সৌভিক ঘোষ
সক্রেটিসের কথা মনে পড়ে
দুনিয়াজুড়ে এযাবৎকাল অবধি যত ভূমিকম্প হয়েছে তার চেয়েও বেশি প্রভাবশালী আর কী হতে পারে?
না, আমরা জোসেফ ম্যাজিনি’র কথা বলছি না। এমন একজন মানুষ আমার সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন যিনি গত চল্লিশ বছরে ইউরোপের মাটি কাঁপিয়ে দিয়েছেন। যুক্তিবোধ, দূরদৃষ্টি ও বাস্তবসম্মত রণনীতির মাধ্যমে উদ্ধত জাতিসমুহের অহংকার ও ক্ষমতাসীন প্রতারকদের জন্য তিনি এক চলমান আতংক।
বার্লিনের ছাত্র হয়েও হেগেলীয় দর্শনের সবচেয়ে কট্টর সমালোচক। ইউরোপের অর্ধেকেরও বেশি ভূখণ্ড থেকে বিতাড়িত হয়েছেন, একটা লম্বা সময় ধরে এরই প্রজ্ঞা, পরামর্শে শ্রমজীবীদের আন্তর্জাতিক সমর্থ হয়েছে। নিউ ইয়র্ক ট্রিবিউনে তার লেখা নিয়মিত কলাম আমেরিকান পাঠকদের মধ্যে ইতিমধ্যেই জনপ্রিয়।
হ্যাঁ, কার্ল মার্কসেরই কথা বলছি। মার্কস ক্যাপিটাল লিখেছেন।
ষাট বছর বয়স পেরিয়েছে, মাথাভর্তি সাদা চুল আর মুখঢাকা ঘন দাড়ি-গোঁফ- এসবের বাইরে নিজের চেহারা নিয়ে তিনি উদাসীন। তার সামনে দাঁড়িয়ে আমার সক্রেটিসের কথা মনে পড়ছিল।
সেই বিকালের স্মৃতিতে এমনই লিখেছিলেন জন স্যুইন্টন।

স্যুইন্টনের স্মৃতিকথা
জন স্যুইন্টনের জন্ম হয়েছিল স্কটল্যান্ডে। স্যুইন্টন পরিবার আমেরিকায় বসবাস করতে শুরুর সময় তিনি শিশু। পিতার মৃত্যুর পরে তেরো বছর বয়সে ছাপাখানায় অ্যাপ্রেন্টিস শ্রমিক হিসাবে যুক্ত হলেন। দুবছর পরে কাজের খোঁজে কানাডায় চলে যেতে হয়। সেখান থেকে আমেরিকায় ফিরে প্রথমে উইলিস্টন নরথ্যাম স্কুল, পরে নিউ ইয়র্ক মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন, অবশ্য পড়াশোনা শেষ করতে পারেননি। আমেরিকায় দাসপ্রথার অবসানের আন্দোলনে যুক্ত হন, সেই থেকে লেবর রাজনীতির সঙ্গে তার জড়িয়ে পড়া।
১৮৬০ নাগাদ নিউ ইয়র্ক টাইমসে্ ঔষধ প্রসঙ্গে একটি প্রতিবেদন লেখেছিলেন, সে লেখাই তাকে সুপরিচিতি দেয়। ঐ কাগজেই অন্যতম সম্পাদক হিসাবে যুক্ত হন, পরে মুখ্য সম্পাদক হয়েছিলেন। নিউ ইয়র্কের ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনে তার বিশেষ ভূমিকা ছিল। ১৮৭৫ থেকে নিউ ইয়র্ক সান পত্রিকায় সম্পাদক হিসাবে লেখা শুরু করেন।
