প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা: সম্পূর্ণরূপে অপর্যাপ্ত

১জুলাই,বুধবার,২০২০

ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)’র পলিট ব্যুরোর পক্ষ থেকে নিম্নলিখিত বিবৃতি দেওয়া হয়েছেঃ


প্রধানমন্ত্রী গতকাল যে ঘোষণা করেছিলেন তা আমাদের কোটি কোটি জনগণের বেঁচে থাকা ও জীবিকার সঙ্কট মোকাবিলার পক্ষে সম্পূর্ণ অপ্রতুল। তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে জীবিকা নির্বাহ বা খাদ্য থেকে বঞ্চিত মানুষের বেঁচে থাকার চাহিদা মেটাতে ৫ কেজি খাদ্যশস্য এবং ১ কেজি ডালের সংস্থান সম্পূর্ণ অপর্যাপ্ত। ছয় মাসের জন্য মাথাপিছু প্রতি মাসে ন্যূনতম ১০ কেজি খাদ্যশস্য নিশ্চিত করা দরকার ।


কমপক্ষে ১৪ কোটি মানুষ কাজ হারিয়েছেন। সরকার নিজেই স্বীকার করেছে যে আট কোটি পরিযায়ি শ্রমিক গত দুই মাস ধরে রাস্তায় ছিলেন।ন্যূনতম প্রয়োজন হ'ল ট্যাক্স বন্ধনের বাইরে থাকা সমস্ত পরিবারকে ছয় মাসের জন্য প্রতি মাসে ৭৫০০ টাকা করে নগদ অর্থ প্রদান। সমস্ত জন ধন অ্যাকাউন্টে ৫০০ টাকা করে প্রদানের ঘোষণা একটি তুচ্ছ বিষয় , এটা বাস্তবে মানুষের যন্ত্রণায় পরিহাস করা।


সমস্ত ফিরে আসা শ্রমিকদের মনরেগা -র অধীনে কাজ দেওয়ার দাবী একটা মিথ্যাচার । অতিরিক্ত এক কোটি লোকের জন্য প্রতি বছর ১০০ দিনের কাজের সংস্থানের জন্য ২.৪৬লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রয়োজন। লকডাউনের সময় ঘোষিত ব্যবস্থাগুলো ও বাজেটের বরাদ্দের মিলিত অর্থের পরিমাণ ১.৫ লক্ষ কোটি টাকারও কম। উপযুক্ত কর্মসংস্থান না হওয়া পর্যন্ত দেশজুড়ে বেকার ভাতা চালু করতে হবে।


প্রধানমন্ত্রী মোদি দাবি করেছেন যে নয় কোটি কৃষক সরাসরি ২০০০ টাকা করে নগদ অর্থ প্রদানে উপকৃত হয়েছেন।২০১৯ সালের সাধারণ নির্বাচনের প্রাক্কালে প্রধানমন্ত্রী কিষাণ যোজনা ঘোষণা করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল বছরে তিনটি কিস্তিতে ২০০০ টাকা করে ১৪ কোটি কৃষককে সাহায্য করা হবে। বর্তমান ঘোষণাটি বাস্তবে এই প্রকল্পের বিলম্বিত দ্বিতীয় কিস্তি।এটি পূর্বের ঘোষণার নতুন মোড়ক মাত্র কোনও অতিরিক্ত ত্রাণ নয়।উপরন্তু পূর্বের অনুমান করা ১৪ কোটি কৃষকের পরিবর্তে এখন মাত্র ৯ কোটি কৃষকের কাছে আর্থিক সাহায্য পৌঁছানোর কথা বলা হচ্ছে । পাঁচ কোটি কৃষক এইভাবে এমনকি এই সামান্য ত্রাণ থেকেও বঞ্চিত হয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী মোদি দাবি করেছেন যে তাঁর সরকারের অধীনে ভারত প্রশংসনীয়ভাবে কোভিড মহামারি মোকাবিলা করেছে। বাস্তব চিত্র হল, বিশ্বের সব থেকে কম টেস্টিং করানো দেশগুলির একটি হয়েও ভারতে কোভিড পজিটিভ রোগীর সংখ্যা (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রাজিলের পরে বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ) এবং মৃত্যুর সংখ্যা ভয়াবহভাবে উত্তোরত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে! কমপক্ষে এখন কেন্দ্রীয় সরকারকে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় স্বাস্থ্য পরিকাঠামো বৃদ্ধি করতে হবে, সমস্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের পিপিই দেওয়া নিশ্চিত করতে হবে এবং সর্বজনীন স্বাস্থ্যপরিসেবা নিশ্চিত করতে হবে।

সিপিআই (এম) পলিট ব্যুরো দাবি করেছে যে প্রধানমন্ত্রীর নাম বহনকারী একটি ব্যক্তিগত ট্রাস্টের দ্বারা মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের নামে যে হাজার হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে অবিলম্বে তার ব্যবহার করতে হবে যাতে নিশ্চিত করার যায় :
জনস্বাস্থ্য পরিসেবাগুলোর বৃদ্ধি
ট্যাক্স বন্ধনের বাইরে থাকা সমস্ত পরিবারকে ছয় মাসের জন্য প্রতি মাসে ৭৫০০ টাকা করে নগদ অর্থ প্রদান
পরবর্তী ছয় মাসের জন্য প্রতিটি অভাবী মানুষকে বিনামূল্যে ১০ কেজি করে খাদ্যশস্য প্রদান


শেয়ার করুন

উত্তর দিন