বিজয় পাল
কথায় আছে ‘নগরে আগুন লাগলে দেবালয় কি বাঁচে?’
স্বাভাবিক ভাবেই দেশ ও রাজ্যের পরিস্থিতির বাইরে পশ্চিম মেদিনীপুর থাকতে পারে না। নির্দিষ্ট কিছু ইস্যুর ভিত্তিতে জেলার নির্দিষ্ট কিছু কথা স্বতন্ত্রভাবে বলা যেতে পারে।
কমিউনিস্ট আন্দোলনের অভিজ্ঞতাই হল- অগ্রবর্তী ঘাঁটি এলাকায় শাসকের আক্রমণ বেশি হবেই। সেই মতোই ২০১১ সালে রাজ্যে পালা বদলের আগে এই জেলার শক্তিশালী ঘাঁটি এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতা দখলে মরীয়া হয়ে ‘ মাওবাদীদের ‘ চুক্তির ভিত্তিতে ভাড়া করে এনে নির্বিচারে গণহত্যার পথ গ্রহণ করে। অবশ্যই ওদের লক্ষ্য ছিল কমিউনিস্ট সদস্যদের নিধন করা। কমিউনিস্টরা যেহেতু মানুষের সঙ্গে থাকে তাই তাদের নিকেষ করতে হলে সাধারণ মানুষকেও খুন করতে হয় আতঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য। সেই কাপুরুষোচিতো বর্বর হত্যালীলার পটভূমিতে এই জেলার কমিউনিস্ট আন্দোলন ক্ষত বিক্ষত হয়। মানুষের রক্তের হোলি গায়ে মেখে সবুজ আবীর উড়িয়ে ক্ষমতার কুর্শিতে বসে তৃণমূল কংগ্রেস।
অচিরেই তাদের স্বরূপ সামনে আসে। নির্বিচার লুট ও স্বৈরাচারী মুখ মানুষ উপলব্ধি করতে থাকে।ইতোমধ্যেই দেশে ক্ষমতা দখল করে বিজেপি। তৃণমূল কংগ্রেসের হাত ধরে এই রাজ্যে তারা ডালাপালা বিস্তার করতে থাকে। তৃণমূল কংগ্রেস ও তথাকথিত মাওবাদী খুনে বাহিনীর একটা অংশ পিঠ বাঁচাতে আশ্রয় নেয় বিজেপিতে। তারপর শুরু হয় বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের দ্বিমেরু রাজনীতির প্রেক্ষাপট। দেশি বিদেশি উচ্চ বেনিয়াদের উদ্বাহু সমর্থন, তার সঙ্গে নানা রঙের বিভাজন ও এদের পরিচালিত প্রচার মাধ্যম- এই ত্রয়ীর ত্রিফলা আক্রমণে মানুষের মনোজগতে সংক্রমণ ঘটিয়ে ভ্রান্ত চেতনা গড়ে তোলা হয়। যার মর্মকথা হল তৃণমূলের বিকল্প বিজেপি। বিজেপির বিকল্প তৃণমূল। এই দুই দলের মধ্যে বিচরণ করাই যেন এ রাজ্যের মানুষের ভবিতব্য। ক্রমেই এই দুই অপশক্তির স্বরূপ মানুষ উপলব্ধি করছে। বর্তমান ঝাড়গ্রাম জেলা সহ আমাদের জেলার গোয়ালতোড়,শালবনী ও মেদিনীপুর সদর ব্লকের পশ্চিম প্রান্তের মানুষ এখন এদের হাত থেকে পরিত্রাণ খুঁজছে। বনাঞ্চল অধ্যুষিত এই অঞ্চলে কাজের আকাল। কাঠের চোরা কারবারীদের দাপটে বন ছোট হয়ে যাচ্ছে। বামফ্রন্টের সময় তৈরি করা ‘ বন রক্ষা কমিটি ‘ তৃণমূল কংগ্রেসের তোলাবাজদের মুঠোয় চলে গেছে। ফলে বনদপ্তর গাছ কাটলে তার দামের ২৫ ভাগ পাওয়ার কথা এলাকার বাসিন্দাদের। সেই টাকার বেশিরভাগ এখন যাচ্ছে তৃণমূল নেতাদের পকেটে। ১০০ দিনের কাজ তিন বছর ধরে বন্ধ। ফরেস্ট দপ্তরের কাজ যেটুকু