কিছুদিনের মধ্যেই নিউ ইয়র্ক সান পত্রিকা হয়ে ওঠে আমেরিকায় সর্বোচ্চ প্রচারিত সংবাদপত্র।
১৮৮০ নাগাদ জন ইউরোপ ভ্রমনে বেরোন, সঙ্গী ছিলেন তার স্ত্রী। উদ্দেশ্য ইউরোপের হালহকিকতের খোঁজ নেওয়া আর বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গের সাক্ষাৎকার গ্রহণ। প্রথমে ফ্রান্স পরে ইংলন্ড- মোট চল্লিশদিনের যাত্রা। লন্ডনে এসে খবর জানলেন মার্কস রীতিমত অসুস্থ। কিছুদিনের জন্য সমস্ত কাজ বন্ধ রেখে সমুদ্রতীরবর্তী এলাকায় বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। মার্কস পরিবার তখন র্যামসগেট এলাকায় অস্থায়ীভাবে একটি বাড়ি ভাড়া করে বসবাস করছে।
জন র্যামসগেটে এসে উপস্থিত হলেন।
রেড টেরর ডক্টর
ফরাসি বিপ্লব গোটা পৃথিবীর সভ্যতার সামনে নতুন সম্ভাবনা তুলে ধরেছিল। মানুষ বুঝতে পারে মুক্তিযুদ্ধে শেষ অবধি জিতে যাওয়া অবশ্যই সম্ভব। যে প্রশ্নে জনসাধারনের মধ্যে সংশয় এবং মেধাবৃত্তিকারদের মধ্যে বিতর্ক শুরু হল তার মূল কথা- কোন পথে আসবে সেই কাঙ্ক্ষিত মুক্তি? মিলটন নিজের কবিতায় সম্ভাব্য পথের হদিশ দিলেন এই বলে– Better to reign in hell, than serve in heaven! অর্থাৎ শোষণের বিরুদ্ধে মানুষের লড়াই কোন ব্যাক্তিইচ্ছা নির্ভর বিষয় না, এ এক বস্তুগত সত্য, যতদিন শোষণ থাকবে– তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহও থাকবে।
এমন পরিবেশে শ্রেনি সংগ্রামের ময়দানে সর্বহারাকে একা করে দিতে, কথার ভারে ও ধারে তাদের গুলিয়ে দিয়ে নির্বীর্য করে তুলতে আসরে নামলেন একদল পন্ডিত। বাগ্মীতায় ভরপুর তাদের কথা শুনতে মানুষ ভিড় করতেন, সেই সুযোগকে ষোল আনার উপরে আঠারো আনা কাজে লাগিয়ে তারা প্রচার চালালেন রাজনীতি খুবই খারাপ ব্যাপার, আসল কথা হল অর্থনৈতিক বঞ্চনার অবসান ঘটানো। সুন্দর এবং সহজ কথায় এহেন প্রচারের আড়ালে লুকিয়ে রাখা সত্য একজনের কানে অশনি সংকেত দিল।
১৮৪৭ সালের ফ্রান্স, মার্কস তখন সেদেশের বাসিন্দা। পিয়ের জোসেফ প্রুধোঁ প্রকাশ করলেন ‘দারিদ্র্যের দর্শন’, ইংরেজিতে ফিলোজফি অফ পভার্টি। বইয়ের পাতায় পাতায় বর্ণনা দিলেন রাষ্ট্রের মূলোচ্ছেদ প্রয়োজন বটেই, তবে তা হবে ব্যাক্তি মানুষের সততা, যোগ্যতা এবং নৈতিকতার উপরে ভর করেই, রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে তুলে কিছুই