ফ্যাসিবাদ যখন দোরগোড়ায় পৌঁছে যায়, তখন তার বিরোধিতা না করাই অপরাধ।

ফ্যাসিবাদ যখন দোরগোড়ায় পৌঁছে যায়, তখন তার বিরোধিতা না করাই অপরাধ।
সংসদীয় গণতন্ত্রের স্থূল ভাওতাবাজির সঙ্গে উন্মুক্ত সন্ত্রাসবাদী একনায়কতন্ত্রের সম্মিলনে নিজ ভিত্তি সম্প্রসারণের প্রয়াস থেকে ফ্যাসিবাদকে বিরত করা যায় না।
শেষ বয়সে তার কলম থেকে বেরিয়ে আসে ‘হাউ টু চেঞ্জ দ্য ওয়ার্ল্ড’। আসলে ইঙ্গিত দিয়ে যান কাজ শেষ হয় নি, কাজ চালিয়ে যেতে হবে।
১৯২১ সালের জানুয়ারি মাসে ইতালির কমিউনিস্ট পার্টি (PCI)- এর প্রথম কংগ্রেস আয়োজিত হয়, লিভর্নো শহরে। উনত্রিশ বছর বয়সী আন্তোনিও গ্রামশি ততদিনে গোটা ইতালিতে অন্যতম বামপন্থী বিপ্লবী নেতা হিসাবে পরিচিত হয়েছেন। ফ্যাক্টরি কাউন্সিল আন্দোলনের প্রভাবে তুরিন-কে ইতালির “পেত্রোগ্রাদ” বলা শুরু হয়ে গেছে। গ্রামশি তখন L’Ordine Nuovo নামক সাপ্তাহিক পত্রিকায় নিয়মিত লিখছেন। ১৯২১ সালের ১২ই এপ্রিল The Communists and The Elections শিরোনামে L’Ordine Nuovo’তে একটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়। একশো বছর পরেও সেই প্রবন্ধের বক্তব্য অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। প্রথমে বিশ্বযুদ্ধ এবং পরে ফ্যাসিবাদের কবলে পড়া ইতালির পরিপ্রেক্ষিতে লেখা সেই প্রবন্ধ একশো বছর পরে পড়ার সময় আজকের ভারতে নির্দিষ্ট পরিস্থিতি যেমন মাথায় রাখতে হবে তেমনই ইতিহাস নির্দিষ্ট কর্তব্য পালনের লক্ষ্যে মার্কসবাদের সাধারণ সুত্রগুলিকেও আমাদের আরেকবার ঝালিয়ে নিতে হবে।
নয়া-উদারবাদের আঘাতে সাবেক শ্রমিকশ্রেণি ইতিমধ্যেই আক্রমণের মুখে পড়েছিল। এর উপরে আন্তর্জাতিক লগ্নী পুঁজির দাপটে ভারি শিল্পে উৎপাদনের অনেকটাই ইউরোপের হাতছাড়া হয়ে যায়। পুঁজিবাদী উৎপাদন ব্যবস্থায় বহুবিধ কাঠামোগত পরিবর্তন সাধিত হয়েছিল, এরই প্রভাবে উৎপাদনের মূলধারার নানারকম কাজ অনেকটাই উন্নয়নশীল দেশের মাটিতে সরে আসে।
আজ আমাদের দেশের ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই এর অর্থ – সংগ্রামের সূচীমুখ স্থির রাখতে হবে লুঠেরা কর্পোরেটের বিরুদ্ধে আর রুটি-রুজি-গণতন্ত্রের দাবিতে রাস্তা দখল করে চালাতে হবে দীর্ঘস্থায়ী লড়াই।
লজ্জা শরমের মাথা খেয়ে সমগ্র মন্ত্রীসভাই নেমে পড়ছে বিধায়ক কেনাবেচা ক’রে সরকার গঠন করতে। সংসদকে কার্যত অকেজো করে দিচ্ছে।
যে আমরা সবাই নাগরিক এবং প্রত্যেকে সমানভাবে মত প্রকাশের অধিকারী। যদি এই সম অধিকারের প্রাথমিক অঙ্গীকার থেকে সরে গিয়ে আমরা এটা মনে করতে শুরু করি যে এই দেশে কেবলমাত্র একটি ধর্মের মানুষের বা কোনো গোষ্ঠীর অধিকার বেশি হওয়া উচিত অথবা সংখ্যালঘুদের অধিকার কম হওয়া উচিত তা হলে গণতন্ত্রের ভিত্তিকেই টলিয়ে দেওয়া যায়।
মানুষের মুক্ত থাকার অধিকার বুটের তলায় মাড়িয়ে দিতে চাওয়া যুদ্ধবাজ ফ্যাসিস্ট হিটলারের জার্মান বিমানই শুধু স্পেনের আকাশে ওড়েনি সেদিন, লড়াইয়ের বন্ধু হিসাবে বিদেশ থেকে উড়ে আসা বিমান থেকেও আরেক লিফলেট ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। স্পেনের অলিতে-গলিতে, বড় রাস্তার দেওয়ালের মতোই আকাশ থেকে উড়ে আসা সেইসব লিফলেটে সাক্ষর ছিল ‘নো পাসারান’।
আমাদের দেশের প্রেক্ষিতে কৃষকদের আন্দোলন-সংগ্রাম এক নতুন নজির রেখেছে। এই আন্দোলন সরাসরি বিজেপি সরকারের নীতির বিরোধিতার পাশাপাশি সরকার বদলে দিতে প্রত্যক্ষ সংগ্রামের আহ্বানও জানিয়েছে। নয়া-উদারবাদ বিরোধী আন্দোলনে এমন রণকৌশল অভূতপূর্ব