হয় তা তৃণমূলের মিছিলে না ঘুরলে পাওয়া যায় না। যেটুকু পাওয়া যায় তারও মূল বেতনের একটা অংশ তৃণমূল নেতাদের তোলা দিতে চলে যায়। ইউপিএ সরকারকে দিয়ে বামপন্থীদের সমর্থনের বিনিময়ে অরণ্য আইনে বনাঞ্চলে বসবাসকারী মানুষের জন্য যে স্থায়ী দলিল দেওয়ার আইন তৈরি করা হয়েছিল তা কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের সম্মিলিত ষড়যন্ত্রে বন্ধ হয়ে আছে। মোদী সরকারের পদাঙ্ক অনুসরণ করে অরণ্য আইন এড়িয়ে ট্যুরিস্ট স্পট, হোটেল রেস্তোরা করার নামে বহুজাতিক হাঙরদের হাতে জমি তুলে দেওয়ার ব্লুপ্রিন্ট তৈরি।
ছাত্রদের আদিবাসী হস্টেল বন্ধ। গ্রান্টের টাকা কবে আসবে ঠিক নেই। গাঁটের কড়ি দিয়ে পড়তে হয়। ফলে বহু ছাত্র স্কুলছুট হয়ে যাচ্ছে। বামফ্রন্ট সরকার আদিবাসী লোকসংস্কৃতি শিল্পীদের পরিচয় পত্র দিয়ে ভাতা দেওয়ার কাজ শুরু করেছিল। অনুষ্ঠানের জন্য অর্থ বরাদ্দও বাম সরকারই চালু করে। এরা প্রথমের দিকে সেই পরিচয় পত্র ও ভাতা প্রদান ঢালাও হারে দেওয়া শুরু করে। এর ফলে অনেকেই মোহগ্রস্ত হয়। অচিরেই উপলব্ধি করে এ হল তৃণমূল কংগ্রেসের মিছিল মিটিং ও মুখ্যমন্ত্রীর সভায় লোক জড়ো করার বাঁধা মজুর তৈরির ঠিকা ভাতা। শিল্পীরা হারায় তাঁদের স্বাধীন সৃষ্টি সত্তা ও পরম্পরা। মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্য সরকারের গুণকীর্তন না করলে পাওয়া যাবে না কিছুই। সরকারের তাঁবেদার হওয়ায় তাঁদের শিল্পীর সম্মান খোয়াতে হয়। নতুন শিল্পী নথিভুক্তকরণ বন্ধ হয়ে আছে কয়েক বছর আগে থেকে। অনুষ্ঠানের সংখ্যা কমে গেছে। সব মিলিয়ে এই শিল্পীদের মান ও মর্যাদা দুই – ই গেছে।
দ্রৌপদী মুর্মু’কে রাষ্ট্রপতি পদে বসিয়ে বিজেপি আদিবাসীদের মধ্যে বাজিমাত করতে চায়। কিছুটা সফলও হয়েছিল। আমাদের লাগাতার প্রচারে এখন ধোঁয়াশা কাটছে অনেকটাই। কেন সংসদ ভবন উদ্বোধনে ডাক পেলেন না, রাম মন্দির উদ্বোধনে ব্রাত্য রাখা হল, কেন আদবানীজী কে ভারতরত্ন পুরস্কার দিতে তাঁর বাড়িতে রাষ্ট্রপতি কে নিয়ে যাওয়া হল, আদবানী ও প্রধানমন্ত্রী চেয়ারে বসে থাকলেন কিন্তু রাষ্ট্রপতির বসার চেয়ার জুটল না কেন। এ তো গাছে তুলে আছাড় মেরে ফেলার উদাহরণ। ‘হিন্দু’ আদিবাসীদের গায়ে মন্ত্রপূত গঙ্গা জল ছিটিয়ে উচ্চ বর্ণে রূপান্তরিত করার অর্থ তাঁদের ‘নীচু’ জাত হিসেবে মনে করা, হিন্দু নামের আড়ালে আদিবাসীদের নিজস্ব সারি বা সারনা ধর্মকে অস্বীকার করা — এসব ধীরে ধীরে পরিস্কার হচ্ছে।
