They are also facing brigade in Routemap -Indrajeet Ghosh


মুশলধারে বৃষ্টিতে প্রখর রোদে, অনেক রাতে, কনকনে ঠান্ডায় বা হঠাৎ বাড়িতে অতিথি এসেছে কোনো রেস্টুরেন্টে যেতে পারছেন না। কিন্তু রেস্টুরেন্টে বানানো খাবার খেতে ইচ্ছা করছে। কি করবেন??
বাড়িতে রান্না করার লোক নেই। কি করবেন??
বাড়িতে অসুস্থ মানুষ খাবার চাই,
বন্ধুর জন্মদিন গিফট পাঠাতে হবে কি করবেন??
অফিসের চাপে শপিং করতে পারছেন না, চিন্তা কি অনলাইন বাজার আছে তো, কিনলেন আপনার পছন্দের জিনিস আপনার কাছে ঠিক পৌঁছে যাবে।
বাড়ির মাসকাবারি জিনিস কিনতে হবে?
ভারী বাজার বয়ে আনা সমস্যা??
একটা দরকারি জিনিস কাউকে পাঠাতে হবে কিন্তু আপনার কাজের চাপ খুব কি করবেন??
এই রকম হাজারো সমস্যা, কিন্তু
কোনো চিন্তা নেই আপনার।
বাড়িতে বসেই পাবেন আপনার পছন্দ মত খাবার, বন্ধুর জন্য গিফট।
খাবার ওর্ডার করার ২০-২৫ মিনিটে আপনার বাড়িতে খাবার পৌঁছে যাবে। বা ২৪ ঘন্টায় আপনার জিনিস আপনার কাছে।
আপনার মুশকিল আসান হয়ে রাস্তায় আছেন ডেলিভারি ওয়ার্কার। কেউ #SWIGGY ZOMATO,Amazon, Flipkart, Domimo’s Bigbusket Poter সহ অনেক গুলি কোম্পানি এর পোশাক পরে খাবার জিনিস, গ্লসারী বহন করে আপনার কাছে পৌঁছে যাচ্ছেন।
রোদ, ঝড়, বৃষ্টি, রাত, কোনো কিছুই কোনো প্রতিবন্ধক নয়।

