রেগা: বিজেপি, তৃণমূল এবং বামপন্থীরা - চন্দন দাস

সেদিন বিধানসভায় মমতা ব্যানার্জি মুখ খোলেননি।
বলেছিলেন সূর্য মিশ্র এবং আনিসুর রহমান।
প্রসঙ্গ ছিল— রেগায় কাজের অধিকার সঙ্কোচনের বিরুদ্ধে সর্বদলীয় প্রস্তাবের উপর আলোচনা। দিনটি ছিল— ২০নভেম্বর, ২০১৪।
মোদী সরকারের প্রথম বছর। প্রথম বছরেই রেগার আইন পালটানোর উদ্যোগ নিয়েছিল বিজেপি-র সরকার। তার বিরুদ্ধে ২৬নভেম্বর সংসদ অভিযান করেছিল বামপন্থীরা। তার আগে অক্টোবর জুড়ে রাজ্যের গ্রামে গ্রামে চলছিল পদযাত্রা— শ্রমিক, কৃষক, খেতমজুরের।
সেই অবস্থায় বিধানসভায় সর্বদলীয় প্রস্তাবের উপর আলোচনা করেন সিপিআই(এম)-র পক্ষ থেকে দু’জন। সূর্য মিশ্র এবং আনিসুর রহমান।
রাজ্যের প্রাক্তন পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী সূর্য মিশ্র কী বলেছিলেন?
মিশ্র বলেন,‘‘গত বছর সাড়ে ৪কোটি মানুষ রেগায় কাজ পেয়েছিলেন। গড়ে গোটা দেশে ৪৫দিন কাজ হয়েছিল। তার ভিত্তিতেই এবার ধরে নেওয়া হয়েছিল যে, গোটা দেশে ১০০দিনের কাজের প্রকল্পে ৬৪হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন হবে। কিন্তু চলতি আর্থিক বছরে কেন্দ্রীয় সরকার এই প্রকল্পে ৩৩হাজার কোটি টাকার সংস্থান রেখেছেন। কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়েছে লেবার বাজেট কত ছাঁটাই হবে। ৬৪হাজার কোটি টাকার চাহিদা। আর ৩৩হাজার কোটি টাকার সংস্থান! কোনও আশঙ্কা নয়, নথিতেই ফল পাওয়া যাচ্ছে।’’ মিশ্র মনে করিয়ে দিয়েছিলেন,‘‘একই কেন্দ্রীয় সরকার এবার ৫লক্ষ কোটি টাকা কর্পোরেট ক্ষেত্রকে ট্যাক্স ছাড় দিয়েছে। এর কারণ কী?’’
সেদিন বিধানসভায় বিজেপি-র পক্ষ থেকে ভাষণ দিয়েছিলেন শমীক ভট্টাচার্য। তৃণমূলের কোনও বিধায়ক সেদিন বিজেপি-র বক্তব্যের বিরোধিতা করতে পারেননি। তাদের বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করে রাজ্যের গ্রামীণ শ্রমজীবীদের দুর্দশার পরিপ্রেক্ষিতে একশো দিনের কাজের গুরুত্ব, মোদী সরকারের কর্পোরেটকে খুশি রাখার অর্থনীতির কথা তুলে ধরেছিলেন বামপন্থীরাই।
সেদিন রাজ্যের আর এক প্রাক্তন গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী আনিসুর রহমান বিধানসভায় বলেছিলেন, ‘‘১০০দিনের কাজের আইন বামপন্থীদের সমর্থনে ২০০৫সালে সংসদে আইন হিসাবে গ্রহণ করা হয়েছে। সংবিধান স্বীকৃত আইনকে পালটে দেওয়ার বিরুদ্ধে আমাদের প্রয়োজন হলে সর্বদল নিয়ে দিল্লিতে যেতে হবে।’’
মমতা ব্যানার্জি তেমন কোনও উদ্যোগ নেননি। কারণ— রেগার টাকার দাবি তাঁর কাছে বরাবরই একটি সঙ্কীর্ণ রাজনীতির কৌশল।
এবার?
‘চুরি করেছে তৃণমূল। টাকা আটকেছে বিজেপি। বেশ করেছে! ফল ভুগছে সেই মানুষ, যাঁদের একাংশ মমতা ব্যানার্জির নানা প্রতিশ্রুতিতে বিগলিত। এখন বামপন্থীরা চুপ করে থাকুক। মজা দেখুক। তা নয়, তাঁরা দাবি তুলছে — চোর ধরো, কিন্তু মানুষের হকের টাকা দাও।’ এই প্রচার চালানোর চেষ্টা হচ্ছে।
এমন প্রশ্ন বিজেপি, আরএসএস-র প্রচারক, আইটি সেল রাস্তাঘাটে, সোসাল মিডিয়ায় তুলছে। লক্ষ্য— বামপন্থীদের ঘিরে জড়ো হতে থাকা মানুষকে ‘আমরাই তৃণমূল বিরোধী’ বুঝিয়ে তাদের দিকে টেনে আনা। আবার ১মার্চ রেগার বকেয়া মজুরি রাজ্যের কোষাগার থেকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত মমতা ব্যানার্জি ঘোষণা করেছেন। তার লক্ষ্য— ‘চুরি করেছে আমার লোক, তুমি টাকা নিয়ে চেপে যাও, আমাকে ভোটটি দিয়ে দাও।’


