শূন্য। কেউ বলছেন শূন্য থেকে শুরু। কেউ বলছে বিলীন বিলুপ্ত, শূন্যেই শেষ।
১৯৪৬ থেকে ২০২১। ৭৫ বছরের সংসদীয় গণতন্ত্রের ইতিহাসে এই প্রথম কমিউনিস্ট প্রতিনিধিহীন বাংলার বিধানসভা।
কেন? কেন? কেন?
কেউ চোখের জলে, কেউ অভিমানে, কেউ রাগে অনেক কথাই বলছেন। ফাঁকতালে আবার কিছু 'ছদ্মবেশী বাম' কুৎসায় নেমে পড়েছে, সচেতন থাকতে হবে এদের প্রশ্নে।
এসবের কোনোটাই অস্বাভাবিক নয়। হোক, আলোচনা হোক। অনেক মতামত উঠে আসুক। কমিউনিস্ট পার্টি তো বুর্জোয়া পার্টির মতো এক নেতা বা এক নেত্রীর দল নয়। অসংখ্য পার্টি সভ্যের বাইরেও বিশাল অংশের কর্মী সমর্থক আছেন, যারা আমাদের পার্টির ভিত্তি। তাই সবার মতামত জানাটা জরুরি।
কিন্তু আমাদের যে মতই থাকুক না কেনো, আমরা কোথায় আলোচনা করবো, কিভাবে আলোচনা করবো এবং সর্বোপরি কোন উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে করবো - এটাও কমিউনিস্ট পার্টির একজন কর্মীর কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আমাদের গঠনমূলক আলোচনা সংগঠনকে লড়াইয়ের রাস্তা খুঁজতে সাহায্য করবে, নাকি রাস্তায় ধাক্কা মেরে সংগঠনকে ফেলে দেওয়ার জন্য হবে? আমাদের সমালোচনা কি সংগঠনের আত্মবিশ্বাস বাড়াবার রাস্তা খোঁজার জন্য, নাকি সংগঠকদের আত্মবিশ্বাস আরও দুর্বল করার জন্য?
সবাইকেই ভাবতে হবে।
সমালোচনা ও আত্মসমালোচনা দুটো পায়ের মতো। দুটোই সমান হতে হয়। একটা সামান্য ছোট, একটা সামান্য বড় হলে যেমন দৌড়ানো যায়না, তেমনই সমালোচনা আর আত্মসমালোচনা পরস্পরের হাত ধরে না চললে সঠিক মূল্যায়ন করা যায় না।
নেতারা যদি ভাবেন কর্মীরা বাড়ি বাড়ি যায়না তাই এই হাল - তাহলে প্রকৃত কারণ বেরোবে না। আবার কর্মীরা যদি ভাবেন, নেতারাই সব সমস্যার মূল, তাহলেও গোলকধাঁধা থেকে বেরোনোর রাস্তা পাওয়া যাবেনা। কমিউনিস্ট পার্টিতে নেতা-কর্মী আলাদা হয় না। প্রত্যেক কমিউনিস্ট একই সাথে নেতা, একই সাথে কর্মী। পার্টির সাধারণ সম্পাদক পার্টির নেতা, আবার কেন্দ্রীয় কমিটি তাঁকে যে দায়িত্ব দেয়, তা পালন করার প্রশ্নে তিনি কর্মী। তিনি দায়বদ্ধ সমগ্র সংগঠন ও আন্দোলনের প্রতি। একইভাবে বুথের একজন কমরেড জনগণের নেতা, কারণ জনগণকে তিনি সচেতন করার কাজ করেন, লড়াইয়ে নেতৃত্ব দেন। আবার তিনি জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ, মানুষকে উত্তর দিতে হয়, পার্টির সিদ্ধান্ত মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব পালন করেন। মানুষের বিপদে আপদে যদি তিনি ঝাঁপিয়ে পড়েন, তবেই মানুষ তাকে নেতা মনে করেন। কমিটি সদস্যর স্ট্যাম্প পড়লেই নেতা হওয়া যায় না - এটা সংগঠনের সব স্তরের জন্যই সত্য।
তাই নেতা-কর্মীরা সবাই নেতা, সবাই কর্মী। তবে যাদের ওপর দায়িত্বভার যত বেশি, তাদের দায়িত্ব পালনেও অনেক বেশি দায়বদ্ধতা ও বুদ্ধিমত্বার পরিচয় দিতে হয়। সবার অংশগ্রহণে কমিউনিস্ট পার্টি চলে। তবে এটাও ঠিক, কমিউনিস্ট পার্টি গড়া-ভাঙা, বিস্তার-সঙ্কোচনে দায়িত্বভার মূলত নেতৃত্বের। সেই দায়িত্ব নেতৃত্ব অস্বীকার করতে পারে না কখনোই।
তাই পারস্পরিক বোঝাপড়ার ভিত্তিতে দ্বান্দ্বিক পদ্ধতিতে পরিস্থিতির বস্তুগত পর্যালোচনা করতে হয়। সেটাই হোক। দ্রুততার সাথেই করা হোক।
প্রশ্নটা শুধু নেতাদের বয়স, সাহস বা কর্মীদের নিষ্ঠা, আন্তরিকতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনা, যদিও এগুলো গৌণ হলেও বিচার্যের বিষয় হতেই পারে। কিন্তু শুধু এই গুলোই কি মূল নিয়ন্ত্রকরূপে কাজ করে, আর বাকি সব অন্যান্য বস্তুগত বিষয়গুলো গৌণ? হয় কি সেটা?
