রী নির্ধারিত একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে নির্বাচক করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এই প্রস্তাব নির্বাচন কমিশনের উপর সরকারের আধিপত্য নিশ্চিত করে যা স্পষ্টতই অগণতান্ত্রিক এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করানোর সাংবিধানিক নির্দেশকে লঙ্ঘন করে।

সিপিআই(এম) ইন্ডিয়া ব্লকের সমস্ত দলকে রাজ্যসভায় এই বিলের বিরোধিতা ও পরাস্ত করার আহ্বান জানাচ্ছে।

জম্মু ও কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদী হামলা

পলিট ব্যুরো অনন্ত নাগ সহ জম্মু ও কাশ্মীরের গারোলে গুলির লড়াই চলাকালীন সন্ত্রাসবাদীদের হাতে নিহত কর্নেল মনপ্রীত সিং, মেজর আশিস ধোনচাক এবং ডিওয়াইএসপি হুমায়ুন মুজাম্মিল ভাটের বীরত্ব ও আত্মত্যাগকে সম্মান জানায়। এই হত্যাকান্ড কাশ্মীরে শান্তি ও স্বাভাবিকতা প্রতিষ্ঠার মোদি সরকারের দাবির মিথ্যাকে প্রকাশ করে।

পলিট ব্যুরো শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানায়।

ত্রিপুরায় গণতন্ত্রের হত্যা

বিজেপি ৫ সেপ্টেম্বরের উপনির্বাচনে গণতন্ত্রকে খুন করেছে। দেদার কারচুপি করতেও আটকায়নি। সরাসরি সরকার ও প্রশাসনের মদতে এই কাজ হয়েছে। গণতন্ত্রকে খুন করে এই উপনির্বাচন পার্টি অস্বীকার করছে। কঠোর ও নিরপেক্ষ ভাবে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বে, এই নির্বাচন হোক।

জি২০ সম্মেলন

জি ২০ শীর্ষ সম্মেলনের পরে, মোদি সরকার নিজেদের 'গ্লোবাল সাউথ'-এর নেতা হিসাবে বিজ্ঞাপন করেছে। কিন্তু কিউবার হাভানায় শীর্ষ সম্মেলনে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রীর অংশগ্রহণের কথা বলা হলেও তিনি  সভায় অনুপস্থিত ছিলেন।স্পষ্টতই, মোদি সরকার, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অধস্তন মিত্র হিসাবে, কিউবায় কোন মন্ত্রী পর্যায়ের প্রতিনিধি  না পাঠানোই ভালো মনে করেছে।

কেন্দ্রীয় কমিটির সভা

২৭-২৯ অক্টোবর ২০২৩-এ CPI(M)-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবে।


শেয়ার করুন

উত্তর দিন