সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যালগোরিদম কি নিরপেক্ষ?

সুশোভন পাত্র

সোশ্যাল মিডিয়া তে আপনার প্রোফাইলের রিচ কমে গেছে? আগের মত ‘লাইক’ হচ্ছে না? পেজের এনগেজমেন্ট ঝাড় খাচ্ছে? আপনার বন্ধু কি “স্টিকার কমেন্ট প্লিজ” –করুন আর্তি জানাচ্ছে? রিফ্রেশ করলেও বারবার বস্তাপচা পোস্টই দেখতে পাচ্ছেন? সেক্সিস্ট, মিসোজিনিস্ট, হেট-স্পিচের প্রোফাইল গুলো মার্কেটে দিব্যি কলার তুলে ঘুরে বেড়াচ্ছে? রিপোর্ট করে লাভ হচ্ছে না বলছেন? ফেসবুক খুললেই কি, কিভাবে জন্মদিন কাটালেন শোভন-বৈশাখী; কোন সেলেব মালদ্বীপের হোয়াইট বিচে কোয়ালিটি সময় কাটাচ্ছেন; কোন ক্রিকেটার কিউই স্যালাড আর বানান শেক দিতে হেলদি ব্রেকফাস্ট সেরেছেন; কার্তিক আরিয়ান আর সারা আলি খানের আবার কি করে প্যাচ আপ হয়ে গেছে, কোন ই কমার্স সাইটে আইফোন ১২-র উপর ৫% ক্যাশব্যাক দিচ্ছে – এই জাতীয় খবর গুলো তে আপনার টাইম লাইন ভরে যাচ্ছে? সাজেসটেড ফিডে আপনার ওয়ালে কি মাঝেই মাঝেই উগ্র জাতীয়তাবাদী কিম্বা হালকা ধর্মীয় সুড়সুড়ি দেওয়া পোস্ট হাজির হচ্ছে? ভারতীয় সেনাদের বীরত্ব ও আত্মত্যাগ কিম্বা জি-ফাইভ ওটিটি প্ল্যাটফর্মে কাশ্মীর ফাইলসের বিজ্ঞাপন ভেসে বেড়াচ্ছে? আমাদের ভারতের প্রান্তিক রাজ্য আসামে বন্যায় সরকারী হিসেবে মৃতের সংখ্যা ১৮৬, ক্ষতিগ্রস্ত ১০ লাখ মানুষ। শুধু গত জুনে দেশে নতুন করে বেকার হয়েছেন ১ কোটি ৩০ লক্ষ মানুষ! ডলার প্রতি টাকার দাম নামতে নামতে এখন প্রায় ৮০! রান্না গ্যসের সিলিন্ডারের ১০৭৯! রাষ্ট্রসঙ্ঘ জানিয়েছে ভারতে পুষ্টিকর খাবার পাননা প্রায় ৯৭ কোটি মানুষ! আচ্ছা গত এক পক্ষ কালে আপনার টাইম লাইনে এই কটা খবর আপনি কবার দেখেছেন? সম্প্রতি একটি সার্ভেতে বলা হয়েছে ৮৪% ভারতীয়র প্রাইমারি সোর্স অফ ইনফরমেশন, অনলাইন। আর তার মধ্যে ৬৪% ভারতীয়র প্রাইমারি সোর্স অফ ইনফরমেশন, সোশ্যাল মিডিয়া! অর্থাৎ প্রতিদিন তাঁরা যাবতীয় খবর পান, দেখেন পড়েন ফেসবুক, টুইটার ইন্সটাগ্রাম, ইউটিউবের মাধ্যমে। মিডিয়া জগতের অলিন্দে কান পাতলে এখন ওপেন সিক্রেট প্রিন্ট মিডিয়া ডাইং আর্ট। দ্রুত কমছে টেলিভিশন ভিউয়ারশিপ! পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডেটা কনজাম্পেশন! কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আপনি যে খবর দেখছেন সেটা কি নিরপেক্ষ? সেটা কি আসলে সমাজের 360 ডিগ্রী ভিউ? মিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন এখন এটাই!