ভাবুন, আরও ভেবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
একটা প্রশ্ন খুব উঠে আসছে - জোট করে লাভ কি? একলা চলো, যা হবে তা হবে।
জোটের রাজনীতিতে আমাদের যেতে হয়েছিল কেন আর প্রথম কবে? ১৯৬৭ র যুক্তফ্রন্টের সরকার। তৎকালীন পার্টি নেতৃত্ব যাদের সাথে জোট করেছিল, সেটা কি ঠিক করেছিল, না ভুল? জোটের শরিকই তো সরকার ফেলে দিয়েছিল। আবার তাদের নিয়েই ফের কেন ১৯৬৯ এর জোট? ভুল ছিল? আবারও তো তারাই যুক্তফ্রন্টের সরকার ফেলেছিল।
১৯৭১ সালের নির্বাচনে আবার যুক্তফ্রন্ট ভেঙে গেল। United Left Front যেখানে সিপিআই(এম) ছিল আর একটা United Left & Democratic Front। ফ্রন্টে দলগুলোর বিন্যাস বেশ অনেকটা পাল্টে গেল। সরকার করতে দেওয়া হ'লোনা। বিধানসভা ভেঙে দেওয়া হলো।
এরপর '৭২ এর নির্বাচন। কারচুপির নির্বাচন।
তারপর ১৯৭৭। জনতা দল দেশের সাধারণ নির্বাচনে জিতেছিল। যেসব রাজ্যে কংগ্রেস দল সাধারণ নির্বাচনে হেরেছিল, এইরকম ৯টা রাজ্যে বিধানসভা ভেঙে নতুন নির্বাচনের ব্যবস্থা করেছিল কেন্দ্রের তৎকালীন জনতা দলের সরকার। কংগ্রেস এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করলেও ১৯৭৭ সালের ৩০শে এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রের সিদ্ধান্তই বহাল রাখে।
ভোটের দিন ঘোষণা হয়। সিপিআই (এম) এর নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট, জনতা দলের সাথে আসন সমঝোতা করার জন্য ৫২% আসন দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। জনতা দল ৫৫% আসন চাওয়ায় শেষ পর্যন্ত সমঝোতা হয়না। ভোটের ফল প্রকাশের পর দেখা যায়, বামফ্রন্ট ২৩১ টা আসনে এবং জনতা দল মাত্র ২৯টা আসনে জয়ী হয়।
আচ্ছা সেদিন জনতা দল যদি ৫৫% আসন নিয়ে সমঝোতা করে নিত, ইতিহাসের গতিধারাটা কি হ'তো? তার মানে কি প্রমোদ দাশগুপ্ত - জ্যোতি বসুর মতো বিচক্ষণ নেতারাও নিজেদের পক্ষে বিপুল জনসমর্থন ছিল, সেটা কি আঁচ করতে পারেন নি? জিতে গিয়েছিল বামফ্রন্ট বিপুল আসন নিয়ে, তাই আর এর বিচার করার প্রয়োজন হয়নি।
এগুলো হয় সংসদীয় রাজনীতিতে। সহজ সরলরেখার মতো রাজনীতির রাস্তা চলেনা।
এবার প্রশ্ন এই নির্বাচনে জোট কেন?
একদিকে একটা স্বৈরাচারী সরকার আর এক দিকে ফ্যাসিস্ট দানবের দাপাদাপি। কি করব আমরা? যদি আমাদের বামদের একার ক্ষমতা থাকতো এই দুই শক্তিকে হারিয়ে দেওয়ার, তাহলে তো কথাই ছিলনা। অবশ্য তাহলেও অন্য সব স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদ বিরোধী শক্তি গুলোকে জড়ো করার কাজটা করতেই হ'তো।
২০২১ এর ১লা মে আর ২রা মে'র পরিস্থিতি কি একই আছে? অনেকেই বলছেন - না নেই। কি রকম পাল্টেছে? কেউ বলছেন - ফ্যাসিস্ট পার্টির বিপদ কাটলো, ফ্যাসিস্টরা বাংলায় ঠাঁই পায়নি।
সত্যিই কি তাই?