হবে না কেননা পচে গলে যাওয়া সমাজব্যবস্থা মানুষকে এতটাই দুর্নীতিপরায়ণ করে তুলেছে যে সংঘবদ্ধ রাজনৈতিক সংগ্রামে কোনকিছুই বদলাবে না। এই বক্তব্যে প্রাচীন ঋষিদের বানীর ঝাঁঝ রয়েছে, অর্থনীতির নামে নৈরাজ্যের শাণিত উদ্দেশ্য রয়েছে এবং সবচাইতে বেশি যা আছে তা হল সর্বহারার শ্রেণি রাজনীতিকে অকর্মণ্য করে দেওয়ার রাজনীতি! মধ্যবিত্ত শ্রেনি নিজের সামাজিক অবস্থানের কারনেই চিরকাল দোদুল্যমানতায় আক্রান্ত, শোষণমুক্তির প্রতি তার আগ্রহ রয়েছে ঠিকই, কিন্তু নিটোল, গোলাপ বিছানো পথেই সেই মুক্তি আসা চাই বলে নিজেদের নির্বাক বাসনাকে তত্ত্বের মোড়কে জাহির করে তারা। অর্থাৎ একদিকে বুর্জোয়াদের ভোগসর্বস্ব জীবনের প্রতি মোহ আরেকদিকে নিপীড়িত, নির্বিত্ত মানুষের দুর্দশা দেখে ভয় ও বিদ্রোহের মেজাজে ভরপুর মধ্যপন্থী শ্রেনীচেতনা।
মার্কস সিদ্ধান্ত নিলেন মানব মুক্তির প্রকৃত দিশা নির্ধারণে যে দর্শনশাস্ত্র অপারগ, তাকে শেষ বিদায় জানানোর সময় এসেছে। যদিও প্রুধোঁর মতবাদের জবাবে মার্কস যা লিখলেন তাকে আরও কুড়ি বছর পরে প্রকাশিত ক্যাপিটালের দার্শনিক, অর্থনৈতিক চিন্তার ভ্রূণ বলা চলে। প্রুধোঁর ‘দারিদ্র্যের দর্শন’র বিরুদ্ধে ১৮৪৭ সালের জুলাই মাসে ফরাসি ভাষায় ব্রাসেলস এবং প্যারিস থেকে প্রকাশিত হল মার্কসের লেখা ‘দর্শনের দারিদ্র’, পভার্টি অফ ফিলোজফি। দুরমুশ করে দেওয়া হল মেধার মধ্যবিত্তি।
বিংশ শতাব্দিতে অর্গ্যানিক ইন্টেলেকচ্যুয়ালস'দের ভূমিকা ব্যখ্যা করতে গিয়ে আন্তোনিও গ্রামশি যা কিছু লিখেছেন বলা যায় তারই সুত্রপাত ঘটেছিল মার্কসের লেখায়।
১৮৪৮-৪৯ নাগাদ ইউরোপে একের পর একটি দেশে বিপ্লবের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে আর সেখানেই পৌঁছে গেছেন কার্ল মার্কস। বিপ্লবী পরিস্থিতি দুর্বল হওয়া মাত্রই সেখানকার প্রশাসন মার্কস’কে নিজেদের সীমানা থেকে বেরিয়ে যেতে বাধ্য করেছে। প্রথমে ফ্রান্স, তারপরে বেলজিয়াম, শেষে প্রুশিয়া সব জায়গা থেকে বিতাড়িত হয়ে মার্কস ইংলন্ডে এলেন, লন্ডনের বস্তি এলাকা সোহো’তে ঘরভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন। ১৮৭৪ সালে ব্রিটেনের বাসিন্দা হিসাবে নাম নথিভুক্ত করার আবেদন করলেন।
কিন্তু সে আবেদন মঞ্জুর হল না।
কেন?
