সুদীপ দত্ত
ভারতের সরকারী বিদ্যুৎ শিল্পের ওপর আক্রমণের প্রেক্ষাপটঃ
ভারতের সরকারী বিদ্যুৎক্ষেত্র নয়া উদারবাদের গত কয়েক দশক ধরে ভয়ানক আক্রমণের মুখে । দেশের বিদ্যুৎ কর্মীদের তীব্র বিরোধ স্বত্ত্বেও ২০০৩ সালে পাশ হয় নতুন বিদ্যুৎ আইন । নিঃসন্দেহে এই আইন দেশের বিদ্যুৎ বন্টন ক্ষেত্রের সামগ্রিক বেসরকারীকরনের সব রাস্তাই খুলে দিয়েছিল । যদিও, ২০০৩ – এর আইন স্বত্ত্বেও শ্রমিক-কর্মচারীদের তীব্র লড়াইয়ের ফলে এখনো বিদ্যুৎ বন্টন ক্ষেত্রের সিংহভাগ রাজ্য সরকার পোষিত সংস্থার হাতেই রয়েছে । প্রসঙ্গত, দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার ৫০% যথারীতি চলে গেছে বেসরকারী সংস্থার হাতে ।
মোদী সরকারের বিদ্যুৎ সংশোধনী বিল – বিদ্যুৎ শিল্পের ওপর আক্রমণের এক ঘৃণ্য প্রচেষ্টাঃ
২০১৪ সালে ক্ষমতায় এসেই মোদী সরকার রাজ্য সরকারী বিদ্যুৎ বণ্টন ব্যবস্থা ধ্বংস করে বেসরকারী কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়ার লক্ষ্যে বিদ্যুৎ সংশোধনী বিল পাশ করার চক্রান্ত শুরু করে । কিন্তু দেশজোড়া বিদ্যুৎকর্মী ও সাধারণ জনতার আন্দোলনের চাপে এখনও এই বিল সরকার পাশ করতে পারে নি । এই বিলের প্রাথমিক উদ্দেশ্য হলো লাভজনক এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ অধিকার বেসরকারী কোম্পানীর হাতে তুলে দেওয়া । মনে রাখা দরকার, এই বিদ্যুৎ বিতরণের পুরো পরিকাঠামো তৈরি করেছে রাজ্য সরকারী সংস্থা ও তাতে কর্মরত অগুন্তি শ্রমিক কর্মচারীরা ।
মোদী জমানায় বিদ্যুৎ ক্ষেত্রের ভয়াবহ চিত্রঃ
মোদী জমানায় রাজ্য সরকারী বিদ্যুৎ সংস্থাগুলোর অবস্থা হয়েছে ভয়াবহ । কেন্দ্রীয় সরকার চাপিয়েছে একের পর এক জনবিরোধী নীতি – কয়লার ওপর ১৪% রয়্যালটি ট্যাক্স, জিএসটি, জিএসটি কমপেনসেশন সেস, বিশাল পরিমাণ রেলওয়ের ফ্রেইট চার্জ বসিয়েছে মোদী সরকার । জোর করে কয়লা বিদেশ থেকে আমদানী করার ফরমান জারী করেছে বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী সংস্থার ওপর । ফল হয়েছে বিদ্যুতের ভয়াবহ মূল্যবৃদ্ধি । লাভ হয়েছে আদানীর, বোঝা বেড়েছে বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থার ওপর ।
সরকারী বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থার ওপর শেষ আঘাত – রিভ্যাম্পড ডিস্ট্রিবিউশন সেক্টর স্কীম (আরডিএসএস) ঃ