বামপন্থীরা তার তীব্র বিরোধিতা করছে। কথা স্পষ্ট— চোর ধরো। গরিব মানুষের বকেয়া দাও।
মমতা ব্যানার্জি বাজেটে ৩৭০০কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন। একশো দিনের বকেয়া টাকা ফেরাবেন তিনি। আগামী ১মার্চ। প্রশ্ন উঠছে তা নিয়ে। বকেয়া মজুরি প্রাপকদের নামের তালিকা তৈরি করছে গ্রামের তৃণমূলীরা। অভিষেক আর মমতা ব্যানার্জির ছবি, তৃণমূলের প্রতীক আঁকা ফর্মে গ্রামবাসীদের নাম, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের যাবতীয় তথ্য, মোবাইল নম্বর নিচ্ছে তৃণমূল। সরকারি কাজ দলীয় প্রভাবে কেন? দ্বিতীয়ত, ২০২১-২২ এবং ২০২২-২৩-র টাকা দেওয়ার কথা। তার বকেয়া মজুরির পরিমাণ ২৮০০কোটির কিছু বেশি। ৩৭০০কোটি টাকা বরাদ্দ কেন? তৃতীয়ত, আগেই তো বকেয়া দিয়ে দিতে পারতেন। খেপে খেপে। তবে কোষাগারে চাপ কম পড়ত। একবারে, লোকসভা নির্বাচনের আগে এই উদ্যোগ কেন?
উত্তর সোজা। তৃণমূলকে আমরা চিনি। এই টাকা থেকেও কাটমানি তুলবে তারা দেদার। আর মানুষকে টাকা দিয়ে বলতে শুরু করেছে,‘টাকা পাইয়ে দিলাম। ভোটটা দিও কিন্তু।’

Subhead/ bold মোদী সরকার চুপ থেকেছে ৯বছর:

রেগায় দেদার টাকা চুরি করছে তৃণমূল, বামফ্রন্ট ২০১২-১৩ থেকেই এই অভিযোগ তুলেছে। ২০১৩-র পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বামফ্রন্টের প্রচার পত্রে এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল— ‘ভুয়ো জবকার্ড: টাকা পেল কে?’ ২০১৪-য় প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। বামফ্রন্টের তোলা দাবি, একশো দিনের প্রকল্পে তৃণমূলের ঢালাও দুর্নীতি নিয়ে বামফ্রন্টের নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে মোদী সরকারের ভূমিকা কী ছিল? বিজেপি সরকারের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক ২০১৭-র ৮জুন নির্দেশিকা পাঠায়। নির্দেশিকার নং-জে-১১০৬০/০৫/২০১৭-এমজিএনআরইজিএ-৪। চিঠির বিষয় ছিল— ‘ইস্যু অব ফেক জব কার্ডস’। চিঠিতে বলা হয়েছিল, ভুয়ো জবকার্ড নিয়ে অনেক অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। রাজ্য সরকারকে সেই ভুয়ো জবকার্ডগুলি বাতিল করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হচ্ছে। সেই নির্দেশিকার ভিত্তিতে রাজ্যের গ্রামোন্নয়ন দপ্তর সেই বছরেরই ৫জুলাই একটি নির্দেশিকা পাঠায় জেলা শাসকদের কাছে। সেই নির্দেশিকারও শিরোনাম ছিল — ‘ভুয়ো জব কার্ড প্রসঙ্গ’। তাতে বলা হয়েছিল যে, ভুয়ো জব কার্ডের মাধ্যমে ‘ভুতুড়ে সুবিধাভোগীর’ অ্যাকাউন্টে টাকা গেছে। পশ্চিমবঙ্গে ভুয়ো জব কার্ড চিহ্নিত করার কাজ জেলাগুলিতে যথেষ্ট গতি পায়নি। কিন্তু তারপরও রাজ্যে ভুয়ো জবকার্ড নিঃশেষিত হয়নি। ২০১৮-র পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি কয়েকটি পঞ্চায়েত সমিতি এবং পঞ্চায়েতে জিতেছিল। যেমন ঝাড়গ্রাম জেলায় গোপীবল্লভপুর-১ নং এবং সাঁকরাইল পঞ্চায়েত সমিতি বিজেপি চালিয়েছিল সেই পাঁচ বছর। সেই সময় জেলায় ৫৮টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ১৭টি বিজেপি চালিয়েছে। সেখানেও ভুয়ো জবকার্ড বাতিলের কাজের গতিপ্রকৃতি তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতগুলির মতোই হয়েছে।
এখন লোকসভা নির্বাচনের আগে মোদী সরকারের মনে পড়েছে ভুয়ো জবকার্ড আর রেগার টাকা চুরির কথা!
আসলে কেউ কারও বিরোধী নয়। তৃণমূল, বিজেপি-র লক্ষ্য এক— রেগার বারোটা বাজানো। রেগাকে সঙ্কীর্ণ ধান্দার রাজনীতির মাধ্যম করা।
কিন্তু রেগা একটি প্রকল্প শুধু নয়। শুধু মাটি কাটা, পুকুর করা, বাঁধ মেরামতি, সার বানানোর মত কাজ নয়। তৃণমূল, বিজেপি-র স্থানীয় নেতাকে কাটমানি দিয়ে কিছু টাকা পেয়ে যাওয়ার মানসিকতায় গ্রামের অসহায় গরিবকে ডুবিয়ে দেওয়ার পথও নয়। রেগা একটি বিকল্প রাজনীতি, অর্থনীতির একটি ক্ষেত্র, বামপন্থীদের পরিচয়ের অন্যতম উপাদান। আবার রাজ্যের এবং দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি ২০০৮ পরবর্তী সময়ে কোন পথে এগিয়েছে, তার আয়না এই প্রকল্পটি।