স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের গোয়েন্দারা তাঁর নামে রিপোর্ট করেছিল। তাতে উল্লেখ ছিল- ইনি একজন কুখ্যাত জার্মান যিনি ইউরোপের সর্বত্র মানুষকে উত্তেজিত করে তোলেন। কমিউনিস্ট নীতি প্রচার করাই এনার কাজ। অন্য দেশে তো বটেই এই ব্যক্তি নিজের দেশ ও সেখানকার রাজার প্রতি আনুগত্য অবধি অস্বীকার করেছেন। এমন রিপোর্টের পিছনে একটি বই’র বিশেষ অবদান ছিল। ১৮৭১ সালে প্যারি কমিউনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে প্রকাশিত হয় ‘দ্য সিভিল ওয়ার ইন ফ্রান্স’। ঐ লেখার সুবাদে বুর্জোয়া সংবাদমাধ্যম মার্কস’কে নতুন পরিচিতি দিয়েছিল।
তৎকালীন ইউরোপ তাঁকে চিনল ‘রেড টেরর ডক্টর’ হিসাবে।
র্যামসগেটের সেই বিকাল
সমুদ্রের কাছাকাছি একটি ছোট ঘরে তখন মার্কস থাকছেন। ক্যান্সার আক্রান্ত প্রায় মুমূর্ষু অবস্থায় স্ত্রী জেনি ওয়েস্টফ্যালেনও তাঁর সঙ্গে রয়েছেন। জন যখন মার্কসের সাথে দেখা করলেন তখন মার্কসের দুই মেয়ে এবং জামাইরাও সেখানে উপস্থিত ছিল।
আলাপ আলোচনার সময় জন সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হয়েছিলেন মার্কসের গভীর প্রজ্ঞা ও সুবিস্তৃত জ্ঞানের অভিঘাতে। তিনি লিখেছেন - মানুষটি কথা বলেন রীতিমত মার্জিত আচরণে। তাঁর আলোচনার বিষয়বস্তু কখন যে পৃথিবীর একদিক থেকে আরেকদিকে পৌঁছে যায় তা খেয়ালে রাখা যায় না। তার যেকোনো বক্তব্যই রীতিমত সৃজনশীল এবং একইসাথে তীক্ষ্ণতম যুক্তিবোধে শাণিত, শুনলেই বোঝা যায় তাতে এতটুকু ফাঁকি নেই। সুগভীর প্রজ্ঞার সামান্যতম অহংকারটুকুও নেই, আলোচনার সময় তাঁর যাবতীয় শব্দচয়ন ভিক্টর হ্যুগোর মতোই সুন্দর।
এ সাক্ষাৎকারের পর্ব সকাল থেকে শুরু হয়েছিল। দুপুর গড়িয়ে বিকাল নেমে আসে। মার্কস কিছুটা ক্লান্ত, কিন্তু উৎসাহ কমেনি। তিনি জন'কে সমুদ্রের পাশে একসাথে হাঁটার প্রস্তাব দেন, সেভাবেই বাকি কথা হবে বলেও জানান।
জন এক কথায় রাজী হলেন।
তারা দুজন সামনে হাঁটছেন।
চার্লস লংগ্যুয়েট ও পল লাফার্গকে সঙ্গে নিয়ে জেনি আর লরা মার্কস’ও কিছুটা পিছনে হাঁটছেন। জেনি (কন্যা)-কে চার্লস লংগ্যুয়েটের সাথে বিবাহে প্রবল আপত্তি জানিয়েছিলেন। একসময় যার বিরুদ্ধে প্রবল যুদ্ধ করতে হয়েছে সেই পেটি বুর্জোয়া তাত্ত্বিক পিয়ের জোসেফ প্রুধোঁ’রই ভক্ত ছিলেন চার্লস লঙ্গুয়েট ও তৎকালীন ফরাসী সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আরও প্রমুখ কয়েকজন- সম্ভবত সে কারণেই? অথচ এরাই উঠতে বসতে নিজেদের মার্কসবাদী বলে চিহ্নিত করতেন। একসময় চার্লস’রা মিশরে সেনা অভিযানের সমর্থনে প্রকাশ্যে বিবৃতি অবধি দিলেন- এমন কাজকর্মে অস্থির হয়েই মার্কস লিখেছিলেন ‘আর যাই হোক, এটুকু অন্তত নিশ্চিত যে আমি মার্কস- মার্কসবাদী নই’। জেনি জানতেন স্বামীর রাজনৈতিক অবস্থানের প্রতি পিতা ভয়ানক হতাশ, তাই নিজের শরীরেও যে মায়ের মতোই ঘাতক ক্যান্সার হানা দিয়েছে সেকথাটুকু লুকিয়ে রেখেছিলেন। পল লাফার্গ মার্কসের কাছে ‘শিখতে’ এসেছিলেন, পরে মার্কসেরই আরেক কন্যা লরা’কে বিবাহের প্রস্তাব দিলে মার্কস না বলেননি। পল’কে নিজের অন্যতম পছন্দের ছাত্র হিসাবে ভালবাসলেও জানতেন, পল শেষ পর্যন্ত বাকুনিনপন্থী, নৈরাষ্ট্রবাদী। পল এবং লরা লাফার্গ একসাথে আত্মহত্যা করেছিলেন, এমন পরিণতি কি পল সম্পর্কে মার্কসের মতামতকেই মান্যতা দিল?