সাঁওতালি ভাষা সাংবিধানিক স্বীকৃতি পায় ঝাড়গ্রাম লোকসভা থেকে নির্বাচিত সিপিআই(এম) সাংসদ রূপচাঁদ মুর্মু’র আনা প্রস্তাবের ভিত্তিতে। তারপর থেকে সাঁওতালি সাহিত্যে আকাডেমি পুরস্কার চালু করা ছাড়া আজ পর্যন্ত কেন্দ্র সরকার এই ভাষা উন্নয়নে কিছুই করেনি। এখন তো ওরা হিন্দি চাপিয়ে দেওয়া ছাড়া আর সব ভাষাকেই ব্রাত্য করছে। এর মাধ্যমে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করে হিন্দি’র মতো সমৃদ্ধ ভাষাকে দেশের অন্যান্য ভাষাভাষী মানুষের কাছে বিদ্বেষপূর্ণ করে তুলছে।
অলচিকি হরফের স্বীকৃতি- স্বরূপ পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মু’কে লক্ষাধিক মানুষের সমাবেশে মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু সংবর্ধনা দেন। ধীরে ধীরে শুরু হয় অলচিকি হরফে বই প্রকাশ ও প্রাথমিক স্তর থেকে এই লিপিতে পড়াশোনা। বামফ্রন্ট সরকারের উদ্যোগেই বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সাঁওতালি ভাষা সাহিত্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি কোর্স চালু করা হয়।
মাহাতো কুড়মীদের আদিবাসী স্বীকৃতির দাবি নিয়ে বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেস দ্বিমেরু রাজনীতি করেই চলেছে। অথচ রাজ্য সরকার আজ পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো বিল বিধানসভায় পেশ করেনি। কেন্দ্র সরকার নৃতত্ত্ব-সংস্কৃতি বিভাগের বিবেচনার জন্য কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। কিন্তু বাজপেয়ী সরকারের আমলেই সিপিআই(এম) সাংসদ ও নেতৃত্ব বাসুদেব আচারিয়া কুড়মিদের উপজাতিভুক্ত করার বিষয়টি কেন্দ্রীয় সরকারকে বিবেচনা করতে চিঠি দিয়েছিলেন।
সারা দেশ ও রাজ্যের পাশাপাশি এ জেলাও ভয়াবহ বেকারী সমস্যার যন্ত্রণায় বিদ্ধ। শালবনীতে স্বপ্নের ইস্পাত কারখানাকে ঘিরে যে স্বপ্ন বোনা শুরু হয়েছিল আজ তা মরীচিকায় পরিণত হয়েছে। কৃষকরা বিপুল উৎসাহে জমি বিক্রয়ে সম্মতি দিয়ে একমাত্র এশিয়ার বৃহত্তম ইস্পাত কারখানা গড়ার জন্য। তা না হওয়ায় কৃষকসভা আওয়াজ তোলে জমি ফেরত দিতে হবে। ততদিনে জিন্দালদের সঙ্গে লুটেরা রাজ্য সরকারের ডিল হয়ে গেছে। ১১০০ একর জমি ধরে রাখতে একটি মিনি সিমেন্ট কারখানা করে চোখে ধুলো দেওয়ার অপকৌশল এখন স্পষ্ট। হঠাৎ বিদেশ থেকে শোনানো হল সৌরভ গাঙ্গুলি ওখানে কারখানা করবেন। আশা করা যাক সৌরভ নিজের প্রতি সুবিচার করবেন।