Subhead/bold জয়রাম রমেশের চিঠি মমতা ব্যানার্জিকে

২০০৪-এ প্রথম ইউপিএ সরকার হয় কেন্দ্রে। বামপন্থীদের ৬১জন সাংসদ। বামপন্থীরা সেই সরকারকে সমর্থন করে। তাঁদেরই দাবিতে ইউপিএ সরকার রেগা চালু করে। অর্থাৎ গ্রামে একশো দিনের কাজের প্রকল্প। ২০০৮-এ বামপন্থীরা ইউপিএ সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে। রাজ্যে সেই সময়ে তৃণমূল-বিজেপি-জামাত-মাওবাদীদের নৈরাজ্য প্রবল হয়ে উঠছে। ২০০৯-র লোকসভা নির্বাচনের পরে দ্বিতীয় ইউপিএ সরকার হয়। বামপন্থীদের শক্তি কমে যাওয়ার সুযোগে দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি ওই সময় থেকেই আরও দক্ষিণপন্থী হয়ে উঠতে থাকে। মমতা ব্যানার্জি সেই সময় কেন্দ্রীয় সরকারের শরিক হন। তৃণমূল নেত্রী রেলমন্ত্রী হয়েছিলেন। ৮টি মন্ত্রকে তৃণমূলের সাংসদরা রাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছিলেন। তার একটি ছিল গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। মন্ত্রী হয়েছিলেন শিশির অধিকারী। আমরা সবাই তাঁর পরিচয় জানি। এখন তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে তৃণমূলে। কিন্তু আসলে বিজেপি-তে। তাঁর মেজো ছেলে, শুভেন্দু অধিকারী রাজ্যে বিজেপি-র নেতা।
সেই গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক হয়েছিল রাজ্যে বামফ্রন্ট-বিরোধী চক্রান্তের অন্যতম পরিসর।
প্রমাণ?
২০১০। দিনটি ছিল ১৭আগস্ট। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে চিঠি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। রাজ্যে তখন খরা। মুখ্যমন্ত্রী লিখেছিলেন —‘‘টাকার অভাবে ঐ প্রকল্পের টাকা মেটাতে পারার মতো অবস্থায় নেই অধিকাংশ জেলা। এর ফলে খরা প্রবণ ১১টি জেলায় সামাজিক অস্থিরতা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’’ তিনি প্রধানমন্ত্রীকে আরো জানিয়েছেন,‘‘চলতি বছরে ১১৬৫ কোটি টাকা, তার মধ্যে ৯৪৯ কোটি টাকা ইতোমধ্যেই খরচ হয়ে গেছে।…ওই প্রকল্পে মজুরি বাবদ ১৪০০ কোটি টাকা আমাদের দরকার। তার মধ্যে দেওয়া হয়েছে একটি সামান্য অংশ —মাত্র ১৭০ কোটি টাকা।’’ সেবারও শিশির অধিকারীকে চিঠি দিয়ে রাজ্যের অবস্থা, রেগার টাকার প্রয়োজন জানিয়েছিল রাজ্যের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী। কিন্তু শিশির অধিকারী জবাবই দেননি।
তার আগেও অনেকবার টাকা আটকেছে সেই গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক।
