২০ জুলাই২০২২,বুধবার
ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)-র পলিট ব্যুরোর বিবৃতি:
ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)এর পলিট ব্যুরো প্যাকেটজাত চাল,গম,দুধ সহ জরুরি পণ্যের ওপর জিএসটি বৃৃদ্ধি করে জনগণের ওপর যে অভূতপূর্ব বোঝা চাপানো হয়েছে ,দৃঢ়ভাবে তার নিন্দা করছে। পলিট ব্যুরো অবিলম্বে এই বৃদ্ধি প্রত্যাহারের দাবি জানায়।
স্বাধীন ভারত খাদ্যদ্রব্যের উপর ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ সরকারের কর নীতি প্রত্যাহার করে। এই গত ৭৫ বছরে চাল, গম, ডাল প্রভৃতি খাদ্যদ্রব্য, দই, পনির, মাংস, মাছ, গুড়ের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের উপর কখনও কর আরোপ করা হয়নি। এই বছর আজাদি কা অমৃত মহোৎসবে ভারতীয় জনগণকে এটা মোদী সরকারের ‘উপহার’।
যে বিষয়গুলির উপর জিএসটি বাড়ানো হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে শ্মশানের খরচা,হাসপাতালের কক্ষ, লেখার কালি ইত্যাদি। এমনকি নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে নিজের সঞ্চয় তুলেতে গ্রাহকদের ব্যাঙ্ক চেকের উপর ১৮ শতাংশ জিএসটি দিতে হবে।
জনগণের জীবন-জীবিকার উপর এই নিষ্ঠুর আক্রমণটা ঘটছে ঠিক তখনই যখন উপভোক্তা মূল্য সূচক ৭ শতাংশের উপরে এবং পাইকারি মূল্য সূচক ১৫ শতাংশের উপরে, ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব, টাকার দামের লাগাতার পতন, অভূতপূর্ব বাণিজ্য ঘাটতি এবং একটি মুখ থুবড়ে পড়া জিডিপির সাথে আকাশছোঁয়া দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি মানুষের উপর আক্রমণ শানাচ্ছে। জিএসটি বৃদ্ধির এই সিদ্ধান্ত জনগণের জীবিকাকে আরও বিপদে ফেলবে।
রাজস্ব বাড়াতে, মোদি সরকারকে অতি ধনী ব্যক্তিদের উপর কর আরোপ করতে হবে এবং জনগণের উপর আরও বোঝা চাপিয়ে দেওয়া চলবে না।বিশ্বের দ্রুততম ক্রমবর্ধমান বিলিয়নিয়ারদের সংখ্যার দেশ হওয়া ছাড়াও, বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলি ২০২১-২০২২ সালে ৯.৩ লক্ষ কোটি টাকার যৌথ মুনাফার কথা ঘোষণা করেছে, অর্থাৎ, আগের বছরের তুলনায় ৭০ শতাংশ বেশি এবং ২০১০-২০২০ দশকে অর্জিত গড় মুনাফার চেয়ে তিনগুণ বেশি।এই অতি ধনীদের থেকে কর নেওয়ার পরিবর্তে মোদি সরকার তাদের আরও কর ছাড় এবং ঋণ মকুবের সুবিধা দিচ্ছে। অনেক বিলাসবহুল পণ্যের উপর ভারী কর আরোপ করা উচিত ছিল কিন্তু তাদের উপর কম জিএসটি রয়েছে। সোনা কেনায় ৩ শতাংশ, হীরের উপর ১.৫ শতাংশ জিএসটি, যেখানে খাদ্য সামগ্রীর উপর ৫ শতাংশ বা তার বেশি জিএসটি চাপানো হয়েছে৷
মোদি সরকারের দাবি যে এই মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে কোনও বিরোধিতা করা হয়নি একথা স্পষ্টতই অসত্য।খোদ কেরালার মুখ্যমন্ত্রী রাজ্য সরকারের তীব্র আপত্তি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন এবং তাকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী ২০২১ সালের নভেম্বরের প্রথম দিকে এই প্রস্তাবগুলির বিরুদ্ধে তাদের আপত্তির কথা জানিয়েছিলেন যখন সেগুলি প্রথম উত্থাপিত হয়েছিল।
সিপিআই(এম) এর পলিট ব্যুরো সমস্ত পার্টি ইউনিটকে জনগণের জীবনের উপর এই নিষ্ঠুর আক্রমণের বিরুদ্ধে ব্যাপক ভিত্তিক প্রতিবাদ কর্মসূচী সংগঠিত করার আহ্বান জানায়।