গোয়ালতোড় জুট সীড ফার্মে বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে এগারশোর বেশি কর্মচারী কাজ করত। এদের মধ্যে সাড়ে তিনশো অস্থায়ী কর্মচারীর কাজ স্থায়ী করে বামফ্রন্ট সরকার। নানা রকম উন্নত মানের বীজ উৎপাদনের পাশাপাশি পরিকল্পনা করা হচ্ছিল আলু বীজ উৎপাদনের ব্যবস্থা করা। কেবল জেলা নয় গোটা রাজ্যে উন্নতমানের বীজ সরবরাহে এই ফার্মের বিপুল ভূমিকা রয়েছে। কৃষির উন্নয়নে কাজ করা এই বিপুল জমি বেসরকারি মালিকের হাতে তুলে দেওয়ার নীল নকশা তৈরি করে মুখ্যমন্ত্রী আচমকা ঘোষণা করেন এই জমিতে কারখানা করা হবে। ফার্মের ভেতরে কী হচ্ছে তা লোকচক্ষুর আড়ালে রাখার জন্য ঠিকাদার আর তৃণমূল কংগ্রেস ভাগাভাগি করে নিয়ে নীল সাদা রঙের প্রাচীর তুলে দেওয়া হয়েছে কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে। এখন এই ফার্মে কর্মচারী সংখ্যা একশো’রও কম। ফার্ম রুগ্ন করে দিয়ে একদিকে উন্নত বীজ উৎপাদনে রাজ্যের স্বনির্ভরতা নষ্ট করা হল। অন্য দিকে রুগ্ন দেখিয়ে ফার্মের বিপুল পরিমাণ জমি লুটেরাদের হাতে তুলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র মানুষ বুঝছেন।
কৃষির ভিতের ওপর শিল্প গড়ে তোলার বিপুল কর্মযজ্ঞ শুরু করেছিল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য’র নেতৃত্বে বামফ্রন্ট সরকার। বাম আমলেই গড়ে ওঠে টেলকন, টাটা বিয়ারিং, টাটা মেটালিক, সুপ্রিম, রামস্বরূপ, রশ্মি, সেঞ্চুরি , সুপার গ্যাস, ফ্লেন্ডার বিয়ারিং , উৎকল আ্যসবেস্টস , রাম্পো , ভিসাকা আ্যসবেস্টস, বেঙ্গল এনার্জি, রশ্মি সিমেন্ট ইত্যাদি কারখানা গড়ে ওঠে। পরিকল্পিত শিল্প গড়ে তোলার জন্য খড়্গপুরে গড়ে তোলা হয় বিদ্যাসাগর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক। সেই পার্ক – এর এখন জরাজীর্ণ অবস্থা। তৃণমূলের তোলাবাজির চাপে দীর্ঘদিন বন্ধ হয়ে যায় রামস্বরূপ কারখানা। সিটু’র নেতৃত্বে যৌথ শ্রমিক আন্দোলন গড়ে তুলে এখন নতুন করে শ্যাম স্টিল নামে উৎপাদন শুরু হয়েছে।
বন্যা নিয়ন্ত্রণ করে কৃষিতে সেচের প্রসার ঘটাতে সুবর্ণরেখা নদী সেচ প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে ২০ হাজার কোটি টাকার বৃহৎ প্রকল্পের অনুমোদন আনা হয়। যা কার্যকরী হলে গোপীবল্লভপুর , নয়াগ্রাম , কেশিয়াড়ী ও দাঁতন ব্লক এলাকায় কৃষিতে নতুন সূর্যোদয় হত। বর্তমান রাজ্য সরকারের অবিমৃষ্যকারিতার জন্য সেই প্রকল্প মাঠে মারা গেছে। সবং – এর কেলেঘাই নদী সংস্কারের জন্যও বিজ্ঞানভিত্তিক বৃহৎ প্রকল্পের অনুমোদন আনা হয় বাম সরকারের উদ্যোগেই। তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের হাতে পড়ে তার রূপায়ণ এমন ভাবে হয়েছে যে না বন্যা নিয়ন্ত্রণ হল, না কৃষিতে সেচের পরিমাণ বাড়ল। তোলাবাজিতেই সব শেষ হয়ে গেছে। ঐতিহ্যমণ্ডিত মাদুর শিল্পের আধুনিকীকরণের জন্যও বাম সরকারই প্রকল্প করে গিয়েছিল। সেই টাকায় তৃণমূল কংগ্রেসের কয়েকজন নিজেদের ব্যবসা বাড়ানোর স্বার্থ সিদ্ধ করেছে।
