সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো কয়লা শিল্পে তিনদিন ব্যাপি শ্রমিক ধর্মঘটকে সমর্থন জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে। পলিট ব্যুরো বলেছে যেভাবে দেশের কয়লাশিল্পকে কমার্শিয়াল মাইনিং’র নাম করে বিভিন্ন ব্যাক্তিগত মালিকানা এমনকি বিদেশি সংস্থার হাত তুলে দেওয়া হচ্ছে তা আসলে সরকারি কয়লা ক্ষেত্রকে বেসরকারিকরণের প্রথম ধাপ।
আমাদের দেশের স্বার্থে, এনার্জি ক্ষেত্রে স্বনির্ভর হতে সারা দেশে কয়লাখনির জাতীয়করণ করা হয়েছিল। মোদী সরকার কমার্শিয়াল মাইনিং’র নাম করে সেই সিদ্ধান্তকেই নস্যাৎ করে দিচ্ছে। এর ফলে আমাদের দেশের অর্থনীতি পুনরায় আত্মনির্ভরতা হারিয়ে দেশি-বিদেশি কর্পোরেট সংস্থার মুনাফা বৃদ্ধির এক স্ব-পরাধীন সংস্থায় পরিণত হবে।
দেশের প্রয়োজনে শক্তি উৎপাদন, স্টিল, অ্যালুমিনিয়াম, সার উৎপাদন এবং সিমেন্ট উৎপাদনে কয়লার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। রপ্তানির উপর নিয়ন্ত্রণ তুলে নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার কয়লা ক্ষেত্র বেসরকারিকরণের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতে দেশীয় সংস্থাগুলি ধুঁকতে শুরু করবে।
মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, ঝাড়খন্ড ইত্যাদি জায়গা সহ সারা দেশের ৪১টি কয়লাখনি বেসরকারি হাতে তুলে দেবার জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। এগুলির বেশিরভাগই জঙ্গল সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত হওয়ায় সেই সব এলাকায় পরম্পরাগতভাবে বসবাসকারী কোটি কোটি উপজাতি মানুষজনেরা উচ্ছেদ হবেন, তাদের জীবন-জীবিকা সংকটে পড়বে।
এধরণের বেসরকারিকরণের পদ্ধতির সাথে সাথেই শুরু হয়েছে পরিবেশ রক্ষা সম্পর্কিত নিয়মাবলি শিথিল করার কাজ। এর ফলে আগামী দিনে আরও বড় ধরণের বিপদের আশংকা তৈরি হবে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘোষনা করা সার্বিক লকডাউনের সম্পূর্ণ পরিকল্পনাবিহীন সিদ্ধান্তের ফলে সারা দেশে কোটি কোটি মানুষ কর্মহীন হয়ে চরম দুর্দশায় রয়েছেন সেই সময়ে তাদের বেঁচে থাকা নিশ্চিত করার কাজে মনোযোগ না দিয়ে নিজেদের আসল রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে বিজেপি সরকার মানুষকে শোষণ করার উপায়গুলি তীব্রতোর করতে সক্রিয় যার ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে শ্রমিক শ্রেণী।
দেশের স্বার্থ রক্ষায় কয়লাখনি বেসরকারিকরণের যাবতীয় সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যহার করার দাবী জানাচ্ছে সিপিআই(এম)’র পলিট ব্যুরো।
শেয়ার করুন