জনের স্মৃতিচারণায় রয়েছে সেই বিকাল বেলায় গোটা পৃথিবীর অবস্থা প্রসঙ্গে তাদের কথা শুরু হয়েছিল। তার থেকে কখনো মানুষ, কখনো তৎকালীন সময় আবার কখনো চিন্তাভাবনার ইতিহাস অবধি আলোচনা চলে যায়। তিনি উল্লেখ করেন - রাজনৈতিক শক্তি ও জনপ্রিয় গণআন্দোলন সম্পর্কে মার্কসের জানা নেই সম্ভবত এমন কিছু নেই। তার চিন্তাভাবনায় রাশিয়ার মেজাজ, জার্মানির মনন, ফ্রান্সের সক্রিয়তা এবং ইংল্যান্ডের ন্যায় অনড়, অটল থাকার ক্ষমতা সবই রয়েছে। আমাদের আলোচনার সময় রাশিয়ার প্রসঙ্গ এলে আমরা আশাবাদী মন্তব্য করছিলাম। জার্মানি সম্পর্কে আমাদের কথাবার্তার সবই ছিল দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গী সংক্রান্ত। ফ্রান্সের প্রশ্ন এলেই আমরা উদ্দীপ্ত হচ্ছিলাম। ইংল্যান্ড সম্পর্কে আমাদের গলার আওয়াজ বিষন্ন শোনাচ্ছিল।
সেদিন বিকালে মার্কস ও জন অনেকটাই হেঁটেছিলেন।
একসময় থামার সময় হল।
তখন প্রায় সন্ধ্যা হয়ে এসেছে।
তিনি নিছক কথা বলতে আসেননি, এক বিপ্লবীর সাক্ষাৎকার নিতে এসেছেন, অতএব কথা শেষ করতে হবে। দুনিয়া বদলে দেওয়ার দর্শন আবিষ্কার করেছেন যিনি তার প্রতি এক সাংবাদিকের শেষ কথা।
জনের প্রশ্ন - প্রাণের অস্তিত্ব, জীবনের চূড়ান্ত প্রমাণ কী?
কার্ল মার্কস তখনও সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। ঐ যেখানে বালিচরের সাথে জলরাশির সেই চিরায়ত নিরবচ্ছিন্ন লড়াই চলছে।
স্যুইন্টন নিশ্চিত নন, মার্কস আদৌ তার প্রশ্ন খেয়াল করেছেন কিনা। ভাবছেন কী বলবেন এবার, ঠিক তখনই শুনলেন....
মার্কস কী যেন বিড়বিড় করছেন!
আরেকবার ভালো করে শুনতে চেষ্টা করলেন।
এবার শোনা গেল-
সমুদ্রের দিকে চোখ রেখেই মার্কস বলছেন.... সংগ্রাম।
জনের বইতে লেখা রয়েছে মার্কসের সেই কথা।
‘জীবনের চূড়ান্ত প্রমাণ কী?
স্ট্রাগল।’
তথ্যসুত্রঃ
১) জন স্যুইন্টন’স ট্রাভেলসঃ কারেন্ট ভিউজ অ্যান্ড নোটস অফ ফর্টি ডেজ ইন ফ্রান্স অ্যান্ড ইংল্যান্ড; নিউ ইয়র্ক, জি ডবল্যু কার্লটন অ্যান্ড কোং, ১৮৮০
২) দ্য লাস্ট ইয়ার্স অফ কার্ল মার্কস, অ্যান ইন্টেলেকচ্যুয়াল বায়োগ্রাফি, মার্চেলো মুস্তো, ট্রান্সলেটেড বাই প্যাট্রিক ক্যামিলার, স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, ২০২০