সুপ্রতীপ রায়
এটা ভাববার কোনো কারন নেই আমরা সব ভুলে গেছি। সব মনে আছে। উনার মানে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী, বর্তমানে বি.জে.পি নেত্রী প্রাক্তন আমলা ভারতী ঘোষ,বর্তমান বি.জে.পি নেতা শুভেন্দু অধিকারীরা ভুলে গেলেও রাজ্যের মানুষ ভোলেন নি। শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে জঙ্গল মহলে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল তৃণমূল। আর ভারতী ঘোষকে দিয়ে ২০১১এর পর সি.পি.আই(এম)র বিরুদ্ধে পুলিশী সন্ত্রাস নামিয়ে আনা হয়েছিল। ভারতী দেবী তো মুখ্যমন্ত্রীকে ‘জঙ্গল মহলের মা’বলে সম্বোধন করেছিলেন। ঘটনাক্রমে শুভেন্দু, ভারতী দু’জনেই এখন বি.জে.পি’তে। অবশ্য যে কোনো সময় আবার তৃণমূলে ফিরে যেতে পারেন! কারন ওঁদের কাছে ‘যাহাই তৃণমূল,তাহাই বি.জে.পি’।
আসলে মিথ্যা যে একসময় প্রমানিত হয় তা মনে হয় তৃণমূলীরা জানেন না।কিন্তু সত্য চাপা থাকে না।আগামী দিনে তা প্রমানিত হবেই।তখন রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীর অবস্থা হবে ‘রাখালের পালে বাঘ পড়া’গল্পের মত।
একবার দেখে নি কি ধরনের ষড়যন্ত্র বাভফ্রন্টের বিরুদ্ধে হয়েছিল।
২০০৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষনার পর থেকেই সি.পি.আই(এম)র বিরদ্ধে রক্তাক্ত অভিযান তীব্র হয়।মাওবাদীরা তৃণমূলের সাথে ‘যুক্তফ্রন্ট'(মাওবাদীরা তাদের দলিলে তাই দাবি করছে)গড়ে তোলে সিঙ্গুর,নন্দীগ্রাম,লালগড়ে।২০০৯ এর লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের সাথে মাওবাদীদের ‘যুক্তফ্রন্ট’গড়ার অন্যতম মাথা মাওবাদী নেতা কাঞ্চন কাটাপাহাড়িতে দ্রুততার সঙ্গে যাবতীয় অস্ত্র মজুত করার নির্দেশ দিয়েছিল দলের কর্মীদের।লালগড় এবং নন্দীগ্রামে একসঙ্গে হাঙ্গামার চক্রান্ত করেছিল মাওবাদী-তৃণমূল যুক্তফ্রন্ট ।১৩ এপ্রিল ২০০৯ লালগড়ের বড়োপেলিয়ার কাছে এ নিয়ে বৈঠকও করে তৃণমূল-মাওবাদীরা।
গোটা দেশের বিভিন্ন রাজ্যে সন্ত্রাসসৃষ্টিকারী মাওবাদীদের নিয়ে সি.পি.আই(এম) নিধন যঞ্জে মেতে উঠেছিল তৃণমূল।মাওবাদী-তৃণমূল যৌথভাবে সি.পি.আই(এম) খতম অভিযানে নেমেছিল। সি.পি.আই(মাওবাদী)র পলিটব্যুরোর সদস্য ছিলেন কিষেনজি। মাওবাদীদের মতামত প্রচারকারী সংগঠন গন-প্রতিরোধ মঞ্চের মুখপত্র’বিপ্লবী গনপ্রতিরোধ’এর জুন’০৯ সংখ্যায় কিষেনজি সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে বলেছিলেন,”নন্দীগ্রামে দেখুন,দিনে রাত্রে কত রাউন্ড ফায়ারিং হতো তার হিসাব নেই।…. সি.পি.