এখন চাষের জমিতে গলদা চিংড়া চাষের জন্য ভেড়ি বানাতে তৃণমূল বিজেপি সব হায়নারা এক হয়েছে। দুর্বার প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয়েছে কৃষক সভার উদ্যোগে। লড়াই জারি আছে। ওরাও থমকে আছে।
গুরুদাস দাশগুপ্ত সাংসদ নির্বাচিত হয়ে ডেবরার রেশম ফার্ম, পাঁশকুড়া ডেবরা মিলিয়ে ফুল সংরক্ষণের আধুনিক ব্যবস্থার অনুমোদন ও অর্থ বরাদ্দ পর্যন্ত করেছিলেন। তৃণমূল বিজেপি’র হাতে পড়ে তা মাঠে মারা গেছে।
দেশের মধ্যে একমাত্র মহকুমা ঘাটাল যেখানে রেল যোগাযোগ নেই। বন্যা বিধ্বস্ত এই মহকুমায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ করে কৃষিতে সেচের উন্নয়ন ঘটানোর ব্যবস্থা আজও বিশ বাঁও জলে। কৃষকসভার উদ্যোগে যৌথ সংগ্রাম মঞ্চ গড়ে তুলে আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে।
বিজেপি নাকি বারবার নির্বাচন বন্ধ করে দেশে উন্নয়নের জোয়ার আনতে চায়। তাই সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ধ্বংস করতে আওয়াজ তুলেছে ‘এক দেশ এক ভোট’ । অথচ জেলায় দুটি আসনে প্রার্থী দিয়েছে বর্তমান বিধায়ক’কে। তার মধ্যে হিরণ খড়্গপুরের বিধায়ক, কাউন্সিলর। আবার লোকসভার প্রার্থী। ৪০০ আসন পাওয়ার জন্য লড়ছে যে দল সেই দলে প্রার্থী করার উপযুক্ত লোকের কী আকাল! তৃণমূল কংগ্রেস ও সিরিয়াল অভিনেত্রী জুন মালিয়া ছাড়া চোখে সর্ষে ফুল দেখে।
মেদিনীপুরের তৃণমূল বিধায়ক জুন নিজের প্রোডাকশন হাউজের ব্যবসা বাড়াতে বামফ্রন্ট পরিচালিত জেলা পরিষদ – এর উদ্যোগে তৈরি করা অত্যাধুনিক অডিটোরিয়াম ‘শহিদ প্রোদ্যোত স্মৃতি সদন’ যেটি শহরের একমাত্র উপযুক্ত সংস্কৃতি চর্চার কেন্দ্র সেটি’কে সিনেমা হল হিসেবে ব্যবহার করার ঘোষণা করিয়েছিলেন মমতা ব্যানার্জি’কে দিয়ে। আমাদের উদ্যোগে শহরের সর্বস্তরের শিল্পী সংস্কৃতি কর্মীদের একত্রীত করে কনভেনশন, স্বাক্ষর সংগ্রহ ডেপুটেশন দিয়ে স্হগিত করানো হয়। সেই জুন এখন তৃণমূল কংগ্রেসের লোকসভার প্রার্থী।
দেশ ও রাজ্যের সার্বিক পরিস্থিতির সঙ্গে জেলার এইসব ইস্যু নিয়ে জোর কদমে প্রচার চলছে। বিচ্ছিন্ন কয়েকটি এলাকা বাদে সর্বত্রই আগের থেকে অনেক বেশি মানুষ সামিল হচ্ছেন। তৃণমূল কংগ্রেসের বিষ দাঁত নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। ‘মোদী বাবা পার করেগা’ এই ভরসায় বিজেপি তাকিয়ে রয়েছে। কিন্তু ঘণ্টা মিনিট সেকেন্ড ধরে মানুষ এই দুর্বিষহ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে জাগছেন। আমাদের কাজ হল এই জাগানিয়া উত্থানকে তরঙ্গে রূপদান করা।