সর্বগ্রাসী ক্ষমতার লালসায় সিক্কার এপিঠ ওপিঠ - জয়দীপ মুখার্জী...

৭ ডিসেম্বর২০২১,রবিবার

পঞ্চম-পর্ব

‘দিন আনি, দিন খাই’ বামপন্থার অতো দায় নেই। রণনীতি, রণকৌশল, নির্বাচনী কৌশল, আশু লক্ষ্য, সুদূর প্রসারি লক্ষ্য, বিপ্লবের স্তর, রাষ্ট্র শক্তি এতো ভাবার অবকাশও নেই। একটা মারকাটারি সংলাপ, জোড়াতালি কোটেশন, শব্দের কয়েনেজে সোশ্যাল মিডিয়ার দেওয়াল ভরিয়ে দিতে পারলেই হিল্লে। ইতিহাসের শিক্ষা, শেষ পর্যন্ত এই ধরনের বামপন্থীরা সকলেই ‘পেটি বুর্জোয়া শ্রেণীর’ পরিত্যাজ্য চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের দোষে দুষ্ট। সম্প্রতি রাজ্যের ভবিষ্যত নিয়ে এমনতর বামপন্থীদের মধ্যে সিরিয়াস ভাবনার উদ্রেক লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কোনো সন্দেহ নেই, রাজ্যের স্বাস্থ্যের জন্য এটা অত্যন্ত শুভ লক্ষণ। একইসঙ্গে যেটা লক্ষ্যণীয়, এঁরা হরেদরে কর্পোরেট নিয়ন্ত্রিত মিডিয়া নির্মিত ২০১৯ উত্তর সেই তথাকথিত বাইনারিকে ভবিতব্য বলে জ্ঞান করছেন।

‘বামপন্থীরা তো কমে গিয়ে ৭ শতাংশ, অতএব সম্ভাবনায় নেই’, এই ভাষ্যেই আটকে আছেন। তাহলে যুযুধান ‘সম্ভাবনাময়’ রাজনৈতিক শক্তিগুলির মধ্যে কাকে বেছে নেওয়া যায়? তাঁদের সোজা সাপ্টা নিদান, যারা তুলনামূলক কম বিপজ্জনক, ‘লেসার এভিল’। অর্থাৎ, রাজ্যের ভবিষ্যৎকে নেতিবাচক দৃষ্টিকোণ থেকে মেপে দেখার চেষ্টা। এই অবিমৃষ্যকারী চিন্তার পরিণতি ভয়ঙ্কর। কেননা, এই নিদানের অগ্রপশ্চাত জুড়ে কেবল ফেলে আসা ফলাফল এবং ভোট-গণিতের আধিক্য। মেহনতি মানুষের জীবন জীবীকার সংগ্রামে কোন রাজনৈতিক দলের কেমন অংশগ্রহণ, দেশের অর্থনৈতিক-স্বার্বভৌমিকত্ব, ধর্মনিরপেক্ষতা রক্ষায় তাদের সংগ্রাম এবং সর্বোপরি, সংবিধানের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা ও ত্যাগের বিষয়ে চর্চা নেই। গণতান্ত্রিক কাঠামোয় আমজনতার অভিজ্ঞতার মূল্য অপরিসীম। কিন্তু দক্ষিণপন্থী শিবির বরাবরই তার মাধ্যমগুলিকে নানা ভাবে নিজের সপক্ষে মতামত নির্মাণে ব্যবহার করে। নেতিবাচক যে কোনো সিদ্ধান্তই তাদের সেই অভিপ্রায়ে ইতিবাচক ইন্ধন।