আই(মাওবাদী) কি একা সি.পি.এম-এর চার নেতাকে খতম করতে সফল হতো?…. তৃণমূলের একটা অংশও আমাদের পাশে ছিল’। গনপ্রতিরোধ মঞ্চের মুখপত্রের মার্চ’০৯ এ এক সাক্ষাৎকারে মাওবাদী নেতা গৌর চক্রবর্তী বলেছিলেন, “দলটি অর্থাৎ সি.পি.আই(মাওবাদী) সম্পর্কে নন্দীগ্রামে লড়াইয়ের সময় উনি (অর্থাৎ মমতা ব্যানার্জি) নমনীয় ছিলেন”। ৪ফেব্রুয়ারি’০৯ লালগড়ের জনসাধারনের কমিটির ডাকে এক জনসভায় লালগড়ের রাস্তা কাটা ,অবরোধকে সমর্থন জানিয়ে ভাষন দিতে গিয়ে মমতা বলেছিলেন,”এখানে তো আমি কোনো অশান্তি দেখছি না”।
কিষেনজি মমতা ব্যানার্জিকে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে দেখতে চেয়েছিলেন। ৪অক্টোবর’০৯ আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল,”মুখ্যমন্ত্রী পদে যোগ্যতম মমতাই,মত কিষেণজির”। কিষেণজি বলেছিলেন,”রাজ্যের মানুষ পরিবর্তন চান।সি.পি.এমের অত্যাচার আর অপশাসনের অবসান চান। এটাই সময়ের দাবি। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ভাবে মানুষের দাবি মেনে,মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে আন্দোলন করছেন,তাতে তিনিই পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার যোগ্য।”
১৭ জানুয়ারি ২০১১ মাওবাদী নেতা বিক্রম এক প্রেস বিবৃতিতে বলেছিলেন, “মাওবাদীরা বিধানসভা নির্বাচনে তণমূলকেই সমর্থন করবে”। ঐ বিবৃতিতে বিক্রম বলেছিলেন,”বাংলার কোণে কোণে আজ আওয়াজ উঠেছে পরিবর্তন চাই। এই পরিবর্তনের কান্ডারি আজ অবশ্যই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। …মমতা আজ বাংলার মানুষের শেষ আশা যিনি রাজ্যে শান্তি,ন্যায় ও উন্নয়ন নিয়ে আসুন।আপনি বাংলাকে বাঁচান”। ৬ফেব্রুয়ারি’১১ পুরুলিয়া প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ঐ মাওবাদী নেতা আবারও আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলকে সমর্থনের কথা ঘোষনা করেন।
মাওবাদীদের দৌরাত্ম বন্ধের জন্য যখন জঙ্গল মহলে যৌথ অভিযান শুরু হয় তখন এর তীব্র বিরোধিতা করেছিল তৃণমূল ।১৫ জানুয়ারি’২০১০ ঝাড়গ্রামের এক সভায় তৎকালীন রেলমন্ত্রী বলেছিলেন,”আমি যৌথবাহিনী বন্ধ হোক চাই।আমি চাই উইথড্র হোক।আমরা জানতাম না যে যৌথবাহিনী পাঠানোর সিদ্ধান্ত হবে।আমরা তো মাত্র উনিশ জন। সরকার আমাদের সব কথা শুনতে নাও পারে”।