প্রভাত পট্টনায়েক
পিপলস ডেমোক্রেসির ২৬শে মার্চ সংখ্যায় মূল লেখাটি ইংরিজিতে প্রকাশিত
সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যে সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্ক এবং সিগনেচার ব্যাঙ্কের পতন ঘটেছে, তার পেছনে আদপেই কোনো “রহস্য” নেই। আদতে, গোটা পুঁজিবাদী ব্যবস্থাতেই আজ দুনিয়াজুড়ে ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা যে অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে, তার পেছনেও কোনো রহস্যজনক কিছু নেই। আসলে যা ঘটছে তা হল’ ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার কোনো এক অংশের পতন ঘটলেই তার অপর অংশ’ও “বিষাক্ত” সম্পদের ভারে ভেঙে পড়ছে, যা আর কিছুই না, ধ্বসে পড়া প্রথমাংশের আর্থিক দায়ভার যা এক প্রকার “ডমিনো এফেক্ট”এ অপর অংশকেও দুর্বল করে দিচ্ছে। আসল প্রশ্নটা হল’ যে মার্কিণ পুঁজিবাদ এই অবস্থায় এলো কীভাবে যার ফলে তাদের ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা এমন মারাত্মক একটি সঙ্কটাপন্ন হল’? সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্কের এই পতন শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের আভ্যন্তরীণ দুর্বলতার কারণে ঘটেছে তা নয়, বরং এটি গোটা ব্যবস্থার একটি আভ্যন্তরীন দ্বন্ধের বহিঃপ্রকাশ মাত্র। এ ক্ষেত্রে প্রশ্ন আসবে যে সেই দ্বন্ধটি আসলে কী?
উপরোক্ত দুটি ব্যাঙ্কেরই পতনের সবচেয়ে প্রত্যক্ষ কারণ হল’ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারাল রিজার্ভ (ওই দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক) সুদের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে দেওয়া। এই আলোচনায় আমরা সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্কের পতনেরই বিশ্লেষণে যাব’ কারণ সেটি এই উপরোক্ত দ্বন্ধের উপযুক্ত উদাহরণ এবং সিগনেচার ব্যাঙ্কের পতনের পেছনে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ ছিল ক্রিপ্টো-কারেন্সির মত মারাত্মক অনিশ্চিত একটি মুদ্রায় বিপুল পরিমানে লেনদেন করে যাওয়া।
যে কোনো পরিমাণে সুদের হার বৃদ্ধিই সরাসরি বন্ডের দাম কমিয়ে দেয়। যে কোনো বন্ডের দাম আসলে সেই বন্ডের নির্ধারিত সময়কাল ধরে যে সুদের যোগান দেবে তার সাথে সেই সময়কালে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের সুদের হারের পার্থক্যের পরিমাণ। ফলতঃ কোনো দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক সেই দেশে সুদের হার বাড়াতে থাকলে সেই দেশে বণ্ডের দাম অধোমুখী হয়। যে কোনো ব্যাঙ্কেরই মজুত সম্পদের মধ্যে একটা বড় অংশই থাকে বণ্ড। ক্রমবর্ধমান সুদের হার ফলতঃ বন্ডের দাম কমাতে থাকে এবং তার ফলে একটি ব্যাঙ্কের মজুত সম্পদের মূল্য’ও সমান ভাবে কমতে থাকে তার আর্থিক দায়ের তুলনায় এবং এর ফলে সেই ব্যাঙ্ক আর্থিক সঙ্কটের পথে যাত্রা শুরু করে।
