স্বদেশ গড়তে এক আওয়াজ, সবার শিক্ষা, সবার কাজ - প্রণয় কার্য্যী

স্বাধীনতার ৭৫ বছরে দাঁড়িয়েও সংবিধান বাঁচানোর লড়াই জারি আছে। আরএসএস বিজেপি ভুলিয়ে দিতে চাইছে সংবিধানের মূল উদ্দেশ্য ও বার্তাকে। দেশের অনেক সম্পদের মতই ভারতবর্ষের শিক্ষা ব্যবস্থাকে বেঁচে দেওয়ার সমস্ত চেষ্টা করছে এই সরকার, সেই লক্ষ্যেই জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০(NEP)প্রয়োগ শুরু করেছে কেন্দ্রের সরকার।
লড়াই জারি আছে, সর্বত্র সমস্ত স্তরে শিক্ষানীতি সহ কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে।
শিক্ষা ব্যবস্থার ধংসলীলায় কেন্দ্র সরকারের পুরো জেরক্স কপি রাজ্য সরকার। রাজ্য সরকার ওই পথে হাটবেন না বা কেন?

কারণ দুটো সরকারি পরিচালনা পরে যে দলগুলো তারা একই কারখানায় তৈরি। রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ভেঙে দেওয়ার পরিকল্পনা সরকার বিগত ১১ সাল থেকেই শুরু করেছে। মোদি ও মমতা উভয়ই বিদ্যালয় শিক্ষায় মূল্যবৃদ্ধির নিরিখে ৬ শতাংশ বরাদ্দ কমিয়েছে বাজেটে। রাজ্য সরকারের এই হ্রাসের মূল্য প্রায় সাতশ কোটি টাকা। সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থায় কফিনের শেষ পেরেক ঠোকানোর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। ড্রপ আউটের সংখ্যা বাড়ছে, ৮ হাজারেরও বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয় মুখে। এসএসসি থেকে শুরু করে মিড ডে মিল সবতেই চুরি। স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় এমনকি মাদ্রাসা গুলোর পরিকাঠামোর অবস্থা ভয়ান। মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন দীর্ঘদিন থেকে রিপোর্ট বন্ধ স্বাভাবিকভাবেই মাদ্রাসাগুলোতে শিক্ষকের অভাব কেন্দ্র সরকার তো মাদ্রাসাগুলো একই বারেই বন্ধ করে দেওয়ার পক্ষে এদিকে মমতা নতুন করে মাদ্রাসা কইরে তো দূরের কথা যা আছে তাকেও ঘুরিয়ে বন্ধ করে দেওয়ার রাস্তায় হাঁটছে।


কলেজগুলোতে শয়ে শয়ে সিট ফাঁকা। উচ্চশিক্ষায় পড়তে আসছে না কেউ। আদিবাসী হোস্টেল গুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। স্কুল গুলোতে ভর্তির জন্য নেওয়া হচ্ছে নির্ধারিত ২৪০ টাকার থেকে অনেক বেশি। ক্যাম্পাসে লাইব্রেরি থেকে শুরু করে গ্রামীণ লাইব্রেরী লাটে উঠে যাচ্ছে। এইসব বিষয়ে দুটো সরকার উদাসীন। তারা চায় শিক্ষা ব্যবস্থাটা ধ্বংস হয়ে যাক।
যে যতবেশি পড়ে সে ততবেশী জানে, ততবেশী প্রশ্ন করে,,,আর এই মোদী- মমতার প্রশ্ন একদম পছন্দ নয় তাই টার্গেট শিক্ষা!
পাল্টে ফেলা হচ্ছে সিলেবাস, আধুনিকীকরণের নামে গৈরিকীকরণের মাধ্যমে ধর্মীয় বিভেদের জায়গা উঠে আসছে, বিজ্ঞানের জায়গায় ছদ্মবিজ্ঞান ও অপবিজ্ঞান এবং কুসংস্কার এর মাধ্যমে পিছিয়ে নিয়ে যেতে চলছে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে।