খবর তো অনেক! প্রধানমন্ত্রী হাঁচলে খবর, মুখ্যমন্ত্রী কাশলে খবর, মাধুরী দীক্ষিত নাচলে খবর, নেইমার চোট পেলে খবর আর; গরীব মানুষ মরলে খবর! এখন কোন খবর পরের দিনের কাগজে ছাপা হবে কিম্বা কোন খবর নিয়ে ঘণ্টাখানেক সান্ধ্য আড্ডার নামে মাছের বাজার বসবে সেসব ঠিক করেন মিডিয়ার হোতারা! লোকে বলে এডিটর। আর সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আপনি কোন খবর বেশি বার দেখবেন আর কোন ফ্রাকশান অফ সেকেন্ডেই আপনার টাইমলাইন থেকে হাওয়া হয়ে যাবে সেটা ঠিক করে পিস অফ কোড! টেকনিক্যাল ভাষায় অ্যালগোরিদম! প্রতিটা রান্নার যেমন নির্দিষ্ট একটা রেসিপি আছে; যেমন আপনি শুক্তো তে শুঁকনো লঙ্কা, আদাবাটা পাঁচ-ফোড়ন ব্যবহার করেন, ভিনিগার তো ঢালেন না, চিলি চিকেনে ক্যাপ্সিকাম ব্যবহার করেন কাঁচকলা তো দেন না; ঠিক সেরকমই যেকোনো কম্পিউটার গত বিষয়েও একটা রেসিপি আছে –টেকনিক্যাল টার্মে, অ্যালগোরিদম। রেসিপি যেমন ধাপে ধাপে আপনাকে বলে দেয় কোন তেল ব্যবহার করবেন, কোন রান্নার শেষ চিনি মেশাবেন, কোনটায় কসুরি মেথি তড়কা মারবেন; ফেসবুকের অ্যালগরিদমও তেমন ঠিক করে দেয় কোন খবর লোকে বেশি দেখবে, কোন পোস্ট না চাইলেও টাইমলাইনে ভেসে উঠবে, কোনটা হালকা চেপে যাবে, কি করলে কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড ভায়োলেট হবে, কোন ক্ষেত্রে প্রোফাইল রিপোর্ট খাবে। আর্থিক উদারীকরণের ক্যাসক্যাডিং এফেক্ট হিসেবে টেকনোলোজির সহজলভ্যতা। আর টেকনোলোজির বাই-প্রোডাক্ট হয়ে মুঠো ফোনে সোশ্যাল মিডিয়া। অফিস ফেরত বাসে কিম্বা গাদাগাদি করা লোকাল ট্রেনের কামরাতে; দিনের ক্লান্তি শেষে রাতের বিছানা তে নিজেকে এলিয়ে দিয়ে, কিম্বা ডিনার টেবিলে ভাপা ইলিশের প্লেটের গায়ে; রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে হোঁচট খেয়ে কিম্বা ড্রাইভিং-র স্টিয়ারিং-এ জীবন-মৃত্যু বাজি রেখে  –আপনার মোবাইলের একটা নোটিফিকেশন, একটা ভাইব্রেশেন এক লহমায় আপনার সমস্ত মনোযোগ কে নিংড়ে নিয়ে আছড়ে ফেলে কয়েক লক্ষ পিক্সেলের জাস্ট একটা মোবাইল স্ক্রিনে! আঙুলের আঁচড়ে আপনি স্ক্রল করছেন। ফেসবুকে নিউজ ফিড স্ক্রল করছেন। ইন্সটা তে রিল স্ক্রল করছেন। ইউটিউবে ভিডিও স্ক্রল করছেন। কেউ আবার হ্যামলিনের বাঁশিওয়ালার মত সবচেয়ে সস্তায় লিনেনের হোয়াইট শার্ট আর ডেনিম জিনসের অফার দিচ্ছে -আপনি স্ক্রল করছেন। কেউ হাফ দামে আলপিন থেকে এলিফ্যান্ট সবের মালিকানা বিক্রির লোভ দেখাচ্ছে -আপনি স্ক্রল করছেন। কেউ ২০% ডিসকাউন্টে চিকেন ওরিয়েন্টাল সিজলারের ছবি দেখাচ্ছে -আপনি স্ক্রল করছেন। অন্তহীন এই স্ক্রল, অর্থহীন এই স্ক্রল, অপ্রয়োজনীয় এই স্ক্রল। আপনি জানেন, আপনি বোঝেন। কিন্তু তবুও, আপনি স্ক্রল করছেন! আর স্ক্রল কি দেখছেন ঠিক করে দিচ্ছে অ্যালগোরিদম।