ব্যাঙ্কের তরফে এই সঙ্কট কাটানোর যে কোনো রকমের প্রচেষ্টাই সকলের কাছে প্রমাণ করে দেয় যে সেই ব্যাঙ্কটি আর্থিক সঙ্কটে রয়েছে যা তার আমানতকারীদের কাছে বার্তাবহ হয়ে দাঁড়ায় সেই ব্যাংক থেকে গচ্ছিত অর্থ তুলে নেওয়ার জন্য। আমানতকারীদের তরফে তাদের গচ্ছিত অর্থ তুলে নেওয়ার প্রক্রিয়া যত বাড়তে থাকে, ততই সেই ব্যাঙ্কের শেয়ারের দাম পড়তে থাকে কারণ পূর্বোক্ত কারণের ফলে ব্যাঙ্কের শেয়ারে লগ্নীকারীরাও আশঙ্কিত হয়ে পড়ে এবং লগ্নীকারীদের বিশ্বাস হারাতে শুরু করলে তা আবারো ব্যাঙ্কের আমানতকারীদের আরো বেশি শঙ্কিত করে তোলে যা কিনা ব্যাঙ্ক থেকে গচ্ছিত অর্থ তুলে নেওয়ার গতিকে ত্বরান্বিত করতে থাকে এবং শেষ পর্যন্ত সেই ব্যাঙ্ককে পতনের দিকে নিয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে এটি বুঝে নেওয়া জরুরি যে যখন কোনো একটি ব্যাঙ্ক এই ধরণের সঙ্কটের সম্মুখীন হয়, তার সকল সম্ভাবনা কূয়াশাচ্ছন্ন হয়ে ওঠে, সে যতই পুনরুজ্জীবনের চেষ্টা করুক না কেন’। যদি সেই ব্যাঙ্ক কোনো রকমেরই প্রচেষ্টা না করে সেই সঙ্কটের মোকাবিলার, তার মানে দাঁড়ায় যে সেই ব্যাঙ্ক আসন্ন পতনেরই অপেক্ষায় থাকছে আর যদি বা কোনো রকম সংশোধনের পথে চলতে চায়, তা সত্ত্বেও জোরালো সম্ভাবনা থেকেই যায় পতনের । কাজেই উল্লিখিত পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের পতনের জন্য শুধুমাত্র সেই ব্যাঙ্ককেই দোষী সাব্যস্ত করা চলে না, বরং সামগ্রিক অর্থনীতিরই বিবিধ কার্যকারণ বিশ্লেষণ প্রয়োজন হয়ে পড়ে।
উপরের অংশটি প’ড়ে এমনটা মনে হতে পারে যে সুদের হারের যে কোনো বৃদ্ধিই বুঝি কোনো না কোনো ব্যাঙ্কের পতন ডেকে আনবে, কিন্তু বিষয়টি তেমন নয়। কেন্দ্রীয় ব্যঙ্কের দ্বারা সুদের হারের ওপর নীচ হওয়াটা সাধারণতঃ ধীরে হয়, ছোট ছোট পরিবর্তনের মাধ্যমে এবং ক্ষুদ্র পরিমাণে সুদের হার বৃদ্ধি ব্যাঙ্কের পক্ষে খুব সমস্যার সৃষ্টি করে না এবং সেই পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে গিয়ে ব্যাঙ্কের তরফে এমন কিছু পদক্ষেপ নিতে হয়না যার ফলে আমানতকারী/ লগ্নীকারীদের মধ্যে কোনো রকম ভীতির সঞ্চার ঘটে। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের তরফে যদি সুদের হার হঠাৎই খুব বেশি বাড়িয়ে দেওয়া হয়, সেটি ব্যাঙ্কগুলিকে যথেষ্ট সময় দেয়না তাদের ক্রমহ্রাসমান সম্পদের মূল্যের সাথে তাদের আমানতকারীদের প্রতি আর্থিক দায়ভারের মধ্যেকার ব্যবধানটি কে নিঃশব্দে এবং সুশৃঙ্খলভাবে সামাল দেওয়ার জন্য।
সাম্প্রতিককালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সুদের হার অতি উল্লেখযোগ্যভাবেই বৃদ্ধি পেয়েছে। ফেডারাল রিজার্ভের তরফে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে যে সুদের হার ছিল ০.২৫% তা ফেব্রুয়ারি ২০২৩ এ বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ৪.৭৫% এসে পৌছেছে। এত অল্প সময়কালের মধ্যে সুদের হারের এই বিরাট বৃদ্ধি ব্যাঙ্কগুলির আয়-ব্যায়ের হিসাব সুষ্ঠুভাবে নিয়ন্ত্রণ করা প্রায় অসম্ভব করে তুলেছে। এ ক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠবে যে ঠিক কী কারণে ফেডারাল রিজার্ভ বোর্ড সুদের হারের এই বিরাট বৃদ্ধি ঘটাল’?
