প্রেস বিবৃতি
ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)-র পলিট ব্যুরো নিম্নলিখিত বিবৃতি জারি করেছে:
ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)-র পলিট ব্যুরো পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং ত্রিপুরা রাজ্য কমিটির সম্পাদক গৌতম দাশের আকস্মিক মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে। আজ সকালে কলকাতার একটি হাসপাতালে কমরেড গৌতম দাশ মারা যান, তিনি কোভিড আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তার বয়স হয়েছিল ৭০ বছর।
কমরেড গৌতম দাশ ছাত্রাবস্থা থেকেই ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে রাজনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ শুরু করেছিলেন। কলেজে থাকাকালীন তিনি পার্টির সাপ্তাহিক ‘দেশের কথা’য় যোগ দেন। যখন ‘দেশের কথা’ ১৯৭৯ সালে একটি দৈনিক কাগজ হিসাবে প্রকাশিত হতে শুরু করে, তিনি তার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক হন। পরবর্তীকালে পার্টিতে অন্যান্য সাংগঠনিক দায়িত্ব গ্রহণের পাশাপাশি ২০১৫ সাল অবধি সেই কাজে তিনি সক্রিয় ছিলেন। ‘দেশের কথা’ পত্রিকাকে একটি পূর্ণাঙ্গ সংবাদপত্র হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তাঁর বিশেষ ভূমিকা ছিল। তিনি আগরতলা প্রেসক্লাবেরও অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। কমরেড গৌতম দাশ সাংস্কৃতিক আন্দোলনেও অত্যন্ত সক্রিয় ছিলেন এবং ত্রিপুরা সংস্কৃতি সমন্বয় কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন।
কমরেড গৌতম দাশ ১৯৬৮ সালে পার্টিতে যোগ দেন, ১৯৮৬ সালে ত্রিপুরা রাজ্য কমিটিতে নির্বাচিত হন। ১৯৯৪ সালে রাজ্য সম্পাদকমন্ডলীতে এবং ২০১৮ সালে রাজ্য সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০১৫ সালে ২১তম পার্টি কংগ্রেসে তিনি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। শেষ তিন বছর লাগাতার সন্ত্রাসের মোকাবিলা করেই তিনি ত্রিপুরায় পার্টি পরিচালনার জন্য অবিচলভাবে নিজের কাজ করেছেন।
চট্টগ্রামেই কমরেড দাশের পারিবারিক আদি বসতি – সেই সুবাদে বাংলাদেশের প্রতি তার গভীর অনুরাগ ছিল। এই সংযোগই তাকে পার্টির পক্ষ থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলির সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে সাহায্য করে।
তার জীবনযাপন ছিল খুবই সাধারন, পার্টির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের প্রতি আনুগত্য ও প্রতিশ্রুতি রক্ষার প্রশ্নে কমরেড দাশ উল্লেখযোগ্য ভুমিকা পালন করেছেন। ত্রিপুরায় আজ যখন পার্টি সাহসিকতার সাথে হিংসাত্মক আক্রমণের মুখোমুখি সংগ্রামরত সেই সময় তার এভাবে চলে যাওয়া এক বড় ক্ষতি।
কমরেড গৌতম দাশের স্ত্রী তপতী সেন, মেয়ে স্বাগতা দাস এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের প্রতি পলিট ব্যুরো আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছে।