মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ভারত সফরের সময় দিল্লিতে একতরফা দাঙ্গার আগুন। ভারত থেকে অনেক কিছু আদায় করার আশ্বাস নিয়ে এই আগুনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী মোদীর প্রশংসা করে তিনি দেশে ফিরে গিয়ে নেমে পড়েন নির্বাচনী প্রচারে। এরকম দাঙ্গার আবহাওয়ার মধ্যে থেকে এবং এই দাঙ্গা নিয়ে আমেরিকার মাটিতে তাঁর বক্তব্য ‘ওটা ভারতের ব্যাপার’। আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা সম্পর্কিত মার্কিন কমিশনের রিপোর্ট ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘনের তীব্র সমালোচনা করেছে। সিএএ’র সঙ্গে প্রস্তাবিত এনআরসি নিয়েও তাতে বলা হয়েছে যে এই আইনে একটা ভীতির সঞ্চার হয়েছে যে ধর্মীয় পরিচয় দিয়ে ভারতে নাগরিকত্ব নির্ধারণের চেষ্টা করা হবে। এই আতঙ্কের বাস্তব ভিত্তি থাকায় গোটা দেশজুড়ে ধারাবাহিক শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ আন্দোলন চলছে। ২০০২সালে গুজরাট দাঙ্গার পর তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী মোদীর মার্কিন সফর নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। তখন অবশ্য মোদীর সেরা প্রাণপুরুষ ট্রাম্প ক্ষমতায় ছিলেন না। আমেরিকার আর্থিক স্বার্থপূরণে অতি উৎসাহে ভারতের প্রধানমন্ত্রী যেমন কয়েক পা এগিয়ে, তেমনি চরম দক্ষিণপন্থা ও স্বৈরতান্ত্রিক রাজনীতিতেও উভয়ের মধ্যে গড়ে উঠেছে গাঢ় সখ্যতা।
গুজরাট দাঙ্গার সময়ে এনডিএ’র শরিক হিসাবে তৃণমূল কংগ্রেস ও তাঁর নেত্রী মৌনতা দিয়ে দাঙ্গার সমর্থনে দাঁড়িয়েছিলেন এবং দাঙ্গাজনিত পরিস্থিতির জন্য গুজরাট বিধানসভায় জয়ী মোদীকে তৃণমূল নেত্রী শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছিলেন। সঙ্ঘ পরিবারের অনুগৃহীত এই তৃণমূল কংগ্রেস ১৯৯৮ সালে প্রথম জোট বাঁধে বিজেপি’র সঙ্গে। দীর্ঘ দু’দশকে নির্লজ্জ চাতুরিতে বিজেপি’র সঙ্গে সেই সম্পর্ক অটুট রেখেছে স্থায়ী বোঝাপড়ার ভিত্তিতে, যে বোঝাপড়ার অঙ্গ মেরুকরণ এবং আবহাওয়া বুঝে নরম গরম কুণ্ঠাহীন স্লোগান। যে মোদী এবং শাহকে দাঙ্গাবাবু বলে চিৎকার করে মিডিয়া সহযোগে তিনি রাজ্য মাতিয়েছেন দিল্লি দাঙ্গার পরিপ্রেক্ষিতে সেই তৃণমূল নেত্রী মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন অবিকল ট্রাম্পের ভাষায়—‘ওটা দিল্লির ব্যাপার’। গত সেপ্টেম্বর মাসে দিল্লি গিয়ে একান্তে মোদী এবং অমিত শাহ’র সঙ্গে আলোচনা করে এসেছেন কিন্তু কেন্দ্রের প্রস্তাবিত নাগরিকত্ব সংশোধন বিল এবং এনআরসি নিয়ে দেশজুড়ে যে বিস্ফোরক অবস্থা তৈরি হয় তা নিয়ে প্রতিবাদ জ্ঞাপনে সাহস করলেন না। এটাও ছকবাঁধা বোঝাপড়া। সিএএ-এনআরসি-এনপিআর’র বিরুদ্ধে গোটা দেশ যখন প্রতিবাদের রাস্তায় নেমেছে এবং কলকাতাতেও প্রতিবাদের আগুন জ্বলছে তখন তিনি কলকাতার রাজভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলেন। এটাও বোঝাপড়ার অঙ্গ।