মোদ্দা কারণটি হল’ যে নয়াউদারবাদী ব্যবস্থায় অর্থনীতিতে রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপের একমাত্র রাস্তাই হল’ তার মুদ্রানীতি। রাজস্বনীতি, যা কিনা দ্বিতীয় বিষযুদ্ধ পরবর্তী দুনিয়ায় একটি লম্বা সময় ধরে দেশের অর্থনীতিতে রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপের প্রধান হাতিয়ার ছিল’, তা ক্রমেই নয়াউদারবাদের আমলে পরিত্যাক্ত হয়েছে। দুনিয়াজুড়ে দেশের সরকারগুলির উপর আজ দ্রুতগতিশীল ফিনান্স পুঁজির দাপটে সরকারি ব্যায়ের পরিমাণ তার জিডিপি’র একটি নির্দিষ্ট অনুপাতের উপরে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়, তদুপরি পুঁজিপতি এবং দেশের ধনী অংশের উপর কর বসানো’ও একই কারণে প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছে, জাতীয় অর্থনীতিতে অর্থের যোগান বাড়ানোর একমাত্র পন্থা রয়ে গেছে সুদের হার কমানো।
যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোন “ফিস্কাল রেস্পন্সিবিলিটি” সংক্রান্ত আইন নেই যার ফলে কোনো আইনী বাঁধা নেই বা পুঁজির নির্গমনের আশঙ্কাজনিত অর্থনৈতিক ঝুঁকিও নেই (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মত “নিরাপদ” ঘাঁটি থেকে পুঁজির নির্গমন ঘটে যাওয়ার ঝুঁকি খুবই কম) সরকারি আয়-ব্যায়ের একটি নির্দিষ্ট অনুপাত মেনে চলার জন্য। কিন্তু মার্কিণ যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে আয়ের তুলনায় অর্থনীতিতে ব্যয় খানিকটা বাড়িয়ে অর্থনৈতিক কার্যকলাপ বৃদ্ধি করলে তার ফলশ্রুতিতে কর্মসংস্থানের সুযোগ সেই দেশের চাইতে বেশি বাড়বে অন্যান্য দেশে কারণ যুক্তরাষ্ট্রের আভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়লে তা অন্যান্য বিভিন্ন দেশে উৎপাদিত পণ্য ও পরিষেবার চাহিদা সৃষ্টি করে, যদিও সে ক্ষেত্রে বৈদেশিক ঋণের পরিমাণটা যুক্তরাষ্ট্রেরই বাড়বে। যুক্তরষ্ট্র যদিও তার আয়ের তুলনায় ব্যয় বেশ খানিকটা বাড়িয়েছিল অতিমারির সময়, যা কিনা অনেকের মতে বর্তমানে তাদের মুদ্রাস্ফীতির কারণ, কিন্তু সেটি শুধুমাত্র অতিমারির সময়কালেই ঘটেছিল’। আবাসন শিল্পের মহামন্দার পরে একটা দীর্ঘ সময়কাল ধরে অর্থনীতিকে কে চাঙ্গা করার লক্ষ্যে একমাত্র পন্থা অবলম্বন করা হয়েছিল’ কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের সুদের হার কমাতে কমাতে প্রায় শূণ্যের কাছাকাছি নিয়ে যাওয়া।
আবাসন শিল্পে মহামন্দার থাবা শুরু হয় ২০০৮ সাল থেকেই। ২০০৯ সালের শেষ দিক থেকে ২০২২ সাল অবধি সুদের হার মোটামুটি ০.২৫% এর কাছাকাছি রাখা হয়, ২০১৬ থেকে ২০২০র মধ্যেকার নাতিদীর্ঘ সময়কালে অবশ্য ধাপে ধাপে এই সুদের হার বাড়িয়ে ২% এর কাছাকাছি নিয়ে যাওয়া হয়। এই বিরাট সময়কাল ধরে অত্যল্প সুদে পুঁজির যোগান মার্কিন একচেটিয়া পুঁজিপতি গোষ্ঠীর নিরবচ্ছিন্ন মুনাফা বৃদ্ধির বিরাট সুযোগ করে দেয় যার ফলেও পণ্য ও পরিষেবার মূল্যবৃদ্ধি ঘটতে থাকে এবং তা বর্তমান মুদ্রাস্ফীতির অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু এতদসত্ত্বেও মার্কিন অর্থনীতি আশানুরূপ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে ব্যর্থ হয়। এ কথা ঠিক যে সরকারি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে বেকারত্বের হার কমে ৪% এর কাছাকাছি হয়ে যায় কিন্তু তার পাশাপাশি সে দেশের কর্মক্ষম জনসংখ্যা বৃদ্ধির তুলনায় কর্মসংস্থান