৩ফেব্রুয়ারি’১০ সন্ধ্যায় এক বেসরকারী টিভি চ্যানেলের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে মমতা ব্যানার্জি বলেছিলেন,”জঙ্গলমহল থেকে যৌথবাহিনীর অভিযান এখনই প্রত্যাহার করা হোক”। ২৬সেপ্টেম্বর’১০ সিঙ্গুরের এক সভায় তৃণমূল সুপ্রিমো বলেছিলেন,”লালগড় থেকে যৌথবাহিনী প্রত্যাহারের জন্য তৃণমূল কদিন সময় দিচ্ছে সরকারকে”। ৬ অক্টোবর ‘১০মেদিনীপুর কলেজ মাঠে তৃণমূল আহূত এক সভায় তিনি আবারও জঙ্গল মহল থেকে যৌথ বাহিনী প্রত্যাহারের দাবী তোলেন। ১৮অক্টোবর’১০কলকাতায় সাংবাদিকদের কাছে মমতা ব্যানার্জি বলেন-জঙ্গল মহলে কোনো মাওবাদী নেই। জঙ্গল মহল থেকে যৌথ বাহিনী এক্ষুনি প্রত্যাহার করা হোক। এভাবে প্রায় প্রতিদিনই যৌথ বাহিনীর প্রত্যাহারের দাবী তৃণমূল নেত্রী করতেন।
২৮মে’১০গভীর রাতে ঝাড়গ্রাম থেকে প্রায় ২২কিলোমিটার দূরে জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসে মাওবাদীরা নাশকতা চালায়। প্রচুর মানুষ মারা যান। ২৯মে’১০ তৃণমূল পন্থী কয়েকজন বুদ্ধিজীবী কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস কান্ডের জন্য অদ্ভূতভাবে সি.পি.আই(এম)কে দায়ী করে। কিন্তু ২৯ নভেম্বর’১০জ্ঞানেশ্বরী কান্ডের ব্যাপারে সিবিআই যে চার্জশিট পেশ করে তাতে পরিষ্কার হয়ে যায় মাওবাদীরাই এই নাশকতার সঙ্গে যুক্ত ছিল। অথচ ৬মে’১১ মমতা ব্যানার্জি এক বিবৃতিতে বলেছিলেন ,”মাওবাদী বলে যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে ,সরকার গড়লে তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে”। ২০০৯-১১ এই দু’বছরে জঙ্গলমহলে নির্বিচারে সি.পি.আই(এম)কর্মী-সমর্থক খুন হলেও সুশীল-সুশীলারা কোনো বিবৃতি দেননি।
রাজ্যবাসী নিশ্চয় জাগরী বাস্কেকে ভুলে যাননি। ১৭নভেম্বর’১৫ আত্মসমর্পণ করে জাগরী। আত্মসমর্পণের আগে চার বছর নি:শব্দে পুলিশের নজরদারির মধ্যেই ছিল জাগরী ও তার পরিবার। আত্মসমর্পনের সময় প্রশ্ন উঠেছিল-প্রায় চার বছর আগে মাওবাদীদের ছেড়ে পুলিশের ঘেরাটোপে চলে আসা জাগরী কী করে মাওবাদীরদের নতুন পোশাক পেল? কী করে তার বেল্ট অনেকটাই কলকাতা পুলিসের কনষ্টেবলদের মতো হয়েছিল? তার টুপিটিও বা কী করে একদম নতুন ছিলো?
২০১১ তে নতুন সরকার আসার পর মাওবাদী রাজ্য সম্পাদক আকাশ এক বিবৃতিতে বলেছিলেন,”…আস্তিনে অস্ত্র লুকিয়ে রেখে শান্তির কথা বলে গেছে বারবার। সি.পি.এম-টিএমসি সংঘর্ষে কার রক্ত ঝরলো ,কত পরিবার অনাথ হলো ,তার দায় ওরা কখনো নেয়নি। নেবেও না। গড়বেতা,কেশপুর সংঘর্ষে তৃণমূলের হাতে কত সশস্ত্র দল ছিল,কত অস্ত্র মজুত ছিল,তা কি জনগন ভুলে গেছে? নন্দীগ্রামে সি.পি.এমের হার্মাদদের প্রতিরোধ করার ক্ষেত্রে টিএমসি’র লোকজন কি গোলাপ ফুল ব্যবহার করেছিল,না বন্দুক ব্যবহার করেছিল? তাদের অস্ত্র প্রদর্শন কি প্রকাশ্যে আসেনি? নন্দীগ্রামে আমাদের দুই নেতা কমরেড দীপক ও সুদীপ চোঙদার সরাসরি ময়দানে নেতৃত্ব দিলো। তৃণমূলের লোকেরাও অস্ত্রে সজ্জিত করেছিল”।