বাংলার বিধানসভায় ১লা মে ২০২১ এ বিজেপির জেতা আসন সংখ্যা ছিল ৩। আর ২রা মে হ'লো ৭৭। বিজেপি এগোলো অনেক। 'লেসার এভিল'র আমলেই বিজেপি শূণ্য থেকে ৭৭ হয়েছে। বামফ্রন্টের ৩৪ বছরে কিন্তু এরা শূণ্যই ছিল।
কিন্তু একদল 'অতি বিপ্লবী বাম শক্তি'র কাছে, তখন বামফ্রন্ট বিরোধিতা ছিল প্রাথমিক কর্তব্য আর এখন 'লেসার এভিল' এর ১০বছরের আমলে বিজেপি শূণ্য থেকে ৭৭ হলেও, তৃণমূলই নাকি ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মূল শক্তি!
’শূন্য’ বলে এটাও মেনে নিতে হবে! যুক্তি তথ্য এ-সব মূল্যহীন হয়ে যাবে?
বামফ্রন্টের আমলে বরাবরের জন্য শূণ্য ছিল দক্ষিণপন্থী সাম্প্রদায়িক শক্তি। কেরালায় এইবারের নির্বাচনেও এরা শূন্য। কিন্তু সিপিআই(এম) এর চাইতে বেশি ভরসা যোগ্য তৃণমূল - এটা কোন যুক্তিতে গ্রহনযোগ্য?
'শূন্য' - তাই যুক্তি-তথ্য সব ভাঁড় মে?
হোক আলোচনা, যুক্তি তথ্যের। তার মধ্যে দিয়ে বের হোক রাস্তা। তবে বিতর্কটা রাস্তা বের করার জন্য অবশ্যই হতে হবে, গোলকধাঁধা তৈরি করা বা নিজের হতাশা অথবা রাগের বহিঃপ্রকাশের জন্য নয়।
ফ্যাসিস্ট শক্তি যখন বাড়ে, তখন ফ্যাসিবাদ বিরোধী শক্তি কি একে অপরের হাত ছাড়ে? নাকি আরও জাপটে ধরে? হোক আলোচনা।
দিমিত্রভ নিয়ে খুব আলোচনা হচ্ছে। আরও আলোচনা হওয়াই উচিত। নতুন করে পথ দেখাতে নিশ্চয়ই তা সাহায্য করতে পারে। কিন্তু দিমিত্রভ তো সব শক্তিকে এক করতে বলেছিলেন। একা একা ঢাল তরোয়াল উঁচিয়ে রে রে ক'রে তেড়ে গিয়ে, হেরে যাওয়ার তত্ত্ব শুনিয়েছিলেন নাকি?
আবার 'সব শক্তি' মানে যে কেউ? ১৯৩৫সালে ২রা আগষ্ট কমিউনিস্ট আন্তর্জাতিকের ৭ম কংগ্রেসের অধিবেশনে দিমিত্রভ কি বলেছিলেন তা এই স্বল্প পরিসরে আলোচনা করা সম্ভব নয়। কিন্তু আমাদের সবারই আবারও নতুন করে পড়া ও অনুধাবন করার চেষ্টা করা দরকার - এই বক্তৃতায় যুক্তফ্রন্ট বিরোধীদের উদ্দেশ্যে তিনি কি কি বলেছিলেন। যদিও ফ্যাসিবাদ একই চেহারা বা কার্যক্রম নিয়েই সব সময় উপস্থিত হয় না।
আমরা সর্বপ্রথম ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সাথে আসন বোঝাপড়া করেছিলাম। বোঝাপড়া সম্পূর্ণ হয়েছিল বা সব মানুষের মধ্যে এই বোঝাপড়ার স্থায়িত্ব নিয়ে ধোঁয়াশা দূর করা গিয়েছিল, তা নয়। কিন্তু তা সত্বেও ২০০৯ পরবর্তী একমাত্র নির্বাচন যেখানে আমাদের ক্রমহ্রাসমান ভোট থমকে দাঁড়িয়েছিল।
২০১১ সালে বামফ্রন্টের প্রাপ্ত ভোটের হার ছিল ৪১.০৮%।
২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বামফ্রন্ট একা লড়ে পেয়েছিল ২৯.৯%। তবে ৪২ টি লোকসভা মানে ২৯৪ টি আসনেই লড়েছিল বামেরা।
২০১৬ সালে বামফ্রন্ট পেয়েছিল ২৬.২% ভোট। তবে ২৯৪ আসনের মধ্যে ২০২টি আসনে লড়েছিল বামফ্রন্ট। আর কংগ্রেসের ভোট ছিল ১২.২৫%। বাম-কংগ্রেস সব মিলিয়ে ৩৯% ভোট পেয়েছিল।
