ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)’র পলিট ব্যুরো নিম্নিলিখিত বিবৃতি দিয়েছেঃ
ভয়ানক মন্দার কবলে ভারতের অর্থনীতিঃ দেশের অভ্যন্তরীন চাহিদার পুনরুজ্জীবনে জনস্বার্থে ব্যায়বরাদ্দ বাড়াতে হবে
গতকাল কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী কোভিড-১৯ অতিমারি হিসাবে দেখা দেবার অনেক আগেই দেশ অর্থনৈতিক মন্দার কবলে পড়েছিল তা এখন আরও ভয়ানক চেহারা নিয়েছে। অত্যন্ত বিস্ময়করভাবে জিডিপি বৃদ্ধির হার যেভাবে ২৪ শতাংশ কমে গেছে তা এককথায় অভূতপূর্ব। নোটবাতিল, জিএসটি’র প্রয়োগ এবং পরিকল্পনাহীন সার্বিক লকডাউনের সম্মিলিত প্রভাবেই দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার এমন ধ্বংসোন্মুখ অবস্থা হয়েছে।
এমন অবস্থার প্রাথমিক কারন অবশ্যই দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদার বিপুল ঘাটতি অর্থাৎ আমাদের দেশে জনগণের পন্য কেনার ক্ষমতা কমে যাওয়া। এই অবস্থা কাটাতে প্রয়োজন ছিল একদিকে জনস্বার্থে ব্যায়বরাদ্দ বাড়িয়ে পরিকাঠামোগত ক্ষেত্রে বিনিয়োগ এবং আরেকদিকে ব্যাপক জনগণের জন্য রোজগারের উপায় তৈরি করা অথচ মোদী সরকার সেদিকে দৃষ্টি না দিয়ে নয়া উদারবাদী অর্থনৈতিক সমাধান সূত্রানুযায়ী দেশের সম্পদ লুট হতে দিয়ে এবং বিশাল অংকের করছাড়ের মাধ্যমে বড় বড় প্রাইভেট কর্পোরেট সংস্থাগুলির আরও বেশী ফুলেফেঁপে ওঠার স্বার্থে পুঁজির জোগান দিয়েছে।
বেসরকারি মালিকানাধীন সংস্থার শ্রীবৃদ্ধির স্বার্থে যতই উৎসাহ দেওয়া হোক না কেন তার ফলে কোনদিনই জাতীয় অর্থনীতির সুদিন ফেরে না। এই সমস্ত সংস্থাগুলির উৎপাদিত পন্যসামগ্রীকে শেষ অবধি বাজারে বিক্রি হতে হবে। অথচ দেশে কিংবা দেশের বাইরে কোথাও সেইসব পন্য কেনার মতো ক্রেতাই নেই।
এই গোটা পর্বে জনস্বার্থে ব্যায়বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় সরকারের উপর চাপ দিয়ে এসেছে। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে একনাগাড়ে একের পর এক সেইসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে যার ফলে অর্থনৈতিক মন্দা এবং তাতে সরকারের আয় (রেভিনিউ) আগের তুলনায় আরও কমেছে।
দেশে অর্থনৈতিক মন্দাবস্থা সমাধানের একমাত্র উপায় হল জনগণের জীবন-জীবিকার স্বার্থে অবিলম্বে দুটি সরকারি পদক্ষেপ। একদিকে জনসাধারনের জন্য বিনামূল্যে খাদ্যের জোগান এবং নগদ অর্থ তুলে দিতে হবে আরেকদিকে সরকারের তরফে জনস্বার্থে সার্বিক ব্যায়বরাদ্দ বাড়াতে হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে দ্রুত এই পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য সিপিআই(এম) আরও একবার দাবি জানাচ্ছে।
শেয়ার করুন