ঐক্যবদ্ধ কর্পোরেট বিরোধী কৃষক সংগ্রামের ঐতিহাসিক বিজয়

সারা ভারত কৃষক সভা (AIKS)
৩৬,পন্ডিত রবিশঙ্কর শুক্লা লেন,
নিউ দিল্লি-১১০০০১, kisansabha@gmail.com
১৯ নভেম্বর, ২০২১

প্রধানমন্ত্রী মোদি ও বিজেপি কৃষকদের কাছে মাথা নত করতে বাধ্য হয়েছে এবং কৃষি আইন বাতিলের ঘোষণা করেছে। 
৭০০ কৃষকের মৃত্যুর জন্য দায়ী নরেন্দ্র মোদি এবং বিজেপি সরকার
এই বিজয় ভবিষ্যতের সংগ্রামের জন্য আরও আত্মবিশ্বাস দেবে
অহংকারী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার পরাজয় মেনে নিতে বাধ্য হয়েছে এবং তিনটি কৃষক-বিরোধী, জনবিরোধী এবং কর্পোরেটপন্থী কৃষি আইন বাতিলের ঘোষণা করেছে।AIKS ভারত জুড়ে লক্ষ লক্ষ কৃষক, কৃষি শ্রমিক এবং শ্রমিকদের অভিনন্দন জানায় যারা এই আইনের বিরুদ্ধে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে দৃঢ় সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন, চরম দমন-পীড়নকে সাহসের সাথে মোকাবিলা করেছেন এবং এই ঐতিহাসিক বিজয়ের জন্য মহান ত্যাগ স্বীকার করেছেন।ভারতের জনগণ কৃষকদের প্রতি আস্থা রেখেছিলেন এবং তাদের সমর্থনে ব্যাপকভাবে শামিল হয়েছিলেন।

যদিও, এই ঐতিহাসিক কৃষকদের সংগ্রামের অন্য মৌলিক দাবি - সমস্ত কৃষকদের সমস্ত ফসলের জন্য সর্বনিম্ন সহায়ক মূল্য (MSP) নিশ্চিত করার জন্য একটি কেন্দ্রীয় আইন প্রনয়ন করা যা হবে উৎপাদনের সামগ্রিক খরচের দেড়গুণ (C2+50%) - এখনও অধরা রয়ে গেছে।এই দাবিটি আদায় না হওয়া কৃষি সঙ্কটকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে এবং গত ২৫ বছরে ৪ লক্ষেরও বেশি কৃষক আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে, যার মধ্যে মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি শাসনকালে গত ৭ বছরে প্রায় ১ লক্ষ কৃষক তাদের জীবন শেষ করেছেন।

গত এক বছরের কৃষকদের সংগ্রামে প্রায় ৭০০ প্রাণহানির জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বিজেপি সরকার সরাসরি দায়ী।এআইকেএস দাবি করে যে প্রধানমন্ত্রী এবং বিজেপি সরকারকে তাদের অসংবেদনশীল এবং অনড় অবস্থানের কারণে শত শত প্রাণহানির দায় নিতে হবে এবং জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।ঐক্যবদ্ধ কিষাণ আন্দোলনের কাছে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারের এটি দ্বিতীয় পরাজয়।কৃষকদের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদের পরিপ্রেক্ষিতে তারা এর আগে জমি অধিগ্রহণ অধ্যাদেশ স্থগিত রাখতে বাধ্য হয়েছিল।প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা কৃষিকে কর্পোরেটদের হাতে তুলে দেওয়ার এবং আগ্রাসীভাবে নব্য উদারনৈতিক অর্থনৈতিক নীতি অনুসরণের প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে একটি বড় বিজয়।সারা ভারত কৃষক সভা এই ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের শহীদদের অভিবাদন জানায় এবং আমাদের সকল দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার শপথ নেয়।

বিজেপি সরকার চরম দমনপীড়ন চালিয়েছিল এবং কৃষকদের প্রতিবাদকে কুনজরে দেখানোর জন্য কর্পোরেট মিডিয়াকে যথেচ্ছ ব্যবহার করেছিল, প্রধানমন্ত্রী নিজেই প্রতিবাদী কৃষকদের 'আন্দোলঞ্জীবি' বলে উপহাস করে এই জঘন্য আক্রমণের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।আরও অনেক নেতাও কৃষকদের লাগাতার অপমান করেছেন।তারা এই সংগ্রামকে দেশবিরোধী বলে হেয় প্রতিপন্ন করেছিল এবং একে অপদস্থ করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়েছিল।এই বিজয় এমন সব ঘৃণ্য আক্রমণের উপর জয়লাভ করেছে।ভারতের কৃষকরা ও জনগণ চরম দমন-পীড়ন, নৃশংস হামলা, আমাদের কমরেডদের হত্যা এবং কৃষকদের প্রতি অপমান ভুলে যাবে না।কংক্রিটের দেওয়াল, কাঁটাতার ও ব্যারিকেড, পরিখা খোঁড়া, পেরেক লাগানো, অপমান, জলকামান, টিয়ারগ্যাস, ইন্টারনেট বন্ধ, সাংবাদিকদের ওপর হামলার কথা আমরা ভুলব না।সবকিছু মনে রাখা হবে।

আমাদের সজাগ থাকতে হবে এবং সংসদে আইন বাতিলের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।প্রধানমন্ত্রী যদি বিশ্বাস করেন যে তার ঘোষণা কৃষকদের সংগ্রামের অবসান ঘটাবে, তিনি চরম ভুল করছেন।উপযুক্ত পারিশ্রমিকমূলক MSP-এর গ্যারান্টিযুক্ত আইন পাশ , বিদ্যুৎ সংশোধনী বিল এবং শ্রম কোড প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত সংগ্রাম চলবে।লখিমপুর খেরি ও কর্নালের খুনিদের বিচারের আওতায় না আনা পর্যন্ত লড়াই চলবে।এই বিজয় আরও অনেক ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামকে উৎসাহিত করবে এবং আমরা নব্য উদারনৈতিক অর্থনৈতিক নীতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে গিয়ে কৃষক-বিরোধী, শ্রমিক-বিরোধী বিজেপিকে আরও অনেকবার পর্যুদস্ত করব।

স্বা: অশোক ধাওয়ালে (সভাপতি)

স্বা: হান্নান মোল্লো (সাধারণ সম্পাদক)

এটি AIKS এবং AIAWU দ্বারা ১৯ নভেম্বর, ২০২১ এ AIKS অফিস, নয়াদিল্লিতে আয়োজিত প্রেস কনফারেন্সে প্রকাশিত প্রেস বিবৃতি। এতে AIKS-এর সাধারণ সম্পাদক হান্নান মোল্লা, সভাপতি ডঃ অশোক ধাওয়ালে, যুগ্ম সচিব এন কে শুক্লা এবং বিজু কৃষ্ণান, অর্থ সম্পাদক পি কৃষ্ণপ্রসাদ, AIAWU সাধারণ সম্পাদক বি ভেঙ্কট এবং যুগ্ম সম্পাদক বিক্রম সিং বক্তব্য রাখেন।


শেয়ার করুন

উত্তর দিন