২৯ ফেব্রুয়ারি শনিবারও দাঙ্গার দগদগে পরিবেশে আচ্ছন্ন উত্তরপূর্ব দিল্লি। শুক্রবার আয়ূব আনসারি নামে এক ফেলে-দেওয়া টুকিটাকি ছাঁট সংগ্রাহককে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে। গুলিতে আহত মাটিতে পড়ে কাতরাচ্ছে এরকম যুবককে বন্দেমাতরম স্লোগান দেওয়ার জন্য পেটানো হচ্ছে এমন দৃশ্য ভিডিও-তে প্রচারিত ২৪বছরের যুবকটিরও মৃত্যু হয়েছে। শনিবার দিল্লি মেট্রোর ব্লুলাইন এবং রাজীবচক মেট্রো স্টেশনে একদল যুবক টানা স্লোগান দিয়ে গেছে ‘বিশ্বাসঘাতকদের গুলি করে মারো’। এপর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৪২জন। ২০০ জনেরও বেশি আহত। আটক করা হয়েছে ৬৩০ জনকে। কিন্তু পরিকল্পিতভাবে দাঙ্গার এলাকা নির্দিষ্ট করে বাইরে থেকে গুন্ডা নিয়ে এসে আক্রমণের জন্য যারা পুলিশের সামনে ঘৃণাবিদ্বেষ ছড়িয়েছিল ধৃতদের মধ্যে তাদের নাম নেই। রাষ্ট্রপতিভবন থেকে আট কিলোমিটার দূরে তিনদিন ধরে ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর এই প্রথম দিল্লিতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সংগঠিত হয়েছে। গোটা দিল্লি কেন্দ্রীয় সরকারের এবং গোটা রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বলয় দিয়ে ঘেরা। যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একমাস ধরে দিল্লিতে পাড়ায় পাড়ায় এমনকি বাড়িতে বাড়িতে নির্বাচনী প্রচার করেছেন এখনও পর্যন্ত তাঁর কোনও সাড়া শব্দ নেই। বাক্যবাগীশ প্রধানমন্ত্রী দাঙ্গার তিনদিন ধরে ডুবে রইলেন নির্লিপ্ততায়। চারদিকে শোরগোল ওঠার পর তিনি নামকাওয়াস্তে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানান। স্বাতন্ত্র্য ও নিরপেক্ষতা, পেশাদারিত্ব দেখাতে ব্যর্থ পুলিশকে যে বিচারপতি দাঙ্গা দমনে মাঝরাতে ঝটাপট আদালত বসিয়ে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিলেন তাঁর বিরুদ্ধে সঙ্গে সঙ্গেই মোদী সরকার ঝটিতি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়ে দিল্লি থেকে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা আদালতে বদলি করে দেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দেখা নেই। বলা যায় জেনে বুঝে আড়ালে থেকেছেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁর প্রিয়ভাজন জাতীয় নিরপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালকে ঘটনাস্থলে পাঠান। দাঙ্গা সম্পর্কে যাঁর ঘটনাস্থলে উক্তি হলো—‘যা হবার তা হয়ে গেছে।’ দেশের রাজধানীতে এত বড় একটা দাঙ্গাকে এভাবে তুচ্ছ করে দেখানোর মধ্য দিয়েই প্রতিফলিত হয় সরকারের আসল মনোভাব। (সারদাকাণ্ডে ) লক্ষাধিক মানুষের কাছ থেকে লুট করা ৪০হাজার কোটি টাকা ফাঁস হওয়ার ঘটনার পর এরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ঠিক একই কথা বলেছিলেন, ‘যা গেছে তা গেছে’। অর্থাৎ এবিষয়ে ভাবনার কিছু নেই। ভারতের এই মেগা কেলেঙ্কারিতে যেহেতু মুখ্যমন্ত্রীসহ গোটা তৃণমূল কংগ্রেস জড়িত একারণে জনমানসে ভাবনা ও বিতর্ক এবং ক্ষতিপূরণ বৃথা। এই মনোভাব দিয়েই মোদী সরকারের অপরাধ ঢাকার অভিসন্ধি প্রতিফলিত হয়। যে পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে দিল্লির নির্বাচনও পরবর্তী সময়ে গুরুতর অভিযোগ তাঁকেই দেওয়া হয়েছে এই দাঙ্গার তদন্তভার। মোদী—শাহ এবং বিজেপি ছাড়া এই একপেশে সাজানো তদন্তে ভারতের সুস্থ কোনও মানুষের আস্থা থাকতে পারে না। কেন নববিচারবিভাগীয় তদন্ত?