বিদ্যুৎ সংশোধনী বিল পাশ না করতে পেরে কেন্দ্রীয় সরকার ২০২২ সালের জুলাই মাসে এক ভয়ানক স্কীম নিয়ে এসেছে যার পোষাকি নাম রিভ্যাম্পড ডিস্ট্রিবিউশন সেক্টর স্কীম (আরডিএসএস) । ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্কের সরাসরি নির্দেশে নিয়ে আসা এই স্মার্ট মিটারিং স্কীম জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার জন্য নির্লজ্জভাবে কেন্দ্রীয় সরকার বন্ধ করে দিয়েছে সব চালু আর্থিক সহায়তা স্কীম । ৩ লক্ষ কোটি টাকার এই স্মার্ট মিটারিং স্কীমের ২ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকার আর বিদ্যুৎ গ্রাহকদের ওপরে । কী হবে আরডিএসএস লাগু হলে? এই স্কীম লাগু হলে ধাপে ধাপে ডাইরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফারের নামে সব ধরনের ক্রস সাবসিডি তুলে দেওয়া হবে (আজকে রান্নার গ্যাসের ক্ষেত্রে ডাইরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফারের ফলে কি পরিমাণ দাম বেড়েছে তা সকলেরই জানা), কস্ট রিফ্লেক্টিং টারিফের নামে যথেচ্ছ বিদ্যুৎ মূল্যের বোঝা বাড়ানো হবে এবং রাজ্য বিদ্যুৎ রেগুলেটরি কমিশনগুলোকে টারিফ বৃদ্ধি করতে বাধ্য করা হবে, এখনও পর্যন্ত জমা ঋণের বোঝা এক ধাক্কায় গ্রাহকদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হবে, সরকারী বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থার হাত থেকে লাভজনক এলাকা ছিনিয়ে নিয়ে বেসরকারী সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার পথ বানানো হবে, জনগণের টাকায় টোটেক্স মডেলে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকার ফিডার ও ট্রান্সফর্মার মিটার বসানো হবে এবং মিটার রিডিং, বিলিং –এর সাথে যুক্ত গোটা দেশের লক্ষ লক্ষ বিদ্যুৎ কর্মীর কাজ চিরতরে চলে যাবে ।
মিটার বসানোর বিপুল আর্থিক বোঝা পড়বে জনগণের ওপরঃ
গোটা দেশজুড়ে সমস্ত গ্রাহকের ঘরে গ্রাহকদের নিজস্ব টাকায় বসাতে বাধ্য করা হবে প্রিপেইড স্মার্ট মিটার । এই মিটারের আয়ু সর্বোচ্চ ৭-৮ বছর । মিটারের দাম ৭০০০-৮০০০ টাকা । মিটার ইন্সটলেশনের পরে এখনও পর্যন্ত অভিজ্ঞতা ভয়াবহ – বেড়ে গেছে অনেকক্ষেত্রে বিলের পরিমাণ অনেকটা । বিশেষ করে কৃষি গ্রাহক ও দরিদ্র গ্রাহকদের ওপর বাড়ছে বোঝা । এই স্কীম অনুযায়ী গ্রাহকদের জন্য বর্ধিত হারে টারিফ লাগু করতে হবে, কৃষি গ্রাহকদের অন্য গ্রাহকদের থেকে পৃথক করে কৃষি সাবসিডি চিহ্নিত করতে হবে ও সাবসিডি সরিয়ে নিতে হবে ।
বিদ্যুতের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির রূপরেখা – বিদ্যুতের খোলা বাজারঃ
