Sitaram Yechury’s Press Conference

১৭ জানুয়ারি, ২০২০

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে জারি থাকবে প্রতিবাদ। আন্দোলন বেড়ে চলেছে। আন্দোল সব গণতান্ত্রিক দলের সমর্থন প্রয়োজন। শুক্রবার তিরুবনন্তপুরমে সাংবাদিক সম্মেলনে পার্টির এই অবস্থান জানিয়েছেন সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। এদিনই তিরুবনন্তপুরমে শুরু হয়েছে পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটির অধিবেশন।
ইয়েচুরি বলেন, সিএএ বিরোধী আন্দোলনের ডাক কেবল কোনও রাজনৈতিক দল দেয়নি। বিভিন্ন অংশই নেমেছেন আন্দোলনে। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ চলেছে দেশজুড়ে। আমরা মনে করি দেশের ইতিহাসে এই মুহূর্ত নির্ণায়ক। আজকের মতো অতীতে কখনও এমন বিপুল মাত্রায় কমবয়সী অংশ দেশের গণতান্ত্রিক এবং ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধান রক্ষার জন্য রাস্তায় নেমে পড়েননি। আমরা এই আন্দোলনকে আরও সংহত করতে এবং শক্তিশালী করার চেষ্টা করব।
সংবিধান রক্ষার বৃহত্তর লড়াইয়ে চলতি মাসে তিনটি দিন পালন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বিরোধীদের বৈঠকে। ২৩ জানুয়ারি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিন, ২৬ জানুয়ারি সাধারণতন্ত্র দিবস এবং ৩০ জানুয়ারি গান্ধীজীর শহীদীবরণের দিন পালন করবে সিপিআই(এম)। ইয়েচুরি জানান, ২৬ জানুয়ারি গণজমায়েতে পাঠ করা হবে সংবিধানের অংশ।
সিএএ বিরোধী কর্মসূচি প্রসঙ্গে ইয়েচুরি বলেন, আন্দোলন বাড়ছে। আমরা দিল্লিতে রাজনৈতিক দলগুলির বৈঠকের উদ্যোগ নিই। বিভিন্ন সংগঠন এবং বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই এই তিনটি দিন পালনের আবেদন জানিয়েছিলেন। বিরোধী দলগুলির বৈঠকে ঠিক হয়েছে, যৌথভাবে এই তিনদিন কর্মসূচি হবে। বক্তব্য সমর্থন করেন এমন সবাইকেই যোগদানের আহ্বান জানানো হচ্ছে।
ইয়েচুরি বলেন, দেশজুড়ে সিএএ বিক্ষোভের বিরুদ্ধে মারাত্মক হামলার পিছনে রয়েছে কেন্দ্রের সরকারই। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে পুলিশের আগ্রাসী ভূমিকায় তা স্পষ্ট।
নাগরিকত্ব সংশোধন আইন (সিএএ)’র বিরোধিতায় সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছে কেরালার বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সরকার। কেন্দ্রের প্রতিনিধি রাজ্যের রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান এদিন দিল্লিতে সরকারের পদক্ষেপে আপত্তি জানিয়েছেন। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেছেন যে তাঁকে না জানিয়ে রাজ্য সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে। রাজ্যের কাছে জবাবদিহি তলব করেছেন তিনি। এই প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে ইয়েচুরি সাফ জানিয়ে দেন, রাজ্যের মানুষকে রক্ষার দায়িত্ব রাজ্য সরকারের। সংবিধান অনুযায়ী রাজ্যের প্রয়োজনে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্যপালের অনুমোদন জরুরি নয়। তাঁর মন্তব্য, এখন সবচেয়ে জরুরি সংবিধানকে রক্ষা করা। সংবিধান না থাকলে সরকার বা রাজ্যপালের পদ কোনোটিই থাকবে না।
অপর এক প্রশ্নে ইয়েচুরি জানান, রাজনৈতিক দলগুলির একত্রে কর্মসূচি কোনও রাজনৈতিক বা নির্বাচনী ফ্রন্ট গঠনের জন্য নয়। প্রতিবাদের অভিন্ন মঞ্চ দরকার। সিএএ’র বিরোধিতাই লক্ষ্য। উল্লেখ্য, ১৩ জানুয়ারি দিল্লিতে বৈঠক হয় বিরোধী বিভিন্ন দলের। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রতিটি দলই ওই বৈঠকে অংশ নিয়েছে এমন নয়। তবে অনেক দলই নিজের নিজের রাজ্যে প্রতিবাদ করছে।
দিল্লির বৈঠকে আচমকাই না যাওয়ার ঘোষণা করেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। ৮ জানুয়ারি ধর্মঘটে বামপন্থী দলগুলি এবং কংগ্রেসকে ভাঙচুরের জন্য দায়ী করেন। এক প্রশ্নে ইয়েচুরি বলেন, রাজ্যস্তরে বিরোধের বিভিন্ন বিষয় থাকতে পারে। কিন্তু জাতীয় স্তরে কর্মসূচিতে তা বাধা হওয়া উচিত নয়। মমতা ব্যানার্জি অদ্ভুত যুক্তি দিচ্ছেন। তিনি আগের বৈঠকগুলিতে অংশ নিয়েছেন। আসলে ৮ জানুয়ারির ধর্মঘটের সাফল্য অনুমান করতে পারেননি তিনি। বলেছিলেন, ধর্মঘট বিফল হবে। বাস্তবে বিপুল মানুষ সফল করেছেন ধর্মঘটকে।
কেন্দ্রীয় কমিটির এই অধিবেশন চলবে রবিবার পর্যন্ত। কেন্দ্রের অর্থনৈতিক নীতি এবং কৃষিনীতিতে সঙ্কট ও সংগ্রাম বিষয়েও আলোচনা হবে।

Spread the word

Leave a Reply