অতি দক্ষিণ পন্থার উত্থান এবং বাছাই করা কর্পোরেটদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত অর্থনীতি পরস্পরের হাত ধরেই চলে, এটাই ইতিহাসের শিক্ষা।

অতি দক্ষিণ পন্থার উত্থান এবং বাছাই করা কর্পোরেটদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত অর্থনীতি পরস্পরের হাত ধরেই চলে, এটাই ইতিহাসের শিক্ষা।
৩বছরে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সম্পদ বৃদ্ধি হয়েছে এযুগের গন্ডেরিরাম, গৌতম আদানীর। ঠিক যেভাবে শুধু শেয়ারের ভেলকিবাজিতে গন্ডেরিরাম বাটপারিয়া বিপুল অর্থ কামিয়ে সরে পড়েছিল, তেমনই কাজে সিদ্ধহস্ত আদানী ভাইয়েরা। আর আদানী ভাইদের রকেট গতিতে উত্থান মোদী ভাইয়ের দাক্ষিণ্যেই।
ডানপন্থী পপুলিজম কর্তৃত্ববাদী এবং অগণতান্ত্রিক কাঠামোকে যেভাবে চালনা করছে তার পরিবর্তন বাধ্যতামূলক হয়ে পড়েছে। নাহলে সর্বগ্রাসী দেশপ্রেমের মিথ্যে মোড়কে ঢাকা, জনস্বার্থ বিরোধী লুটেরা-রা সাধারণ মানুষের শ্বাসরোধ করার উল্লাস থেকে বিরত হবে না।
উন্নয়ন মানে তো সবার সমৃদ্ধি, সর্বার্থে প্রগতি! আজকের পৃথিবীতে সম্পদের বৈষম্য নির্মাণের অন্যতম স্থপতিই হল বেসরকারিকরণ। এহেন উন্নয়নমূলক কর্মসূচিটি নিস্কন্টক রাখতেই পুঁজিকে বিবিধ পরিকল্পনা করতে হয়, এমনকি দাঙ্গা অবধি সংগঠিত করতে হয়।
আয় ও সম্পদের উপার্জন ও সম্পদের ভিত্তিতে মানুষের মধ্যে বৈষম্য নয়া-উদারবাদী জমানায় নাটকীয় কায়দায় বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সত্যটুকু স্বীকার করতে কোথাও কোনও বিতর্ক নেই। প্রখ্যাত অর্থশাস্ত্রী টমাস পিকেটি নিজস্ব লোকজনকে কাজে লাগিয়ে পরীক্ষামূলক গবেষণার মাধ্যমে সেই বৈষম্যের প্রকৃত চেহারা খুঁজে পেতে চেয়েছেন। সেই উদ্দেশ্যে সমীক্ষাও করতে গিয়ে তারা আয়কর সংক্রান্ত তথ্যের উপরেই মূলত নির্ভর করেছেন। এতেই জানা গেছে, সর্বোচ্চ আয় ও সম্পদের অধিকারী এমন ১ শতাংশের হাতে কোনও একটি দেশের মোট সম্পদের কত শতাংশ কুক্ষিগত রয়েছে। অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সত্যানুসন্ধানে সমীক্ষার জন্য এমন পদ্ধতি আদৌ কতদূর কার্যকরী সেই নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলতেই পারেন, কিন্তু পিকেটির সমীক্ষালব্ধ ফলাফল এতই চমকপ্রদ যে তার চোটে কেউই আর মুখ খুলছেন না।
নয়া-ফ্যাসিবাদকে ক্ষমতা থেকে সরাতে হলে তার পিছনের কারণটিকেও নির্মূল করে দিতে হয়। নয়া-ফ্যাসিবাদের ভিত হল নয়া-উদারবাদ জনিত সংকটের পরিস্থিতি। এই কাজ সহজ নয়, নয়া-ফ্যাসিবাদকে পরাজিত করার লক্ষ্যে সফল হতে দেশের শ্রমজীবী জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপকতম ঐক্য নির্মাণ করতে হবে।
যে আমরা সবাই নাগরিক এবং প্রত্যেকে সমানভাবে মত প্রকাশের অধিকারী। যদি এই সম অধিকারের প্রাথমিক অঙ্গীকার থেকে সরে গিয়ে আমরা এটা মনে করতে শুরু করি যে এই দেশে কেবলমাত্র একটি ধর্মের মানুষের বা কোনো গোষ্ঠীর অধিকার বেশি হওয়া উচিত অথবা সংখ্যালঘুদের অধিকার কম হওয়া উচিত তা হলে গণতন্ত্রের ভিত্তিকেই টলিয়ে দেওয়া যায়।
, জিএসটি হার বৃদ্ধির বিষয়ে সবচেয়ে ঘৃণ্য ব্যাপার হল এই সিদ্ধান্তের সময়। দেশ এখন মূদ্রাস্ফীতির তীব্র সংকটের মুখে। খুচরো মূদ্রাস্ফীতি ৭ শতাংশের উপরে। পাইকারি মূল্য সূচক ১৫শতাংশ বেড়েছে।
মোদি সরকারের দাবি যে এই মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে কোনও বিরোধিতা করা হয়নি একথা স্পষ্টতই অসত্য।খোদ কেরালার মুখ্যমন্ত্রী রাজ্য সরকারের তীব্র আপত্তি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন এবং তাকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী ২০২১ সালের নভেম্বরের প্রথম দিকে এই প্রস্তাবগুলির বিরুদ্ধে তাদের আপত্তির কথা জানিয়েছিলেন যখন সেগুলি প্রথম উত্থাপিত হয়েছিল।
এখনই যদি পরিকাঠামো ক্ষেত্রে সরকারী ব্যয়বরাদ্দ না বাড়ানো হয়, রোজগার নেই এমন পরিবারগুলিকে মাসিক ন্যুনতম ৭৫০০ টাকার ডিরেক্ট ক্যাশ ট্রান্সফার প্রকল্পের আওতায় না আনা যায় এবং গণবণ্টন ব্যাবস্থাকে আরও বিস্তৃত করে জনগণকে রিলিফ না দেওয়া যায় তাহলে শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি দেখেও কিছুমাত্র শিক্ষালাভ হয় নি বলেই বুঝতে হবে।