২০১৯ সালে দুঃখজনকভাবে কংগ্রেসের সাথে জোট হয়নি। পৃথকভাবে লড়ে বামেরা পায় ৬.৩৩% (২টি লোকসভা আসন বাদে, মানে ২৮০টা বিধানসভার আসনে লড়ে)। আর কংগ্রেস ৪২টি আসনেই এককভাবে লড়ে পায় ৫.৬৭%। এই দুই ভোট যোগ করলে হয় ১২%। বামফ্রন্ট ১টিও লোকসভা আসনে বা একটাও বিধানসভা আসনে জেতেনি। অর্থাৎ বামফ্রন্ট ২০১৯ সালেই 'শূন্য' হয়েছিল।
অর্থাৎ একা লড়ে ৩৯% ভোট নেমে আসে ১২% ভোটে।
২০২১ সালে কংগ্রেস এবং নবগঠিত ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের সাথে বোঝাপড়া করে লড়ে বামফ্রন্ট। এর মধ্যে বামফ্রন্ট লড়ে ১৬৫টা আসনে। ভোট পায় ৪.৬%। কংগ্রেস ৯২টি আসনে লড়ে ভোট পায় ৩%। আই এস এফ শেষ পর্যন্ত ৩৭ টি আসনে লড়ে ১ টি আসনে জয়লাভ করেছে। এই একটা আসনই সংযুক্ত মোর্চা পেয়েছে।
তাহলে ২০২১ নয়, ২০১৯ সালেই ’শূন্য’ ছিল বামফ্রন্টের বিধানসভার আসন সংখ্যা। ’শূন্য’ থেকে আর পিছনে যাওয়া যায়না, তাই আসন সংখ্যা একই আছে। ভোট শতাংশের বিচারে দেখা যাবে প্রায় সব বিধানসভা ক্ষেত্রেই ভোট সামান্য হলেও বেড়েছে। অনেক আসনে দ্বিগুণও হয়েছে। তবে ৫% হয়তো বা ১০/১১% হয়েছে। আবার কিছু আসনে কমেছে।
অর্থাৎ এক কথায় বললে - নতুন করে আর তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় ভোটার কোথাও আমাদের নতুন করে ছেড়ে যায়নি। বরং খুব সামান্য হলেও কিছু ভোটার ফিরে এসেছে।
উপরের এই অংশ হ'লো রূঢ় সত্য। আমার বা আমাদের কারোর পছন্দ হোক বা নাই হোক।
যদি সত্যিই আমরা কারণ খুঁজে পেতে চাই, পর্যালোচনা করতে হবে এই তথ্যের ওপর দাঁড়িয়েই। মনগড়া কথা মূল্যহীন।
প্রশ্ন উঠছে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টকে সাথে নিয়ে সংযুক্ত মোর্চা গড়ে লাভ কি হ'লো! এর পর্যালোচনা হবে নিশ্চয়ই। কিন্তু আলোচনার সময়ে আমাদের সবাইকেই ভাবতে হবে - প্রথমত সংযুক্ত মোর্চার হয়ে একটা আসন এই মঞ্চই জিতেছে এবং যে সব আসনে পূর্ণ সমঝোতা করে আইএসএফ লড়াই করেছে, সেগুলিতে আমরা ২০১৯ সালে লড়ে কত ভোট পেয়েছিলাম, আর এবার কত ভোট পাওয়া গেছে? এবার এইসব আসনেই ভোট বেড়েছে। যেমন ধরা যাক ভাঙ্গড়। এখানে লোকসভায় সিপিআই(এম) এর ভোট ছিল ১৬.২০। এবার ৪৫.১। পাশের কেন্দ্র ক্যানিং পূর্ব লোকসভায় ছিল ৩.৫৯%, আর এবার ২৯.৭৭%। অবশ্য ২০১১ সালের নির্বাচনের দীর্ঘ ১০ বছর বাদে এবার এই দুই বিধানসভা কেন্দ্রে মানুষ অনেকটাই ভোট দিতে পেরেছে।
পর্যালোচনা নিশ্চয়ই হবে সংযুক্ত মোর্চার ফল ও ভবিষ্যৎ নিয়ে, কিন্তু এক্ষেত্রে অবশ্যই সবারই নজর রাখতে হবে, বিপান চন্দ্রের কথায় - 'সুপ্ত সাম্প্রদায়িক মনোভাব' যেন কাজ না করে। ভোটের ফল প্রকাশের ৭২ ঘন্টার মধ্যেই একা একা পর্যালোচনা করে বলে দেওয়া যায় নাকি - এই পরীক্ষা ঠিক না ভুল হ'লো!
