কৃষক আন্দোলনের সংহতিতে মহারাষ্ট্রে বনধকে সমর্থন জানালো সংযুক্ত শ্বেতকারি কামগার মোর্চা

সংগ্রামী সংহতি

সংযুক্ত শ্বেতকারি কামগার মোর্চার প্রেস বিবৃতি

অক্টোবর ৯, ২০২১

মহা বিকাশ আগাধি’র আহ্বানে লখিমপুর খেরিতে মৃত কৃষকদের সংগ্রামের প্রতি সংহতিজ্ঞাপক ‘মহারাষ্ট্র বনধ্‌’-কে সমর্থন জানাচ্ছে সংযুক্ত শ্বেতকারি কামগার মোর্চা।

লখিমপুর খেরিতে যে নৃশংসতায় কৃষকদের খুন করা হয়েছে তাতে গোটা দেশ স্তম্ভিত। বারংবার তাদের প্ররোচিত করার অপচেষ্টা সত্বেও কৃষকেরা দশ মাস যাবত আন্দোলনকে অভাবনীয়রূপে শান্তিপূর্ণ অবস্থায় জারী রেখেছেন।

মোদী সরকার প্রণীত কৃষক এবং জনবিরোধী নয়া তিন কৃষি আইন বাতিলের দাবীতে কৃষকদের আন্দোলন সম্পূর্ণ ন্যায্য। একইসাথে আমাদের দাবী  শ্রমিকস্বার্থ বিরোধী চার নয়া শ্রম আইন এবং ২০২১ সালের নয়া বিদ্যুৎ আইনকেও বাতিল ঘোষণা করতে হবে। কেন্দ্রীয় সরকার যেভাবে বেসরকারিকরণ চালিয়ে যাচ্ছে তাও বন্ধ করতে হবে।

একাধিক বাম এবং গণতান্ত্রিক দল, কৃষক সংগঠন, ট্রেড ইউনিয়ন, ছাত্র, যুব এবং মহিলা সংগঠন একসাথে মিলে গড়ে উঠেছে সংযুক্ত শ্বেতকারি কামগার মোর্চা। এই মোর্চা নিরবিচ্ছিন্নরূপে মুম্বই সহ গোটা মহারাষ্ট্র জূড়ে কৃষক আন্দোলনের প্রতি সংহতি পালন করে এসেছে।

মহারাষ্ট্রে কৃষকদের আন্দোলন

শেষ দশ মাস সময়ে আমরা বিরাট আকারের জনসভা সংগঠিত করেছি, একইসাথে মুম্বই এবং মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রান্তে স্থানীয় মানুষদের সাথে বিভিন্ন বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করেছি। নীচে সেই কর্মসূচীগুলির একটি তালিকা প্রকাশ করা হচ্ছেঃ

২০২০ সালের ২৬শে নভেম্বর দিল্লিতে কৃষকদের উপরে হামলার ঘটনার প্রতিবাদে এবং তাদের দিল্লী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারী হবার পরে একাধিক সংহতি জনসভা।

২০২০ সালের ২৫ জানুয়ারি মুম্বাইয়ের আজাদ ময়দানের জনসভায় সারা মহারাষ্ট্র থেকে ৫০,০০০ এরও বেশি কৃষক ও শ্রমিক যুক্ত হয়েছিলেন।

কৃষক আন্দোলনে শহীদ কৃষকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে একশোটিরও বেশি স্থানে শ্রদ্ধাঞ্জলি সভার আয়োজন করা হয়।

২০২১ সালের ৯ই অগাস্ট ভারত ছাড়ো দিবসে, শ্রমিক এবং কৃষক সংগঠনগুলির সম্মিলিত আহ্বানে নয়া কৃষি এবং শ্রম আইন বাতিলের দাবীতে হাজার হাজার মানুষ অগাস্ট ক্রান্তি ময়দানের জমায়েতে অংশ নেন।

২৬শে সেপ্টেম্বর ভারত বনধের আহ্বানে রাজ্য জুড়ে রাস্তা রোকো কর্মসূচি পালিত হয়।

লখিমপুর খেরিতে কৃষকদের নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় নিন্দা জানাতে ৫ অক্টোবর দাদার’এ ব্যাপক বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়,

একাধিক বাম ও গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক শক্তির নিরবিচ্ছিন্ন প্রচেষ্টায় মুম্বই বর্তমানে কৃষক ও শ্রমিক সংগ্রামের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।

ক্রান্তি ময়দানের জমায়েত

লখিমপুর খেরিতে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রেক্ষাপটে আমাদের দাবি:

১) একশো জনেরও বেশি প্রত্যক্ষদর্শী চারজন কৃষক এবং এক সাংবাদিককে গাড়ি চালিয়ে পিষে মারার ঘটনায় আশীষ মিশ্রকে সনাক্ত করেছেন, তাকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে। খুনের ঘটনায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ৩০২ ধারায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। ইউপি পুলিশের উচিত ছিল তাকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করা, কিন্তু তিনি এখনও অবাধে ঘোরাফেরা করছেন।

২) এই ঘটনায় অবাধ ও ন্যায্য তদন্ত নিশ্চিত করতে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী (মিনিস্টার অফ স্টেট) অজয় ​​মিশ্রকে অবিলম্বে তার মন্ত্রীত্বের পদ থেকে অপসারণ করতে হবে। আমরা জানি কিভাবে পুলিশ এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের উপর তদন্তের সময়ে চাপ প্রয়োগ করা হয়। যারা সেই চাপে মাথা নামান না তাদেরকে হুমকি দেওয়া হয় এমনকি হত্যার ঘটনাও ঘটে।

৩) আদালতের অধীনে এই ঘটনার তদন্ত হওয়া প্রয়োজন এবং সুপ্রিম কোর্টের একজন কার্যকরী বিচারক দ্বারা সেই তদন্ত পরিচালিত হতে হবে।

৪) কিষান নেতারা দাবি অনুযায়ী লখিমপুর খেরির ঘটনায় ইউপি পুলিশ অবিলম্বে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করুক, অন্যথায় কৃষকদের আন্দোলন বিক্ষোভ অব্যাহত থাকবে এবং আরও বড় আকারে সেই বিক্ষোভ প্রদর্শিত হবে।

মহা বিকাশ আগাধি (এমভিএ) বনধ পালনের আহ্বান জানিয়েছে, আমরা সেই আহ্বানে সম্পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি। আমরা মহারাষ্ট্রের জনগণকে এই ঐতিহাসিক বনধকে সমর্থন জানিয়ে এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।

সংগ্রামী সংহতি সহ ধন্যবাদ

সংগঠনের পক্ষেঃ

সংযুক্ত শ্বেতকারি কামগার মোর্চা

জন আন্দোলনাঞ্চি সংঘর্ষ সমিতি

সারা ভারত কিষাণ সংঘর্ষ কোঅর্ডিনেশন কমিটি

ট্রেড ইউনিয়ইন্স জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি

আনঅর্গানাইজড ওয়ার্কার্স স্ট্রাগল কমিটি

হম ভারত কে লোগ

নেশন ফর ফারমার্স

সেন্ট্রাল ভিস্টা বিরোধী ভারত


শেয়ার করুন

উত্তর দিন