আচ্ছা অ্যালগোরিদম কি নিজে নিজেই পক্ষপাতদুষ্ট হতে পারে? সিম্পল উত্তর, না! কিন্তু অ্যালগোরিদম লেখার কিম্বা মানুষটা তো পক্ষপাতদুষ্ট হতেই পারে, তাই না? হেমলেটে লিখেছিলেন শেক্সপিয়ার, “Though this be madness, yet there is method in 't.” গতবছর নেটফ্লিক্স সোশ্যাল মিডিয়ার madness আর তার method নিয়ে একটা ডকুমেন্টারি তৈরি করেছে, The Social Dilemma ! সেই ডকুমেন্টারিতে গুগল, ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, টুইটার, রেডিট, পিন্টারেস্ট -সিলিকন ভ্যালির তাবড় টেক জায়েন্টের আঁতুড়ঘরের কুশীলব ম্যানেজার, টেকনোলজিস্ট, বিজনেস কিম্বা মার্কেট এক্সপার্টরা নিজেদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে গিয়ে যা বলেছেন সেটা এই ভয়ঙ্কর অ্যালগোরিদম গুলির টিপ অফ দি আইসবার্গ। স্বাভাবিক ভাবেই অ্যালগোরিদম তৈরির ভরকেন্দ্রে আছে ডেটা সায়েন্স। সিলিকন ভ্যালির টেক জায়েন্টরা বলছেন, ফেসবুক টুইটারের ল্যাবেরোটারি তে আমরা প্রত্যেকে নাকি আসলে একটা ছোট বেলার জীববিজ্ঞানের বইয়ে পড়া গিনিপিগ! যে গিনিপিগদের প্রতিটা মাইক্রো কিম্বা ম্যাক্রো অ্যাক্টিভিটি, প্রতিটা লাইক-শেয়ার, প্রতিটা রিঅ্যাকশান-রিটুইট, প্রতিটা ম্যাসেজ-কমেন্ট, এমনকি স্ক্রিনটাইম-ভিউটাইমও মনিটর হচ্ছে অনবরত। সযত্নে সেগুলো ডেটা হিসেবে স্টোর হচ্ছে। প্রতিমুহূর্তে সেই ডেটা ক্লিন হচ্ছে। মাইন হচ্ছে। অ্যানালাইসিস হচ্ছে। যে ডেটা অ্যানালাইসিসের মুখ্য উদ্দেশ্য হল, আপনার পছন্দটাকে আরও নিখুঁত ভাবে প্রেডিক্ট করা। আপনার অ্যাক্টিভিটি ডেটা থেকে আপনার সাইকোলজির সম্ভাব্য একটা মডেল তৈরি করা। আপনি প্রতিদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় কোন খবর পড়ছেন, কোন পোস্টে লাভ, কোন পোস্টে অ্যাংরি রি-অ্যাক্ট করছেন, কোন ছবি তে কমেন্ট করছেন, সেই ডেটা অ্যানালাইসিস করে আগামী দিনে আপনি আর কি কি বিষয়ে, ঠিক কতটা ইন্টারেস্ট দেখাতে পারেন তার একটা প্রোবাবিলিটি ম্যাট্রিক্স তৈরি করা। আর এই সবের কিউমিলেটিভ এফেক্টই হল আপনার ফেসবুকের নিউজ ফিডটা পছন্দসই পোস্টে সেজে ওঠা। কাল রাতে আপনি ইউটিউবে গজল শুনে থাকলে, আজ জগজিৎ সিং-র একটা অ্যালবাম শোনার সাজেশন আসা। ৭ দিন