ওয়েবডেস্ক প্রতিবেদন
বিজেপি শাসিত ত্রিপুরায় বেকারত্বের হার সারা দেশে দ্বিতীয়
সেন্টার ফোর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি (CMIE) তাদের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে প্রকাশ করেছে সারা দেশে এবং বিভিন্ন রাজ্যে বেকারত্বের খতিয়ান। এই প্রতিবেদনেই স্পষ্ট হয়ে গেছে বিজেপি শাসনের হকিকৎ। ভোটের প্রচারে এসে নরেন্দ্র মোদী বারে বারে ডবল ইঞ্জিন সরকারের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন, এখনও সেই সুরেই বিজেপি প্রচার চালাচ্ছে। কেন্দ্র এবং রাজ্যে দুজায়গাতেই বিজেপির সরকার থাকলে উন্নয়নে সুবিধা পাবে রাজ্যের মানুষজন – এই কথা প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে এলাকার বিজেপি কর্মীদের মুখে লেগে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে ভেঙে এককেন্দ্রিক রাষ্ট্রগঠন আরএসএস – বিজেপি’র অনেকদিনের রাজনীতি, সেই উদ্দেশ্যেই এমন প্রচার করে তারা।
কোন একটি নির্দিষ্ট এলাকায় সক্ষম, রোজগার মানুষদের মোট সংখ্যাকে কর্মক্ষম জনগণের দ্বারা ভাগ করে সেই ভাগফলকে ১০০ দিয়ে গুণ করে অর্থনীতিতে বেকারত্বের সূচক নির্ধারিত হয়।
UnemploymentRate = ( Total No. Unemployed / Total Labor Force ) × 100
রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রকের দেওয়া তথ্যে দেখা যাচ্ছে গোটা দেশে বেকারত্বের হার ৫.৮ শতাংশ, ত্রিপুরায় বেকারত্বের হার ১০ শতাংশ। সেন্টার ফোর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি (CMIE) -এর ওয়েবসাইটে দেখা যাচ্ছে আজকের দিনে ভারতে বেকারত্বের জাতীয় গড় ৭.০ শতাংশ এবং ত্রিপুরায় ১৮.১ শতাংশ। ডবল ইঞ্জিন সরকার হয়ে ত্রিপুরার মানুষ চরম দুর্দশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন – ভোটের আগে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব যেসব কথা দিয়েছিলেন এই একটা তথ্যেই সেই কথার অসারত্ব প্রমাণ হয়।
সারা দেশে গত বছর মে মাসে বেকারত্বের সুচক সর্বোচ্চ উচ্চতায় চলে গেছিল – ১৮ই মে তারিখে সুচক ছিল ২৩.৭৫ শতাংশ (শহরাঞ্চলে ২৬.০৯ শতাংশ এবং গ্রামে ২৬.৭৩ শতাংশ)। সেই সময় গোটা দেশে লকডাউন জারী করা ছিল – এর থেকেই বোঝা যায় অর্থনীতিতে লকডাউনের ফলে কি ভয়ংকর প্রভাব পড়েছে।
কেন্দ্রে বিজেপি সরকার আসীন হবার পর থেকেই দেশের অর্থনীতির ক্রমাবনতি হয়েছে। জিডিপি বৃদ্ধির হার -২৩.৯ শতাংশে নেমে এসেছে। ত্রিপুরাও সেই বেহাল দশার বাইরে থাকবে না এটাই স্বাভাবিক। ২০১৮ সালে ত্রিপুরায় বিধানসভা ভোটের আগে ভীষণ ডক্যুমেন্টস প্রকাশ করে বিজেপি প্রলোভনের জাল বিস্তার করেছিল। বছরে ৫০ হাজার চাকরির দেওয়া হবে বলা হয়। বাস্তব হল আজকের ত্রিপুরায় বহু সরকারী চাকরি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বাতিল করতে হয়েছে। চাকরি হারানো শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ৫২ দিনের ধর্না তুলতে পুলিশ পাঠিয়ে জলকামান, কাঁদানে গ্যাস অবধি প্রয়োগ করা হয়েছে।
আসলে ডবল ইঞ্জিন নয়, জনগণের উন্নয়নে প্রয়োজন হয় যথার্থ বিকল্প নীতির। বিজেপি’র নীতি একটাই দেশকে কর্পোরেট গোষ্ঠীর হাতে তুলে দেওয়া। পশ্চিমবঙ্গে ভোটের প্রচারে এসে নরেন্দ্র মোদী, জয় প্রকাশ নাড্ডা, অমিত শাহ কিংবা ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব যাই দাবী করুন না কেন জনগণ এদের উপরে আর ভরসা করবেন না।