গত প্রায় দুবছর ধরে করোনা অতিমারি’র জন্য বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো অর্থনৈতিক সমস্যা বেড়েছে কিউবারও। কিউবার বিদেশী মুদ্রা আয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র পর্যটন থেকে আয় কমেছে চারভাগের প্রায় তিনভাগ। অবরোধের ফলে খাদ্য আমদানিতে বাড়তি সমস্যার মুখে। আয় কমেছে রপ্তানি খাতে। অবরোধের সমস্যা তীব্রতর। কিন্তু তার মধ্যেও করোনা মোকাবিলায় গোটা বিশ্বে দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছে কিউবা। করোনায় প্রতি দশ লক্ষে কিউবায় মৃত্যু ১৩৯।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি দশ লক্ষে কোভিডে মৃত্যু ১,৮৭১। দেশীয় উদ্যোগে পাঁচটি ভ্যাকসিন তারা তৈরি করেছে। জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট সমস্ত সরকারী ব্যবস্থা কিউবা সরকার বজায় রেখেছে। কিউবার পরিচয় তার সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য। কিউবা ব্যতিক্রমী তার বৈপ্লবিক রূপান্তরের জন্য
Author: Souvik Ghosh
It’s War Again: The Cuba Story
১৯৯২ থেকে রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদ ভোট দিয়ে আসছে কিউবার বিরুদ্ধে মার্কিন অবরোধের অবসান চেয়ে। ২০২১, সর্বশেষ ভোটের ফলাফল ১৮৪-২। কিউবার সঙ্গে গোটা বিশ্ব। আরও একঘরে বাইডেন। অবরোধের অবসান চেয়ে ভোট দিয়েছে বিশ্বের ১৮৪ টি দেশ। বিপক্ষে মাত্র দু’টি দেশ। ট্রাম্পের উত্তরসূরী বাইডেনের আমেরিকা এবং ইজরায়েল। ভোটদানে বিরত থেকেছে ‘লাতিনের ট্রাম্প’ বোলসোনারোর ব্রাজিল, কলম্বিয়া এবং ইউক্রেন। তবু নির্বিকার মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ। স্বাভাবিক। একরত্তি কিউবা না। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের লক্ষ্য আসলে কিউবার সমাজতন্ত্র। আর সেকারণে কোনওভাবেই পেরে না উঠে কিউবাকে ভাতে মারতে চায়।
“It Is Not Consciousness That Determines Their Being, But, On Contrary Their Social Beings That Determines Their Consciousness”: The Pegasus Comes Alive (Part II)
বলা বাহুল্য চলতি সংকটের আক্রমনে জর্জরিত জনগণের ভীষণ রোষ তো আর লাইব্রেরীর টেবিলে বসে লেখা গবেষণাপত্র না যে বেছে বেছে ঠিক এই এই স্থানে পুঁজিবাদ লুকিয়ে রয়েছে তাকেই শুধু আক্রমন করবে, জনগণ বস্তুগত সত্যকেই আঁকড়ে ধরেন। তারা নাটের গুরু চিনে নেবেন খুব সহজেই, ফলে আক্রমণটা নেমে আসবে রাষ্ট্রের পরিচালকবৃন্দের উপরেই – পুঁজিবাদ এই সত্য ভালো বোঝে, রাষ্ট্রপরিচালনায় যুক্ত রাজনৈতিক শক্তি বোঝে আরও বেশি কারন তার গদি হারানোর ভয় থাকে, দেশে বিদেশে ছুটে বেড়ানো ফিন্যান্স পূঁজির মতো তার চরিত্র আদৌ বিমূর্ত নয় যে! ফলে জনগণ কখন কি ভাবছে, কি করছে সেই খোঁজ রাখতে রাষ্ট্র বাধ্য – ফলে ‘আড়ি পাতা’ এবং ‘পেগাসাস’।
“…but people never forgive themselves and so they would always be dangerous.”:The Pegasus Comes Alive!
তথ্যপ্রযুক্তি সংক্রান্ত যাবতীয় আধুনিকতার যেরকম ভয়াবহ প্রচার ভারতে আজকের প্রজন্ম ইতিমধ্যেই দেখেছে বা দেখছে তার কারন কোন “ডিজিটাল ইন্ডিয়া” নয়, বিশ্ববাংলা তো নয়ই! এর পিছনের কারন বুঝতে হলে আমাদের ফিন্যান্স পুঁজি, পুঁজিবাদী আধুনিক অর্থনীতি এবং আজকের পৃথিবীতে সাম্রাজ্যবাদের সমবেত মিথস্ক্রিয়া বুঝতে হবে। সেই উদ্দেশ্যেই এই নিবন্ধের সুত্রপাত। স্মার্টফোনে স্পাইওয়্যার পাঠিয়ে নাগরিকদের চলাফেরায় আড়ি পাতছে দেশের সরকার – এ আর জেমস বন্ডের আষাঢ়ে গপ্পো নয়! জর্জ অরয়েল বেঁচে থাকলে আরেকবার 1984 লিখতে বসতেন কিনা জানার সুযোগ নেই, সোশ্যালিজম আদৌ পেরেছিল কিনা কেউ জানেনা কিন্তু পুঁজিবাদ তার সেই কষ্টকল্পনাকে সত্যি প্রমান করেই ছাড়ল; এখন বলতেই হচ্ছে বিগ ব্রাদার ইজ ওয়াচিং আস!
Who Authorized Illegal Surveillance?