কমিউনিস্ট পার্টিতে ভোট সংক্রান্ত রণকৌশল নিয়ে বিতর্ক বরবারই হয়ে আসছে। ১৯৭৯ সালে জুলাই সঙ্কট অর্থাৎ জনতা দলের সরকারের ওপর থেকে সমর্থন তুলে নেওয়া ঠিক ছিল কি না, এ নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রীত্ব গ্রহন করা নিয়ে কম বিতর্ক হয়েছে নাকি? ২০০৪ সালে ৬১জন সাংসদ নিয়ে কি করবে দল - সেই বিতর্কও হয়েছে। ২০১৬ কংগ্রেসের সাথে বোঝাপড়া - কতদূর যাব, কোথায় থামবো, এই দোলাচলতা মানুষের আস্থা ভরসা অর্জনে নেতিবাচক ভূমিকা পালন করায় গতবার ভোটে জোট খারাপ করেছিল কি না, এই বিতর্কও চলেছে।
এই বিতর্ক যারা পার্টি সভ্য তারা পার্টির ভেতরে করেছে। দীর্ঘ সময় ধরেও অনেক বিতর্ক চলেছে। কোনও একটা মত গৃহীত হয়েছে। সেটা মেনে নিয়েই সবাইকে চলতে হয়। এটাই তো নিয়ম।
কংগ্রেসের দীর্ঘদিনের সাংসদ প্রয়াত মনোরঞ্জন ভক্ত'র একটা কথা এই প্রসঙ্গে মনে পড়ে গেল। তখন কংগ্রেসের সভাপতি পদ নিয়ে বিতর্ক চলছিল। কে হবেন - সীতারাম কেশরি নাকি সনিয়া গান্ধী। দীর্ঘদিন তর্ক বিতর্ক, খবরের কাগজের পাতা জুড়ে আলোচনা। অবশেষে সনিয়া গান্ধী সভানেত্রী হলেন। পরের দিন কলকাতা ফিরছি, বিমানে দেখা হ'লো মনোরঞ্জনদা'র সাথে। বললাম তাহলে সমস্যা-ঝড়- ঝঞ্জাট সব মিটে গেল তো! একটু হেসে বললেন - তোমাদের আর আমাদের পার্টি সংগঠনের কার্যধারা প্রায় একইরকম, সামান্য একটু তফাৎ ছাড়া। আমাদের পার্টিতে বাইরে গরম গরম বিবৃতি, প্রকাশ্যে তীব্র বিতর্ক হয়, তারপর AICC অধিবেশনে গিয়ে সবাই একমত। আর তোমাদের পার্টিতে ভেতরে তীব্র তর্ক বিতর্ক হয়, বাইরে এসে সবাই একমত।
কমিউনিস্ট, অকমিউনিস্ট, কমিউনিস্ট বিরোধী সবাই জানে, এটাই কমিউনিস্ট পার্টির কাজের ধারা।
বুথে, ওয়ার্ড/পঞ্চায়েত ভিত্তিক কমিটিতে সব কর্মী সমর্থকদের নিয়ে সভা করে আমাদের ধৈর্য্য ধরে তাদের কথা শুনতে হবে। এটা না হ'লে সাধারণ কর্মী সমর্থকেরা কোথায় তাদের মতপ্রকাশ করবেন? এটা হয়না অনেক ক্ষেত্রেই, তাই চায়ের দোকানে, ক্লাবে আর আজকাল ফেসবুকের দেওয়ালে এদের অনেকেই মতপ্রকাশ করছেন।
আবার ভোটের ফলপ্রকাশের দিনই সন্ধ্যায় মতপ্রকাশ করতে হবে, যখন সব বুথ কেন, সব বিধানসভা কেন্দ্রের ফল হাতে এসে পৌঁছায় নি - এতে কি বস্তুনিষ্ঠ পর্যালোচনা করা কারোর পক্ষেই সম্ভব? কিছু কথা বলে হয়ত নিজের জ্বালা যন্ত্রণার সাময়িক উপশম হতে পারে, কিন্তু কাজের কাজ কিছু কি হয়?