এই প্রিপেইড স্মার্ট মিটারের সাহায্যে প্রত্যেক গ্রাহকের বিদ্যুৎ ব্যবহারের তাৎক্ষণিক চিত্র চলে যাবে স্মার্ট মিটার বসানো এজেন্সির কাছে, বিদ্যুৎ বাজারের মুনাফাখোর ব্যবসায়ীদের কাছে চলে যাবে কখন কোন এলাকায় বিদ্যুতের চাহিদা বেশি । লাভজনক এলাকা চিহ্নিতকরণ করে বাজারে বিদ্যুৎ যোগানকারী প্রাইভেট সংস্থা হাঁকতে পারবে যথেচ্ছ দর । অভাবনীয় বোঝা পড়বে গ্রাহকদের ওপর । প্রসঙ্গত উল্লেখ্য গত ১০ বছর ধরে কেন্দ্রীয় সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদন সংস্থাগুলোকে বিদ্যুতের জন্য বাজারের ওপর নির্ভরশীল হতে ক্রমাগত বাধ্য করে চলেছে । তৈরি করা হয়েছে বিদ্যুতের ভার্চুয়াল বাজার – পাওয়ার এক্সচেঞ্জ মার্কেট । এই মার্কেটে বিদ্যুতের প্রতি মিনিটের দাম ঠিক হয় অজ্ঞাত এক সফটওয়্যার দিয়ে । ১ বছরের মধ্যেই এই বাজারে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ দাম ১২ টাকা/ কিলো ওয়াট ঘন্টা থেকে বাড়িয়ে ২০ টাকা/ কিলো ওয়াট ঘন্টা করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ রেগুলেটরি কমিশন । কিন্তু তাও উৎপাদনকারী সংস্থা বাজারের চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ যোগান দেয় নি । কৃত্রিমভাবে বাড়িয়েছে বিদ্যুতের দাম । গত ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ তারিখে এক প্রাইভেট বিদ্যুৎ সংস্থার চাপে পড়ে রেগুলেটরি কমিশন এই সিলিং ৫০ টাকা/ কিলো ওয়াট ঘন্টা করে দিয়েছে ! চেষ্টা চলছে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ১০০ টাকা পর্যন্ত করে দেওয়ার ।
টাইম অব ডে টারিফের নতুন হামলাঃ
এরই মধ্যে গত ১৪ই জুন কেন্দ্র সরকার বিদ্যুৎ (গ্রাহকের অধিকার) আইনে এক ভয়ানক এক তরফা সংশোধন করে নির্দেশ দিয়েছে যে দিনের বেলা সাধারণ হারে ও বিকেল সন্ধ্যাবেলা অতিরিক্ত বর্ধিত হারে গ্রাহকদের ওপরে টারিফ চাপানো হবে । স্বাভাবিক ভাবেই বিকেল সন্ধ্যাবেলা বিদ্যুতের ঘরোয়া ব্যবহার বাড়ে আর সেই সময় বিদ্যুতের দাম বাড়বে । বলা হচ্ছে যখন বিদ্যুতের টারিফ বেশি, তখন গ্রাহককে ব্যবহার কমাতে হবে । কার্যত সন্ধ্যাবেলা লাইট ফ্যান বন্ধ করে বসে থাকতে বাধ্য হবেন সাধারণ গ্রাহকেরা । স্মার্ট মিটারিং ব্যবস্থা বাজারী এজেন্সিগুলোর কাছে বিপুল পরিমাণ ডেটা তুলে দেবে যা দিয়ে এলাকা বা গ্রাহক ভিত্তিক চাহিদা অনুযায়ী যথেচ্ছ উঁচু দামে বিদ্যুৎ বিক্রি করার বন্দোবস্ত করবে প্রাইভেট সংস্থাগুলি । কেটে যাবে বিদ্যুতের লাইন ! প্রাইভেট বন্টন সংস্থা এই স্মার্ট মিটারের তথ্য অনুযায়ী সবচেয়ে লাভজনক এলাকার প্যারালাল বন্টন লাইসেন্সের আবেদন করবে । বিদ্যুৎ বন্টন পরিকাঠামো বানানো সরকারী সংস্থার হাতে পড়ে থাকবে সবচেয়ে অলাভজনক গ্রামীণ ও কৃষি এলাকা । স্মার্ট মিটার বসানো এজেন্সি নির্ধারণ করবে কখন কোথায় বিদ্যুৎ দেওয়া হবে । মিটারের টাকা শেষ হয়ে গেলে বিদ্যুৎ লাইন নিজে থেকে কেটে যাবে যেভাবে মোবাইলের ব্যালেন্স শেষ হলে মোবাইল কাজ করা বন্ধ করে দেয় । আর আগামী দিনে হয়তো প্রত্যেক গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী, দিনের সময় অনুযায়ী, তার বিদ্যুতের দরও ঠিক হবে ।