দেশের ধর্মনিরপেক্ষতা, সংবিধান এবং আর্থিক সার্বভৌমিকত্ব রক্ষার প্রশ্নে বিজেপি সবচেয়ে বড় বিপদ এব্যাপারে দ্বিমত প্রকাশের কোনো অবকাশ নেই। দলটির চালিকাশক্তি আরএসএস আপাদমস্তক ফ্যাসিস্ত আদর্শে বিশ্বাসী। হিন্দু সাম্প্রদায়িকতা ও পরিচিতিস্বত্তার মিশেলে বিভাজনের রাজনীতি কায়েম করা তাদের কৌশল। এই কৌশলে বিজেপি তাদের রাজনৈতিক হাতিয়ার। এই মুহুর্তে ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্রে রূপান্তর, হিন্দুত্বের বিস্তার এবং দক্ষিণ এশিয়ায় চরম দক্ষিণপন্থী সামরিক শক্তিধর এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়ে তুলতে তারা আগুয়ান। অর্থনীতির প্রশ্নেও নয়া উদারবাদী নীতির দ্রুত কার্যকর করতে বিজেপি বদ্ধপরিকর। সমস্ত রাষ্ট্রীয় সম্পদের বিলগ্নীকরণ ও সরকারি ক্ষেত্রের ঢালাও বেসরকারিকরণের প্রশ্নে দেশীয় কর্পোরেট লবির কাছে তারা অঙ্গীকারবদ্ধ।

দেশের ১৭ টি অঙ্গরাজ্যে নানা কৌশলে সরকারে বিজেপি। এরমধ্যে সাকুল্যে ৭ টিতে সরাসরি মানুষের জনাদেশ তাদের পক্ষে গেছে। বাকিগুলি হয় স্থানীয় কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সমঝোতা নয়তো, ভোটের পর ঘোড়া কেনা বেচা করে ক্ষমতা ভোগ। গত লোকসভা নির্বাচনে ‘ঘর মে ঘুস্‌ কর মারেঙ্গে’ এর তুঙ্গ জাতীয়তাবাদী যুদ্ধোন্মাদনা সাময়িক ফলদায়ক হলেও, দেশের সর্বত্র তাদের প্রভাব নিরঙ্কুশ নয়। কারণ মেহনতি মানুষের জীবন জীবীকার সঙ্গে সম্পৃক্ত সঙ্কটগুলির সূরাহায় তারা ব্যর্থ। বেকারি, অপুষ্টি, ক্ষুধা, গরিবী, আয়-বৈষম্য, কৃষক মৃত্যু, কৃষি সঙ্কট, নারী নির্যাতন, নোটবন্দীর ফলাফল ইত্যাদি আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে জনসাধারণের বিচার্য মূল সমস্যাগুলি সমাধানে আরএসএস-বিজেপি’র কোনও দায়বদ্ধতা নেই। জনহিতের স্বার্থে এই বিষয়গুলি নিয়ে যে কোনো ধরণের পরামর্শ ও প্রতিবাদের কন্ঠকে সব জায়গাতেই ফ্যাসিস্ত কায়দায় ‘দেশদ্রোহিতার আইনে’ অভিযুক্ত করে গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে দমন করতেই তারা সচেষ্ট। এর মোকাবিলায় মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা ও দাবি আদায়ের আন্দোলনে দেশের বাম-গণতান্ত্রিক-ধর্মনিরিপেক্ষ শক্তিগুলির ঐক্য’ই দীর্ঘ লড়াইয়ের এর শর্ত।

পশ্চিমবঙ্গে গত এক দশক সরকারে তৃণমূল কংগ্রেস। একটি আপাদমস্তক সুবিধাবাদী, নীতিহীন, হিংসাত্মক, দক্ষিণপন্থী, স্বৈরাচারি দল। দুর্নীতি, মিথ্যাচার, নৈরাজ্য এবং ধ্বংসাত্মক মনোভাবের প্রকাশ তাদের প্রতিটি কর্মকান্ডে। এক এবং একমাত্র আক্রমণের লক্ষ্য সিপিআই(এম) তথা বামফ্রন্ট এবং বামপন্থীরা। এই আক্রমণের নৃশংসতা একেক সময় সাতের দশকের আধা-ফ্যাসিবাদী সন্ত্রাসের সময়কেও পিছনে ফেলে দেয়। বিগত দশ বছরে এই ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসের পরিণাম, শহীদ হয়েছেন ২৫০ জন সিপিআই(এম) এবং বামফ্রন্টের অন্যান্য শরিক দলের নেতা ও কর্মী। শারীরিক ভাবে আক্রান্ত হয়েছেন লক্ষাধিক কর্মী। আক্রান্তদের মধ্যে সহস্রাধিক সারা জীবনের জন্য পঙ্গুত্বের শিকার হয়েছেন। রাজনৈতিক হিংসায় উন্মত্ত শাসক দলের গুন্ডাবাহিনী ঘরে ঢুকে পার্টি পরিবারের মহিলা সদস্যাদের ইজ্জতহানি ঘটিয়েছে। এরমধ্যে ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছেন শতাধিক। ৫০ হাজারেরও বেশি পার্টি কর্মী ও সমর্থকদের বাড়ি, ঘর, দোকান-পাট, চাষের জমি, ফসল, পাট্টা সহ রুজি-রুটির উৎস্যগুলো ধ্বংস করে নয়তো জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দেওয়া হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পুলিশ-প্রশাসন নির্লিপ্ত ভূমিকা পালন করেছে নয়তো, স্থানীয় বিবাদ বলে শাসক দলের অপরাধীদের আড়াল করেছে। রাজ্যের সমস্ত জেলায় হাজার হাজার পার্টি নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে সাজানো মামলা এবং কারারুদ্ধ করা হয়েছে। দিনের পর দিন বিনাবিচারে আটক করে রাখা হয়েছে। বছরের পর বছর নিষ্ক্রিয় রাজ্য মানবাধিকার কমিশন। শাসক দল ও রাজ্যপ্রশাসনের অপকর্মের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানোর সমস্ত সাংবিধানিক অফিসই একরকম অকেজো।

সরকারি পরিষেবা ও আইন-শৃঙ্খলার নিরিখেও দশ বছরে রাজ্যকে পশ্চাতমুখী করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। ক্রমবর্ধমান বেকারি, দারিদ্র্য, ক্ষুধা, গ্রামীন বেরোজগারি, স্বাস্থ্য পরিষেবায় বিভ্রাট, দুর্নীতি, স্বজন পোষণ, ঘুষ, নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, চুরি, ডাকাতি, রাহাজানি, কৃষক আত্মহত্যা, কেলেঙ্কারি সবকিছুতেই অতীতের রেকর্ড ছাপিয়ে একেবারে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির সমকক্ষ বা ঠিক ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে। সারদা-নারদা, গরু পাচার, কয়লা পাচার, সোনা পাচার, বিদেশে ব্যাঙ্ক বেআইনি অ্যাকাউন্ট, রাতারাতি শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীদের বিপুল সম্পদ, কেলেঙ্কারির শেষ নেই। সব কেলেঙ্কারিতেই অভিযুক্ত নেতা, মন্ত্রী থেকে একেবারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর নিকট আত্মীয়রা। এই সব কেলেঙ্কারিতে রাজ্যের পুলিশ আধিকারিক এবং পদস্থ আমলারাও অভিযুক্ত । আরও আশ্চর্যের বিষয় হলো, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির ভূমিকা। আদালতের নির্দেশে সমান্তরাল তদন্তের দায়িত্ব পেলেও সারা বছর তাদের কোনো দেখা নেই। ঠিক নির্বাচনের আগে জেরার জন্য হাঁকডাক করে উল্টে অভিযুক্তকেই শস্তা সহানুভূতি আদায় এবং পাল্টা রাজনৈতিক প্রচারের পরিসর করে দেওয়ার কৌশল।