এমনি একটা খাবার ওর্ডার ডেলিভারি দিলে ওনারা পান ৫ কিমি পর্যন্ত ২৫ টাকা আর তার বেশি হলে ৫ টাকা প্রতি কিমি।
আর হ্যাঁ ১০ ঘন্টা অনলাইন থাকলে ও মিনিমাম ৬ টা ডেলিভারি করতে পারলে একটা ইনসেন্টিভ পান। সাইকেল করে যারা ডেলিভারি করেন তাদের ১৪ টা ট্রিপ করলে তারপর ৫০০ টাকা, আর বাইকে ১৬ ডেলিভারি করলে তারপর ৮০০ টাকা রোজগার। জ্যোমাটো তে আবার সাইকেল চালক দের ৩ টাকা প্রতি কিমি আর বাইক চালকদের ৫ টাকা প্রতি কিমি।
Flipkart এর কর্মীদের ডেলিভারি পিছু ১১ টা থেকে ১৫ টাকা।
সময় মত খাবার পৌঁছাতে না পারলে কপালে জোটে দুর্ভোগ। খাবার ঠান্ডা হয়ে গেলে কটু কথার শেষ নেই। রিপোর্ট খারাপ বা রেটিং কম হলে বুকিং ও পাবে কম।
জিনিসপত্রের ক্ষেত্রেও প্রায় একই রকম, সেক্ষেত্রে জিনিসপত্রের পরিমানের উপর কিছুটা নির্ভর করে। এখানে একটা বিপদ আছে পার্সেলে অনেক সময় নিষিদ্ধ দ্রব্য পাঠানো হয় সেক্ষেত্রে না জেনেই না বুঝেই পুলিশের হয়রানির শিকার হতে হয়। অনেকে মদ অর্ডার করে বাড়িতে অসভ্যতামি করে।
যাই হোক এই কষ্টের কথা বললে শেষ হবে না।
তার সবার উপর আছে রাস্তায় পুলিশের হয়রানি।
এই ডেলিভারি ওয়ার্কাররা অনেক সময় বাইক ট্যাক্সি ও চালায়। যাত্রী পরিবহন।
র‍্যাপিডো, ওলা, উবের, ইনড্রাইভ বিভিন্ন অ্যাপ ক্যাব কোম্পানির ক্যাব ড্রাইভার।
এই ক্যাভ ড্রাইভারদের পুলিশি হয়রানি মারাত্মক।
সরকারের বক্তব্য প্রাইভেট নম্বরে বাইক ট্যাক্সি চালানো যাবে না। ক্যাব ড্রাইভাররা কমার্শিয়াল নং প্লেট অর্থাৎ হলুদ নং প্লেট করতে চায় কিন্তু সরকারের নির্দেশিকা থাকলেও কার্যকর করা হচ্ছে না। ক্যাব ড্রাইভারদের আন্দোলনের চাপে মাত্র ২ টি ক্যাম্প করেছে।যা প্রয়োজনের তুলনায় নগন্য।
পেটের টানে রাস্তায় আছে।
না এদের কোম্পানি গুলি তাদের কর্মী বলে মনে করে না। পোশাকি নাম ডেলিভারি পার্টনার বা ড্রাইভার পার্টনার।
যেহেতু কোম্পানি গুলি এদের কর্মী মনে করে না তাই এনাদের পিএফ, ই এস আই, gratuity কিছুই নেই। নেই ছুটির দিন। আছে কেবল ডিভাইস অন করা। আছে কেবল পরিশ্রম করা।
এই অস্বাভাবিক জ্বালানি তেলের দাম এনাদের ইনকাম তলানিতে, তারপর পুলিশের হয়রানি কেস দেওয়া তো আছেই।
সব চাইতে বড় যন্ত্রনা হলো যখন তখন বিনা নোটিশে আই ডি ব্লক করে দেওয়া। তার মানে কাজ চলে যাওয়া। চরম অনিশ্চয়তা।
চরম খাটনি,নেই কাজের নিরাপত্তা নেই সামাজিক সুরক্ষা নেই মিনিমাম ওয়েজ।
প্রযুক্তির ব্যবহারে এক চেটিয়া পুঁজির নির্মম শোষণ। চরম বঞ্চনা। “না ইনসাফি। “
দেশের সরকার এই গিগ ওয়ার্কারদের জন্য একটা আইন করেছে। তাতে তাদের মিনিমাম প্রোটেকশন দেওয়ার তুলনার মালিক মানে অ্যাপ ক্যাব কোম্পানি, ডেলিভারি কোম্পানি ফুড সাপ্লাই কোম্পানি কর্মীদের মিনিমাম মজুরি দিয়ে কাজ করাতে পারে সেই ব্যবস্থা। সামান্য সুযোগ সুবিধার কথা বলা আছে।
আমাদের রাজ্যে কোনো আইন হয়নি। কেন্দ্রীয় সরকারের যে আইন যেটুকু সুযোগ সুবিধা পাওয়ার কথা সেটাও পাওয়া যাচ্ছে না।
এই তীব্র শোষণ বঞ্চনার বিরুদ্ধে গিগ ওয়ার্কাররা লড়াই করার জন্য নিজেরা সংগঠিত হয়েছে।
ইউনিয়ন তৈরী করেছে। বিভিন্ন সময় অ্যাপ ক্যাব কোম্পানি অফিসে বা ডেলিভারি সংস্থা অফিসে বিক্ষোভ করছে। প্রতিদিন তাড়া লড়াইয়ের মাধ্যমে সংগঠিত হচ্ছে।
লড়াই করে সামান্য কিছুটা সুরাহা হচ্ছে কিন্তু বাকিটা হচ্ছে না।
এটা প্রতিদিন পরিষ্কার হচ্ছে আরো বড় লড়াই করা দরকার। লড়াইয়ের জন্য চাই আরো বড় প্ল্যাটফর্ম।
আমাদের রাজ্যের সমস্ত অংশের মানুষের ইনসাফের দাবীতে গত ৩ রা নভেম্বর থেকে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত ইনসাফ যাত্রা করেছে এরাজ্যের বাম যুব সংগঠন DYFI…
ব্যাপক অংশের মানুষ মিলিত হয়েছে এই ইনসাফ যাত্রায়। ডেলিভারি কর‍তে করতে অনেই এই ইনসাফ যাত্রায় পা মিলিয়েছেন। অনেকে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে উৎসাহ দিয়েছেন ইনসাফ যাত্রীদের। নিজেদের কষ্টার্জিত টাকাও তুলে দিয়েছেন ইনসাফ যাত্রীদের হাতে। একাত্ম হয়েছেন এই লড়াইতে।
নিজেদের লড়াইকে সংহত করতে ও বৃহত্তর লড়াইয়ের সাথে নিজেদের যুক্ত করে দেশ বাঁচানোর লড়াইতে নিজেদের সামিল করতে আগামী ৭ জানুয়ারি ব্রিগেডে সমাবেশে সদলবলে যুক্ত হবে গিগ ওয়ার্কাররা।
তারা যে বাড়িতে খাবার পৌঁছায় বা গ্লোসারী পৌঁছায় তাদেরকেও এই লড়াইতে সামিল করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
নিজেদের উপলব্ধি এটাই, লড়াইয়ে ময়দানে বন্ধু চাই। তাই বন্ধুদের বৃত্ত বাড়াতে হবে। শোষণ বঞ্চনার বিরুদ্ধে শোষিত মানুষদের সাবাইকে এক হতে হবে।
তবেই ধাক্কা দেওয়া সম্ভব।


এই ইনসাফ যাত্রা সেই আত্মবিশ্বাসের জন্ম দিয়েছে, ধাক্কা দিতে পারা সম্ভব। তাই আপনাকে অনুরোধ আপনি ও আসুন ৭ জানুয়ারি ব্রিগেডের সমাবেশে।

Spread the word

Leave a Reply