আগে আপনি ফ্লিপকার্টে ‘লেটেস্ট মোবাইল’ সার্চ করে থাকলে আপনার কাছে মোবাইলের উপর ডিস-কাউন্টের পুশ নোটিফিকেশন আসা। অ্যামাজন গ্রোসারি তে দুদিন আগে আপনি সর্ষের তেল কিনে থাকলে, আজকে দুটো বেসনের প্যাকেটে অফারের ব্যাজ অ্যালার্ট পাওয়া। প্রাইম ভিডিও তে আপনার ৫ বছরের মেয়ে পেপা পিগের একটা এপিসোড দেখলে পরে দিন স্কুবিডু-র বিজ্ঞাপন ভেসে ওঠা। আসলে আপনার স্ক্রল তো তাই কেবল স্ক্রল না। স্ক্রল মানে, আপনার চাওয়া-পাওয়ার, ভালোলাগার একটা আসক্তি। স্ক্রল মানে ডেটা! স্ক্রল মানে নেশা!
কেমন নেশা? এই ধরুন কেউ যদি আপনার প্রোফাইল পিকচারে এসে কমেন্ট করে, “উফ! কি লাগছে গুরু”  -আপনি আজকাল একটু ব্লাশ করেন। কেউ যদি ইনবক্সে পিং করে, ‘কি রে ভুঁড়িটা বেড়েছে মনে হচ্ছে?’; আপনি মর্নিং ওয়াকে যাওয়ার হালকা একটা ফিসিবিলিটি অ্যানালাইসিস করেন। আপনার গালে টোল পড়লেও, জন্মের ২৫ বছর ধরে আপনি জানেন আপনাকে ঠিক আপনার মতই লাগে! কিন্তু যেই কেউ ইন্সটা তে আপনার ছবির নিচে এসে লিখল “টোল পড়লে তোকে কিছুটা প্রীতি জিন্টার মত লাগে”, অমনি আপনি গুগলে গিয়ে তিনবার প্রীতি জিন্টার ছবি সার্চ করছেন। আমেরিকার একটি গবেষণা বলছে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে প্রি-টিন এজ ছেলে-মেয়েদের মধ্যে লুক্স বদলে ফেলার জন্য প্লাস্টিক সার্জারির প্রবণতা। আজকাল আপনি কি জামা কিনবেন ঠিক করতে মোবাইল স্ক্রল করেন! রাতে কোথায় ডিনার করবেন বেছে নিতে মোবাইল স্ক্রল করেন। লং-ড্রাইভের মাঝে গাড়িতে কোথায় পেট্রোল ভরাবেন জানতে মোবাইল স্ক্রল করেন। মায়ের বাতের ব্যথার ওষুধ অর্ডার করতে মোবাইল স্ক্রল করেন। খবর দেখতে, খবর জানতে মোবাইল স্ক্রল করেন। এমনকি কাকে ভোট দেবেন ঠিক করতেও মোবাইল স্ক্রল করেন। গত দশ বছরে আমাদের প্রতিদিনকার জীবন শৈলী আচরণগত পরিবর্তন (behavioural change) এসেছে। আর আমাদের এই বিন্দু বিন্দু আচরণগত পরিবর্তন সিন্ধু গড়ে সামাজিক এবং রাজনৈতিক পরিবর্তন আনছে। দেশ-বিদেশের বিগত বেশ কয়েকটি নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে সোশ্যাল মিডিয়া। বিভিন্ন দেশের গণতান্ত্রিক পরিকাঠামো কে চ্যালেঞ্জের মুখে দাড় করিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া। ফেক নিউজের উপর ভিত্তি করে মানুষের মৃত্যু হচ্ছে প্রতিদিন। জাতিগত ধর্মীয় দাঙ্গা হয়েছে, বর্ণ বিদ্বেষের শিকার হতে হয়েছে।