কেন্দ্রের বিজেপি এবং রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেসের এ এক অদ্ভুত বোঝাপড়া। দলের নেতাদের কামাই নিয়ে সংঘাত হলে পরেই অন্য দলে গিয়ে সংশ্লিষ্ট নেতার বিরুদ্ধে খেউর করেন। এই যাতায়াত উভয় দিকে হলেও সম্প্রতি তৃণমূল থেকে বিজেপি’তে যাওয়ার ঝোঁকই বেশি। অভিযুক্তরা তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপি -তে গেলেই কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার আওতা থেকে রেহাই পেয়ে যাচ্ছেন। আর সঙ্গে সঙ্গেই তাদের বিরুদ্ধে জোরদার হচ্ছে রাজ্যের তদন্ত । দুই সরকারের এই কার্যকলাপে এটাই প্রমাণিত, অভিযোগের সারবত্তা আছে। পরিস্কার বোঝা যাচ্ছে, তদন্ত চলছে রাজনৈতিক ফয়দা মেপে। রাজনীতির এই দেউলিয়াপনার চালু পরিভাষাই কি ‘সেটিং’? কেননা, মমতা বিলক্ষণ জানেন শক্তির বহরে তাঁর দল বিজেপি’র কাছে চুনোপুঁটি। গিলে ফেলতে বেশি সময় লাগবে না। আর বিজেপি’রও দল গোছাতে তৃণমূল কে দরকার।

দু-দফা মোদী সরকারের জমানায় সংসদের উভয় কক্ষে রাজ্য থেকে নির্বাচিত তৃণমূল সাংসদদের ভূমিকাতেও দুতরফের বোঝাপড়া স্পষ্ট। রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রের বিলগ্নীকরণ থেকে শুরু করে ব্যাঙ্ক-বীমা বেসরকারিকরনের বাজেট, শ্রম আইন সংশোধন, কৃষি আইনসহ প্রতিটি জনবিরোধী পদক্ষেপেই তাদের কৌশলী সমর্থন। সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল, ধর্মীয় পরিচয় ভিত্তিক নাগরিকত্ব আইন প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ নীতিগত প্রশ্নে অস্পষ্ট অবস্থানে সরকারের বিরোধিতা নেই। ‘লেসার এভিলপন্থীরা’ অবশ্য এসব বিষয় তেমন গুরুত্ব দিতে নারাজ। মমতা ব্যানার্জীর রাজনীতিতে তো এটাই দস্তুর। কিন্তু দিনের শেষে ভোটযুদ্ধে তিনি বিজেপি’র প্রতিপক্ষ। এমনতর পোস্টে সোশ্যাল মিডিয়া ছয়লাপ। বলাই বাহুল্য, একমাত্রিক দৃষ্টিকোণ থেকে পুরো ব্যাপারটি বিচার করার অবকাশ না রাখাই ভালো।