আমরা চাই বিজ্ঞানমনস্কতা,যুক্তিবাদী, গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ মূলবোধকে ছাত্রমনে তৈরি হোক এমন সিলেবাস। রাজ্য সরকার NEP বিরোধিতা প্রথম দিকে করলেও বর্তমানে কোনোরকম প্রশ্ন ছাড়াই এই শিক্ষানীতি মেনে নিয়েছে।
এদিকে কর্মসংস্থানের প্রশ্নে গোটা পশ্চিমবাংলার শিক্ষিত যুবসমাজ সহ গোটা দেশের যুবসমাজ হতাশা হচ্ছে। একদিকে স্কুল-কলেজে ড্রপ আউটের সংখ্যা বাড়ছে অন্যদিকে শিশু শ্রম পরিযায়ী শ্রমিক বাল্যবিবাহ প্রবণতা বৃদ্ধি পারছে। শিক্ষা ব্যবস্থার কফিনবন্দি করার লক্ষ্যেই রাজ্য সরকারের উৎসশ্রী প্রকল্প, এই প্রকল্প মধ্য দিয়ে মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলির শিক্ষক-শিক্ষিকা বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে প্রান্তিক গ্রামীণ স্কুল গুলো থেকে বদলি হয়ে শহরের অঞ্চলে চলে যাচ্ছে। এর ফলে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রাজ্যের প্রান্তিক অঞ্চলের শিক্ষার পরিকাঠামো।


এদিকে ক্যাম্পাস গুলোতে কয়েক বছর ধরে ছাত্র সংসদ নির্বাচন না হওয়ায় টিএমসিপি-র প্রতিনিধিরা বেআইনিভাবে ছাত্র সংসদ পরিচালনা করছে ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়মিত কলেজে হেনস্থা এবং খারাপ আচরণ করার ফলে কিছু কিছু স্টুডেন্ট মাঝপথে পড়াশুনা থামিয়ে ড্রপ আউট হয়। যেসব ছাত্র-ছাত্রীরা বাড়ি থেকে প্রতিনিয়ত যাতায়াত করে তাদের ক্ষেত্রে যাতায়াতের ভাড়া একটা বড় সমস্যা। বর্তমান সরকার যে পরিমাণ পেট্রোল ডিজেলের দাম বাড়িয়েছে এক্ষেত্রে সরাসরি ছাত্র-ছাত্রীদের উপর প্রভাব পরছে।বামফ্রন্ট সরকার আমলে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য পরিবহনে হাফ ভাড়া থাকতো, বর্তমানে সেটি আস্তে আস্তে উঠে গেছে। ছাত্র-ছাত্রীদের ফুল ভাড়া দিয়ে কলেজে আসার ক্ষেত্রে দৈনন্দিন কলেজে আসাটা একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের কাছে।

চাকরি থেকে আবাসন, বালি থেকে ভেরি, কয়লা থেকে গরু সর্বত্রই দিদির দূত দের কাঠমানি।
কারো পৌষ মাস কারো সর্বনাশ, এ বাংলার মানুষ জানে পিঠেপুলি মানে পৌষ সংক্রান্তি, এ বাংলার বুকে এমনও হতে পারে বাংলার মানুষ কখনো ভাবতে পারেনি। পিঠে বানানোর নামে পার্টি অফিসে মহিলাদের নিয়ে এসে শারীরিক নির্যাতন ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটছে। পিঠে পুলির নামে বাংলার মা-বোনদের সর্বনাশ ডেকে নিয়ে এসেছে তৃণমূল, সন্দেশখালীর মা বোনেরা যে লড়াইয়ের জেদ মেজাজ দেখালো তাতে বাংলার প্রতিটি প্রান্তের দম বন্ধ পরিস্থিতিতে থাকা মানুষগুলো কিছুটা হলেও আশার আলো দেখছে। মোদির রক্ষাকবচ আদানি, ললিত মোদী, নীরব মোদী দের সঙ্গে থাকে একই দিকে অনুব্রত থেকে শেখ শাহজাহান দের কাছে থাকে দিদির রক্ষাকবচ।


চোর লুটেরাদের বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলন সংগ্রাম যেমন চলবে তেমনি ভাবে নয়া উদারনীতি, সাম্প্রদায়িকতা, ভেদাভেদের রাজনীতি বিরুদ্ধে সম্প্রীতির বার্তা নিয়ে দুই সরকারের বিরুদ্ধে মতাদর্শগত ও রাজনৈতিক লরাইতে ঐক্য গড়ার ডাক আমরা দিয়েছি।


আগামী ৬ মার্চ কলেজ স্ট্রীটে লাল পলাশে মুখরিত বিদ্রোহের বসন্তের আগমনী বার্তা আসছে ফাগুন আমরা দ্বিগুন হবো।


শেয়ার করুন

উত্তর দিন