আমাদের এই আচরণগত পরিবর্তনটাই হল টেক জায়েন্ট গুলোর ব্যবসায়িক সাফল্যের ‘মোডাস অপারেন্ডি’। আমরা যত বেশি টেকনোলোজির উপর নির্ভরশীল হচ্ছি, অ্যালগরিদমের মার প্যাঁচে যত বেশি সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে অন্তহীন স্ক্রলে ব্যস্ত থাকছি, ততই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে টেক জায়েন্ট গুলোর বিজ্ঞাপন পাওয়ার সম্ভাবনা। ঐ যে কথায় বলে 'if you're not paying for the product, you are the product' একদিকে টেকনোলোজির অভূতপূর্ব সাফল্য, ইনফরমেশনের সহজলভ্যতা যেমন সমাজে বহু মুশকিল আসান করছে, ঠিক তেমনই অন্যদিকে রাষ্ট্রের দুর্বল ডেটা সিকিউরিটি এবং সাইবার আইনের সুযোগে আমাদের প্রতিদিনকার জীবন শৈলী এই আচরণগত পরিবর্তন টেক জায়েন্ট গুলোর হাতে এক বিপুল ক্ষমতার পুঞ্জিভূত করছে। যে ক্ষমতার অনিয়ন্ত্রিত অপব্যবহার এই সমাজ কে টুকরো করে ভেঙে ফেলতে পারে আগামী কয়েক দশকে। স্পাইডার ম্যান জানতো, "With great power there must also come great responsibility"। কিন্তু সে তো রিল লাইফ! রিয়েল লাইফে এই responsibility দেখানোর দায় তো টেক জায়েন্টদের নেই। থাকার কথাও না। আসলে বর্তমান ধনতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ডেটাই এখন নতুন ক্যাপিটাল। আর পুঁজিবাদী রাষ্ট্রে ক্যাপিটাল মুনাফা ছাড়া কিছুই যে বোঝে না এটা তো মার্ক্সিজিম-লেনিনইজমের গোড়ার কথা। ফলে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আমার ইকো চেম্বারে বসে বিরাট কোহলির কভার ড্রাইভে সামনের পায়ে প্রপার ওয়েট ট্রান্সফার হচ্ছে কিনা কিম্বা বিমান বসুর আত্মত্যাগের এক ইঞ্চি নিজের জীবনে অনুশীলন করতে না পারলেও বিমান বসুর রাজনৈতিক জীবন কে জাজ করা ফ্রিডম অফ এক্সপ্রেশন হতে পারে কিন্তু বিচক্ষণ তো অবশ্যই হবে না।  সোশ্যাল মিডিয়াতে যে খবর-পোস্ট দেখে আমি যে মতামত পোষণ করছি, কিম্বা নির্বাচনী জনমতে গঠনে সোশ্যাল মিডিয়ার ভূমিকা ক্যাপিটাল দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে না  –এই ধারণার বশবর্তী হয়ে, গভীরে বিষয়টি অনুশীলন না করে প্রভাবিত হলে বামপন্থীদের অচিরে ক্ষতিই হবে। হেঁটে কিম্বা নেটে আপনি বামপন্থী আন্দোলনের যে ধাপেই থাকুন না কেন, রাষ্ট্র কিম্বা পুঁজি, মুনাফা কিম্বা এক্সপ্লয়টেশন, সাম্রাজ্যবাদ কিম্বা কালচারাল হেজিমনি এবং সর্বোপরি manufacturing consent-র ধারণাটা কিন্তু বিন্দু মাত্র বদলাচ্ছে না। টেকনোলজির দুনিয়ায় আমাদের বামপন্থীদের, টক্কর দিয়ে লড়তে হলে, এই মৌলিক বিষয়টাকে মজ্জাগত করেই এগোতে হবে।
শেয়ার করুন

উত্তর দিন