প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বিরোধী দলগুলির যৌথ আবেদন পত্র
তারিখঃ বুধবার - ১২ মে, ২০২১
কোভিড মহামারী প্রতিরোধে কেন্দ্রীয় সরকারের আশু কর্তব্য সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি একযোগে আবেদন করেছে, নিচে সেই চিঠি প্রকাশ করা হল
************************************
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মহাশয়,
আমাদের দেশে কোভিড মহামারী বিপর্যয়ের এক অভূতপূর্ব মাত্রায় পৌঁছেছে।
এককভাবে আবার কখনো সমবেত হয়ে সংশ্লিষ্ট বিপর্যয় ও সেই প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং যথোপযুক্ত প্রয়োগ সম্পর্কে ইতিপূর্বে আমরা বহুবার আপনার দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেছি। অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের হলেও একথা বলতেই হচ্ছে সেই সমস্ত প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়ায় আপনার সরকারের পক্ষ থেকে কোনও ইতিবাচক সাড়া মেলেনি, আপনারা সেই সবকিছুকেই অগ্রাহ্য করেছেন। এতে পরিস্থিতি ক্রমশ গভীর থেকে গভিরতর সংকটের দিকে এগিয়ে আজ এক ভয়ানক শোকাবহের পরিবেশ তৈরি করেছে।
আজ দেশ যখন ভয়াবহ সংকটের আবহে তখন কেন্দ্রীয় সরকার কি করেছে, কি করেনি সেই নিয়ে যাবতীয় খুঁটিনাটির মধ্যে না গিয়ে বরং অবিলম্বে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে কি কি কাজ যুদ্ধকালীন তৎপরতায় করা উচিত সেই নিয়ে আমরা নিজেদের মধ্যে দৃঢ় ঐক্যমত স্থাপন করতে পেরেছই, চিঠির পরবর্তী অংশে সেই কাজগুলিরই উল্লেখ করা হল।
টিকা প্রস্তুতিতে দেশের ভিতরে এবং বাইরের সমস্ত কার্যকরী সংস্থাকেই কেন্দ্রীয় উদ্যোগে কাজে লাগানো হোক।
অবিলম্বে দেশের সকল নাগরিকের জন্য বিনামূল্যে টিকা দেবার কর্মসূচী নিক কেন্দ্রীয় সরকার।
প্রতিষেধকের যোগান বাড়াতে দেশীয় টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থাসমূহের জন্য অবিলম্বে বাধ্যতামূলক লাইসেন্সিং ব্যবস্থা চালু করা হোক।
টিকাকরণের কাজে কেন্দ্রীয় বাজেটে ঘোষিত ৩৫০০০ কোটি টাকা খরচ করতে হবে।
সেন্ট্রাল ভিস্টা নির্মাণকাজকে অবিলম্বে স্থগিত রেখে অক্সিজনে এবং টিকা প্রস্তুতির কাজে সেই অর্থ ব্যয় করা হোক।
বেসরকারি ট্রাষ্ট তহবিলের নামে পি এম কেয়ার্সের অর্থকে আটকে না রেখে প্রতিষেধক, অক্সিজেন এবং সংশ্লিষ্ট চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনার কাজে ব্যয় করা হোক।
কাজ হারিয়েছেন এমন সবাইকে অন্তত প্রতি মাসে ৬০০০ টাকা দেবার বন্দোবস্ত করতে হবে।
দুঃস্থ পরিবারগুলিকে বিনামুল্যে খাদ্যশস্য সরবরাহ করতে হবে (কেন্দ্রীয় খাদ্যগুদামে ইতিমধ্যেই এক কোটি টনেরও বেশি খাদ্যশস্য পড়ে থেকে নষ্ট হতে বসেছে)।
দেশের লক্ষ লক্ষ অন্নদাতাদের কোভিড মহামারীর সমীপে মরতে ছেড়ে না দিয়ে অবিলম্বে নয়া কৃষিআইন সমূহ বাতিল করতে হবে, তারা যাতে জনগণের জন্য খাদ্যশস্য উৎপাদনের কাজে ফিরতে পারেন সেই ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
যদিও অতীতের অভিজ্ঞতা বলছে এমন প্রস্তাবের ক্ষেত্রে আপনার দপ্তর প্রাপ্তিস্বীকারের সৌজন্যতাটুকু দেখায় না তবু আমরা আশা রাখছি দেশ এবং দেশের জনসাধারনের কল্যানে আমাদের এই সকল প্রস্তাবে আপনি সদর্থক পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
সাক্ষর
সোনিয়া গান্ধী (আই এন সি)
এইচ ডি দেব গৌড়া (জে ডি – এস)
শরদ পাওয়ার (এন সি পি)
উদ্ধভ থ্যাকারে (এস এস)
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (টি এম সি)
এম কে স্ত্যালিন (ডি এম কে)
হেমন্ত সোরেন (জে এম এম)
ফারুক আবদুল্লাহ (জে কে পি এ)
অখিলেশ যাদব (এস পি)
তেজস্বী যাদব (আর জে ডি)
ডি রাজা (সি পি আই)
সীতারাম ইয়েচুরি (সি পি আই – এম)