গোখলের হয়ত প্রকৃত সত্য জানা নেই

নিজের লেখা বইতে বিজয় গোখলে সংশ্লিষ্ট চুক্তির প্রশ্নে বামেদের বিরুদ্ধে যেসমস্ত অভিযোগ করেছেন তা ভিত্তিহীন। সম্ভবত তার জানা নেই, এই চুক্তি সম্পাদিত হবার সময় প্রধান বিরোধী দল ছিল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এবং তারাও এই চুক্তি প্রসঙ্গে সংসদের আলোচনায় বিরোধিতাই জানিয়েছিল।

SRC Cover Image

কমরেড সুদর্শন রায় চৌধুরী লাল সেলাম

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও বাংলায় এম এ পাশ শেষে ১৯৭১ সালে শ্রীরামপুর কলেজে অধ্যাপনায় নিযুক্ত হন। তিনি ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারন সম্পাদক । শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে দুবার (১৯৮৯ ও ১৯৯১ )সাংসদ নির্বাচিত হন সুদর্শন রায় চৌধুরী । ২০০৬ সালে জাঙ্গিপাডা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হয়ে রাজ্যের বামফ্রন্ট সরকারের উচ্চ শিক্ষা মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন ২০১১ সাল অবধি।

কোভিড মহামারী, মৃত্যুমিছিল এবং সম্পত্তিরক্ষার পবিত্র অধিকার প্রসঙ্গে

একথা সত্য, কোনও আন্তর্জাতিক দায়িত্ব পালনের আগে যে কোনও সরকারেই নিজের দেশের নাগরিকদের জীবনকে অগ্রাধিকার দেবে। কিন্তু উন্নত দেশগুলির সরকারগুলির সামনে নিজেদের নাগরিকের জীবন বনাম অন্য দেশের নাগরিকদের জীবন সংক্রান্ত তুলনার প্রশ্ন কার্যত অহেতুক; সামগ্রিকভাবে ভ্যাকসিনের ঘাটতির কারণে একদল মানুষের জীবনযাত্রার ঝুঁকির মুখোমুখি হচ্ছে যা আসলে ব্যক্তিগত সম্পত্তি-অধিকার রক্ষার প্রয়োজনে সৃষ্ট একটি কৃত্রিম ঘাটতি। এহেন সুরক্ষার পরিকল্পনাই আসলে টিকার উৎপাদন বৃদ্ধি রুদ্ধ করে রেখেছে। সংক্ষেপে বললে এসব এক দেশের লোক বনাম আরেক দেশের লোকের প্রশ্নই নয়, এ হল লাভ বনাম মানুষের জীবনের মধ্যে যে কোন একটিকে বেছে নেবার প্রশ্ন।

মনকাডা দিবস - এবছর এক নতুন প্রতিজ্ঞার রূপ

গত প্রায় দুবছর ধরে করোনা অতিমারি’র জন্য বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো অর্থনৈতিক সমস্যা বেড়েছে কিউবারও। কিউবার বিদেশী মুদ্রা আয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র পর্যটন থেকে আয় কমেছে চারভাগের প্রায় তিনভাগ। অবরোধের ফলে খাদ্য আমদানিতে বাড়তি সমস্যার মুখে। আয় কমেছে রপ্তানি খাতে। অবরোধের সমস্যা তীব্রতর। কিন্তু তার মধ্যেও করোনা মোকাবিলায় গোটা বিশ্বে দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছে কিউবা। করোনায় প্রতি দশ লক্ষে কিউবায় মৃত্যু ১৩৯।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি দশ লক্ষে কোভিডে মৃত্যু ১,৮৭১। দেশীয় উদ্যোগে পাঁচটি ভ্যাকসিন তারা তৈরি করেছে। জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট সমস্ত সরকারী ব্যবস্থা কিউবা সরকার বজায় রেখেছে। কিউবার পরিচয় তার সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য। কিউবা ব্যতিক্রমী তার বৈপ্লবিক রূপান্তরের জন্য

Cuba Now

একটানা ষাট বছর অবরুদ্ধ থাকতে হলে মার্কিনমুলুকের অবস্থা এখন কেমন হতো?

১৯৯২ থেকে রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদ ভোট দিয়ে আসছে কিউবার বিরুদ্ধে মার্কিন অবরোধের অবসান চেয়ে। ২০২১, সর্বশেষ ভোটের ফলাফল ১৮৪-২। কিউবার সঙ্গে গোটা বিশ্ব। আরও একঘরে বাইডেন। অবরোধের অবসান চেয়ে ভোট দিয়েছে বিশ্বের ১৮৪ টি দেশ। বিপক্ষে মাত্র দু’টি দেশ। ট্রাম্পের উত্তরসূরী বাইডেনের আমেরিকা এবং ইজরায়েল। ভোটদানে বিরত থেকেছে ‘লাতিনের ট্রাম্প’ বোলসোনারোর ব্রাজিল, কলম্বিয়া এবং ইউক্রেন। তবু নির্বিকার মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ। স্বাভাবিক। একরত্তি কিউবা না। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের লক্ষ্য আসলে কিউবার সমাজতন্ত্র। আর সেকারণে কোনওভাবেই পেরে না উঠে কিউবাকে ভাতে মারতে চায়।

