পেট্রোপন্যে বর্ধিত আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করতে হবে
তারিখঃ বৃহস্পতিবার, ১৮ই ফেব্রুয়ারি – ২০২১
ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)- এর পলিট ব্যুরো নিম্নলিখিত বিবৃতি জারী করেছেঃ
পেট্রোল, ডিজেল এবং রান্নার গ্যাসের দাম আরও একধাপ বেড়েছে, পলিট ব্যুরো এই লাগামছাড়া দাম বৃদ্ধির তীব্র নিন্দা করছে। এই দাম বৃদ্ধির জন্য দায়ী কেন্দ্রীয় সরকারের বর্ধিত আমদানি শুল্ক। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম (বেস প্রাইস) ২০১৪ সালে ছিল ৪৭.১২ টাকা, ২০২১ সালে সেই দাম (বেস প্রাইস) কমে এসে দাঁড়িয়েছে ২৯.৩৪ টাকায় অর্থাৎ প্রায় ৫০ শতাংশ দাম কমে গেছে।
কেন্দ্রীয় সরকার লাগামহীন কায়দায় আমদানি শুল্ক বাড়িয়ে যাওয়াই ভারতের বাজারে পেট্রোপন্যের দাম বেড়ে চলার মুখ্য কারন। বর্তমানে ভারতের বাজারে পেট্রোলের যা দাম তার ৩৭ শতাংশই আমদানি শুল্ক। ২০১৪ সালে মোদী সরকার ক্ষমতায় আসীন হবার পর থেকে ২০২১ সাল অবধি পেট্রোপন্যে ধার্য শুল্কের বৃদ্ধি ঘটেছে ২১৭ শতাংশ হারে।
কর্পোরেট এবং প্রত্যক্ষ করদাতাদের বিপুল পরিমানে কর ছাড় দেওয়ার ফলে সরকারের রাজস্ব আদায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে, পেট্রোপন্যে বর্ধিত হারে আমদানি শুল্ক চাপিয়ে সেই ক্ষতিকেই পুষিয়ে নেওয়া হচ্ছে। ২০২০-২১ সালের বাজেটে প্রদত্ত তথ্য এই প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য, গত বছরে কর্পোরেট ক্ষেত্রে কর ছাড়ে সরকারের রাজস্ব আদায় হয়েছে ৫.৪৭ লক্ষ কোটি টাকা ( তার আগের বছর এই আদায়ের পরিমাণ ছিল ৬.৮১ লক্ষ কোটি টাকা) এবং প্রত্যক্ষ কর আদায় বাবদ রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ৫.৬১ লক্ষ কোটি টাকা (তার আগের বছর এই আদায়ের পরিমাণ ছিল ৬.৩৮ লক্ষ কোটি টাকা)।
দেশের কতিপয় ধনী এবং নিজেদের পছন্দের তালিকায় থাকা ধান্দাবাজদের মুনাফার স্বার্থে মোদী সরকার যেভাবে করছাড়ের পুরস্কার দিয়েছে সেই ক্ষতি মিটিয়ে নিতেই দেশের জনগণের উপরে করের বোঝা ক্রমশ বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যেই অর্থনৈতিক মন্দা এবং মহামারীর দ্বিবিধ প্রকোপে জনসাধারনের জীবন জীবিকা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে, তার উপরে সরকার বাড়তি করের বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে।
পেট্রোপন্যের দাম বৃদ্ধির প্রত্যক্ষ প্রভাবে পরিবহন খরচ বেড়ে যাবে, এর ফলে সমস্ত আবশ্যিক পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ঘটবে। ক্রমান্বয়ী দামবৃদ্ধি মুদ্রাস্ফীতিকে বাড়িয়ে দেবে যার আর্থিক মন্দার প্রকোপ আরও বিস্তৃত হবে।
বাড়তি আমদানি শুল্ক অবিলম্বে প্রত্যাহার করার দাবীতে সিপিআই(এম)-এর সকল ইউনিটকেই দেশজুড়ে বিক্ষোভ প্রদর্শনের আয়োজন করার আহ্বান জানাচ্ছে পলিট ব্যুরো।