ভারতীয় আইনে কারোর স্মার্টফোন হ্যাক করে সাইবার-স্পাই সফটওয়্যার দ্বারা কারোর ব্যক্তিগত তথ্য বের করা নিষিদ্ধ, এমনকি ভারত সরকারও সেই কাজ করতে পারে না। তবে ভারত সরকার কোন আইনের বলে এহেন নজরদারি চালাচ্ছে? সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশানুযায়ী ব্যক্তিগত গোপনীয়তা প্রত্যেকের মৌলিক অধিকার, কিন্তু কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ব্যক্তিগত গোপনীয়তা সংক্রান্ত আইনকে কার্যকরী করতে গিয়ে সত্যের অপলাপ ঘটাচ্ছে।
US Must Lift Blockade of Cuba: Joint Statement By CPI(M) And CPI
কিউবার সরকার এবং সেদেশের জনগনের এই কঠিন সংগ্রামের প্রতি আমরা সংহতি জানাচ্ছি। সবার কাছে আমাদের আবেদন কিউবার এই লড়াইতে তাদের পাশে থাকুন। নিজেদের মাতৃভূমির সুরক্ষা, সার্বভৌমত্ব এবং সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে বজায় রাখতে কিউবার জনগন এবং প্রশাসন যে লড়াই চালাচ্ছে তাকে সমর্থন জানান।
People Be On Your Guard! It’s Cuba Again!
বিপ্লবের এই সাফল্য রক্ষা করতেই আজ রাস্তায় কিউবা। রাষ্ট্রপতি দিয়াজ আহ্বান জানিয়েছেন, ‘আমাদের দেশের সমস্ত বিপ্লবী, সমস্ত কমিউনিস্টদের আমরা রাস্তায় নামতে বলছি। বিশেষ করে যেখানে যেখানে আজ প্ররোচনা ছড়ানো হয়েছে, সেখানে সবাইকে রাস্তায় থাকতে বলেছি।’ তাই কিউবা আবার তৈরী। সকল কমিউনিস্ট, বামপন্থী ও দেশপ্রেমিক মানুষকে নিয়ে রাস্তায় ওরা। করানো। এইটাও একটা বড় শিক্ষা। আজ সিয়েরা মায়েস্ত্রা থেকে হাভানা। আওয়াজ উঠছে ‘ভিভা ফিদেল’! ‘ভিভা কিউবা’! …. ‘সমাজতন্ত্র অথবা মৃত্যু!’
Stan Swamy: Opp. Leaders to President
দেশের রাষ্ট্রপতি হিসাবে বিচারাধীন বন্দীর এহেন মৃত্যুর ঘটনায় যারা স্ট্যান স্বামীকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেয়, গুরুতর অসুস্থ হওয়া সত্বেও মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে বারংবার তার জামিনের বিরোধিতা করে এবং জেলের ভিতরে তার সাথে চরম অমানবিক আচরণ করে সেইসব দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে কেন্দ্রীয় সরকার যার কার্যকারিতা আপনার অনুমতিস্বাপেক্ষ, তাকে আপনি অবিলম্বে নির্দেশ দিন – এই আমাদের আবেদন। তাদের কৃতকর্মের উপযুক্ত বিচার হওয়া প্রয়োজন। ভীমা কোরেগাঁও এবং অন্যান্য মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে দেশদ্রোহিতা এবং ইউ এ পি এ’র ন্যায় দানবীয় আইনের অন্যায্য প্রয়োগের জোরে আটক থাকা প্রত্যেক রাজনৈতিক বন্দীকেই এখনই মুক্তি দিতে হবে।
Stan Swamy’s Death: Fix Accountability
জেলের মধ্যে ক্রমশ অসুস্থ হয়ে পড়া সত্বেও যারা বারে বারে মিথ্যা অভিযোগ সাজিয়ে তার জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করেছেন তাদের এই মৃত্যুর জন্য জবাবদিহি করতেই হবে। ভীমা কোরেগাঁও মামলাসহ দেশদ্রোহিতার অভিযোগে বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় ইউ এ পি এ’র মতো দানবীয় আইনে গ্রেফতার হওয়া প্রত্যেক রাজনৈতিক বন্দীকেই মুক্তি দিতে হবে।
Marxism At 21st Century: An Introduction For Chinese Conditions
পুঁজিবাদকে উৎখাত করতে হয়। উপড়ে ফেলার সেই কাজ মূলত নির্ভর করে পূঁজির শাসনের বিরুদ্ধে শ্রমজীবী মানুষদের নেতৃত্বে সংগঠিত আন্দোলনসমূহের উপরে যা ক্রমাগত চলতি সমাজে শ্রেণিসংগ্রামের তীব্রতা বস্তুগতভাবে বাড়িয়ে চলে। আন্দোলনের বস্তুগত সামর্থ্যলাভ আসলে সমাজ বদলের লড়াইতে ‘বিষয়ীগত উপকরন’ যোগান দেয় এবং সেই সামর্থ্য অর্জনের জন্যই নিরন্তর সংগ্রাম একান্ত প্রয়োজন। সংকটকালীন পরিস্থিতি, যা হল সমাজ বদলের লড়াইয়ে ‘বিষয়গত উপাদান’ তা যতই তীব্র আকার নিক না কেন যদি পূঁজির শোষণ উচ্ছেদের লক্ষ্যে পূর্বোক্ত ‘বিষয়ীগত উপকরন’ যথাযথরুপে প্রস্তুত না থাকে তবে সমাজ বদলের সংগ্রাম সমাজবিপ্লবের স্তরে উন্নীত হতে পারে না।