গোটা পৃথিবীতে বিশেষত লন্ডন, প্যারিস, বার্লিন এবং জেনিভা সহ ইউরোপের ১৫টি শহরে শনিবার এই দাঙ্গার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সংগঠিত হয়। পশ্চিমবঙ্গে বামপন্থীসহ বিরোধীরা রাজ্যজুড়ে দাঙ্গাদমনে কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যর্থতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেই চলেছে। দেশজুড়েও চলছে এর প্রতিবাদ। ‘জয় শ্রীরাম’ ও ‘ভারতমাতা কি জয়’ স্লোগান দিয়ে কয়েকশত লোক দিল্লির যন্তরমন্তর থেকে এই দাঙ্গার বিরুদ্ধে মিছিল করে, যে মিছিলে বিজেপি নেতা এবং দাঙ্গার উসকানিদাতা কপিল মিশ্র পুরোভাগে ছিল। এই দাঙ্গাকে মিডিয়ার একটা উল্লেখযোগ্য অংশ সিএএ-সমর্থক এবং সিএএ-বিরোধীদের বিরোধজনিত দাঙ্গা বলে প্রতিভাত করে মোদী সরকার, বিজেপি ও দাঙ্গাবাজদের অপরাধ সাফাই করতে নেমেছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শনিবার উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজ শহরে ‘সামাজিক অধিকার শিবিরে’ ছেঁদো কথার তুবড়ি ছোটান যে, ‘১৩০কোটি লোকের স্বার্থ দেখাই সরকারের প্রধান অগ্রাধিকার’, ‘ সরকারের দায়িত্ব সকলের জন্য সুবিচার নিশ্চিত করা’। সংস্কৃত একটা শ্লোক দিয়ে তিনি বোঝাতে চেষ্টা করেন তাঁর সরকার কিভাবে ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস’ নিয়ে কেবলই এগিয়ে যাচ্ছে। ট্রাম্পের সার্টিফিকেটের উপর ভর করে হয়তো এভাবে প্রধানমন্ত্রী আরষ্টহীন হয়ে পড়েছেন। এটা স্বভাবদোষে নয়, হিন্দুত্বের প্রকৃতিবশে। দাঙ্গা বাড়তে চলেছে, হিংসাত্মক প্ররোচনায় বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে, সরকারের কর্মস্থলের নাকের ডগায় পুলিশের আচরিত নির্বিকারত্ব দেখে ‘সবকা সাথ সবকা বিশ্বাসের’ জন্য তৎক্ষণাৎ সামরিক বাহিনী নামানো হলো না কেন? এর পর কি প্রধানমন্ত্রীর সরকারের ‘সবকা সাথ সবকা বিশ্বাস’ স্লোগান সাজে! এই দাঙ্গার মধ্যেই ‘সবকা বিকাশের’— দায়িত্ব তো মোদী সরকার জলাঞ্জলি দিয়েছেন ট্রাম্পের আমেরিকার কাছে। প্রগলভ না হলে আর্থিক—সামাজিক—রাজনৈতিক—সাংস্কৃতিক—ধর্মীয় ও মৌলিক অধিকার ধ্বংসের প্রতীক এই সরকার সকলের সুবিচার নিশ্চিত করার দাবি করতে পারে!