আড়ি পাতা ধনতন্ত্র এবং অর্থনীতি

বলা বাহুল্য চলতি সংকটের আক্রমনে জর্জরিত জনগণের ভীষণ রোষ তো আর লাইব্রেরীর টেবিলে বসে লেখা গবেষণাপত্র না যে বেছে বেছে ঠিক এই এই স্থানে পুঁজিবাদ লুকিয়ে রয়েছে তাকেই শুধু আক্রমন করবে, জনগণ বস্তুগত সত্যকেই আঁকড়ে ধরেন। তারা নাটের গুরু চিনে নেবেন খুব সহজেই, ফলে আক্রমণটা নেমে আসবে রাষ্ট্রের পরিচালকবৃন্দের উপরেই – পুঁজিবাদ এই সত্য ভালো বোঝে, রাষ্ট্রপরিচালনায় যুক্ত রাজনৈতিক শক্তি বোঝে আরও বেশি কারন তার গদি হারানোর ভয় থাকে, দেশে বিদেশে ছুটে বেড়ানো ফিন্যান্স পূঁজির মতো তার চরিত্র আদৌ বিমূর্ত নয় যে! ফলে জনগণ কখন কি ভাবছে, কি করছে সেই খোঁজ রাখতে রাষ্ট্র বাধ্য – ফলে ‘আড়ি পাতা’ এবং ‘পেগাসাস’।

Spyware

জর্জ অরওয়েলের দুঃস্বপ্ন সত্যি হল?

তথ্যপ্রযুক্তি সংক্রান্ত যাবতীয় আধুনিকতার যেরকম ভয়াবহ প্রচার ভারতে আজকের প্রজন্ম ইতিমধ্যেই দেখেছে বা দেখছে তার কারন কোন “ডিজিটাল ইন্ডিয়া” নয়, বিশ্ববাংলা তো নয়ই! এর পিছনের কারন বুঝতে হলে আমাদের ফিন্যান্স পুঁজি, পুঁজিবাদী আধুনিক অর্থনীতি এবং আজকের পৃথিবীতে সাম্রাজ্যবাদের সমবেত মিথস্ক্রিয়া বুঝতে হবে। সেই উদ্দেশ্যেই এই নিবন্ধের সুত্রপাত। স্মার্টফোনে স্পাইওয়্যার পাঠিয়ে নাগরিকদের চলাফেরায় আড়ি পাতছে দেশের সরকার – এ আর জেমস বন্ডের আষাঢ়ে গপ্পো নয়! জর্জ অরয়েল বেঁচে থাকলে আরেকবার 1984 লিখতে বসতেন কিনা জানার সুযোগ নেই, সোশ্যালিজম আদৌ পেরেছিল কিনা কেউ জানেনা কিন্তু পুঁজিবাদ তার সেই কষ্টকল্পনাকে সত্যি প্রমান করেই ছাড়ল; এখন বলতেই হচ্ছে বিগ ব্রাদার ইজ ওয়াচিং আস!

"যে কোন মূল্যে বিপ্লবকে রক্ষা করতে হবে": মিগুয়েল ডায়াজ-কানেল

১৫জুলাই,২০২১ কিউবার কমিউনিস্ট পার্টির মুখ্য সম্পাদক এবং প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি মিগুয়েল ডায়াজ-কানেল বার্মূডেজ গতকাল, বিপ্লবের প্রাসাদ থেকে এক বিশেষ বার্তায় বলেছেন

দেশ অস্থিতিশীল হলে বৈপ্লবিক প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হতে হবে বিক্ষোভকারীদের

বিপ্লবের এই সাফল্য রক্ষা করতেই আজ রাস্তায় কিউবা। রাষ্ট্রপতি দিয়াজ আহ্বান জানিয়েছেন, ‘আমাদের দেশের সমস্ত বিপ্লবী, সমস্ত কমিউনিস্টদের আমরা রাস্তায় নামতে বলছি। বিশেষ করে যেখানে যেখানে আজ প্ররোচনা ছড়ানো হয়েছে, সেখানে সবাইকে রাস্তায় থাকতে বলেছি।’ তাই কিউবা আবার তৈরী। সকল কমিউনিস্ট, বামপন্থী ও দেশপ্রেমিক মানুষকে নিয়ে রাস্তায় ওরা। করানো। এইটাও একটা বড় শিক্ষা। আজ সিয়েরা মায়েস্ত্রা থেকে হাভানা। আওয়াজ উঠছে ‘ভিভা ফিদেল’! ‘ভিভা কিউবা’! …. ‘সমাজতন্ত্র অথবা মৃত্যু!’