আমরা সবাই এখন মেতে আছি হারিকেন না মোমবাতি না প্রদীপ এই নিয়ে। এটা হলে কি হবে - ভালো না খারাপ! দেশটা গণতান্ত্রিক না তান্ত্রিক - কোন পথে চলবে, এই নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে। দেশে হটাৎ করে বিদ্যুৎ এর চাহিদা নেমে গেলে ন্যাশনাল গ্রিডের হাল কি হবে, তা নিয়েও বিস্তর চর্চা চলছে।
৯ টায় ৯ মিনিটের বক্তৃতা, ৫/৪ তারিখে রাত ৯টায় ৯মিনিটের অন্ধকার, সাথে ৯ মিনিটের মোমবাতি জ্বালালে মঙ্গলের দশায় করোনার মৃত্যু - এটা কি কুসংস্কার নয়! এইসব আলোচনায়, তর্ক-বিবাদে মত্ত দেশবাসী।
কিন্তু একবারও আলোচনা হচ্ছে না, বিশ্বের বাজারে তেলের দাম সর্বনিম্ন বিগত আড়াই দশকের মধ্যে, কিন্তু লকডাউনের এই বাজারেও মোদি সরকার পেট্রোল- ডিজেলের দাম বাড়িয়ে দিল।
মোদিজি যখন ক্ষমতায় এসেছিলেন তখন ব্যারল পিছু কাঁচা তেলের দাম ছিল ১০৭.০৯ মার্কিন ডলার এখন সেটা ২০ ডলার মাত্র। অর্থাৎ ৫ ভাগেরও বেশী দাম কমেছে। মোদিজি যেদিন প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন তখন পেট্রোল ও ডিজেলের দাম ছিল যথাক্রমে ৭১.৪১টাকা ও ৫৫. ৪৯ টাকা। আর বিশ্ববাজারে এখন তেলের দাম ১/৫ ভাগ অথচ তেলের দাম মোদিজি বাড়িয়ে করলেন ৭৩.৩০ টাকা আর ডিজেল ৬৫.৬২ টাকা। কেন? কোন যুক্তিতে? আলোচনা হচ্ছে? না, হচ্ছে না। আমি আপনি ব্যস্ত এখন হারিকেন-মোমবাতি নিয়ে।
একইভাবে এই দুঃসময়ে স্বল্প সঞ্চয়ে সুদের হার কমলো। মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হলেন নিম্ন মধ্যবিত্ত ও প্রবীণ নাগরিকবৃন্দ। কেন কমানো হ'ল - দারুণ রাগে কেউ যুদ্ধ করতে চাইলেন? সবাই ব্যস্ত কাঁসরঘণ্টা নিয়ে। এর সুফল-কুফল নিয়ে তখন প্রবল বিতর্কে মজে দেশবাসী।
আপাতভাবে সফল মোদি - বিজেপি, আমার আপনার দৃষ্টি ঘুরিয়ে দিতে। মনে করার কোনও কারণ নেই মোদিজির ভাষন শুধু কুসংস্কার বা সাম্প্রদায়িক মনোভাবের প্রতিফলন। দক্ষিণপন্থার অর্থনীতির এজেন্ডাই হল লুন্ঠন। করোনার বাজারে লুন্ঠন চালিয়ে যাওয়ার জন্যই আপনার-আমার হাতে ঘণ্টা- হারিকেন ধরিয়ে দিচ্ছে লুন্ঠনের কারিগর মোদি সরকার।
কি করবেন আপনি? ঘন্টা-হ্যারিকেন ধরে দাঁড়িয়ে লুন্ঠিত হবেন? না কি বাইরে একটা পোস্টার লিখে টাঙিয়ে দেবেন - করোনা মহামারীর সময়ে লুঠ বন্ধ করো।
শেয়ার করুন