২০১৪ লোকসভা নির্বাচনের প্রাকপ্রস্তুতিতে অনেক প্রস্তুতিতে উত্তর প্রদেশের মুজফ্ফরনগরে দাঙ্গা বাধানো হয়। ৫ জনের অনেক ভুয়ো ফটোগ্রাফ, সাজানো ছবি এবং ভিডিও ব্যাপকভাবে ছড়ানো হয়েছিল। দাঙ্গার পর এই ষড়যন্ত্র উদ্ঘাটিত হয়। দিল্লি দাঙ্গার প্রস্তুতিতেও এরকম ছবি ছড়ানো হয়। তা ধরাও পড়ে। ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে বিহারের গোপালগঞ্জে মন্দির থেকে ফেরার সময় এক মহিলাকে সন্দীপ গিরি বলে এক ব্যক্তি কুপ্রস্তাব দিলে মহিলা প্রতিবাদ জানান এবং ছুরিকাহত হন। ছবি দিয়ে তখনও এটা প্রচার হয়েছিল যে বিহারে মুসলিমদের হাতে হিন্দু মহিলারা আক্রান্ত হচ্ছে। এই একই ছবি দিল্লির দাঙ্গার সময় আবার প্রচার করা হয়। মিথ্যা ও জালিয়াতি ছবির রহস্য ফাঁস করার জন্য নিয়োজিত একটি মিডিয়া এই ধরনের বহু ষড়যন্ত্র পূর্ণাঙ্গ তথ্য দিয়ে উন্মোচন করেছে। বহু কোটি টাকা ব্যয়ে পরিচালিত বিজেপি’র সোশ্যাল মিডিয়া ব্রিগেড এই ধরনের অপপ্রচার ও ঘৃণাবিদ্বেষ সৃষ্টির কাজে ইতিমধ্যে হাত পাকিয়েছে। সিএএ নিয়ে এই দাঙ্গা বলে প্রচার করা হলেও এটা এককথায় পরিকল্পিত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। গভীর উদ্বেগের বিষয় বিচার ব্যবস্থার স্বাতন্ত্র্য রক্ষা নিয়েও। বিশেষত সুপ্রিম কোর্ট সাম্প্রতিককালে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে তার অর্থপূর্ণ গড়িমসি,অযৌক্তিক উক্তি ও রায়ের দায় এড়াতে পারে না। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের মহান ঐতিহ্যও দেখা যাচ্ছে শীর্ষ আদালতে অনেক ক্ষেত্রে অবহেলিত। সংখ্যালঘুদের মধ্যেও মৌলবাদীরা আছে। কিন্তু সংখ্যালঘু মানে মৌলবাদী নয়। যেমন সংখ্যাগুরু মানেই হিন্দু মৌলবাদী নয়। এই দাঙ্গায় একটি মাজার ও তিনটি মসজিদ ধ্বংস হয়েছে। উত্তরপূ্র্ব দিল্লির অশোকনগরে মৌলাবক্স মসজিদে গৈরিক পতাকা টাঙানোর ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ হয়েছে। ১৯৯২ সাল বাবরি মসজিদ ভাঙার আগেও গম্বুজের উপর গৈরিক পতাকা টাঙানো হয়েছিল। ১৯৯২এর দাঙ্গার পরে তীব্র সাম্প্রদায়িক প্রচারে বিজেপি ছোট পার্টি থেকে জাতীয় স্তরে বড় পার্টি হয়। একই রাস্তায় সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের উত্তুঙ্গতায় ২০১৪ এবং ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি জয়ী হয়। দিল্লির নির্বাচনে সে আশা মেটেনি। এই দাঙ্গা সংগঠিত হয়েছে মূলত বিজেপি’র জয়করা কয়েকটি আসন এলাকায়। দাঙ্গা নিয়ে এক আন্তর্জাতিক সমীক্ষায় দেখা যায় যেখানে দাঙ্গা হয়েছে সেখানে বিজেপি লাভবান হয়েছে। সেই পরিচিত রাস্তা দিয়েই মোদী-শাহ হেঁটে চলেছেন, যে রাস্তা পরিক্রমা করে গেছে হিটলার মুসোলিনি।
এক অন্ধকার অধ্যায়ের মধ্য দিয়ে ভারত চলেছে। এই অন্ধকার গ্রাস করতে চায় আধুনিক ভারত, তার সংবিধান, ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা সংগ্রামের ঐতিহ্যকে। এটা কি চুপ করে থাকার সময়? আমেরিকার বিখ্যাত মানবাধিকার আন্দোলনের নেতা মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের কথা স্মরণ করা যায়, ‘‘শেষ পর্যন্ত আমরা আমাদের শত্রুদের ভাষাগুলি মনে রাখব না, মনে রাখব আমাদের বন্ধু ও মিত্রদের নীরবতা।’’ আমি কি কেবল তখনই মুখ খুলব যখন আমি বা আমার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ পরিজন আক্রমণের শিকার হবে! এটাই দেশজোড়া বর্তমান প্রতিবাদ আন্দোলনের বার্তা।
শেয়ার করুন