কেন আমরা পর্যালোচনা করি? নিজেদের ত্রুটিগুলো চিহ্নিত করার চেষ্টা কেন করি? এগুলো কাটিয়ে তোলার জন্য, নাকি শত্রুদের খুশির রশদ যোগানোর জন্য? আমাদের রণকৌশল পর্যালোচনা করি কেন? সঠিক লাইন নিরূপণ করার জন্য, নাকি শত্রুদের মুখে হাসি ফোটাবার জন্য?
ভাবতে হবে তো এগুলোও। ওঠ ছুঁড়ি তোর বিয়ে বলে ছুট দিলেই হ'লো! কার সাথে বিয়ে, পাত্র কি করে, পরিবার কেমন, থাকে কোথায় - এসব না জেনেই দাও ঝাঁপ। পরিবারেও এটা চলে না, রাজনীতিতে চলে না।
রাজ্যের ভোট পরবর্তী পরিস্থিতি কি? অসংখ্য কমরেড আক্রান্ত। বাড়ি ছাড়া হচ্ছে। সর্বস্ব লুঠ হচ্ছে। রক্তাক্ত হচ্ছে। প্রশাসন নীরব দর্শক বা মদতদাতার ভূমিকায়। মূখ্যমন্ত্রী নিজের দায় ঝেড়ে ফেলেছেন, নির্বাচন কমিশনের হাতে ক্ষমতার অজুহাত দিয়ে। যারা সোশ্যাল বা কর্পোরেট মিডিয়ায় পার্টির মুন্ডুপাত করতে নেমে পড়লেন বিদ্যুৎ গতিতে, তারা একবারও প্রশ্ন তুললেন না কেন - আইনশৃঙ্খলা না হয় নির্বাচন কমিশনের এক্তিয়ারে, কিন্তু তৃণমূলের ঝান্ডাধারী যারা হিংসায় উন্মত্ত হয়ে লুঠ পাট, ভাঙচুর চালাচ্ছে - তারা তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক্তিয়ারেই। তাদের আটকাতে কড়া বার্তা না দিয়ে ১০৮ ঘন্টা চুপ করে থেকে, এই হিংসা চালিয়ে যেতে দিলেন কেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? এখনও এই সন্ত্রাস চলছে কেন?
সোশ্যাল বা কর্পোরেট মিডিয়ায়, যে যেখানে সুযোগ পেয়েছেন এই প্রশ্নটা প্রকাশ্যে করতে এদের অনেকের অনীহা দেখা গেল কেন? কিন্তু পার্টির বিরুদ্ধে প্রবল যৌক্তিক বা অযৌক্তিক সমালোচনা প্রকাশ্যে করাটাই তাদের কছে অগ্রধিকার পেল কেন? এটা ঠিক বোঝা গেল না।
এই সমালোচনা পর্যালোচনা করার জন্য তো অনেক সময় পরেই রয়েছে। সবার আগে তো সর্বস্বান্ত হওয়া আক্রান্ত কর্মীদের পাশে দাঁড়াতে হয়।
এই বিষয়েও আবার অনেকে হৈ হৈ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় বলতে শুরু করে দিলেন - পার্টি কোথায়, পার্টি নেতৃত্ব কোথায়? এর বড় অংশই খুব ভীষণ উদ্বেগ থেকেই এসব কথা পোস্ট করেছেন, সন্দেহই নেই। আক্রান্ত কমরেডদের খবর পেয়েই ছটফট করেছেন কমরেডসুলভ অনুভূতি নিয়েই। আবার কিছু বাম ছদ্মবেশ নিয়ে, আক্রমণকারীদের সমালোচনা বা তাদের হিংস্ররূপ তুলে ধরার চাইতে পার্টি ও নেতৃত্বদের মুন্ডুপাত করতেই ব্যস্ত হয়ে পরল।
২য় ধারার লোকদের চিহ্নিত করা দরকার, এদের কুৎসার জবাব দেওয়া দরকার। আবার আমাদের অসংখ্য কর্মী সমর্থকদের কমরেডসুলভ অনুভূতি থেকে প্রকাশিত উদ্বেগকে যথাযথ মর্যাদা দিয়েই বিভিন্ন জায়গার সঠিক পরিস্থিতি সম্পর্কেও অবগত করা দরকার। গণশক্তি পত্রিকা বাদে কোথাও তো বাম কর্মী সমর্থক আক্রান্তদের নিয়ে খবরও হয় না, আর তাদের পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগের খবরও প্রচারিত হয়না। তাই অনেকে তথ্যহীনতার কারণে অথবা ভুল তথ্যের জন্য পরিস্থিতির মূল্যায়ন করে উঠতে পারেন না।
