ফিজিক্স থেকে অর্থনীতি: প্রয়াত অভিজিৎ সেন

ফিজিক্স থেকে অর্থনীতি

প্রয়াত অভিজিৎ সেন

ওয়েবডেস্ক প্রতিবেদন

এনরোলমেন্ট ছিল পদার্থবিদ্যায়।

দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত সেন্ট স্টিফেন্স কলেজে পদার্থবিদ্যার স্নাতক স্তরে ভর্তি হলেও কিছুদিন পরে পছন্দের বিষয় বদলে অর্থনীতি বিভাগে পড়াশোনা শুরু করেন। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পি এইচ ডি অর্জন করেছিলেন। ভারতের  অর্থনৈতিক উন্নতি সাধনে কৃষির ভূমিকাই ছিল অভিজিৎ সেনের গবেষণার বিষয়।

কেমব্রিজ থেকে পড়াশোনার পাঠ চুকিয়ে দেশে ফিরে আসেন। চল্লিশ বছর অধ্যাপনার কাজ। অধ্যাপকের ভূমিকায় শেষের দিকে (১৯৮৫ নাগাদ) দিল্লিতে জহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ইকোনমিক স্টাডিজ অ্যান্ড প্ল্যানিং এ পড়াতেন, তার আগে সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়, অক্সফোর্ড, কেমব্রিজ ও এসেক্সে ছিলেন। জেএনইউ' তে প্রভাত পট্টনায়েক, জয়তী ঘোষ, কৃষ্ণা ভরদ্বাজ, অমিত ভাদুড়ী এবং সি পি চন্দ্রশেখরদের সাথেই অর্থনীতির চর্চা ও গবেষণায় বিশেষ অবদান ছিল। দিল্লিতে পড়ানোর সময় সহ অধ্যাপিকা জয়তি ঘোষের সাথেই অভিজিৎ সেনের বিবাহ হয়।

১৯৫০ সালে জামশেদপুরে অভিজিৎ সেনের জন্ম হয়। সোমবার রাতে তার জীবনাবসান হয়। বয়স হয়েছিল ৭২ বছর।

১৯৯৭ সালে কেন্দ্রের ইউনাইটেড ফ্রন্ট সরকার অভিজিৎ সেনকে কৃষিজাত দ্রব্যের উৎপাদন খরচ ও মূল্য নির্ধারন সংক্রান্ত কমিশনের চেয়ার ম্যানের দায়িত্বে নিযুক্ত করে। কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রকের তরফে নির্দিষ্ট কিছু কৃষিজাত পণ্যের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নির্ধারিত হয়। তিনবছর পরে সর্বজনীন গনবন্টন ব্যবস্থাকে সারা দেশে প্রসারিত করার দায়িত্ব পান। তখন ক্ষমতায় এন ডি এ সরকার। ২০০৪ সালে যোজনা কমিশনের সদস্য মনোনীত হন। ২০০৯ সালে পুনরায় একই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এই গোটা পর্বে নিরবিচ্ছিন্নভাবে গণবন্টন (রেশন) ব্যবস্থাকে আরও মজবুত করে সারা দেশে প্রসারিত করার পক্ষেই সওয়াল করে এসেছেন।

অর্থনীতির অধ্যাপনা, যোজনা কমিশনের দায়িত্ব সামলানোর সাথেই ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর এগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্ট এবং এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের কাজেও নিজস্ব দক্ষতার পরিচিতি রেখে গেছেন অভিজিৎ সেন।

জনসেবায় বিশেষ ভূমিকা পালনের জন্য ২০১০ সালে তাকে পদ্মভূষণ সম্মানে ভূষিত করা হয়।

আজ সন্ধ্যায় ৫টা নাগাদ গ্রীন পার্ক শ্মশানে তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হবে।

অসামান্য অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ সেন সারা জীবন শ্রমজীবী গরীব জনগণের স্বার্থরক্ষায় কাজ করে গেছেন। এই কাজের মাধ্যমেই তিনি প্রগতিশীল দর্শনকে উর্ধে তুলে ধরেছেন। তার স্ত্রী জয়তী ঘোষ, কন্যা জাহ্নবী সহ পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েই তাকে স্মরণ করেছে সিপিআই(এম)।  

তথ্যসূত্র: দ্য ওয়্যার


শেয়ার করুন

উত্তর দিন