লেনিনের শিক্ষার সফল প্রয়োগই আমাদের কাজ।

লেনিনের শিক্ষার সফল প্রয়োগই আমাদের কাজ।
ডাকাত আটকাতে না পারলে যে ডাকাতি বন্ধ হয় না এটুকুই লেনিনের শিক্ষা।
এখনও বিপ্লবের দিনে আমাজন থেকে আন্দামান সাজে লাল ঝান্ডায়। এই শপথে: একদিন ‘প্রতি মাস হবে অক্টোবর, প্রতিদিন প্রত্যেকে লেনিন।’
পৃথিবীর বুকে নতুন চেহারায় যুগোপযোগী করে সমাজবাদ গঠনের লড়াই, আজকের পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় ক্রমবর্ধমান বৈষম্যের পৃথিবীতে আরও বেশি জরুরি।
অক্টোবর বিপ্লব ছিল বিশ্বের প্রথম সাম্রাজ্যবাদ ও পুঁজিবাদ বিরোধী বিপ্লব। অক্টোবর বিপ্লব একটি ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণ এবং মার্কসবাদী তত্ত্ব ও অনুশীলনের সঠিক প্রয়োগের ফসল। একবিংশ শতাব্দীতে সেই সন্ধিক্ষণের আর অস্তিত্ব নেই। কিন্তু আমাদের সময়ের প্রধান সামাজিক দ্বন্দ্বগুলি একটি নতুন সন্ধিক্ষণের জন্ম দিয়েছে যেখানে অক্টোবর বিপ্লবের বিপ্লবী উত্তরাধিকার সমসাময়িক সময়ে সমাজতন্ত্রের জন্য সংগ্রামকে পুনরুজ্জীবিত করতে আমাদের সাহায্য করবে।
আমাদের দেশে ‘হিন্দুত্ববাদ’ তার জন্মলগ্ন থেকে দার্শনিকভাবে এই ‘পবিত্রতার’ ধারণাকে সমাজের মধ্যে লালন করেছে। লেনিন সরোকিনের মত বুদ্ধিজীবিদের আখ্যায়িত করছেন, “আধুনিক শিক্ষিত সামন্তবাদী” হিসেবে। আমরাও খেয়াল করলেই চারপাশে এরকম অসংখ্য আধুনিক শিক্ষিত সামন্তবাদীদের দেখতে পাব। তাই লেনিনের শেষ কথাটা হচ্ছে এরকম , মার্কসবাদের বা জঙ্গী বস্তবাদের পক্ষের লড়াইয়ের অবশ্য কর্তব্য হল “আধুনিক শিক্ষিত সামন্তবাদীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা”।
পুঁজিগুলির মধ্যেকার প্রতিযোগিতা বিশ্বজুড়ে “অর্থনৈতিক অঞ্চল” দখলের জন্য বিভিন্ন উন্নত পুঁজিবাদী দেশের অন্তর্গত বিভিন্ন একচেটিয়া জোটের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতার রূপ নেয়; এবং ইতিমধ্যে তাদের মধ্যে বিভক্ত বিশ্বে, এই ধরনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা অগত্যা যুদ্ধের মাধ্যমে এই অঞ্চল পুনর্বিভাজনের প্রচেষ্টার রূপ নেয়। এই যুদ্ধগুলি, যার মধ্যে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ একটি উদাহরণ ছিল, বিভিন্ন দেশের শ্রমিকদের যুদ্ধক্ষেত্রে একে অপরকে হত্যা করতে বাধ্য করেছিল; পুঁজিবাদ উপনিবেশ, আধা-উপনিবেশ এবং নির্ভরশীল দেশগুলির নিপীড়িত জনগণকেও বিভিন্ন অর্থনৈতিক অভিজাততন্ত্রের স্বার্থে কামানের-খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করেছিল।
এমনটা না যে স্তালিনের আমলে কোনও ভুল ত্রুটি হয়নি। মাও বলেছিলেন স্তালিন ৭০% সঠিক, ৩০% ভুল করেছিলেন। মাও-এর মৃত্যুর পর তাঁর সম্পর্কে একই মূল্যায়ন করে চীন পার্টির কংগ্রেস। আমরা শতাংশ হারে বিচার করিনি, ভুলগুলি নির্দিষ্ট করে চিহ্নিত করেছি। ভুলগুলি অস্বাভাবিক নয়। সেগুলি থেকে প্রাপ্ত শিক্ষাই আমাদের পথ দেখায়।
কমরেড লেনিনের ১৫৩ তম জন্মদিবসে বিশ্ব সর্বহারার এই অসাধারণ নেতাকে শ্রদ্ধা জানানোর সাথে সাথে আমাদের অঙ্গীকার গ্রহণ করতে হবে। বিশ্বের অন্যান্য পুঁজিবাদী দেশগুলির সাথে সাথে আমাদের ভারতেও মার্কসবাদ-লেনিনবাদের মতাদর্শর তরবারির সাহাজ্যে দক্ষিণপন্থার ভ্রান্ত ও বিকৃত মতাদর্শর বিরুদ্ধে আক্রমণ পরিচালনা করবে সর্বহারার বিপ্লবী আন্দোলন। সন্ত্রাস, হিংসা, প্রতিক্রিয়ার আক্রমণ মোকাবিলায় সক্ষম এমন ভাবে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)-কে গড়ে তুলতে হবে। তরুণ প্রজন্মসহ মেহনতী জনগণের সমস্ত অংশের সাথে নিবিড় সম্পর্কই পার্টিকে অপরাজেয় শক্তিতে পরিণত করবে। কমরেড লেনিনের দেখানো পথ ও তার শিক্ষাকে অবলম্বন করেই আমরা অগ্রসর হবো।
যে বিধ্বংসী এবং অধৈর্য্য মনোভাবে জুলাই-বিক্ষোভের বিরোধিতা করেছিলেন, ঠিক সেভাবেই অবিলম্বে সোভিয়েতের হাতে সমস্ত ক্ষমতা তুলে নেওয়ার আহ্বান জানালেন লেনিন। বিপ্লব সম্পর্কে ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির কারনে কামেনেভ এবং জিনোভিয়েভের মতো নিজের সবচেয়ে পুরানো এবং সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ কমরেডদের সঙ্গে দীর্ঘদিন যাবত সম্পর্ক ছিন্ন করেছিলেন।