ঘবজ

প্রথম দফার নির্বাচনে তৃণমূল এবং বিজেপি দুই শাসকদলই নিজেদের সাধ্যমতো মানুষকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করেছে, তবু যেভাবে মানুষ ভয়কে অতিক্রম করেই ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হয়েছেন, নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন তা অন্যান্য দফার নির্বাচনে দৃষ্টান্ত হবে। এটাই আজকের ভোটদানের সারমর্ম। আগামী পর্বের নির্বাচনে এই ঘটনা মানুষকে নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে সাহস যোগাবে, ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) সেই প্রত্যয়ে দৃঢ়।
রাজ্যের নির্বাচকমণ্ডলীর কাছে সংযুক্ত মোর্চার আবেদন
প্রগতি-প্রতিক্রিয়ার দ্বন্দ্বে স্পষ্ট অবস্থান নেওয়াই ভালো। অস্বচ্ছতা, ধোঁয়াশা, মনে এক মুখে এক এ সময়ে আত্মঘাতী হবে।
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচন উপলক্ষে বামফ্রন্ট, কংগ্রেস এবং ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্টের সংযুক্ত মোর্চার পক্ষ থেকে একটি আবেদন প্রকাশিত হবে, চোখ রাখুন রাজ্য পার্টির ওয়েবসাইটে।
বিভিন্ন অভাব, অনটন এবং দুর্দশার কবলে ফেলে জনতার ঐক্যকে ভেঙে দিতে যাবতীয় নিপীড়ন এবং মাঝেমধ্যে যৎকিঞ্চিত দয়ার দান! মোদী-মমতার জমানায় দেশ এবং রাজ্যে রাজনীতির চেহারা এমনই। ষোড়শ শতাব্দীতে নিকোলো ম্যেকিয়াভেলি “দ্য প্রিন্স” গ্রন্থে ক্ষমতায় আসীন রাজাদের উদ্দেশ্যে নিজেদের আসন টিকিয়ে রাখতে ঠিক এমনই বুদ্ধি দিয়েছিলেন।
সামাজিক আয়মাদারি ভাঙতে ফুরফুরা শরীফের যে ঐতিহাসিক সংগ্রাম, সেটি সংখ্যাগুরু আধিপত্যবাদীদের আধিপত্যবাদ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে একটি বড়ো বাঁধা। আবু বকর সিদ্দিকের কনিষ্ঠ পুত্রের জীবনের একটি ঘটনার ভিতর দিয়ে আমরা বুঝতে পারব, কেবল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সংগ্রামই নয়, স্ত্রী শিক্ষা বিস্তারে ঐতিহাসিক অবদান স্থাপনের (বহু ইতিহাসবিদের স্বাভাবিক প্রবণতা হল, স্ত্রী শিক্ষা বিস্তারে মুসলমান সমাজের ঐতিহাসিক অবদানকে একদম চেপে যাওয়া। বিদ্যাসাগরের পাশাপাশি আজ বেগম রোকেয়ার নাম উচ্চারণের ক্ষেত্রে বহু বাঁধার সন্মুখীন হতে হয়। বিদ্যাসাগরের নারী শিক্ষা বিস্তারে অবদান ঘিরে এপার বাংলায় যতো আলোচনা হয়, যতোটা উচ্ছ্বাস প্রকাশ পায়, তার কিন্তু সিকিভাগ ও হয় না রোকেয়াকে ঘিরে। প্রত্যন্ত গ্রামে বসে মেয়েদের জন্যে ইস্কুল প্রতিষ্ঠার ভিতর দিয়ে বাংলার সামাজিক অচলায়তন ভাঙতে আবু বকর সিদ্দিকি এবং তাঁর উত্তরসূরিরা এক ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছিলেন।
ভয়াবহ একটা বছর আমরা কাটিয়ে এলাম। বিশ্বব্যাপী কোভিড মহামারীর প্রকোপ ঠেকাতে শুরুতে কেন্দ্র বা রাজ্যের সরকার গড়িমসি করার পরে শুরু
শ্রমিকেরা লড়াই করছেন। গত বছর ২৬শে নভেম্বর সারা দেশে ঐতিহাসিক ধর্মঘট পালন করেছেন তারা – দেশজোড়া ঐক্য নির্মাণ করে। পুঁজিবাদ, কর্পোরেট এবং তাদের ধামাধরা মোদী সরকার যতই চেষ্টা করুক শ্রমিকদের সংগ্রামী ঐক্য ভেঙ্গে দিতে এদেশে শ্রমিক – মেহনতি জনতা জানেন তাদের একমাত্র হাতিয়ার ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম। আজকের দিনে শ্রমিকশ্রেনীর উপরে যে অভূতপূর্ব আক্রমন তার মোকাবিলায় লেনিনের কথা মনে রাখতেই হবে – “A basic condition for the necessary expansion of political agitation is the organisation of comprehensive political exposure.”
মুনাফার লোভে পুঁজিবাদ কতটা নির্লজ্জ হতে পারে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে লেনিন বলেছিলেন “মুনাফার গন্ধ পেলে এরা পারে না এমন কোন কাজ নেই, প্রয়োজনে মৃত মায়ের চামড়া ছাড়িয়ে ডুগডুগি বাজাতেও এরা পিছপা হবে না।” – আজকের ভারতে সরকারের ভূমিকা দেখলে তিনি কি বলতেন সেই কথা উপলব্ধি করতে পন্ডিত হতে হয় না।