cpi(m) state committee

মহম্মদ সেলিমের প্রেস বিবৃতি

৩১ডিসেম্বর, ২০২৪ কলকাতা

মঙ্গলবার সিপিআই(এম)’র পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির দু'দিনের বৈঠক শেষ হয়েছে তৃণমূল ও বিজেপি'র জনবিরোধী ও বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে রাজ্যব্যাপী আন্দোলনের আহবান জানিয়ে।

এখন পার্টিতে সম্মেলনের প্রক্রিয়া চলছে, আগামী ২২-২৫ ফেব্রুয়ারি হুগলী জেলার ডানকুনিতে রাজ্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। বর্তমানে জেলা সম্মেলনগুলি অনুষ্ঠিত হচ্ছে, ইতিমধ্যেই নদীয়া, হুগলী, জলপাইগুড়ি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব বর্ধমান ও বীরভূম জেলার সম্মেলন প্রক্রিয়া শেষ হয়ে গেছে। এই সম্মেলনগুলির অভিজ্ঞতা রাজ্য কমিটির সদস্যবা বৈঠকে তুলে ধরেছেন।

একই সঙ্গে আগামী জানুয়ারি মাস থেকে পার্টিতে সদস্যপদ পুনর্নবীকরণ প্রক্রিয়া শুরু হবে। বিদায়ী বছরে আন্দোলন সংগ্রামে বহু নতুন মানুষ এগিয়ে এসেছেন, অংশগ্রহণ করেছেন। বিশেষত তরুণ প্রজন্মের অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখযোগ্য। এই পরিপ্রেক্ষিতে সামাজিক বিন্যাস। অনুসারে পার্টিতে নতুন অন্তর্ভুক্তি আরও বাড়াতে হবে। তরুণ প্রজন্ম এবং মহিলাদের পার্টির অভ্যন্তরে আরও বেশি করে নিয়ে আসা ইত্যাদি বিষয়েও আরও গুরুত্ব আরোপ করার বিষয়ে আলোচিত হয়েছে রাজ্য কমিটির সভায়।

আলোচনায় রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিভিন্ন ইসু্যুতে আন্দোলনকে তীব্রতর করার ওপরে জোর দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের ঘটনাবলী নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সেখানকার সংখ্যালঘু মানুষের অধিকার ও নিরাপত্তা দাবি করার পাশাপাশি ভারত সহ সর্বত্র সংখ্যালঘুদের অধিকার ও নিরাপত্তার দাবিতে প্রচার চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের ঘটনা ঘিরে এরাজ্যে যেভাবে সাম্প্রদায়িক বিভাজনের রাজনীতি করা হচ্ছে তার বিরুদ্ধেও ধারাবাহিক প্রচার চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া জনজীবনের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু ও আন্দোলনের নতুন উপাদানের ভিত্তিতে গণসংগ্রাম গড়ে তুলতে বিভিন্ন কর্মসূচী নেওয়া হয়েছে।

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ভারতের সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা ড. বি আর আম্বেদকরের সম্পর্কে যে কুরুচিকর মন্তব্য করেছেন তার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই সামাজিক ফ্রন্ট প্রতিবাদ কর্মসূচী পালন করেছে। এই প্রতিবাদকে ভূমিস্তরে প্রসারিত করতে হবে। পার্টি ও ফ্রন্টগুলি রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদ মিছিল করেছে। রাজ্যের সর্বত্র যত বেশি সম্ভব জমায়েতের মধ্য দিয়ে বিকেন্দ্রীভূত বিক্ষোভ কর্মসূচী সংগঠিত করার উদ্যোগ নিতে হবে।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পরে সরকার 'এক দেশ, এক ভোট' ব্যবস্থা কার্যকর করতে সংসদে বিল পেশ করেছে। সংসদীয় গণতন্ত্র ও যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার ওপরে আক্রমণকারী এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই প্রচার শুরু হয়েছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি দূর করতে হলে সঠিকভাবে আরও ব্যাপক প্রচার চালাতে হবে। এই নির্বাচনী সংস্কার ও সংবিধান সংশোধনী বিল এবং দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে আগামী ১২ জানুয়ারি, ২০২৫ রাজ্যের সর্বত্র প্রচার আন্দোলন সংগঠিত করতে হবে।

আগামী ৩ জানুয়ারি গণশক্তি পত্রিকার প্রতিষ্ঠা দিবসে কলকাতার প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে বিকেল ৪টেয় সভা অনুষ্ঠিত হবে। এই সভায় বিমান বসু, সূর্য মিশ্র ও মহম্মদ সেলিম বক্তা হিসাবে অংশ নেবেন।

আগামী ১৭-১৯ জানুয়ারি, ২০২৫ জ্যোতি বসু নগরে (নিউটাউন) পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবে। রাজা কমিটির সহযোগিতায় উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কমিটির ব্যবস্থাপনায় এই সভা অনুষ্ঠিত হবে। ১৭ জানুয়ারি তারিখেই জ্যোতি বসু সেন্টার ফর সোসাল স্টাডিজ অ্যান্ড রিসার্চের প্রথম পর্যায়ের ভবনের উদ্বোধন হবে। ঐদিন সকাল ১০ টায় ভবনের উদ্বোধন করবেন পার্টির পলিট ব্যুরো সদস্য ও কেন্দ্রীয় কমিটির কো অর্ডিনেটর প্রকাশ কারাত। এই অনুষ্ঠানে কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষের জমায়েত হবে।

২৩ জানুয়ারি নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর জন্মদিনকে দেশপ্রেমিক দিবস হিসাবে রাজ্যের সর্বত্র পালন করা। হবে। রেলমন্ত্রক নেতাজির জন্মদিবসে ছুটি বাতিল করেছে চিত্তরঞ্জন রেল কারখানায়। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের রেলমন্ত্রকের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সরব হতে হবে। ২৬ জানুয়ারি সাধারণতন্ত্র দিবসে সর্বত্র ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক যুক্তরাষ্ট্রীয় সংবিধান রক্ষায় শপথ গ্রহণ করা হবে। ৩০ জানুয়ারি গান্ধীহত্যার দিনটি সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী দিবস হিসাবে পালন করা হবে।


শেয়ার করুন

উত্তর দিন