CPI(M) West Bengal State Committee Meeting: Press Note

ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী), পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির দু’দিনের অধিবেশন সোমবার শেষ হয়েছে। এই সভায় সভাপতিত্ব করেন বিমান বসু। পার্টির সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি সভায় উপস্থিত ছিলেন।

রাজ্য কমিটির সভায় রিপোর্ট পেশ করেন রাজ্য সম্পাদক সূর্য মিশ্র। রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আন্দোলন-সংগ্রামের কর্মসূচি ও আগামী বিধানসভা নির্বাচনের প্রাথমিক প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

রাজ্য কমিটি বলেছে, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি-কে পরাজিত করে বিকল্প বাম ও ধর্মনিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। শ্রেণি ও গণ-আন্দোলনের সংগ্রামের ধারাগুলিকে আরও জোরদার করার সাথে সাথে জনগণের অভ্যন্তরে তীব্রতর রাজনৈতিক প্রচার ও সুসংহত সাংগঠনিক বিন্যাসের মাধ্যমেই এই লক্ষ্য অর্জিত হবে। রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে শ্রেণিশক্তির ভারসাম্যের পরিবর্তন ঘটানোর চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে হবে।

রাজ্য কমিটির সভায় গণফ্রন্টের স্বাধীন ও নিজস্ব কর্মসূচি ছাড়াও জনজীবনের জরুরী দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

রাজ্য কমিটির সভায় সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিতেও কিছু কিছু পরিবর্তন ঘটছে। ট্রাম্পের পরাজয় ও অন্যান্য ঘটনাবলী থেকে অতি দক্ষিণপন্থা দুর্বল হওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। গণতান্ত্রিক ও বিপ্লবী শক্তিগুলির সামনে আন্দোলন জোরদার করার সুযোগ তৈরি হচ্ছে। ভারতে শাসক শ্রেণিগুলির মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা যাচ্ছে। বৃহৎ বুর্জোয়াদের সঙ্গে সমগ্র কৃষকসমাজের দ্বন্দ্ব তার একটি প্রতিফলন। চলতি কৃষক আন্দোলনের পাশাপাশি শ্রেণির লড়াইকে তীব্রতর করতে হবে। বৃহৎ বুর্জোয়ার সঙ্গে অ-বৃহৎ বুর্জোয়াদের দ্বন্দ্বও শুরু হয়েছে। এই পরিস্থিতি নানা সম্ভাবনার রাস্তা তৈরি করছে। কৃষক ও শ্রমিক শ্রেণির সংগঠনগুলির মধ্যে ক্রমান্বয়ে ঐক্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। গণসংগ্রাম ও শ্রেণিসংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে যেতে তা জরুরী। কেন্দ্রের সরকারের সঙ্গে রাজ্য সরকারগুলির সংঘাতও বৃহত্তর বিজেপি-বিরোধী ঐক্যের সম্ভাবনা তৈরি করছে। দরকার আমাদের হস্তক্ষেপ।

ইয়েচুরি বলেন, পশ্চিমবঙ্গে দুই রাজনৈতিক শক্তির মধ্যেই মেরুকরণের চেষ্টা চলছে। বামপন্থীদের শক্তি হচ্ছে জনগণের দাবিতে আন্দোলন। তার মাধ্যমেই এই ভাষ্যকে ভেঙে দেওয়া যাবে। খাদ্য কাজ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য নিয়ে বিকল্প নীতিকে জনগণের সামনে উপস্থিত করতে হবে। প্রচারের স্তর থেকে প্রত্যক্ষ আন্দোলনের স্তরে উন্নীত হতে হবে। একাজ করতে পারলে শ্রেণিশক্তির ভারসাম্য বদলে বামপন্থীদের সম্পর্কে আস্থার মনোভাব তৈরি করা সম্ভব হবে।

আলোচনার উপসংহারে সূর্য মিশ্র বলেন, রাজ্যের পরিস্থিতিতেও পরিবর্তন এসেছে। মেহনতী মানুষের জন্য বামপন্থীরাই লড়াই করছে। এই লড়াইবের পরিসর বৃদ্ধি করতে হবে। তার মাধ্যমে বামপন্থী, গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির ব্যাপক ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। সেই ঐক্যের ভিত্তিতে বিধানসভা নির্বাচনে লড়াই হবে। বুথ স্তরে সাংগঠনিক প্রস্তুতি জোরদার করতে হবে। এই লড়াইয়ে বিরাট ভূমিকা পালন করবেন তরুণরা।

Spread the word

Leave a Reply