উচ্চতর কমিটিগুলোর দায়িত্ব আছে যথাসম্ভব সোশ্যাল মিডিয়ায় ও পার্টির মুখপত্রগুলিতে প্রকৃত পরিস্থিতি তুলে ধরার। আবার বামপন্থী কর্মী সমর্থকদেরও দায়িত্ব আছে গুজব নয়, সঠিক সংবাদের ভিত্তিতে আক্রান্তদের প্রতি পার্টির দায়িত্ব পালনে ফাঁকগুলো তুলে ধরা এবং শত্রুর হিংসাত্মক আক্রমণের স্বরূপ উন্মোচন করার।
এত কঠিন ও প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখোমুখি কোনওদিনই হতে হয়নি বাংলার কমিউনিস্ট আন্দোলনকে। এত কঠিন পরিস্থিতিতে নির্বাচন লড়ার অভিজ্ঞতাও নেই বাংলার বর্তমান বাম নেতা কর্মীদের অধিকাংশেরই।
প্রথমত ২০১৬ সালের নির্বাচনের পর থেকেই কর্পোরেট সংবাদমাধ্যম বামদের সম্পূর্ণ বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়ে চলেছে। আজকের পৃথিবীতে সংবাদমাধ্যম কতটা প্রভাবশালী সেটা আমাদের সকলেরই জানা। ক্রমাগত অসত্য নির্মাণ করে, তাকেই সত্য বলে প্রতিষ্ঠা করার কাজে অনেকটাই সফল তারা। বিজেপির ছিল ৩ জন বিধায়ক আর বাম কংগ্রেসের সম্মিলিত বিধায়ক ছিল ৩২+৪৪=৭৬। কিন্তু লাগাতার প্রচার চলল বাম-কংগ্রেস শেষ, বিজেপিই মূল বিরোধী শক্তি। হিটলারের প্রচার সচিব গোয়েবলস এর সেই তত্ত্ব - একই অসত্য বার বার বলো, সেটাই সত্য বলে প্রতিভাত হবে।
দ্বিতীয়ত লাগাতার ধর্ম-জাত- ভাষার নামে মানুষকে ভাগ করার চক্রান্ত চালালো বিজেপি-তৃণমূল দুই দলই। এই নির্বাচনের প্রাক্কালে মেরুকরণ কতটা প্রবল হয়েছে, সেই ছবি ধরা পড়েছে সম্প্রতি প্রকাশিত Lokniti-CSDS পরিচালিত এক ভোট পরবর্তী সমীক্ষায়।
২০১৬ সাল থেকেই প্রতিযোগিতামূলক সাম্প্রদায়িকতায় হৈ হৈ করে নেমে পড়েছিল তৃণমূল ও বিজেপি। ফল কি হ'লো? তারা আপাতভাবে এই মেরুকরণের রাজনীতিতে সাফল্য পেলো । ২০১৬ - ২০১৯ - ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত ৩টে নির্বাচনে তৃণমূল মুসলমান সম্প্রদায়ের ভোট পেয়েছে যথাগক্রমে ৫১%,৭০% ও ৭৫%। হিন্দু সম্প্রদায়ের ভোট প্রাপ্তি যথাক্রমে ৪৩%, ৩২% ও ৩৯%।
অপরদিকে বিজেপি এই মেরুকরণের ফায়দা তুলেছে কিভাবে? ২০১৬, ২০১৯ ও ২০২১ সালে হিন্দু সম্প্রদায়ের ভোট প্রাপ্তি হয়েছে ১২%, ৫৭% ও ৫০%। অপরদিকে মুসলমান সম্প্রদায়ের ভোট পেয়েছে ৬%, ৪%, ৭%।
এই ভোট ধর্মীয় সম্প্রদায়গতভাবে কতটা বিভক্ত হয়েছে, তা বোঝা যায় এই সমীক্ষা থেকে। অর্থাৎ হিন্দু, মুসলমানদের থেকে বাঁচতে গেলে বিজেপি করো, আর মুসলমান, হিন্দুদের থেকে বাঁচতে গেলে তৃণমূলকে ভোট দাও।
অথচ সাধারণ হিন্দু বা সাধারণ মুসলমান কেউই কারোর কাছে বিপদ নয়। প্রকৃত বিপদ মূল্যবৃদ্ধি, ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব, দুর্নীতি ইত্যাদি মূল বিপদগুলিকে আড়াল করে, কল্পিত বিপদকে মুল বিপদ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করলো বিজেপি, তৃণমূল ও কর্পোরেট সংবাদমাধ্যম।
তাবলে ২৬শে নভেম্বর, ৮ ই ডিসেম্বর শ্রমিক ও কৃষকদের দাবীতে ধর্মঘট, মহিলাদের আইন অমান্য, ছাত্র-যুব দের কর্মসংস্থান নিয়ে আন্দোলন এই সব কি কোনও প্রভাবই ফেলতে পারেনি নির্বাচনী লড়াইয়ে?