২০১১-র মে-তে বহু আকাঙ্খিত মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসতে পারলেন মমতা ব্যানার্জি। প্রভাব পড়ল পঞ্চায়েত ব্যবস্থায়। কেমন? কংগ্রেস নেতা, ন্যায় যাত্রায় রাহুল গান্ধীর সঙ্গী জয়রাম রমেশের চিঠির উল্লেখ করা যায়। তখন তিনি কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী। রেগার কাজের পরিচালনা, দেখভালের প্রধান দায়িত্ব প্রধানত পঞ্চায়েতের — এই সংক্রান্ত নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের একটি নথিতে। নথিটির শিরোনাম ছিল— ‘ফ্রেমওয়ার্ক ফর প্ল্যানিং ফর ওয়ার্কস অ্যান্ড প্রিপারেশন অফ লেবার বাজেট অ্যান্ড ওয়ার্ক অ্যান্ড এক্সেকিউশন।’ কিন্তু এই রাজ্যে তখনই পঞ্চায়েতগুলিকে আমলাদের হাতে তুলে দেওয়া শুরু হয়েছে। পঞ্চায়েতের সদস্যরা জানতেই পারছেন না, তাঁদের এলাকায় কী কাজের সিদ্ধান্ত হচ্ছে। ‘প্রায় ১৫০ টি পঞ্চায়েত অচল’— রাজ্যের গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের তৎকালীন মন্ত্রী, প্রয়াত সুব্রত মুখার্জি তা স্বীকার করে নিয়েছিলেন। যদিও প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে বেশি ছিল। প্রধানত তৃণমূলের সন্ত্রাসে ঘরছাড়া ছিলেন সেই পঞ্চায়েতগুলির প্রধান, উপপ্রধান, সদস্যরা। কয়েকটি ক্ষেত্রে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব পঞ্চায়েতের কাজে থমকে দিচ্ছিল। সেই সব মারাত্মক প্রবণতার কথা জেনে ২০১১-র ৩০শে নভেম্বর মুখ্যমন্ত্রীকে জয়রাম রমেশ লিখেছিলেন,‘‘সংবিধানের ২৪৩(জি) ধারা পঞ্চায়েতকে প্রয়োজনীয় ক্ষমতা এবং কতৃত্ব দিয়েছে যাতে তা স্ব-শাসিত সংস্থা হিসাবে কাজ করতে পারে। এই উপলব্ধিকে মনে রেখে, ২০০৫-র এমজিএনআরজিএ আইনে পঞ্চায়েতকে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’’ এই প্রসঙ্গে রমেশের সতর্কতা ছিল —‘‘সংবিধানের ২৪৩(জি) ধারায় নির্দিষ্ট ভূমিকা যাতে কোনভাবেই এড়িয়ে যাওয়া না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া জরুরী।’’
মমতা ব্যানার্জি সেই নির্দেশকে পাত্তাই দেননি। রাজ্যের পঞ্চায়েতের ক্ষমতা, রেগা পরিচালনার দায়িত্ব এখন চলে গেছে আমলাদের হাতে। আর প্রকল্প থেকে দেদার চুরি করেছে তৃণমূল। বিজেপি-র পরিচালিত পঞ্চায়েতগুলিতেও অন্যথা হয়নি।
বামপন্থীরা আজও তাঁদের আদর্শে, নীতিতে অটল। এবারও তাঁদের বক্তব্য স্পষ্ট— দুর্নীতির তদন্ত হোক। চোরদের শাস্তি হোক। কিন্তু রাজ্যের গরিব মানুষের প্রাপ্য টাকা দিতে হবে। রেগার কাজ চালু করতে হবে।
এ’ শুধু রেগাকে রক্ষা করার জন্য নয়। মানুষের কাজের অধিকার রক্ষা করা বামপন্থীদের লক্ষ্য। উদ্দেশ্য— গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ভাঙার বিরুদ্ধে নিজেদের ভূমিকা পালন করা। বামপন্থীরা কেন আলাদা, কেন তাঁদের পথই বিকল্প, একমাত্র বিকল্প— রেগার সঙ্কট তা আর একবার প্রমাণ করেছে।


শেয়ার করুন