আমাদের রাজ্য সরকারের নির্লজ্জ আত্মসমর্পণঃ
এই ভয়াবহ স্কীমকে লাগু করতে গত ২০ শে ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে রাজ্য সরকার আরডিএসএস প্রকল্প বণ্টন কোম্পানীর উপর চাপিয়ে দিয়েছে । এই প্রকল্পে শুধু ডোমেস্টিক মিটারিংয়ের জন্য ১২৬২৩.১২ কোটি টাকার বোঝা বাংলার জনগণের ওপর চাপানো হবে । বাংলা জুড়ে মোট ২.০৭ কোটি গ্রাহককে এই স্মার্ট মিটারের জালে জড়িয়ে ফেলতে চলেছে রাজ্য সরকার । এছাড়াও ৩ লক্ষ ডিস্ট্রিবিউশন ট্রান্সফর্মারের এবং ১২ হাজার ৩৩ কেভি ও ১১ কেভি ফীডারের যথেষ্ট ভালো অবস্থায় থাকা মিটারগুলি জোর করে বাতিল করে স্মার্ট মিটার বসানো হবে। মোট ২০ হাজার কোটি টাকার বেশি বোঝা চাপানো হবে রাজ্যের গ্রাহকদের ওপর । নির্দেশ এসেছে, প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ করতে হবে ৩১ শে ডিসেম্বর ২০২৩ এর মধ্যে । কেন্দ্রের হাতে সব ক্ষমতা – এই প্রক্রিয়ায় সমস্ত মিটারগুলোকে যুক্ত করা হবে ন্যাশনাল ফিডার মিটারিং সিস্টেম নামক এক কেন্দ্রীয় সংস্থার সাথে । কার্যত বিদ্যুতের দাম থেকে বন্টন সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য থাকবে বাজার নিয়ন্ত্রণকারী কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির হাতে আর রাজ্য বন্টন সংস্থা পরিণত হবে শুধুমাত্র এক রক্ষণাবেক্ষণকারী এজেন্সিতে । এমনকী এই স্মার্ট মিটারের সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার নিয়ন্ত্রণ করবে প্রাইভেট কোম্পানী ।
গ্রাহকের উপর নেমে আসবে নানাবিধ বিপদঃ
যে সকল গ্রাহকের কন্ট্রাকচ্যুয়াল লোড কম আছে কিন্তু বেশী বিদ্যুৎ ব্যবহার হয়ে যায়, তারা বিপদে পরবেন । লোড বাড়ানোর জন্য আবেদন করতে ছুটতে হবে বন্টন কোম্পানির অফিসে । বিলের টাকা বেশি মনে হলে গ্রাহক কার্যত অভিযোগ করতেও পারবেন না । টাকা না ভরা অব্দি বিদ্যুৎ কানেকশন আসবে না । মোবাইল পরিষেবার ক্ষেত্রে দৈনিক ২ (দুই) জিবি নেট ব্যবহারের জন্য টাকা ভরবার পরে, দ্রুত টাকা শেষ হইয়ে গেলে কি আমরা আদৌ কিছু করতে পারি ! কর্মী ছাঁটাই – এর হামলাঃ আমাদের রাজ্যে মিটার রিডিং-এ নিযুক্ত কর্মী সংখ্যা প্রায় ৬০০০। সরাসরি এদের কাজ চলে যাবে । এছাড়া কেন্দ্রীয় SCADA কন্ট্রোল রুম থেকে যে সকল সাবস্টেশনের অপারেশন নিয়ন্ত্রিত হবে, সেগুলোতে কর্মীদের প্রয়োজন থাকবে না । গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে বিল সংক্রান্ত কাজের চাপ প্রায় থাকবে না বললেই চলে । ক্যাশ কালেকশন কর্মীদের প্রয়োজন কমে যাবে । স্মার্টমিটার সফটওয়্যার কোম্পানি যে সার্ভিস সেন্টার খুলবে সেখানে গ্রাহকেরা সমস্যা নিয়ে যাবে । ফলে বিরাট সংখ্যক কর্মীদের কাজ চিরতরে চলে যাবে যাদের একটা বড় অংশ কন্ট্র্যাক্ট ওয়ার্কার ।