এক কথায় হ্যাঁ অথবা না বলা মুস্কিল। যদি নাই ফেলে থাকে তাহলে তীব্র মেরুকরণের এই আবহেও নির্বাচনী সমর্থন না কমে, সামান্য হলেও বাড়লো কেন? আবার যদি প্রভাব বিস্তার করেই থাকে রুটি রুজির লড়াই, তাহলে নির্বাচনে তার প্রতিফলন এত সামান্যই বা কেন? তাহলে বৃহত্তর বিষয়বস্তু নিয়ে প্রচার আন্দোলন ও ধর্মঘটের প্রভাব শুধু লড়াইতেই আটকে যাচ্ছে কি? নির্বাচনে ভোট পাওয়ার জন্য মানুষের ভরসা অর্জনে কাজে কি লাগানো যাচ্ছে না?
এর বস্তনিষ্ঠ পর্যালোচনা করেই রাস্তা বের করতে হবে। যুক্তিহীন আবেগ সর্বস্ব আলোচনা বা আলটপকা মন্তব্য করে, যে যার নিজের গায়ের ঝাল মেটাতে পারে, কিন্তু আগামী দিনগুলোতে রুটি রুজির লড়াইকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া বা নির্বাচনে তার প্রতিফলন ফেলতে কোনও সাহায্য করতে পারে কি?
ভাবুন। মাথা ঠান্ডা করে পর্যালোচনা করুন বস্তুনিষ্ঠ ভাবে - রাস্তা বেরোবেই, যদি আমরা আন্তরিক থাকি রাস্তা খোঁজায়।
ফল প্রকাশের ৮ ঘন্টা বা ১০৮ ঘন্টার মধ্যে একা একা পর্যালোচনা করা যায় না। সমগ্র নির্বাচনী সংগঠনকেই এই আলোচনায় টেনে নিয়ে আসতে হবে। নির্বাচনী সংগঠন শুধুমাত্র ২/৪জন নেতা নিয়ে গড়ে ওঠেনা, অসংখ্য সাধারণ কর্মী সমর্থকদের অংশগ্রহণে গড়ে ওঠে এই সংগঠনিক ব্যবস্থা। তাই সবার মতামত জানতেই হবে আমাদের।
এই কাজ শুরু হয়েছে জেলা স্তরে। ক্রমশ বুথ স্তুর পর্যন্ত এই কাজ দ্রুততার সাথেই করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
কিন্তু আজকের এই দুর্বিসহ পরিস্থিতিতে কি শুধু ঘন্টার পর ঘন্টা আলোচনাই হতে থাকবে, আর বাকি কাজ বন্ধ থাকবে? তা হতে পারে না।
আক্রান্ত বিপর্যস্ত কর্মী সমর্থকদের পাশে দাঁড়াতেই হবে। একাজ হচ্ছে। আরও গতি আনতে হবে। সাথে সাথে তৃণমূলের প্রকৃত স্বরূপ তুলে ধরতে হবে। ভোট পরবর্তী হিংসাকে সাম্প্রদায়িক হিংসায় রূপান্তরিত করার সুগভীর চক্রান্ত চলছে। বিজেপি তৃণমূল দুজনেই এই কাজ করছে হাতে হাত মিলিয়ে। ৭৭ জন বিধায়ক থাকায়, সব ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রবল মেরুকরণের কাজ চালাবে এরা।
কোভিড আক্রান্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতেই হবে। পরাজয়ের তীব্র যন্ত্রণাকে পাথরের মতো বুকে চেপে ধরেই কাজ করে চলেছে রেড ভলান্টিয়ার বাহিনী। করুণার দৃষ্টিতে সমাজসেবা নয়, অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সাথে সাথে, কারা জনগণের এই অসহায়তার জন্য দায়ী, সেটা তুলে ধরাও আমাদের আবশ্যিক কাজ। সবার জন্য বিনামূল্যে টিকা করণ, হাসপাতালে পর্যাপ্ত শয্যা, অক্সিজেন ইত্যাদির দাবীতে লড়াই আর সাথে সাথে অসহায় মানুষের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতেই হবে।
মানুষের হাত ধরেই তো রাস্তা খোঁজা আর ঘুরে দাঁড়াবার শক্তি অর্জন করতে পারা যায়। কোনো শর্টকাট রাস্তা নেই। মানুষকে নিয়ে মানুষের জন্য লড়াই - তার মধ্যে দিয়েই তো এগোতে হবে। শূণ্য থেকে শুরু করার আর কি কি রাস্তা আছে আলোচনা হোক, সাথে কাজগুলোও চলুক।