মুখ্যমন্ত্রীকে কি কিষেনজির ভূত তাড়া করে বেড়াচ্ছে? যে কিষেনজি মমতা ব্যানার্জিকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে দেখতে চেয়েছিলেন সেই কিষেনজিকে কিভাবে মারা হয়েছিল তা সবার কাছে পরিষ্কার। ২৪নভেম্বর’১১ জঙ্গলমহলের ত্রাস কোটেশ্বর রাও ওরফে কিষেনজি নিহত হন। মাওবাদীদের আর এক জন পলিটব্যুরোর সদস্য আজাদের মৃত্যু হয় এক সংঘর্ষে।সেই ঘটনার পাঁচ সপ্তাহ পরে ৯ আগষ্ট’১০ লালগড়ের সভায় মমতা বলেছিলেন,”আজাদকে যেভাবে খুন করা হয়েছে ,তা ঠিক হয় নি”। কিন্তু কিষেনজির মৃত্যুর পর মমতা কোনো বিবৃতি দেননি।
কিন্তু ঘটনার পর মাওবাদী স্কোয়াডের নেত্রী সুচিত্রা মাহাতোকে নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠাবার ব্যবস্থা কে করেছিল? ঝাড়খন্ড সীমান্ত লাগোয়া বুড়িশালের জঙ্গলে অভিযানের সময় সুচিত্রা পালালেন কি করে?সুচিত্রা মাহাতোর ‘উধাও’হয়ে যাওয়া নিয়ে পুলিশ যৌথবাহিনীর সঙ্গে মাওবাদী গুলির লড়াইয়ে কোনোমতে পালিয়ে যেতে সমর্থ হয়েছিলেন সুচিত্রা- এমনই কথা বলেছিল পুলিশ। তাঁর পেটে ও কাঁধে গুলি লাগে বলেও জানানো হয়েছিল। এত নিরাপত্তার মধ্যেও গুরুতর জখম অবস্থায় একজন কার্যত কিভাবে উধাও হয়ে গিয়েছিলেন? যৌথ বাহিনীর চোখে ধুলো দিয়ে সুচিত্রা কিভাবে পালিয়েছিলেন? এঘটনা নিশ্চয়ই রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের মনে আছে।
২০১১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের আগেই শুভেন্দু অধিকারী প্রকাশ্যেই হূমকী দিয়েছিলেন,তৃণমূল ক্ষমতা এলেই সুশান্ত ঘোষদের জেলে ঢোকানো হবে। ১৩মে বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশিত হয়। তিন সপ্তাহের মধ্যেই বেনাচাপড়া থেকে উদ্ধার হলো কঙ্কাল। এর মধ্যে একটি কঙ্কাল তার বাবা অজয় আচার্যের বলে দাবি করে তার ছেলে শ্যামল আচার্য।
শ্যামল আচার্য কীভাবে চিনলেন তাঁর বাবাকে? শ্যামল বলেছিল -‘সি পি এম-ই বাবা ও আরো চার তৃণমূল কর্মীকে ২০০২ সালের ২২সেপ্টেম্বর খুন করেছিল। মাটি থেকে কঙ্কাল যখন উদ্ধার হলো,তখন দেখলাম একটি কঙ্কালের শরীরে অন্তর্বাস রয়েছে। ওটি দেখেই চিনতে পারলাম, বাবা নিখোঁজ হওয়ার দিন ওটিই পরেছিলেন”। ৪৮ঘন্টার মধ্যেই থানায় এফ.আই.আর করা হয় সুশান্ত ঘোষ,তরুন রায় সহ ৪০ জন সি.পি.আই(এম) কর্মীর বিরুদ্ধে। শ্যামল আচার্য মেদিনীপুরের উদয়পল্লীতে যে বাড়িতে থাকতেন সেই বাড়িতে ১৭ ডিসেম্বর ‘২০০৯ তল্লাসী চালিয়েছিল যৌথবাহিনী। মিলেছিল অস্ত্রভান্ডার। মাওবাদী নাশকতার কাজে ব্যবহারের জন্য ঐ অস্ত্র মজুত করা হয়েছিল। আসলে মাওবাদী সহযোগী শ্যামল আচার্য ।