জাতীয় বিদ্যুৎ ক্ষেত্রের নিরাপত্তা হবে বিপন্নঃ
আর সবচেয়ে ভয়ানক হলো এই প্রযুক্তি থেকে জন্ম নেওয়া জাতীয় বিদ্যুৎ ক্ষেত্রের নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমস্যা । ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্কের নিজস্ব এই প্রজেক্ট সম্পর্কে ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্ক নিজেই তার ডকুমেন্টে লিখেছে যে যেকোনো মুহূর্তে সাইবার এটাকের মুখে পড়তে পারে এই ডিজিটাল মিটার – গ্রিড ব্যবস্থা । বড় ধরনের বিপর্যয় হতে পারে, হতে পারে সামগ্রিক ব্ল্যাক আউট, রাজনৈতিক কারণে কেন্দ্রের সরকার কোনো রাজ্যের বিরূদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে এই নেটওয়ার্ক কন্ট্রোল ব্যবহার করতে পারে । কোটি কোটি গ্রাহকের ডেটা চলে যেতে পারে কোনো বিপজ্জনক সংস্থার হাতে । এমনকি গ্রাহকের ঘরের নেটওয়ার্কেও হানা দিতে পারে এই ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রকেরা ।
গ্রাহক বাঁচাও, কৃষক বাঁচাও, শ্রমিক-কর্মচারী বাঁচাও, সরকারী বিদ্যুৎ পর্ষদ বাঁচাওঃ
নিশ্চিতভাবেই বিদ্যুৎ ভারতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবা যা এখনও কিছুটা রেগুলেটরি ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে, যাতে রাজ্য সরকারগুলোর ভূমিকা রয়েছে, এবং যে পরিষেবা আজকের দিনে বিরাট মূল্যের রাজস্ব উৎপাদন করছে । দুর্ভাগ্যজনক ভাবে আমাদের রাজ্য সরকারও কেন্দ্র সরকারের দোসর হিসেবে এই জনবিরোধী, শ্রমিকবিরোধী এবং রাজ্য বিদ্যুৎ সংস্থা বিরোধী মিটারিং ব্যবস্থা চাপিয়ে দেওয়ার বন্দোবস্ত করেছে । রাজ্যের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থার ওপর রাজ্য সরকারের নিয়ন্ত্রণ এতে পুরোপুরি খর্ব হবে, বিদ্যুতের জন্য রাজ্যের নাগরিকেরা কেন্দ্র সরকারী এজেন্সি ও প্রাইভেট কোম্পানির ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বে । এটাই সময়, আমাদের সামনে – রাজ্যের বিদ্যুৎ কর্মীদের সরকারী বিদ্যুৎ শিল্পকে ধ্বংসকারী এই ব্যবস্থাকে বুঝতে হবে গভীর ভাবে, সমস্ত বিদ্যুতকর্মীদের সামনে এর ভয়াবহতা তুলে ধরতে হবে, এর ভয়ানক জনবিরোধী দিক গুলো নিয়ে যেতে হবে গ্রাহকদের কাছে, গড়ে তুলতে হবে সার্বিক প্রতিরোধ – গ্রাহক বাঁচাও, কৃষক বাঁচাও, শ্রমিক-কর্মচারী বাঁচাও, সরকারী বিদ্যুৎ পর্ষদ বাঁচাও, বেসরকারী বহিরাগত কোম্পানির হাতে মিটারিং ব্যবস্থা তুলে দেওয়া বন্ধ কর ।