PB Statement

Who Authorized Illegal Surveillance?

কার অনুমতিতে এই বেআইনি নজরদারি ?

তারিখঃ সোমবার, ১৯ জুলাই, ২০২১

ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)-এর পলিট ব্যুরো নিম্নলিখিত বিবৃতি জারী করেছেঃ

বিজেপি সরকারকে জবাবদিহি করতে হবে – ভারতীয়দের উপরে এমন বেআইনি নজরদারি চালানোর অনুমতি কে দিয়েছে?

সাইবার নজরদারির কাজে দুনিয়ার পয়লা নম্বর সংস্থা হল ইজরায়েলের এন এস ও। এই সংস্থা নির্মিত পেগাসাস স্পাইওয়্যার ব্যবহার করে ভারত সরকার বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করেছে বলে খবর বেরিয়েছে। এন এস ও স্পষ্ট জানিয়েছে তারা শুধুমাত্র কোন দেশের সরকারের সাথেই বাণিজ্যিক চুক্তি করে। সংশ্লিষ্ট তদন্তে প্রকাশিত ভারতে একাধিক সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মীদের বাছাই করে তাদের স্মার্ট ফোন হ্যাকের মাধ্যমে নজরদারির আওতায় আনা হয়েছে। পেগাসাস স্পাইওয়্যার ব্যবহার করে দুনিয়াজূড়ে বিভিন্ন মানুষের উপরে পঞ্চাশ হাজারেরও বেশি এহেন নজরদারির ঘটনা সামনে এসেছে। রোয়ান্ডা, মরক্কো, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, মেক্সিকোর বিভিন্ন সংস্থাসহ ভারতেও এন এস ও নজরদারি চালিয়েছে।  

প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, “ভারতে একশোরও বেশি সাংবাদিক, বিভিন্ন আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী, বিরোধী রাজনৈতিক দলের ব্যাক্তিত্ব, সরকারী আধিকারিকসহ বিভিন্ন ব্যাবসায়িক সংস্থার কর্ণধারদের উপরে নজরদারি চালানো হয়”। গোপনে নজরদারির উদ্দেশ্যে পেগাসাস ব্যবহার করে অন্তত চল্লিশ জন সাংবাদিকের ব্যাক্তিগত তথ্য চুরি করা হয়েছে।

দুই বছর আগেই দেশের সংসদে সিপিআই(এম)-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল হোয়াটস্যাপ দ্বারা প্রকাশিত তথ্যে স্পষ্ট হয়েছে ভারতে নজরদারি চালানোর উদ্দেশ্যে পেগাসাস ব্যবহার করা হচ্ছে। তখন মোদী সরকার স্পষ্ট করে জানাতে পারেনি যে তারা এন এস ও’র সাথে চুক্তিবদ্ধ নয়, তারা শুধু জানিয়েছিল কোনপ্রকার “বেআইনি নজরদারি” চালানো হচ্ছে না।

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী একথা স্পষ্ট হয়ে গেছে যে ভারতে মোদী সরকার নাগরিকদের উপরে নজরদারি চালানোর উদ্দেশ্যে এন এস ও’র সাথে চুক্তিবদ্ধ। সেই বাণিজ্যিক চুক্তির মূল বিষয়বস্তু কি সেই ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারকে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট জানাতে হবে, চুক্তির শর্তাবলী এবং এই চুক্তির বিনিময়ে কত অর্থ খরচ হয়েছে তাও জানাতে হবে। মনে রাখতে হবে এই অর্থ জনগণের (পাবলিক ফান্ড)।  

ভারতীয় আইনে কারোর স্মার্টফোন হ্যাক করে সাইবার-স্পাই সফটওয়্যার দ্বারা কারোর ব্যক্তিগত তথ্য বের করা নিষিদ্ধ, এমনকি ভারত সরকারও সেই কাজ করতে পারে না। তবে ভারত সরকার কোন আইনের বলে এহেন নজরদারি চালাচ্ছে? সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশানুযায়ী ব্যক্তিগত গোপনীয়তা প্রত্যেকের মৌলিক অধিকার, কিন্তু কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ব্যক্তিগত গোপনীয়তা সংক্রান্ত আইনকে কার্যকরী করতে গিয়ে সত্যের অপলাপ ঘটাচ্ছে।

মানবাধিকার কর্মীদের স্মার্ট ফোন এবং কম্পিউটার হ্যাকের ঘটনা ইতিমধ্যেই প্রকাশ হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন ব্যাক্তির ইলেকট্রনিক ডিভাইসে নানা কিছু বাইরে থেকে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল। দানবীয় আইনে গ্রেফতার করার সময় হ্যাক করে ঢুকিয়ে তথ্যকেই ব্যবহার করা হয়।

নজরদারির এই পন্থা কার্যত এক কর্তৃত্ববাদী সরকারের ফ্যসিবাদি মনোবৃত্তি যা মেনে নেওয়া যায় না। ভারতীয় নাগরিকদের মৌলিক অধিকার কেড়ে নিতে বিজেপি সরকারের কায়দা হল ‘ষড়যন্ত্র, ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে চক্রান্তের পরিকল্পনা এবং গ্রেফতার’।

বেআইনি এবং অবৈধ নজরদারি চালানোর জন্য পেগাসাস স্পাইওয়্যার ব্যাবহার করে ভারতীয় নাগরিকদের মৌলিক অধিকার হরণ প্রসঙ্গে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতেই হবে।

Spread the word

Leave a Reply