প্রথমত, ‘লেসার এভিলপন্থীদের’ চেয়েও মমতা ব্যানার্জীর ব্যাপারে অনেক বেশি নিশ্চিন্ত খোদ বিজেপি’র রাজনৈতিক চালিকাশক্তি আরএসএস। তৃণমূল কংগ্রেস জমানায় রাজ্যে আরএসএস -এর বিস্তার দেশের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বাধিক, উত্তরপ্রদেশের পরেই। সিপিআই(এম) সহ বামফ্রন্টের কর্মীদের ওপর তৃণমূল কংগ্রেস ও পুলিশের একাংশের বেনজির হিংসাত্মক আক্রমণ, বাড়ি ছাড়া, এলাকা ছাড়া করা, মিথ্যা মামলায় ফাসিয়ে কারারুদ্ধ করা আদপে আরএসএস -এর বিস্তারের রাস্তা সুগম করেছে। সম্প্রতি আহমেদাবাদে আরএসএস -এর সর্বভারতীয় অধিবেশনে মোহন ভাগবতের উপস্থিতিতে এই নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়েছে। সাংগঠনিক বিস্তারে সকলেই সন্তুষ্ট। সুতরাং বিজেপি’র গরহাজিরায় অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের তরফে এমন সুবন্দোবস্ত থাকলে অসুবিধার কারন তো নেই। এর সুবিধার দিকটি হলো শ্রীবৃদ্ধি চট করে নজরে পড়ে না। দ্বিতীয়ত, আরএসএস তার আদর্শ প্রচারে নির্দিষ্ট কিছু কৌশল নিয়ে থাকে। হিন্দুত্ব, পরিচিতস্বত্তার বিভাজন এরাজ্যে সহজ ফলদায়ক নয়। তাই একেবারে গোড়া থেকে চরিত্র নির্মাণে মগজ ধোলাইয়ের আঁতুড়ঘর বানাতে প্রয়োজন ছিল সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা। তৃণমূল স্তরে শাখার বিস্তার, স্কুলের অনুমোদন, প্রশিক্ষণ শিবির মমতা ব্যানার্জী সাহায্যের দু-হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। একইসঙ্গে মমতার তোষামদের রাজনীতি ও কৌশলী সাম্প্রদায়িকতা তাদের কাজ সহজ করেছে। তৃতীয়ত, উগ্র জাতীয়তাবাদের প্রচার কৌশল এবং রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের চূড়ান্ত স্বৈরাচারি অপশাসন বিজেপি’র রাজনৈতিক জমি তৈরি করে দিয়েছে। মানুষ দিশেহারা হয়ে বিজেপি’কে বিকল্প ভেবে নিয়েছেন। ২০১৯ -এর নির্বাচনের ফলাফলেই সেটা স্পষ্ট। তাহলে কি জ্বলন্ত উনুন ছেড়ে ফুটন্ত কড়াইয়ে ঝাঁপ? একেবারেই ব্যাপারটা নেতিবাচক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার নয়।

বিকল্প আছে, বিকল্পের লড়াইও জারি আছে। ‘লেসার এভিলপন্থীরা’ অবশ্য ২০১৯ -এর সাধারণ নির্বাচনের ফলাফলেই আটকে আছেন। কর্পোরেট মিডিয়ার তৈরি করা বাইনারিই তাদের ভিশন। অচল সিক্কার আরেক পিঠ হাতড়ে বেড়াচ্ছেন। কেন দেখছেন না, শেষ বিধানসভা নির্বাচনে বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের অসম্পুর্ণ সমঝোতার ফলই তো ৩৬ শতাংশ। তাহলে পূর্ণ সমঝোতা তৈরি করা গেলে রাজ্যের ভোটে ফলাফল কী হতে পারে। তারপর গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রবাহে বামপন্থীদের ভুমিকা মানুষ দেখেছেন। ভোট-গণিতে তারও মূল্য আছে। মেহনতি মানুষের জীবন-জীবীকার সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রতিটি ইস্যুতে, লকডাউন পর্বে সরকার যখন খিল দিয়ে ঘরে বসে তখন কোভিড অতিমারি মোকাবিলা, আমফান দুর্যোগে সিপিআই(এম) সহ বামপন্থীকর্মীদের লড়াই, টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নিয়োগ, কর্মসংস্থানের দাবিতে এবং ধর্মীয় পরিচয়ভিত্তিক নাগরিক আইনের বিরুদ্ধে বামপন্থী ছাত্র-যুব সমাজের ত্যাগ ও প্রতিবাদ বিকল্পের পথে একেকটি মাইলস্টোন। এই গন-আন্দোলনের পথ বেয়েই বাম-গনতান্ত্রিক-ধর্মনিরপেক্ষ দল সমূহের ডাকা ২৮ ফেব্রুয়ারি’র ঐতিহাসিক ব্রিগেড সমাবেশের মঞ্চে তৈরি হয়েছে সম্ভাবনার তৃতীয় বিকল্প, সংযুক্ত মোর্চা। মানুষের জীবন-জীবীকা, ধর্মনিরপেক্ষতা ও গণতন্ত্রের ওপর আক্রমণের মোকাবিলায় এক সুদূরপ্রসারি হাতিয়ার। তাই প্রত্যয় দৃঢ় হোক, একটু পা চালিয়ে এগোই সবাই।

শেষ পর্ব .....





শেয়ার করুন

উত্তর দিন