বৃদ্ধির হার কমতে থাকে। ২০০৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে কর্মসংস্থানের সাথে কর্মক্ষম জনসংখ্যার অনুপাতকে যদি ভিত্তি হিসাবে দেখা হয়, তবে তার নিরিখে ২০০৮ সালের পরবর্তী পুরো সময়কালেই বেকারত্বের হার যথেষ্ট বেশি বলেই পরিলক্ষিত হবে। মুদ্রাস্ফীতি যেই মুহূর্তে একটা ভয়ঙ্কর চেহারা ধরল’ সাথে সাথেই একলাফে সুদের হার অনেক খানি বাড়িয়ে দেওয়া হল’। এই আপাত অর্থহীনভাবে সুদের হার কে ওঠানো-নামানোর মুদ্রানীতি আদতে বিশ্বব্যাপী দ্রুতগামী ফিনান্স পুঁজির দাপটে নীতি নির্ধারকদের কাছে অন্য কোনো উপায় না থাকার ফল। অর্থাৎ এই উপরোক্ত অনর্থক সুদের হার নিয়ে আকষ্মিক সকল সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট সরকারের তরফে কোনো অস্থিরচিত্তের কারণে নয়, বরং বিশ্বব্যাপী ফিনান্স পুঁজির আধিপত্যের কারণে।
সুদের হারের এই ধরণের আকষ্মিক এবং উল্লেখযোগ্য ওঠানামার কারণে যে সঙ্কটের সৃষ্টি হচ্ছে তা আরো কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাচ্ছে অন্য আরেকটি কারণে। সুদের হার কমিয়ে দিলে বন্ডের দাম বৃদ্ধি হয়। তার ফলে অর্থনীতির বিশেষ কোনো উপকার হোক না হোক, এটি অন্ততঃ ব্যঙ্কিং ব্যবস্থার জন্য কোনো সঙ্কটের সৃষ্টি করেনা। ব্যাঙকের মজুত সম্পদের মূল্য বাড়লে তার কোন ক্ষতি হয়না। কিন্তু যখনই সুদের হার বেড়ে যায়, সাথে সাথে বন্ডের দাম কমতে থাকে, ব্যাঙ্কের মজুত সম্পদের মূল্যমান ও তার আর্থিক দায়ের তুলনায় কমতে থাকে এবং লগ্নীকারীদের কাছে তা নেতিবাচক বার্তা বহন করে। সুদের হারের কমা এবং বৃদ্ধির ফলে ব্যঙ্কিং ব্যবস্থায় যে দুই ভিন্ন ধরনের প্রভাব পড়ে, তার মধ্যেকার মারাত্মক ফারাক ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থাকে আরো দুর্বল করে।
আজ শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রে নয়, বরং দুনিয়া জুড়ে পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থায় ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকসমূহের তরফে সুদের হার বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে যা কিনা ব্যাংক ব্যবস্থাকে এই সকল দেশেই বিপদের সম্মুখীন করে তুলছে। সাম্পতিক সময়ে ক্রেডিট সুইসের মত বহুল পরিচিত ব্যাঙ্কের ও শেয়ারের দামে ধ্বস নেমেছে এবং তাদেরই ব্যবসায়িক প্রতিপক্ষ ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ সুইৎজারল্যান্ডের কাছে বিক্রী হয়ে যেতে হয়েছে।
তদুপরি এমনটাও বলা চলে না যে পুজিবাদী ব্যবস্থায় ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রে ঝুঁকির পরিমাণ একটি নির্দিষ্ট স্তরে সীমিত হয়েছে। ফেডারাল রিজার্ভ বোর্ড সুদের হার আরো বাড়ানোর পরিকল্পনায় ছিল মুদ্রাস্ফীতির মোকাবিলায়, তবে এই দুটি ব্যাঙ্কের পতনের কারণে তারা হয়ত’ এ বিষয়ে এখন আরো কিছুটা সাবধানী পদক্ষেপ নেবে। কিন্তু তাদের কাছে সুদের হার বৃদ্ধি করা বাদে মুদ্রাস্ফীতি মোকাবিলার আর কোনো পথ খোলা নেই কারণ পুঁজিবাদে মুদ্রাস্ফীতি কে প্রতিরোধ করার একমাত্র উপায় হল’ বেকারত্বের সৃষ্টি করে, যা কিনা বর্তমান সময়ে সংগঠিত করা হয় সুদের হার বৃদ্ধি করে। পুঁজিবাদ এই সঙ্কটের আবর্তে যে নিদারুণ ভাবে আচ্ছন্ন তা বোঝা যায় সমগ্র ইউরোপ জুড়ে শ্রমজীবি জনতার বিক্ষোভ দেখে এবং নয়াউদারবাদ যে তার অন্ধগলির শেষ প্রান্তে এসে উপস্থিত, তাও সুস্পষ্ট হচ্ছে।
অনুবাদঃ বাবিন ঘোষ