তাঁকে আপনি যাই ভাবুন, মার্কস এখনও একটা ব্যাপার, মার্কসকে বাদ দিয়ে ভাবতে পারবেন না।

তাঁকে আপনি যাই ভাবুন, মার্কস এখনও একটা ব্যাপার, মার্কসকে বাদ দিয়ে ভাবতে পারবেন না।
বইয়ের পাতায় ছোট্ট অলিভারের দুঃখ সম্পর্কে পড়ে, অনুভব করে এদেশের শৈশব বালিশে মুখ গুঁজে কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে যাওয়া স্বপ্নে যবে থেকে নিজেকে অলিভারের বন্ধু করে তুলেছে- আসল বিশ্বায়ন ঘটেছিল তখনই।
অ্যালেইদা আর এস্তেফানিয়া’রা দেখে যাবেন কলকাতাও বিপ্লবী চেনে।
নয়া-উদারবাদের আঘাতে সাবেক শ্রমিকশ্রেণি ইতিমধ্যেই আক্রমণের মুখে পড়েছিল। এর উপরে আন্তর্জাতিক লগ্নী পুঁজির দাপটে ভারি শিল্পে উৎপাদনের অনেকটাই ইউরোপের হাতছাড়া হয়ে যায়। পুঁজিবাদী উৎপাদন ব্যবস্থায় বহুবিধ কাঠামোগত পরিবর্তন সাধিত হয়েছিল, এরই প্রভাবে উৎপাদনের মূলধারার নানারকম কাজ অনেকটাই উন্নয়নশীল দেশের মাটিতে সরে আসে।
বৃহৎ বুর্জোয়া- ভূস্বামীদের দ্বারা প্রণীত ভারতের সংবিধানের প্রতিটি প্রগতিশীল অংশের রক্ষার লড়াইয়ে বামপন্থীরাই এ দেশে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করেছে, যেখানে বৃহৎ বুর্জোয়া ক্ষয়িষ্ণু সামন্তবাদের সাথে গাঁটছড়া বেঁধে প্রতিক্রিয়ার আক্রমণ হেনেছে সংবিধানের উপর।
এখনও বিপ্লবের দিনে আমাজন থেকে আন্দামান সাজে লাল ঝান্ডায়। এই শপথে: একদিন ‘প্রতি মাস হবে অক্টোবর, প্রতিদিন প্রত্যেকে লেনিন।’
দাদার ফাঁসিতে মৃত্যুবরণের ঘটনাতে লেনিন দুঃখিত হন, ব্যথিত হন – কিন্তু তিনি ভীত হননি বরং অত্যাচারী জার শাসনের অবসানের লক্ষ্যে তার বিপ্লবী জেদ ক্রমান্বয়ে বেড়েছিল। এই শোষণের বিরুদ্ধে সংগঠিত সংগ্রামের পথ ধরে এগোবার জন্য তিনি মনস্থির করেন।
আমেরিকার শাসকদের ক্রোধ লোকটির প্রতি স্বাভাবিক। প্রথমত, লোকটিও আমেরিকান। দ্বিতীয়ত, পড়াশোনা করেছেন হার্ভার্ডে। তবু পুঁজিবাদী অর্থনীতির নিষ্ঠাবান প্রচারক হওয়ার বদলে হয়েছেন র্যাডিক্যাল। তৃতীয়ত, সবচেয়ে যা মারাত্মক — সোভিয়েত বিপ্লবের মত ‘ইতরদের হিংসা, বিশৃঙ্খলা’-র অনুপুঙ্খ বিবরণ লোকটি সংগ্রহ করেছেন প্রকাশ্যে — পেত্রোগ্রাদের কাদাভরা রাস্তায় হেঁটেচলে, নোংরা দেওয়াল থেকে সযত্নে গোছা গোছা ইশ্তেহার, ঘোষনাপত্র সোল্লাসে সংগ্রহ করে। ছদ্মবেশে রাশিয়া গেছেন। সেখানে মজুর, সৈনিক, কৃষকদের চিৎকার, তর্কের মাঝে পা মুড়ে বসে, তাঁদের আলোচনা থেকে ‘নোট’ নিয়েছেন। আর সেই সব কিনা গুছিয়ে বয়ে এনেছেন দেশে। লিখেছেন লুকিয়ে — খোদ নিউ ইয়র্কে বসে।
লাতিন আমেরিকার সামনে চ্যালেঞ্জ অনেক। তবে রয়েছে একটি সত্যিকারের সম্ভাবনা। নয়া উদারবাদের ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে বিকল্প নির্মাণ। নয়া উদারবাদের বিরোধিতা থেকে নয়া উদারবাদ-উত্তর মডেল নির্মাণ। যদিও কাজটা সহজ নয়। দু’টি ভিন্নধর্মী রাজনৈতিক মডেলের সংঘাত অনিবার্য।
‘শ্রেণীসংগ্রাম’ কথাটার উপরেই একপ্রকার অলিখিত নিষেধাজ্ঞা বসে গেছিল। শ্রেণী নিয়ে তুমি কথা বলছো, মানে তুমি প্রাচীনপন্থী, ও আবার কেউ বলে নাকি ? আর ‘ধর্মঘট’ ?