সুশান্ত ঘোষের নামে মিথ্যা মামলার পর মামলা হয়েছে। সি.আই.ডি হেফাজতে অমানবিক আচরন করা হয়েছিল। যদিও গোটা মামলা যে সাজানো তা গোটা রাজ্যের মানুষ জানেন।সাজানো মামলায় প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার চেষ্টা করা হয়েছে। মিথ্যা মামলায় বর্ষীয়ান নেত্রী ফুল্লরা মন্ডলকে জেলে বন্দী করা হয়েছিল।সদ্য মুক্তি পেয়েছেন।
প্রায় একদশক পর সুতির কাপড়ের অন্তর্বাস সহ কেশপুরের বাসিন্দা অজয় আচার্যের ‘কঙ্কাল’উদ্ধারের পর দ্রুততার সঙ্গে এফ আই আর’, কঙ্কালে’র ডিএনএ টেষ্ট- সবই হয়। কিন্তু কোন্ কারনে কংসাবতীর চর থেকে উদ্ধার হওয়া সি.পি.আই(এম)কর্মী মোহন সিং -এর পচাগলা দেহের হাড়গোড়ের ডি.এন.এ টেষ্ট নিয়ে দীর্ঘসূত্রতা করা হয়েছিল? ১৭সেপ্টেম্বর’১১ ঝাড়গ্রাম গ্রামীনের নহরিয়ার জঙ্গলে উদ্ধার হয়েছিল সি.পি.আই(এম) স্বরূপা পালের পচাগলা মৃতদেহ। কমরেড পাল ১১ মাস অপহৃত ছিলেন। এক্ষেত্র ডি.এন.এ টেষ্টের বিষয়ে টালবাহানা কেন করা হয়েছিল? ১৩মে’১১ বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষনার পরের দিনই গড়বেতার মায়তায় পিটিয়ে খুন করা হয় শিক্ষক ও পার্টি নেতা জিতেন নন্দীকে।
শ্রেনী শত্রুরা বারে বরে সি.পি.আই(এম)কে শেষ করতে চেয়েছেন। কিন্তু পেরেছেন কি? বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীর নিশ্চয়ই সালকু সরেনকে মনে আছে। ১১জুন’০৯ অজনাশুলির জঙ্গলে মাওবাদীরা গুলি করে হত্যা করে সালকুকে। সালকু সরেনের মৃতদেহ পাঁচদিন ধরে খোলা আকাশের নিচে পড়েছিল। পরিবারের লোকদের কাছে যেতে দেওয়া হয়নি। সালকুর মা লালঝান্ডা ছাড়েননি। এটাই আদর্শের টান।
পৃথিবীর দেশে দেশে কমিউনিস্টদের খতম অভিযান হয়েছে বিভিন্ন সময়ে। কিন্তু শেষ করা যায় নি। ইতালির কমিউনিস্টদের খতম করার জন্য ‘ডুসে’ হুকুম দিয়েছিলেন,’সবাইকে হত্যা করো। একজন মৃতও যেন গল্প করার জন্য ফিরে না আসে’। ইতালির কমিউনিস্টদের শেষ করা যায়নি। বাংলাতেও যাবে না।
পশ্চিমবাংলার স্বঘোষিত দিদি ও তাঁর দলের বিরুদ্ধে অভিযোগের তালিকা এত দীর্ঘ, সে কারনে সবটা স্মরনে নাও থাকতে পারে। কিন্তু মানুষ ভুলে যাননি।
পশ্চিমবাংলার মানুষ সব হিসাব বুঝে নেবেন।